নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অদৃষ্টরে শুধালেম, চিরদিন পিছে, অমোঘ নিষ্ঠুর বলে কে মোরে ঠেলিছে?সে কহিল, ফিরে দেখো। দেখিলাম থামি, সম্মুখে ঠেলিছে মোরে পশ্চাতের আমি।

মুবিন খান

নিজের পরিচয় লেখার মত বিখ্যাত বা বিশেষ কেউ নই। অতি সাধারণের একজন আমি। লিখতে ভাল লাগে। কিন্তু লেখক হয়ে উঠতে পারি নি। তবে এই ব্লগে আসা সে চেষ্টাটা অব্যাহত রাখার উদ্দেশ্য নয়। মনে হল ভাবনাগুলো একটু সশব্দে ভাবি।

মুবিন খান › বিস্তারিত পোস্টঃ

বৈঠকি গল্প ২

২৫ শে এপ্রিল, ২০২১ সন্ধ্যা ৬:৫৯



দুপুরে চোখে ব্যথা করতে লাগল। বিকেলের দিকে দেখি ঘাড়ে ব্যথা। ব্যথা বেড়ে মারাত্মক অবস্থা দাঁড়াল। মনে হলো লো প্রেশার। শুয়ে থাকা ছাড়া গত্যন্তর থাকল না। তারপর মাথায় বরফ ঘষাঘষি চলতে থাকল। এর মধ্যে ইফতারের সময় হয়ে গেল। ইফতারের পর অনেকগুলা চিনি গুলে খেয়ে ফেললাম। সাধারণত এতে কাজ হয়। আজ হলো না।

উসখুস শুরু হয়েছে। বাইরে যাওয়া লাগবে। বাধা-টাধা না মেনে যখন বেরুচ্ছি, তখন দুটা ডিম হাফ বয়েল খাওয়া লাগল। কিন্তু বাইরে যাওয়ার পর জানা গেল আসলে খালি খালিই গেলাম। লোকজন পাত্তা দেয় না। কেউ ডেকে চা সাধে না। আড্ডা দিতে ডাকে না। আর শরীরও কেমন জানি লাগতে লাগল।

পাশেই ভাগ্নি থাকে। তোফা। চলে গেলাম তোফার বাড়ি। সিকিউরিটি গার্ড আমাকে চেনে না। প্রমিত ভাষায় বলল, কোথায় যাবেন?
আমি থামি না। হাঁটতে হাঁটতে বলি, উপ্রে যাব।

দরজা খোলার সঙ্গে সঙ্গে তোফাকে বলি, তোর কাছে প্রেশার মাপা যন্ত্র আছে না? আমার প্রেশারটা মাপ তো?
আমি হলাম এভারগ্রিন। আমার কাছ থেকে এধরনের অনুরোধ তোফার জন্যে অদ্ভুত। তোফা খুব বিস্মিত। দ্রুত প্রেশার মেপে বলে, প্রেশার তো হাই!

আমি বলি, ধুরো! চিনি আর ডিম খেয়ে এসেছি বলে এখন উঠেছে। এতক্ষণ নেমেই ছিল। আমার তো লো প্রেশার।

এরপর ওয়ালিদ এল। ওয়ালিদ নিজেও একবার মাপল। তারপর চোখেমুখে গম্ভীর ভাব ফুটিয়ে তুলে বলে, মামা, প্রেশার তো হাই!
ধুরো! চিনি আর ডিম খেয়ে এসেছি বলে এখন উঠেছে। এতক্ষণ নেমেই ছিল। আমার তো লো প্রেশার।

ওয়ালিদ সংখ্যা দিয়ে প্রেশারের হিসেব বলে। এই হিসেব তোফার থেকেও বেশি। শাওয়ারের নীচে দাঁড়িয়ে থাকবার বুদ্ধি দেয়। কিন্তু আমি পাত্তা দেই না।

তোফা আমার কথাবার্তা আরো পাত্তা দেয় না। বলে, চা খাবা?

আমি বলি, শরবৎ খাই। বেশি করে চিনি দিস্‌। লো প্রেশার তো।

তোফা যতটা সম্ভব তেরছা করে ঠোঁট বেঁকায়। তারপর শরবৎ বানায়। তাতে বরফের টুকরা ভাসিয়ে আমাকে দেয়। ওয়ালিদ ওয়াফিকে কোলে নিয়ে সোফায় বসেছিল। ওয়াফি আমার কাছে আসতে না পারার রাগে দিল ওয়ালিদকে ভিজিয়ে। আমার আনন্দ হলো। ওয়ালিদ ধোয়াধুয়ি করতে ছুটল।

তোফা বলে, মুবিন মামা, ভাত খেয়ে যাবা।

আর বসে থাকাটা অনুচিত। ওয়ালিদ বলে, মামা একটু দাঁড়ান, আমি আসছি।

ও আসা পর্যন্ত আমি বলে অপেক্ষা করব! জামাই-বউ মিলে চেপে ধরে আমাকে ভাত খাওয়াবে সেই সুযোগ নাকি আমি দিব! আমি দ্রুত দরজা খুলে বেরিয়ে আসি।

যখন লিফটে উঠছি, দরজা ধরে তোফাটা দাঁড়িয়ে থেকে খুব করে বলে দিল উত্তেজিত না হতে, চিল্লাচিল্লি না করতে। আমার হাসি পায়। আমি বলে চিল্লাচিল্লি করি!

এই বাচ্চাগুলা এত ভালো ক্যান! পুরা আমার মতো হয়েছে! বাপমায়ের ধারেকাছেও যায় নাই।

বাসায় আসবার পর এত্তগুলা তেঁতুল পানিতে গুলে খেতে দিল।

হুহ্‌, তেঁতুল বলে মাইনষ খায়!❐

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ৮:০১

শেরজা তপন বলেছেন: আপনার বৈঠকি গল্প ভালই লাগল। আগের পর্বের লিঙ্ক কোথায়?
তোফা আর ওয়ালিদের আন্তরিকতা ভাল লেগেছে

২৫ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ১১:৩১

মুবিন খান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। আগের পর্বের লিঙ্ক দিচ্ছি-
https://www.somewhereinblog.net/blog/mubin144/30318627

২| ২৫ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ৮:০২

মা.হাসান বলেছেন: প্রেসারের চিকিৎসা হিসেবে বরফ ঘষা আমার কাছে নতুন (তেতুলও নতুন)। মানুষের কাছে পাত্তা না পাওয়া, সেধে চা না খাওয়ানো অবশ্য নতুন না । B-)
নানা থাকতে বাবাকে ভিজিয়ে দিলো? আহা, নানারই তো ভেজার রাইট বেশি ছিলো।
পরিচিত কেউ প্রেসার নিয়ে আসলে তেতুল খাইয়ে দেবানে।

২৫ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ১১:৩৮

মুবিন খান বলেছেন: ও চিকিৎসা আমার জন্যেও নতুন। অকূল পাথারে পড়লে খড়কুটো ধরবার নিয়ম তো। আমি নিয়ম পালন করা লোক।

নানার ভেজার রাইট বেশি- কথা সত্য। এজন্যেই নানা হওয়ার ঠ্যাকা নাই। ভাই তো, ভেজাবে কেমনে!

পরিচিত কেউ প্রেশার নিয়ে আসলে দেন তেঁতুল খাইয়ে।

৩| ২৫ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ৮:২৯

সৈয়দ তাজুল ইসলাম বলেছেন: যারা প্রেসারের পেলাস আর মাইনাসরে একখানে খিচুড়ি বানায় তাগোরে প্রইত্যেকদিন এরম তেতুল জুস পান করানো উচিত ;)

২৫ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ১১:৩৯

মুবিন খান বলেছেন: আমি ঘণ্টা সরবরাহ করব। আপনার দায়িত্ব বিড়ালের গলায় বেন্ধে দেয়া।

৪| ২৬ শে এপ্রিল, ২০২১ সকাল ৭:২৮

সৈয়দ তাজুল ইসলাম বলেছেন: ঘন্টা পাইলে জানাইয়্যেন =p~ B:-/

৫| ০৫ ই মে, ২০২১ রাত ২:৫১

রাজীব নুর বলেছেন: ওকে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.