![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঈমান ও দেশ রক্ষায় স্বাধীনতা আন্দোলন,
এবং দারুল উলুম দেওবন্দ প্রতিষ্ঠার ঐতিহাসিক পটভূম
-----------
মুসলিম জাতীর মেরুদন্ড ভাঙতে হলে
প্রথমে তাদের শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করতে হবে ।
বিষয়টি ভালভাবে অনুধাবন করেছিল ইংরেজরা ।
তারা মুসলমানদের দুর্বল করে কর্তৃত্ব স্থাপন করতে
উপমহাদেশ থেকে
ছোটবড় কমপক্ষে ৮০ হাজার মাদ্রাসা ধ্বংস করে দেয় ।
মাদ্রাসা সমুহের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে রাখে ।
মসজিদ সমুহকে ঘোড়ার আস্তাবল বানায় ।
অতঃপর মুসলমানদের সাথে সংঘাত এড়াতে শান্তনা মূলক;
তত্কালিন বড় লাট লর্ড ওয়ারেন্ট হেস্টিংস ১৭৮১ সালে
কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করে দেয় ।
কিন্তু এক সময় আলিয়া মাদ্রাসার
অনেক ছাত্র , শিক্ষক যেমনঃ মোল্লা মজদুদ্দীন রহঃ প্রমুখ
ও তার ছাত্ররা ইংরেজ বিরোধী আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন ।
ফলে মাদ্রাসা থেকে যাতে ইংরেজদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে না পারে এ জন্য কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপ্যাল পদে কোন মুসলমানকে রাখা হয় নি ,
পর্যায়ক্রমে ২৬ জন খৃষ্টান এপদে বহাল ছিল ।
এবং মাদ্রাসার সিলেবাস থেকে উচ্চ পর্যায়ের
তাফসীর , হাদিস , ফিক্বাহ বাদ দিয়ে জিহাদী প্রেরণাকে দমিয়ে দেয়া হয় ।
এমন কি মুসলমানদের তত্কালিন রাষ্ট্রভাষা ফার্সিকে বাদ দিয়ে ইংলিশে অফিস আদালত পরিচালন্া করা হয় ।
এভাবে কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষা ও শিক্ষিতদেরকে পঙ্গু করে দেয়া হয় । আর মুসলিম জাতির উপর নির্যাতন নিপিড়নের ইতিহাস কারো অজানা থাকার কথা নয় । ১৮০৩ সালে উপমহাদেশের সর্বজনমান্য , শ্রেষ্ঠ আলেম শাহ আঃ আজিজ মুহাদ্দিসে দেহলবী রাহঃ এই উপমহাদেশের মাটিতে দাঁড়িয়ে সর্বপ্রথম স্বাধীনতার ডাক দেন ।
প্রিয় মাতৃভূমিকে শত্রু কবলিত "দারুল হারব" বলে ফতোয়া দেন ।
(নেহেরু , গান্ধী , শওকত কিংবা কায়েদে আজম জিন্না তারা কেউ
প্রথম আহ্বানকারী ছিলেন না।)
উক্ত ফতোয়ার উপর ভিত্তি করে আযাদী আন্দোলন ,
বালাকোট যুদ্ধ , শ্যামলীর যুদ্ধ ,
রেশমী রুমাল আন্দোলন সহ
ইংরেজ বিরোধী আরো আন্দোলনের সুত্রপাত ঘটে ।
১৮৫৬ সালে আযাদী আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী
ও কর্মী আলেম উলামাদের লিস্ট করে ১৮৬৪-১৮৬৭ সালের ভিতর
একের পর এক ১৪,০০০ চৌদ্দ হাজার আলেম উলামাদেরকে হত্যা করে । নেতৃত্ব শুন্য করতে থাকে ।
শেষ পর্যায়ে "উপমহাদেশকে শত্রু কবলিত দেশ " ঘোষণাকারী
শাহ আঃ আজিজ রহঃ এর পিতা হযরত শাহ ওলিউল্লা রাহঃ এর
মাদ্রাসায়ে রহিমিয়া কে ১৮৬৭ সালে বুল ড্রোজার দিয়ে ভেঙে দেয়।
এভাবে আলেম ও দ্বীনি প্রতিষ্ঠান নিধনের ফলে মুসলিম জাতির মধ্যে
নেতৃত্ব শুন্যতা ও ইসলামী শিক্ষা-দিক্ষায় শুন্যতা দেখা দেয় ।
আলেম উলামাদের এমন মর্মান্তিক শাহাদাত জাতীকে গভীর
অন্ধকারে নিমজ্জিত করে ।
এমন ভয়াবহ অবস্থায় অবশিষ্ট বিদগ্ধ জ্ঞান তাপস আলেমগণ
চিন্তিত হয়ে পড়েন ।
উদ্ভুত পরিস্থিতির নাজুকতা লক্ষ্য করে
আপাতত স্বশস্ত্র সংগ্রাম স্থগিত রেখে এ পর্যন্ত যুদ্ধে ইংরেজদের আগ্রাসনে
যে পরিমানে আলেম উলামা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষয় হয়েছে
তার শুন্যস্থান পূরণ করতে
শ্যামলী (শামেলী) যুদ্ধের সেনাপতি হযরত কাসেম নানুথবী রাঃ
পুনঃরায় জেহাদী চেতনাকে ফিরিয়ে আনতে ও
মুসলমানদের ঈমান আক্বীদা সংরক্ষণের জন্য দেওবন্দের মাটিতে
সরকারের প্রভাব মুক্ত "দারুল উলুম দেওবন্দ" নামে ১৮৬৬ সালে একটি ঐতিহাসিক দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন।
[0:1:সেখান থেকে শুরু হয় আন্দোলনের নতুন মাত্রা ।]
দারুল উলুম দেওবন্দের প্রথম ছাত্র
শায়খুল হিন্দ মাওঃ মাহমুদুল হাসান দেওবন্দী রাহঃ যার নেতৃত্বে
সংঘটিত হয় ঐতিহাসিক রেশমী রুমাল আন্দোলন ।
এই আন্দোলনের ইস্যুতে তত্কালিন মক্কার গাদ্দার গভর্ণর
শরিফ হুসাইন শায়খুল হিন্দ রাহঃকে ইংরেজদের হাতে তুলে দেয় ।
ইংরেজরা তখন তাঁকে মাল্টার দিপে কারাবন্দী করে রাখে ।
বন্দীর সময় শায়খের ছাত্র হুসাইন আহমদ মাদানী রাহঃ নবী সাঃ এর রওজা মোবারকের দিকে চেয়ে চোখের অশ্রু ফেলতে ফেলতে বলেছিলেনঃ চমকতা রহে তেরে রওজা কা মানজর.....।
¤ চমকিতে থাকুক আপনার রওজার দৃশ্যখানী ।
¤ নিরাপদ হোক আপনার রওজার বেষ্টনী ।
¤ দান করা হোক মোদেরে জজবায়ে আবু জর ও বেলালী ।
(রাজিঃ)
অতঃপর হুসাইন আহমদ মাদানী রাহঃ স্বীয় শায়খের সাথে
স্বেচ্ছায় কারাভোগ গ্রহন করেন ।
মাল্টার জেলে শায়খুল হিন্দকে নির্জন ঘরে নিয়ে
লোহার শিক গরম করে কোমর থেকে হাটু পর্যন্ত দাগ দিত
এবং বলত হে মাহমুদ হাসান !
তুমি ইংরেজদের পক্ষালম্বন কর ।
তিঁনি অজ্ঞান হয়ে যেতেন ।
যখন জ্ঞান ফিরে পেতেন তখন বলতেনঃ হে ইংরেজ জাতী !
আমার শরীরের চামড়া গলে যেতে পারে ।
চামড়া তুলে নেয়া যেতে পারে তবুও তোমাদের পক্ষে ফতোয়া দিব না ।
আমি হযরত বেলাল রাজিঃ এর উত্তরসূরী ।
©somewhere in net ltd.