নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নতুন বাঙ্গাল

নতুন বাঙ্গাল › বিস্তারিত পোস্টঃ

হে ভন্ড, পল্টীবাজ, ধান্দাবাজ, বুদ্ধিজীবি ও সাংবাদিক'পীর' গন জাতি তোমাদের ঘৃনা করে।

০৮ ই মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১২:৩৫



প্রথমেই ক্ষমা চাচ্ছি ৭১ শহীদ হওয়া ৩০ লাখ মানুষকে যারা আমাদেরকে এনে দিয়েছিল একটি দেশ, একটি পতাকা।অবধারিত ভাবেই সেই দেশ ও সেই পতাকা বহন ও সংরক্ষন করার দায়িত্ব পরবর্তী প্রজন্মগুলোর। কিন্তু ৭১ পরবর্তী প্রজন্ম যারা আজকের 'পরিনত' ও 'তথাকথিত' বুদ্ধিজীবি , সাংবাদিক ও রাজনীতিবিদ তারা তাদের সেই দায়িত্ব পালন তো করেনইনি বরং উল্টো দেশবিরোধী,স্বাধিনতা বিরোধীদের সাথে বাসর,প্রনয়, আপোস, আত্মস্মর্পন করে জিবন যাপনে অভ্যস্ত হয়ে ,সামনে আগানোর আত্মতৃপ্তির ঢেকুর তুলতে ব্যাস্ত হয়েছিল।ভাব খানা এমন ছিল যে ওদের না ঘাটিয়ে, ওদের দয়ায় যতটুকু ভাল থাকা যায় মন্দ কি।



তাই বাধ্য হয়েই আমাদের এই প্রজন্মে এসে জন্ম নেয় শাহবাগ।যার শুরুতে চিরচারিত ভাবে সব পল্টিবাজ, ধান্দাবাজ ,বুদ্ধিজীবি ,সাংবদিক পীরেরা শাহবাগের গলায় সুর মিলিয়ে বলা শুরু করে 'তারুণ্যকে অভিবাদন জেগে থাকুক মানুষ';'শাহবাগ তোমাকে সালাম' ইত্যাদি নানা কথামালা।আবার কেউ কেউ রাতের টকশো মতিয়ে তারুন্যের জয়গান গেয়ে শাহবাগকে হিমালয়ের উচ্চতায় নিয়ে বলতে থাকেন, দিন যত যাবে এর উচ্চতা নাকি বাড়তেই থাকবে।অথচ এদের অনেকেই শাহবাগ আন্দোলনের আগে যুদ্ধোপরাধীদের বিচার ও ট্রাইবুনালকে নিয়ে নানা বিতর্কিত কথা বার্তা বলতেন।তাই এদের মুখে এসব শুনে কিছুটা বিস্মিতই ছিলাম , তবে ঘোর কাটতে না কাটেই আবার এরা যথারীতি এরা আরও একবার পল্টি মারা শুরু করছে। গত ২২শে ফেব্রুয়ারী ইসলামী দলগুলোর তান্ডবের পর এরা যোগ দিল আস্তিক, নাস্তিক বিশ্লেসনে।অথচ ঐ পল্টিবাজদের একজন তসলিমা নাসরিনের মত বিশিস্ট 'আস্তিক'(!!) এর সাথে ঘর করা ব্যাক্তি।তবে ঐ পল্টিবাজদের জানা উচিত শাহবাগ কোন আস্তিক, নাস্তিকের বিষয় না।কোন নাস্তিকের ডাকে কেউ শাহবাগে যায় নি, সবাই যার যার আপন তাগিদেই শাহবাগে গিয়েছে, সমার্থন জানিয়েছে।আসলে সবাই তো আর কুকর না, যে রুটির গন্ধ শুকে দৌড়াবে।কোথায় গেলে ভাল রুটির ব্যবস্থা হবে সেই লোভে সবাই ঘোরে না।তাই এখানে যারা এসেছে তারা একটি চেতনা নিয়ে এসেছে এবং সেই চেতনা তোমাদের এই 'আস্তিক' 'নাস্তিক' ট্যগে মুছে যাবে না।



২২শে ফেব্রুয়ারী চাদপুরে জাতীয় পতাকা পোড়ায় স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি, একই দিন শহীদ মিনারে হামলা চালায় তারা।তারই প্রতিবাদে শাহবাগ থেকে 'জাতীয় পতাকা' ওড়ানোর কর্মসুচি দেয়া হয়।তারপরেই শুরু হয়ে যায় ভন্ডদের নতুন গান , শাহবাগ কি জাতীয় পতাকা ওড়াতে বলতে পারে। আসলেই তো সত্যি কথা ইমরান, শাহবাগ, তোমরা জানো না এদেশ তোমাদের নয় , এদেশে জাতীয় পতাকা ওরানোর অধিকার তোমাদের কে দিল? তোমরা কোথায় পেলে এত বড় স্পর্ধা? গতকাল আমাদের এরশাদ সাহেব ও একই প্রশ্ন তুলেছেন।আমিও তাদের সাথে একমত, আসলেই আমরা গাধা, আমরা নিজেদেরকে আহ্ম্মক প্রমান করেছি জাতীয় পতাকা উড়িয়ে, এটা সুস্পস্ট দেশদ্রোহীতা, কারন নিজামী মুজাহীদরাই শুধু পতাকা উড়াবে। আমরা শুধু চেয়ে চেয়ে দেখবো, যেমনটা দেখেছে 'পীর' সাংবাদিকেরা। মুজাহীদ, নিজামীদের বাংলাদেশে আমরা পতাকা ওড়ানোর মত অপরাধ করেছি যেটা মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের অনুভুতিতে(?!) আঘাত লেগেছে, গতকাল মামলাও হয়েছে। অথচ জাতীয় পতাকা অবমাননা, শহীদ মিনার অবমানানা নিয়ে কোন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের কোন অনুভুতিই কাজ করেনা , 'পীর' দের মুখ দি্য়ে বের হয়না কোন আলোচনাও।



সাঈদীর রায়ের পর এক বিশিস্ট প্রবীন শয্যশায়ী সাংবাদিক বলছিলেন ২৮ ফেব্রুয়ারী তার জীবনের শ্রেস্ঠ জন্মদিন , তার গ্লানিমুক্তির দিন।আমি হাসলাম আর ভাবলাম , হে প্রবীন , আর কতদিন?কয়দিন আগেও তুমি বলছো ট্রাইবুনালে বিচার করার কি দরকার, ফৌজদারি আদালতে বিচার করা যেত, বংগবন্ধু/মুজিব ভাই বিচার করেনি ইত্যাদি। আর আজ তোমার গ্লানি মুক্তির দিন , তোমরা পারোও বাপু।



একটা অনলাইন নিউজ এজেন্সি শাহবাগ আন্দোলন শুরুর দিকে শাহবাগে তাদের অফিস বসিয়েছিল , ঘন্টায় ঘন্টায় কারনে অকারনে নিউজ দিত। গত ২৮ ফেব্রুয়ারী জামাতের তান্ডবের পর এখন শাহবাগের কোন নিউজ তাদের পেজে দেখা যায়না। মনে প্রশ্ন জাগে এরা কি আসলে পেশাদার কোন সাংবাদিক? জাতির প্রতি কি এদের কোন দায় বদ্ধতা নিয়ে কাজ করে? নাকি ওরা শাহবাগের মৌসুমী চা, বাদাম বিক্রেতাদের মত। যখন লোক সমাগম ভালছিল বেচা বিক্রি ভাল হত তাই বাদাম বেচতে গিয়েছিল, এখন পল্টন ও মগবাজারে ব্যাবসা জমানোর ধান্দায় আছে।ধিক এই সাংবাদিকতাকে।তোমরা অনন্তকাল ধরে বাদামওয়ালাদের মতই কখোনও বংগবন্ধু এভিনিউ , কখনও পল্টন , কখনও মগবাজার কিংবা শাহবাগে ফেরী করে জীবন কাটাবে।কিন্তু শাহবাগ এদেশের মানুষের চেতনায় 'স্হির', 'অনড়' থাকবে অনন্ত কাল ধরে।



২২ ফেব্রুয়ারী বায়তুল মোকরম সহ সারা দেশে সাংবাদিকরা গন হারে মার খেল,হাসপাতালে গেল অথচ এইসব পল্টিবাজরা কোন রকম প্রতিবাদ কর্মসুচীতো দুরের কথা ,একটা বিবৃতি ,একটা প্রতিবাদী বাক্যও শুনিনি এই সব শেয়ালদের মুখে।গত রোববার থেকে উত্তরের কয়েকটি জেলায় প্রথম আলো সহ বেশীরভাগ পত্রিকা ঢুকতে দিচ্ছে না জামাত-শিবির।অথচ এরা এখন গনমাধ্যমের উপর আঘাত, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিয়ে কিছুই বলছে না।আর বলবেই বা কেন দেশে 'আমার দেশ' , 'সংগ্রাম' আর 'দিগন্ত' ছাড়া কি কোন গনমাধ্যম আছে? 'আমার দেশ' বর্জনের কথা বললেই গনমাধ্যমের স্বাধীনতার কথা বলে,এরা প্রেসক্লাবের সামনে দাড়িয়ে যায়, আর 'প্রথম আলো' বিক্রি বন্ধ করলেও কিছু হয়না।মাহামুদুর রহমানকে কিছু বললে সাংবাদিক নির্যাতন হয়, কিন্তু সাংবাদিকরা পিটুনি খেলে একটা বিবৃতি আসে না।সো বুঝে নিলাম পীরদের কাছে গনমাধ্যম হল 'আমার দেশ' আর সাংবাদিক মানে 'মাহামুদুর রহমান'।



ইদানীং কেউ কেউ শাহবাগে বিরিয়ানীর প্যাকেট আর পানির বোতল খুজে বেড়াচ্ছে।আমাদের ভাগ্য ভাল মুক্তিযুদ্ধোটা ৭১ হয়েছিল। নাহলে এই সব ভন্ড বুদ্ধিজীবি সাংবাদিকপীরেরা বলত, মুক্তিযোদ্ধারা নিরপেক্ষ না ; তারা ওমুকের বাগানের ফল খাইছে , ওমুকের পুকুরে গোসল করছে। তোমরা আসলেই সাংঘাতিক , জনপ্রতি ৫০০/১০০০ টাকা , গাড়ি ভরে মানুষ এনে রাজনৈতিক দলের কর্মীসভাকে শিরোনাম করো 'জনসমুদ্র' বলে। কোটি টাকার জনসভা, মিছিলের কর্মসুচি নিয়ে তোমাদের গলায় স্তূতির ঝড় ওঠে । অথচ নিজের পকেটের টাকা খরচ করে শাহবাগে যোগ দেয়া মানুষের অন্তরের দাবীটি হারিয়ে ফেল, মানুষের স্বতস্ফুর্ত সহযোগিতার উদ্দেশ্য খুজে।আসল কথা হল, শাহবাগ তো সামনে ক্ষমতায় আসবে না , শাহবাগ তো কাউকে টিভির লাইসেন্স, কিংবা ব্যাবসার লাইসেন্স দিবেনা।তাই শাহবাগ নিয়ে এত মাতামাতির কি আছে। তাইতো আখের গুছানোর ধান্দায় ফিরেছো তোমরা, আমরা বুঝি।



পরিশেষে শাহবাগের নিজের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো মানুষ গুলোকে বলছি, ভাই একাত্তরে যারা যুদ্ধ করছে তারা ভাগ্যবান, কারন তখন এই টকশো ছিল না, এত ভন্ড, পল্টীবাজ, ধান্দাবাজ, বুদ্ধিজীবি, সাংবাদিক'পীর' ও ছিল না। তাই তাদেরকে শুধু পাকিস্তানিদের সাথে যুদ্ধ করতে হয়েছে। এখন আপনাদেরকে স্বাধীনতা বিরোধীদের সাথে, আরও কিছু ভন্ড, ধান্দাবাজ বুদ্ধিজীবী ও সাংবাদীক 'পীর' এর মোকাবেলা করতে হবে।মনে রাখবেন পতাকা অবমাননা অন্যায় না হলেও এদের চোখে পতাকা উড়ানো অণ্যায়।

তাই এদের থেকে সাবধান , এরা জামাতীদের চেয়েও ভয়ংকর।তবে ভয় পাবেন না, শাহবাগে যারা আসে কেউ এদের মত গন্ধ শুকে আসে না। কেউ আপনাদের বাপ দাদার ইতিহাস জেনে আসে নাই, আপনাদের চেহারা দেখেও আসে নি।এমনকি শাহবাগে সবচেয়ে বেশি সংখক মানুষ যখন এসেছিল তখন আপনদেরকে তারা না চিনেই এসেছিল।আর আসার কারন ছিল একটাই, যুদ্ধপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি।তাই শাহবাগের বিরুদ্ধে যাকিছুই বলা হোক না কেন, এদেশের কোন মানুষই তাদের দাবী থেকে একচুল নড়বে না।এতে শাহবাগ থাকুক কিংবা নাই থাকুক, শাহবাগের চেতনা থাকবে।শাহবাগকে নাস্তিক বললেও, কেউ বলবে না ' 'যুদ্ধোপরাধীদের ছেড়ে দাও';শাহবাগে বিরিয়ানির প্যাকেট খুজলেও, 'কেউ বলবে না যুদ্ধোপরাধীদের বিচার চাইনা'।তাই দেশের সাধারন মানুষ শাহবাগে ছিল ,আছে, থাকবে সশরীরে কিংবা অশরীরে।



কারন শাহাবাগ এদেশের মানুষের মনে আজীবন চেতনার বীজ বুনে দিয়েছে 'যুদ্ধপরাধীদের প্রতি ঘৃনা' আর চিনিয়ে দিয়েছে সুবিধাবাদীদের চেহারা, যা জাতি কখনও ভুলবে না।তাই শাহবাগ কখনও শেষ হয় না , শেষ হবে না।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.