নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একজন মানুষ হিসাবে আমার সবচেয়ে বড় পরিচয়: আমি একজন মুসলিম। মুসলিম পরিচয় বিহীন বাঙ্গালী হওয়ার কোন ইচ্ছে আমার নেই।

সত্য খুঁজিয়া বেড়াই

সকল প্রশংসা মহান আল্লাহ তায়ালার, আমি আরও বেশী জানতে, শিখতে, অর্জন করতে চাই, মহান আলাহ রব্বুল আলামিনের নিকট চাওয়া, তিনি যেন আমাকে সঠিক জ্ঞান দান করেন

সত্য খুঁজিয়া বেড়াই › বিস্তারিত পোস্টঃ

রুম পরিচিতি

২৮ শে মে, ২০১৭ সকাল ১১:০০

পবিত্র কোরান ও হাদিস অনুযায়ী, সাধারণভাবে রুম হচ্ছে খ্রিস্টান সম্প্রদায়। কিন্তু সেখানে শ্রেণীবিভাগ রয়েছে। পবিত্র কোরান অবতীর্ণ হওয়ার সময় রুম ছিল কন্সট্যান্টিনোপলে এবং সেই রুমের সাথে পারস্য সাম্রাজ্যের যুদ্ধ চলছিল। তাই, আমরা সহজেই বুঝতে পারি, পবিত্র কোরানে যে রুমের কথা বলা হয়েছে, সেটা হলো গ্রীকভাষী পূর্ব রুম বা বায়জেন্টাইন সাম্রাজ্য অর্থাৎ অর্থোডক্স খ্রিস্টান সম্প্রদায়।
কিন্তু হাদিস সাহিত্যে রুমের বিষয়টি বিস্তৃত করা হয়েছে। আমরা জানি, হাদিস সাহিত্য হলো পবিত্র কোরানের ব্যাখ্যা। তাই সেখানে অনেক কিছুই বিস্তৃতভাবে বর্ণিত হয়েছে। যেমনঃ রিবা। পবিত্র কোরান অনুযায়ী, রিবা হচ্ছে সুদের লেনদেন। কিন্তু হাদিস সাহিত্যে রিবার বিষয়টি বিস্তৃত হয়েছে এবং বলা হয়েছে যে, ব্যবসায় দু'নম্বরী করা বা ক্রেতাকে ঠকানোও একপ্রকারের রিবা। একইভাবে, রুমের বিষয়টিও হাদিস সাহিত্যে বিস্তৃত হয়েছে। হাদিস সাহিত্যে আরো একটি রুমের কথা বলা হয়েছে যা বায়জেন্টাইন সাম্রাজ্য বা অর্থোডক্স খ্রিস্টান নয়। সেটা হলো ল্যাটিনভাষী পশ্চিম রুম সাম্রাজ্য যারা মূলত মুশরিক ছিল ও পরবর্তীতে খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করে।
পূর্বরুমঃ
পূর্বরুম বা বায়জেন্টাইন সাম্রাজ্য ছিল অর্থোডক্স খ্রিস্টাবলম্বী। তাদের রাজধানী ছিল বর্তমান তুরস্কের ইস্তাম্বুলে যার পূর্বনাম ছিল কন্সট্যান্টিনোপল। সম্রাট কন্সট্যান্টাইন খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণের পর এই শহর তৈরী করেন বিধায় এর নাম দেয়া হয় কন্সট্যান্টিনোপল। রাসুলুল্লাহ হযরত মুহাম্মদ (সা)-ও এই শহরের নাম কন্সট্যান্টিনোপল (আরবিতে কুন্সতুন্তিনিয়া) বলেছিলেন। তাই এই শহরকে কন্সট্যান্টিনোপল বলা একটি সুন্নত কাজ, ইস্তাম্বুল নয়।
রাসুলুল্লাহ (সা) ভবিষ্যতবাণী করে গিয়েছিলেন যে, অবশ্যই মুসলিমরা একদিন কন্সট্যান্টিনোপল বিজয় করবে। তিনি সেই কন্সট্যান্টিনোপল বিজয়ী মুসলিম বাহিনীর প্রশংসা করেন, সেই মুসলিম বাহিনীর নেতার প্রশংসা করেন।
রাসুলুল্লাহ (সা) এর নব্যুওয়াতের প্রাথমিক যুগে আন্তর্জাতিক বিশ্বের পরিস্থিতি ছিল ভয়াবহ। সেসময় দুই পরাশক্তি বায়জেন্টাইন সাম্রাজ্য ও পারস্য সাসানিদ সাম্রাজ্যের মধ্যে যুদ্ধ চলছিল। বায়জেন্টাইন সাম্রাজ্য ছিল একেশ্বরবাদী সাম্রাজ্য। অন্যদিকে, পারস্য সাম্রাজ্য ছিল পৌত্তলিক। মক্কার পৌত্তলিক কুরাইশগণ পারস্যের পৌত্তলিক সাম্রাজ্যের অন্তর্গত এবং তারা পারস্যসম্রাটের সাহায্য পেয়ে আসছিল। মক্কার নব্য অসহায় মুসলিমগণ তখন একেশ্বরবাদী বায়জেন্টাইন সাম্রাজ্যের পক্ষে অবস্থান নেয় যেহেতু তারা তওহীদপন্থী। মক্কার পৌত্তলিকরা যখন মক্কার অসহায় মুসলিমদের উপর ভয়াবহ অত্যাচার শুরু করে দেয়, তখন মুসলিমদের হিজরতের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। কিন্ত মদিনার দরজা তখন মুসলিমদের জন্য বন্ধ ছিল। কারণ, মক্কার পৌত্তলিকদের সাহায্যকারী হলো পারস্য সাম্রাজ্য। মদিনা তাই ভীত ছিল।
মক্কার অসহায় মুসলিমগণ তখন বায়জেন্টাইন সাম্রাজ্যের অন্তর্গত অর্থোডক্স খ্রিস্টান রাজ্য আবিসিনিয়ায় হিজরত করেন। আবিসিনিয়া মুহাজির মুসলিমদেরকে পৌত্তলিক মক্কার বিরুদ্ধে সামরিক নিরাপত্তা প্রদান করে। যখন আবিসিনিয়া মুসলিমদের পক্ষে অবস্থান নেয়, তখন মদিনার দরজাও মুসলিমদের জন্য উন্মুক্ত হয়ে যায়। কারণ, আবিসিনিয়া বায়জেন্টাইন সাম্রাজ্যের অধীন। তাই তাদের আর পারস্য সাম্রাজ্যের আক্রমণের ভয় থাকে না। অর্থাৎ আল্লাহ সুবহানওয়াতালা রুমের দ্বারা দ্বারা প্রাথমিক যুগের অসহায় মুসলিমদের রক্ষা করেন। নইলে মুসলিম জাতি মক্কার পৌত্তলিকদের দ্বারা বিলুপ্ত হয়ে যেত।
আল্লাহ সুবহানওয়াতালা সুরা রুমে রুমের বিজয় ভবিষ্যতবাণী করেছেন এবং সে বিজয়ে মু'মিনদের উল্লাস প্রকাশ করার কথা ঘোষণা করেছেন। সেসময় পারস্য সাম্রাজ্য বায়জেন্টাইনকে প্রায় নাস্তানাবুদ করে ফেলেছিল। তাই পবিত্র কোরানের এই আয়াত অবতীর্ণ হলে অবিশ্বাসী সম্প্রদায় ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করতে থাকে আর মুনাফিকরা সন্দেহে পড়ে যায়, "এটা কীভাবে সম্ভব!" কিন্তু আল্লাহর ঘোষণা মানে আল্লাহর ঘোষণা। পবিত্র কোরানের ভবিষ্যতবাণীর পরপরই খেলা ঘুরে যায়। বায়জেন্টাইন সম্রাট হিডাক্লিয়াসের বুদ্ধিমত্তা ও সামরিক দক্ষতার কাছে পারস্য সাম্রাজ্যকে পরাজয় স্বীকার করে নিতেই হয়। যদি পারস্য সেই যুদ্ধে জিতে যেত, তবে খ্রিস্টান ধর্মের অস্তিত্ব বিলুপ্ত হয়ে যেত। তাই খ্রিস্টানদের চোখে এই যুদ্ধ এমন একটি পবিত্র যুদ্ধ যা খ্রিস্টান ধর্মকে রক্ষা করেছিল। বায়জেন্টাইন সাম্রাজ্যের বিজয়ে মুসলিমরাও উল্লাস প্রকাশ করেছিল এবং রাসুলুল্লাহ (সা) মদিনাকে মুসলিম দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সমর্থ হয়েছিলেন। মক্কার পৌত্তলিক কুরাইশগণ পারস্য সাম্রাজ্যের পরাজয়ে ভেঙে পড়ে এবং পারস্যের সাহায্যও হারিয়ে ফেলে। ফলে তারা মুসলিমদের সাথে "হুদাইবিয়ার চুক্তি" করতে বাধ্য হয় যে চুক্তিকে পবিত্র কোরান মুসলিমদের স্পষ্ট বিজয় বলে ঘোষণা করে এবং তৎকালীন অত্যাচারী ইহুদি রাস্ট্র খাইবার বিজয়ের পর মুসলমানরা বিনা বাঁধায় মক্কা বিজয় করতে সমর্থ হয়।
সুতরাং, বায়জেন্টাইন রুম বা অর্থোডক্স খ্রিস্টানদের বিজয় এবং মুসলিমদের বিজয় পরষ্পর সম্পর্কযুক্ত। অর্থোডক্স খ্রিস্টানদের বিজয়ে ইসলামের চাঁদ উদিত হয়েছিল এবং সেই চাঁদ ধীরে ধীরে বড় হয়ে একটি পূর্ণ শক্তি হিসেবে ভূরাজনীতিতে আবির্ভূত হয়েছিল।
সুরা রুমে বর্ণিত হয়েছে, "পূর্বে ও পরের সবকিছু আল্লাহরই হাতে।" অর্থাৎ যা পূর্বে হয়েছিল, তা পরে আবার হবে। অর্থোডক্স খ্রিস্টান আবার বিজয়ী হবে এবং মুমিন মুসলিমদের জন্য তা আশিরবাদ বয়ে নিয়ে আসবে।
পবিত্র কোরান নাযিলের সময় পূর্বরুম ছিল আনাতোলিয়ায় বা বর্তমান তুরস্কে। অটোমান সাম্রাজ্য কন্সট্যান্টিনোপল দখল করে রুমকে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। অটোমান সাম্রাজ্য যেটা করেছিল, সেটা নিন্দনীয়। অটোমানরা ছিল তুর্কজাতি। তারা আরবদের কাছ থেকে খিলাফতব্যবস্থা কেড়ে নিয়েছিল। হাদিস সাহিত্যে রয়েছে যে, যদি মাত্র দুজন কুরাইশ ব্যক্তিও জীবিত থাকে, তবে তাদের একজন মুসলিম জাহানের খলীফা হবে। কারণ, আল্লাহ সুবহানওয়াতালা কুরাইশ বংশের হাতে এই মহান দায়িত্ব অর্পন করেছেন এবং তাদেরকে কা'বা শরীফের খাদেম করেছেন। অথচ মধ্য এশিয়া থেকে মিসটেরিয়াস শক্তি নিয়ে এসে একটি জাতি হঠাৎ করে আরবদের কাছ থেকে খিলাফতব্যবস্থা কেড়ে নিয়ে নিজেদের করে নেয় এবং তাকে ন্যায় প্রমাণ করার জন্য কন্সট্যান্টিনোপল আক্রমণ করে ও বায়জেন্টাইন রুম সাম্রাজ্যকে ধ্বংস করে এবং নিজেদেরকে হাদিস সাহিত্যে ভবিষ্যতবাণীকৃত কন্সট্যান্টিনোপল বিজয়ী মুসলিম দল হিসেবে ঘোষণা করে। আর ততৎকালীন আলেম ওলামাগণও নিজেদের জ্ঞানের মাথা খেয়ে সুলতান ফাতেহর সেই তুর্কি দলকেই কন্সট্যান্টিনোপল বিজয়ী সেই বাহিনী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। অথচ, সুনান আবু দাউদের সহীহ হাদিস সাহিত্যে স্পষ্ট উল্লেখ আছে, কন্সট্যান্টিনোপল বিজয় হয়ে মালহামার পর এবং ইহুদিরাজ মিথ্যে মসীহ দাজ্জাল আগমণের কয়েক মাস বা বছর আগে। যা স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে অটোমান সাম্রাজ্যের এই দাবী ছিল মিথ্যে এবং তারা এটা করেছিল নিজেদের খিলাফতব্যবস্থাকে মুসলিম বিশ্বের কাছে ন্যায়ভিত্তিক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে। তারা অর্থোডক্স খ্রিস্টানদের উপর অত্যাচার করতে থাকে। অর্থোডক্স খ্রিস্টানদের অতি পবিত্র উপাসনালয় হাগিয়া সোফিয়া দখল করে সেটাকে ক্যাথেড্রাল থেকে মসজিদে রূপান্তর করে। অর্থোডক্স খ্রিস্টানদের রাজধানী কন্সট্যান্টিনোপলকে মুসলিম খিলাফতের রাজধানীতে পরিণত করে। অর্থোডক্স খ্রিস্টান নারীদের দাস বানিয়ে নিজেদের লালসার স্বীকার বানায়। বায়জেন্টাইন রুম বা অর্থোডক্স খ্রিস্টানরা তখন পূর্ব ইউরোপ ও রাশিয়ায় হিজরত করতে থাকে। একটিদিনও নেই যেদিন অটোমান সাম্রাজ্য রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ না করে থেকেছে। তারা অর্থোডক্স নারীদের দাস বানিয়ে তাদের গর্ভ থেকে হওয়া সন্তানদেরকে অর্থোডক্স খ্রিস্টানদের বিরুদ্ধেই যুদ্ধে পাঠিয়েছে। তারা শুধুমাত্র শীতকাল ব্যতীত সবসময়ই রাশিয়ার সাথে যুদ্ধে লিপ্ত থাকত। কারণ, শীতকালে যুদ্ধ করা সম্ভব ছিল না, তাই তারা তখন বসন্তকালীন যুদ্ধের প্রস্তুতি গ্রহণ করত।
সুতরাং, রুম চলে যায় রাশিয়ায়। রাশিয়ায় উষ্ণজলের সমুদ্রের খুব অভাব। কিন্তু সেসময় নৌবাহিনীই ছিল ক্ষমতার উৎস। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্রিটেন ও ফ্রান্স রাশিয়াকে লোভ দেখায় যে, তাদের পক্ষে যুদ্ধ করলে অটোমান সাম্রাজ্য অর্থাৎ বর্তমান তুরস্ক তাদের দিয়ে দেয়া হবে। তুরস্ক পাওয়া মানে কৃষ্ণসাগর পাওয়া। রাশিয়া তাই এ প্রস্তাবে রাজি হয়। কিন্তু যুদ্ধের পর পশ্চিমারা ইহুদিদের দ্বারা রাশিয়ায় বলশেভিক রেভ্যুলেশন ঘটায়। ফলে রাশিয়ার আর তুরস্ককে পাওয়া হয়না বরং নিজেরই অস্তিত্ব হারিয়ে নাস্তিক সোভিয়েত ইউনিওনে পরিণত হয়। সোভিয়েত ইউনিওন সৃষ্টি করা হয়েছিল রাশিয়াকে তথা অর্থোডক্স খ্রিস্টান বা রুমকে ধ্বংস করার জন্য। সোভিয়েত ইউনিওন রাশিয়ার একমাত্র উষ্ণসমুদ্রের উৎস ক্রিমিয়াকে ইউক্রেনের কাছে হস্তান্তর করে যাতে রাশিয়ার পরাশক্তি হয়ে ওঠার শেষ সম্ভাবনাকেও ধ্বংস করে রাশিয়াকে সম্পূর্ণভাবে পঙ্গু করে দেয়া যায়। যখন ইহুদিরা নিশ্চিত হলো, রুম শেষ, তখন তারা সোভিয়েতকে ভেঙে দিয়ে দলে দলে ইজরাইলে পাড়ি দিল। কিন্তু তারাও পরিকল্পনা করে আর আল্লাহও পরিকল্পনা করেন। আর আল্লাহ শ্রেষ্ঠ পরিকল্পনাকারী। রাশিয়া সেই ধ্বংস থেকে পুনরায় গড়ে উঠতে থাকে এবং ভ্লাদিমির পুতিনের নেতৃত্বে পুনরায় একটি পরাশক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়। শুধু পরাশক্তি হিসেবেই নয়, বরং বিশ্বাসী পরাশক্তি হিসেবে। রাশিয়া সোভিয়েত শয়তানিজম থেকে পুনরায় অর্থোডক্স খ্রিস্টানের পথে, রুমের পথে আসতে শুরু করে। যেখানে ভ্যাটিকান সিটির পোপ পর্যন্ত ইঞ্জিলে বর্ণিত সোডোম ও গোমরাহর শিক্ষা ভুলে, আল্লাহর আদেশকে অমান্য করে সমকামীতার পক্ষে অবস্থান নেয়, সেখানে রাশিয়া ঘোষণা করে, নো গে, নো লেসবিয়ান। নো এলজিবিটি ইন রাশিয়া। যেখানে পশ্চিমারা নিজেদের খ্রিস্টান পরিচয়ের চেয়ে সেক্যুলার এথিস্ট পরিচয় দেয়াটাকেই সাইন্টিফিক ও যুক্তিযুক্ত মনে করে আনন্দ প্রকাশ করে বলে, "খোদা এখন সভ্যতার যাদুঘরে থাকে"; সেখানে রাশিয়ায় "খোদা নেই" বললে গ্রেফতার করা হয়। রাশিয়ার ধর্মীয় নেতা বলেন, "রাশিয়া জানে ধর্মহীন রাস্ট্র কেমন হয়। তাই রাশিয়া প্রত্যাবর্তন করছে বিশ্বাসের পথে।"
রাশিয়া হলো সেই রুম যে রুম পুনরায় বিজয় অর্জন করবে এবং মুমিন মুসলমানদের জন্য সুসংবাদ ও আশিরবাদ বয়ে নিয়ে আসবে। আশিরবাদ ইসলামের নতুন চাঁদ উদিত হওয়ার আর সুসংবাদ খোলাফায়ে রাশেদিনের সেই সত্যিকারের ইসলামী শাসনতন্ত্র পুনরায় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার।
পশ্চিম রুমঃ
পশ্চিম রুম হলো আরেকধরণের রুম যে রুমের কথা হাদিস শরীফে বর্ণিত হয়েছে। ইটালির রোমে অবস্থিত ল্যাটিনভাষী পশ্চিম রুম সাম্রাজ্য যারা ছিল মূলত পৌত্তলিক। কিন্তু পরবর্তীতে খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করে। যদিও তারা খ্রিস্টান হয়ে যায়, তবুও তারা তাদের পৌত্তলিক সভ্যতাকে ভুলতে পারছিল না। তারা এক নতুন খ্রিস্টান সেক্টের উদ্ভব ঘটায় যা মূল অর্থোডক্স খ্রিস্টান থেকে ভিন্ন। আর সেটা হলো পশ্চিমা খ্রিস্টান (ক্যাথলিক ও প্রোটেস্টেন্ট)। পশ্চিমা খ্রিস্টানরা তাদের পৌত্তলিকতাকে ভুলতে না পারায় তাদের সভ্যতা, সংস্কৃতি এমনকি ভ্যাটিকান সিটির পবিত্র গীরজাতেও মূর্তি ও মূর্তির বেদি রেখে দেয় এবং সেগুলোকেও উপাসনার অংশ ভাবে। পশ্চিমা খ্রিস্টানরা এক অদ্ভুত জিনিস করে যা পৃথিবীর ইতিহাস আগে কখনো দেখেনি। সেটা হলো ইহুদি-খ্রিস্ট মিত্রতা। ইহুদিরা চিরকাল খ্রিস্টানদের ভ্রান্তবাদী বলে এসেছে এবং খ্রিস্টানরা ইহুদিদের নিজেদের ঈশ্বর হত্যাকারী বলে এসেছে। তারা পরষ্পরের শত্রু ও পরষ্পরকে ঘৃণার দৃষ্টিতে দেখে এসেছে। নিজেদের বিষয়কে যথার্থ প্রমাণ করতে বাগবিতণ্ডা করে এসেছে। এমনকি রাসুলুল্লাহ (সা) এর সামনেও তারা পরষ্পরের বিরুদ্ধে বাগবিতণ্ডা করেছে। তারা কখনো বন্ধু ছিল না! কিন্তু পশ্চিমা খ্রিস্টানরা ইতিহাসে প্রথমবারের মত ইহুদিদের সাথে বন্ধুত্ব স্থাপন করে। ভ্যাটিকান পোপ ঘোষণা করে, ইহুদিদের ঘৃণা করা যাবেনা, দায়ী করা যাবেনা। বরং তাদের সাথে মিলিত হয়ে পবিত্র ভূমিতে ইহুদিদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মিলিতভাবে কাজ করে যেতে হবে। একে বলে "যায়োনিজম" যখন কিছুসংখ্যক ইউরোপীয় খ্রিস্টান ও কিছুসংখ্যক ইউরোপীয় ইহুদি মিলে ইহুদি খ্রিস্ট যায়োনিস্ট এলায়েন্স গঠন করে যার প্রধান লক্ষ্য ছিল পবিত্র ভূমি বায়তুল মুকাদ্দাস বা ফিলিস্তিন দখল করা। পবিত্র কোরানের ভাষ্য অনুযায়ী, এই যায়োনিস্টরাই হলো ইয়াজুজ মাজুজ যারা খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করে পশ্চিম রুম বা পশ্চিমা খ্রিস্টানদের সাথে মিশে যায় আর ইহুদি ধর্ম গ্রহণ করে বনী ইসরাইলিদের সাথে ১৩ তম গোত্র হিসেবে মিশে যায়।
পশ্চিমা খ্রিস্টানদের সামরিক ও অর্থনৈতিক রাজধানী ছিল ব্রিটেনে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর তা চলে যায় যুক্তরাস্ট্রে। এই রুমের সাথেই ওহাবী মুসলিমরা চুক্তি করেছিল তাদের শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করতে। ওহাবী মুসলিম ও পশ্চিম রুমের দ্বারাই সৃষ্টি হয়েছিল তালেবান, আল-কায়েদা, আল-নুসরার মত জংগী দলগুলো যাদের প্রধান লক্ষ্য ছিল তেলসম্পদ সমৃদ্ধ অঞ্চলসমূহকে অশান্ত করা যাতে গণিমত হিসেবে সেগুলো লাভ করা যায়। যুদ্ধগুলো হলো আফগান যুদ্ধ, ইরাক যুদ্ধ এবং লিবিয়া যুদ্ধ। লিবিয়া যুদ্ধে গাদ্দাফিকে অন্যায়ভাবে হত্যা করার পর সমস্ত ক্রেডিট পশ্চিমা খ্রিস্টানরা নিয়ে যায়। তারা ঘোষণা করে, "ক্রস জয়যুক্ত হয়েছে।" অর্থাৎ ন্যাটোই বিজয় লাভ করেছে। হিলারি ক্লিনটল হাসতে হাসতে বলল, "আমরা এলাম, দেখলাম, সে (গাদ্দাফি) মরে গেল।"
তারপর পশ্চিম রুম ওহাবী মুসলিমদের ধোঁকা দিল। এতদিন জংগী ইন্ডাস্ট্রি ছিল সৌদি-যুক্তরাস্ট্র প্রজেক্ট। এবার যুক্তরাস্ট্র সৌদিকে বাদ দিয়ে দায়েশ তৈরী করল যা ছিল তুরস্ক-যুক্তরাস্ট্র প্রজেক্ট। দায়েশের অন্যতম লক্ষ্য ছিল সৌদি আরব দখল করা। এখন, সৌদি আরব ধীরে ধীরে সত্যিকারের বন্ধুরুম রাশিয়ার দিকে আসছে। যদি সৌদি আরব রাশিয়ার সাথে মিলে তেল বয়কট করে, তবে তা হবে সিম্বলিকালি একজন মুসলিমের "না ক্রস নয়, বরং মুসলিমই বিজয়ী হয়েছে" ঘোষণা করা। পশ্চিম রুম মুসলিম ও পূর্বরুমের বিরুদ্ধে মালহামার প্রস্তুতি নিচ্ছে। আর সুরা রুম থেকে আমরা জানি, এ যুদ্ধে পূর্বরুম ও মুসলিমই বিজয়ী হবে ইন শা আল্লাহ। মালহামার পর বা চলাকালীন মুসলিমরা কন্সট্যান্টিনোপল বিজয় করবে এবং হাদিসের ভবিষ্যতবাণী পূর্ণ করবে। কন্সট্যান্টিনোপল বিজয় মানে তুরস্ককে ন্যাটো থেকে মুক্ত করা। সেই ককন্সট্যান্টিনোপল বিজয়ী মুসলিম নেতা হাগিয়া সোফিয়াকে পুনরায় অর্থোডক্স খ্রিস্টানদেরকে ফিরিয়ে দেবে।
এসব ব্যপারে আল্লাহ ব্যতীত অধিক জ্ঞানী কেউ নয়

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.