নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অদৃষ্টরে শুধালেম, চিরদিন পিছে, অমোঘ নিষ্ঠুর বলে কে মোরে ঠেলিছে?সে কহিল, ফিরে দেখো। দেখিলাম থামি, সম্মুখে ঠেলিছে মোরে পশ্চাতের আমি।

মুবিন খান

নিজের পরিচয় লেখার মত বিখ্যাত বা বিশেষ কেউ নই। অতি সাধারণের একজন আমি। লিখতে ভাল লাগে। কিন্তু লেখক হয়ে উঠতে পারি নি। তবে এই ব্লগে আসা সে চেষ্টাটা অব্যাহত রাখার উদ্দেশ্য নয়। মনে হল ভাবনাগুলো একটু সশব্দে ভাবি।

মুবিন খান › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পটা গাছেদেরই

০৪ ঠা জুন, ২০২০ রাত ৯:০২



আমাদের পাড়ায় বাজার পথে যে তেঁতুল গাছটা ছিল
আসতে যেতে দেখতাম আমরা গাছটা মাঠের কোণে
অপরাজিতা ফুল গাছটার দিকে ঝুঁকে থাকতে তাকে
ঝড় ঝাপটা বয়ে গেলে আমরা দেখতাম তেঁতুল গাছটা
অপরাজিতার দিকে একটু একটু ঝুঁকেছে আরেকটু
দেখে ভারী হাসি পেত আমাদের; আমরা তরল হাসিতে
এর ওর পিঠ চাপড়ে ঢলে পড়তাম বিপুল আমোদে।

একদিন অপরাজিতা গাছটায় অনেক ফুল ফুটেছে
ওইটুকু গাছটায় একসঙ্গে এত এত ফুল! বিস্ময়ে
ওপাশ বাড়ির অভিভূত মেয়েটির চাই অপরাজিতাকে
দারোয়ান প্রাক্তন অভিজ্ঞ কৃষক, গাছেদের জানে খুব;
খুব অনায়াসে শেকড়-মাটিসুদ্ধ অপরাজিতা চলে এল
রঙিন আর বাহারি ফুলের টবে শুরু তার জীবন
মাটি-সারে যত্নে সতেজ কৃত্রিম, ফুলও ফোটে নিত্য।

ফুলের টবের জীবনে আছে বেঁচে থাকা, আছে জীবন
ফুল আছে সতেজতা আছে, দেখে সকলে, অপরাজিতা
জানে সে জীবনে প্রাণ নেই; আর জানে তেঁতুল গাছটা
শেকড় মাটিতে নিবদ্ধ, অপরাজিতা যেমন টবে আবদ্ধ
মাঝে মাঝে দমকা হাওয়ায় প্রবল নড়ে ওঠে তেঁতুল গাছ
দুলে ওঠে অপরাজিতাও, উপড়ে ফেলতে চায় শেকড়
তেঁতুল গাছটা ঝুঁকতে ঝুকতে কাত হয়ে রাস্তা পেরোয়।

একদিন প্রকৃতি সাজাতে সভ্যতা আসে আমাদের পাড়ায়
নিড়ানি চালায় সর্বত্র, হতাহত হয় ছোটবড় ঝোপঝাড়
তেঁতুল গাছটা তবু রয়ে যায়, ঝুঁকে ফিসফিসায় হাওয়ায়
অপরাজিতার পাতা নড়ে; সভ্যতা পৌঁছে যায় ও বাড়িতে
মালপত্রর সঙ্গে অপরাজিতা গাছটার টবও ঠেলাগাড়িতে
হাওয়ার দোলে তেঁতুল গাছ, ডাল-পাতা নাড়ে অপরাজিতা
কদিন পরে রাস্তার ধারে মুখ থুবড়ে পড়ে তেঁতুল গাছটা।

আমাদের পাড়ায় এখন আর স্যাতা পড়া ঘরবাড়ি নেই
নেই শেকড় উপড়ে পড়া তেঁতুল গাছটার মতো গাছেরা
সভ্য সভ্য উঁচু উঁচু বাড়িতে টইটুম্বুর এখন আমাদের পাড়া
ফ্ল্যাটে বেড়েছে প্রাণহীন জীবনপূর্ণ নীল অপরাজিতার চাষ।

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা জুন, ২০২০ রাত ৯:১৫

গুরুভাঈ বলেছেন: ভাইছাব, গাছেদেরই হবে না গাছদেরই হবে?

০৪ ঠা জুন, ২০২০ রাত ৯:২৭

মুবিন খান বলেছেন: জ্বি ভাইছাব, আপনি একদম সঠিক। তবে আমিও ভুল নই। আমি 'গাছেদের'-ই লিখেছি।

ধন্যবাদ আপনাকে।

২| ০৪ ঠা জুন, ২০২০ রাত ৯:৩১

গুরুভাঈ বলেছেন: মানুষদের গাছদের
মানুষেদেরই গাছেদেরই, মানুষেদেরই শব্দ হতে পারে না।
ব্যাপারটা বুঝতে পারছেন?

০৪ ঠা জুন, ২০২০ রাত ১০:১৩

মুবিন খান বলেছেন: আপনার ব্যাকরণগত ভুল ধরাটা বুঝতে পেরেছি, কিন্তু আপনি লেখকের স্বাধীনতাটা বুঝতে পারেন নি।

তাছাড়া ব্যাকরণ যদি সামনে এসে দাঁড়ায় তাহলে 'গাছেদের' এবং 'গাছদের' দুজনেই নাকচ হয়ে যায়। শুদ্ধ শব্দটা হবে 'গাছের' কিংবা 'গাছগুলোর'; আর এই যে 'দুজনেই নাকচ হয়ে যায়' বললাম, এটাও ভুল। 'দুটোই নাকচ হয়ে যায়' হবে।

আশা করি আমার অবস্থানটা বোঝাতে পেরেছি।

৩| ০৪ ঠা জুন, ২০২০ রাত ৯:৩২

রাজীব নুর বলেছেন: অত্যন্ত চমৎকার।

০৪ ঠা জুন, ২০২০ রাত ১০:১৪

মুবিন খান বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

৪| ০৪ ঠা জুন, ২০২০ রাত ১০:২২

গুরুভাঈ বলেছেন: স্বাধীনতাটা আপনি তখনই পাবেন যখন ছন্দের মিলে ব্যবহার করবেন, এখানে ব্যাপারটা তেমন আসে নাই। আর গাছগুলি, গাছদের, গাছের সবগুলিই প্রযোজ্য। আপনার গাছেদেরই ও প্রযোজ্য যদি তার ব্যবহারে আসে, কিন্তু কোথাও সেভাবে গাছেদেরই আসে নাই। যাই হউক ধন্যবাদ।

০৪ ঠা জুন, ২০২০ রাত ১০:২৫

মুবিন খান বলেছেন: আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।

৫| ০৫ ই জুন, ২০২০ ভোর ৫:৫৪

নেওয়াজ আলি বলেছেন: অতুলনীয় লেখা। 

০৬ ই জুন, ২০২০ রাত ৩:০২

মুবিন খান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.