প্রাক্তন

০৮ ই নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ৮:০৯

- অভ্যাসটা গেলো না আপনার। সেই ভোরবেলা কফির মগ হাতে ছাদে।

- মানুষ অভ্যাসের দাস, অভ্যাস মানুষের না। তাই অভ্যস্ত আমি।

- কষ্ট, অভিমান, ব্যর্থতা, এই তিনটে কি এমন সাহায্য করল যে আমার কাছ থেকেই চেয়ে নেয়ার দাবী করলেন? কোন প্রেমিক হয়তো কখনও এই তিনটে জিনিস তার প্রেমিকার কাছে চায়নি আপনিই প্রথম।

- কবিতা। এর ঊর্ধ্বে কিছু পাইনি এখনো। আর পাওয়ারও ইচ্ছে নেই।

- খারাপ আছেন?

- বেশ খারাপ আছি।

- আমি কেমন আছি জানতে চাইবেন না?

- ইচ্ছে নেই, আমি আবার ইচ্ছের বিরুদ্ধে কিছু জানতে পারিনা।

- দুই বছর যোগাযোগ বিহীন। একটা মেসেজ দিলে কি এমন ক্ষতি হতো? কবি সত্ত্বা কি হারিয়ে ফেলতেন?

- আবার মায়ায় জড়াতে চাইনা আমি। আমি এক সত্ত্বা আছি থাকবো।

- অনেকদিন আপনাকে দেখিনা। আগে তো তাও হাসপাতাল যেতেন নিয়ম করে, নিম্নেও চোখ দুটি আমাকে দেখিয়ে আসতেন, কিংবা বুকে ব্যথার জন্য। এখন তো সেই চোখ দুটিও আর দেখিনা। শেষমেশ বেহায়ার মতো নিজেই আপনার পাশের বাসায় চলে আসলাম। অত্যন্ত দূর থেকে তো দেখতে পারবো।

- তখন চোখ ভালো রাখার ইচ্ছে ছিল বলে। তবে এখন নেই। বুকে তখন প্রকৃতি ব্যথা দিতো বলে যেতাম, এখন নিজেই সেই ব্যথার জন্য দায়ী তাই হাসপাতাল ডাক্তার দেখাই না আর।

- অভিমানের দেয়ালটা এতটা শক্ত কবে হলো?

- কষ্ট জমতে জমতে একদম মরচে পড়ে গেছে। মরচে পরিষ্কার করার মতো কেউ নেই, তাই এতটা শক্তি পেয়েছে সে।

- দোষ বা ভুল, আমারই ছিল।

- আমি জানিনা। আর কখনও জানার ইচ্ছেও হয়নি।

- ফিরতে চাই?

- কোনো পথ অবশিষ্ট নেই এখনো।

সামনে এগিয়ে গেলাম। পিছু ফিরে থাকানোর কোনো ইচ্ছে নেই। সব সম্পর্ক যে পূর্ণতা পাবে সেটাও ঠিক না। সবকিছুর পূর্ণতা পেলে বেঁচে থাকার ইচ্ছে নিঃশেষ হয়। আমি মরতে চাইনা, আরো বাঁচতে চাই।
কিছু সম্পর্ক এভাবেই পিছু ফিরে ডাকে শুধু অন্ধকারে। আমার ভোর থেকে সন্ধ্যা বর্তমানের জন্য। ঠিক রাতটাই অতীতের জন্য শুধু। অতীত তাই শুধু রাতেই আসে, কিছু কষ্ট দিয়ে ভোরবেলা আবার হারিয়ে যায়। আবার বর্তমান আসে। এভাবেই চলছে দিনকাল গতিবিহীন, একটা অস্থায়ী ঠিকানা বিহীন।

০ টি +০/-০