নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অদৃষ্টরে শুধালেম, চিরদিন পিছে, অমোঘ নিষ্ঠুর বলে কে মোরে ঠেলিছে?সে কহিল, ফিরে দেখো। দেখিলাম থামি, সম্মুখে ঠেলিছে মোরে পশ্চাতের আমি।

মুবিন খান

নিজের পরিচয় লেখার মত বিখ্যাত বা বিশেষ কেউ নই। অতি সাধারণের একজন আমি। লিখতে ভাল লাগে। কিন্তু লেখক হয়ে উঠতে পারি নি। তবে এই ব্লগে আসা সে চেষ্টাটা অব্যাহত রাখার উদ্দেশ্য নয়। মনে হল ভাবনাগুলো একটু সশব্দে ভাবি।

মুবিন খান › বিস্তারিত পোস্টঃ

জীবনানন্দকে সুরঞ্জনার চিঠি

১৯ শে জুন, ২০২০ রাত ২:৪৬





জীবনানন্দ,
আচ্ছা একটা কথা বল তো, তোমার নাম জীবনানন্দ কে রেখেছিল? তোমাকে তোমার নামটা একটু সংক্ষিপ্ত করে ডাকতে গেলেই জীবন ডাকতে হয়। এটা একটা কথা হলো! কি অদ্ভুত কৌতুক! তোমাকে কেন আমি জীবন ডাকব! আবার সবটা ডাকলে তো আরও সমস্যা! জীবনের সঙ্গে যোগ হয় আনন্দ। তুমি কেন আমার জীবন ও তার আনন্দ হতে যাবা! কোন্‌ দুঃখে! শোন জীবন+আনন্দ, তুমি অবশ্যই তোমার নামটা বদলে ফেলবা। এমনি এমনি মুখে মুখে বদলে দিয়ে বলবা বদলে ফেলেছি, সেটা হবে না। কোর্টে গিয়ে এফিডেভিট করে বদলাবা। অবশ্যই বদলাবা। বুঝেছ?

এবার আসল কথা বলি। আচ্ছা তুমি আমার কে হও বল তো? আমার বাপ-মা? আমার চাচা, মামা, খালা, ফুপু? আমার অভিভাবক? কেউ নও, তাই না? তাহলে আমাকে ওই যুবকের সঙ্গে কথা বলতে নিষেধ করেছ কেন? হোয়াই? হু আর ইউ? তুমি নিষেধ করার কে? ফাজলামো পেয়েছ? আমি যার সঙ্গে ইচ্ছা কথা বলব, তোমার তাতে কি? তোমার এত জ্বলে কেন জীবনানন্দ? আমি ওই যুবকের সঙ্গে কথা বলব, তার বাসায় গিয়ে দাওয়াত খাব, তার সঙ্গে ঘুরতে বেরিয়ে ছবি তুলব, তোমার কি? খবরদার, আর কখনও আমার ব্যক্তিস্বাধীনতায় নাক গলাতে আসবা না বলে দিলাম। একেবারে নাক ভেঙে দিব।

আর শোন, ফিরে এসো সুরঞ্জনা মানে কি? এটা কি ধরণের ফাজলামো? ফিরে আসব মানে কি? আমি তোমার কাছে ছিলাম নাকি কখনও? তুমি দেখছি আমায় ডোবাবে জীবনানন্দ! আবার বলেছ, নক্ষত্রের রুপালি আগুন ভরা রাতে নাকি ফিরতে হবে! ছিঃ! এমন একটা কথা বলতে তোমার লজ্জা করল না? এভাবে তুমি আমাকে রাতের বেলায় তোমার কাছে যেতে বলতে পারলে! রাতবিরেতে আমি কেন যাব তোমার কাছে! আমি ভদ্রঘরের মেয়ে নই? আমার কোনও মানসন্মানবোধ নেই? তুমি তো লিখে দিয়েই খালাস, যারা পড়বেন তারা আমাকে কি ভাববেন বলতে পার? তাদের সামনে আমি কেমন করে মুখ দেখাব?

আর নক্ষত্রের রুপালি আগুন ভরা রাতের ব্যাপারটা কি? নৌকায় করে রাত জেগে জেগে জ্যোৎস্না দেখে দেখে তোমার মাথাটা যে একদম গেছে, সেটা কি তুমি বুঝতে পারছ জীবনানন্দ? মাঠঘাট ঢেউয়ে ডাকাডাকি করে কেউ! আজব!

তোমার হৃদয়ে তো আমি যাই নাই কখনও তবে ফিরব মানে কি! একটা ভালো পরামর্শ দেই, নাম বদলাতে এফিডেভিট করতে কোর্টে যেদিন যাবা, ফেরার সময় একজন সাইকিয়াট্রিস্টের সঙ্গে দেখা করে আসবা। তাকে মাঠঘাট ঢেউয়ের গল্পগুলা বলবা। আর বাসায় আসার আগে ডাইজিপাম জাতীয় ওষুধ কিনে আনবা। ডাক্তার যদি ঘুমের ওষুধ দেয় তো ভালো। না দিলে ঘুমানোর আগে ওটা খেয়ে ঘুমাবা। দেখবা নক্ষত্র থেকে মাঠঘাট জাতীয় ভাবনারা সুস্থ হয়ে গেছে।

এই শোন, যুবকের কাছে না ডিএসএলআর ক্যামেরা আছে। তোমার তো ক্যামেরা নাই, ডিএসএলআর ক্যামেরা তো তুমি চিনবে না। ধরো আমি এখানে দাঁড়ালাম, যুবক দৌড়ে আধমাইল দূরে গিয়ে আমার ছবি তুলল, ক্যামেরা যেহেতু আমার দিকে তাক করেছে তাই শুধু আমার ছবিই উঠবে, আর যা কিছু আশপাশে থাকবে সবই ঘোলাটে দেখাবে; সে কারণে আমাকে দেখাবে স্বপ্নিল আর মায়াময়। অপ্সরীর মতো আর কি। তাই 'তুমি দূর থেকে দূরে – আরও দূরে/ যুবকের সাথে তুমি যেয়োনাকো আর' বললে আমি শুনব না তো।

'কি কথা তাহার সাথে? তার সাথে!' তা দিয়ে তোমার কি দরকার? আমি কি তোমাকে এর সাথে কি কথা, তার সাথে কি কথা কখনও জানতে চেয়েছি? আর চাইবই বা কেন! তুমি তো আমার কেউ হও না। তাহলে তুমি কেন জানতে চাইছ জীবনানন্দ? অন্যের চড়কা রেখে এবার নিজের চড়কায় তেলটা দাও না প্লিজ।

আকাশের আড়ালে আকাশেরা থাকুক না তাদের মতো। আমি তো মৃত্তিকাই, মৃত্তিকার মতো বল কেন! প্রেম যদি ঘাস হ’য়ে আসে, তো আসুক না, তখন না হয় গরুতে খাবে। তোমার তো তাতে সমস্যা হওয়ার কথা না।

জীবনানন্দ, আমার হৃদয় আজ ঘাস নয়, আমার হৃদয় আজ রাগ। তোমার বিরক্তিতে আমি অতিষ্ঠ। বাতাসের ওপারে বাতাস থাকুক। তুমিও থাক ওইখানে। সময় করে কোর্ট থেকে নামটা বদলে এস, কেমন? আবারও বলছি, আমার বিষয়ে নাক গলিয়ো না, নাক কিন্তু সত্যিই ভেঙে দিব।

ইতি
সুরঞ্জনা
১৮.৬.২০

মন্তব্য ১৮ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (১৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে জুন, ২০২০ রাত ৩:০৬

মা.হাসান বলেছেন: বহু দিন আপনার লেখা পড়া হয় নি, দোষ আমার, সময় পাই কম। এই লেখাটি একটু অন্য স্বাদের মনে হলো। ভালো ভাঙাচোরা করেছেন। আমার বেশ লেগেছে।

যারা চারপাশ ঘুরে দেখে জীবন পর্যবেক্ষণ করেন , লকডাউন কাল তাদের জন্য মনে হয় ভালো যাচ্ছে না, না কি বলেন?

সতর্ক থাকবেন।

১৯ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১২:১০

মুবিন খান বলেছেন: বহুদিন পড়ে হলেও আমার লেখাটা পড়েছেন, এইটা ভালো লাগা। তারচেয়েও বেশী ভালো লাগা আমাকে মনে রেখেছেন। কৃতজ্ঞ হলাম। আমার এলাকা রেড জোন ঘোষিত হয়েছে।

লকডাউনে ব্যস্ততা খুঁজে নিয়ে ব্যস্ত থাকতে চেষ্টা করছি। তাতে সময় কাটছে। তবু ভালো আছি।

আপনিও ভালো থাকবেন। সতর্ক থাকবেন। অনেক ধন্যবাদ।

২| ১৯ শে জুন, ২০২০ রাত ৩:৩৪

চাঙ্কু বলেছেন: খুব সুন্দর করে সাদা-সিধাভাবে লেখেছেন। পড়ে মজা পেলাম।

১৯ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১২:১২

মুবিন খান বলেছেন: পড়লেন বলে অনেক ধন্যবাদ। আর কৃতজ্ঞতা।

৩| ১৯ শে জুন, ২০২০ ভোর ৪:৪৯

নেওয়াজ আলি বলেছেন: চমৎকার ভাবনার প্রকাশ। ভালো লাগলো।

১৯ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১২:১৩

মুবিন খান বলেছেন: পড়লেন বলে অনেক ধন্যবাদ ভাই।

৪| ১৯ শে জুন, ২০২০ ভোর ৫:২৯

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: নতুনত্ব আছে

১৯ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১২:১৪

মুবিন খান বলেছেন: কৃতজ্ঞ হলাম।

৫| ১৯ শে জুন, ২০২০ সকাল ১০:৪৩

রাজীব নুর বলেছেন: দূর্দান্ত চিঠি।

১৯ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১২:১৪

মুবিন খান বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

৬| ১৯ শে জুন, ২০২০ সকাল ১১:০৩

মাঈনউদ্দিন মইনুল বলেছেন:



ক্রিয়েটিভ! অনেক সুন্দর লেখেছেন। মজা পেলাম, ভাই।

১৯ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১২:২৩

মুবিন খান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ভাই।

৭| ১৯ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১২:৫৮

কল্পদ্রুম বলেছেন: সুরঞ্জনারা মিলুদের মত ভ্যাবলাদের পাত্তা দেয় না।তবু তাদের নিয়ে মিলুরা কবিতা লিখে।সেই কবিতা পড়ে আমরা আহা উহু করি।ট্রাজিক ব্যাপার।

২০ শে জুন, ২০২০ রাত ২:২৭

মুবিন খান বলেছেন: মিলুদের পাত্তা দেয়া বা না দেয়াটা সুরঞ্জনার অধিকার।

সুরঞ্জনাদের নিয়ে কবিতা লিখতে পারাটাও মিলুদের অধিকার।

এবং সে কবিতা পাঠ করে 'আহা-উঁহু' করতে পারা আমাদের অধিকার।

সকলে তাদের স্ব স্ব অধিকার যেন প্রয়োগ করতে পারেন সে বিষয়ে সকলেরই মনযোগী হওয়া দরকার।

আমার ধন্যবাদ গ্রহণ করুন।

৮| ১৯ শে জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১১

শুভ্রনীল শুভ্রা বলেছেন: চিঠিটা পড়ে বেশ মজা পেয়েছি। জীবনানন্দ বেঁচে থাকলে তাঁর রিয়্যাকশন কেমন হতে পারতো সেটা নিয়ে ভাবছি। B-)

২০ শে জুন, ২০২০ রাত ২:৩০

মুবিন খান বলেছেন: জীবনানন্দর রিয়্যাকশন! চমৎকার! ভাবুন। সিদ্ধান্তে পৌঁছে গেলে জানাবেন দয়া করে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

৯| ১৯ শে জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫৯

সেলিম আনোয়ার বলেছেন: সুরঞ্জনার উচিৎ শিক্ষা হয়েছে । জীবন বাবুর ওটুকু ছাড়া তার আর কোন অস্তিত্ব নেই । ভাগ্যিস কবি বলেছিলেন। না হলে তাকে এখন কেউ চিন্ত না । এ চিঠি কেহ পড়তো কি না আমি জানি না । তবে আমি পড়তাম। সুরঞ্জনা নানী এভাবে বলে ঠিক করেনি । B-)

২০ শে জুন, ২০২০ রাত ২:৩৯

মুবিন খান বলেছেন: সুরঞ্জনা নানী!!!
হাহাহা...

বাংলা কবিতায় আধুনিকতার সবচেয়ে পরিপূর্ণ, সবচেয়ে সার্থক সংজ্ঞার্থটি কিন্তু জীবন বাবুর কবিতার মাধ্যমেই রূপায়িত হয়েছে। বাংলা কবিতা একুশ শতকের প্রবেশ মুখে জীবনানন্দই আমাদের পুরোধা। এ আমার একলার কথা নয়, বোদ্ধা লোকেদের কথাও বটে। ফলে 'ওটুকুই' শুধু জীবন বাবুর অস্তিত্ব নয় মনে হয়।

অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.