![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সকল প্রশংসা মহান আল্লাহ তায়ালার, আমি আরও বেশী জানতে, শিখতে, অর্জন করতে চাই, মহান আলাহ রব্বুল আলামিনের নিকট চাওয়া, তিনি যেন আমাকে সঠিক জ্ঞান দান করেন
তখন আমি অনেক ছোট। ক্লাস ফাইভে পড়ি। প্রতিবেশী এক মহিলা গলায় ফাঁসি লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে শুনে দেখতে গিয়েছিলাম। গিয়ে দেখি মৃত লাশ খাটের উপর শুইয়ে রেখেছে। লাশের চোখ জোড়া বড় বড় হয়ে খুলে আছে। জিব্বাটা অনেকখানি বের হয়ে আছে। ভয়ঙ্কর চেহারাটা আমার মনের ভেতর গেঁথে গিয়েছিল। রাতে ঘুমানোর আগে অনেক ভয় লাগত। মাঝরাতে ঘুম ভেঙে গেলে ভয়ে অস্থির হয়ে যেতাম। চিন্তা লাগতঃ আমি মরে গেলে যখন আমাকে কবরে রেখে সবাই চলে যাবে তখন না জানি কত ভয় লাগবে। আজ ইনশাআল্লাহ কবর জীবনের ভয়ভীতি নিয়ে লিখব। আমার মত যারা ভয় পান, লেখাটি পড়ে আশা করি অনেক বেশী উপকৃত হবেন, আই মিন, ভয় কাটিয়ে উঠতে লেখাটা বেশ কাজে লাগবে আশা করি।
.
নাস্তিকরা বিশ্বাস করে, মানুষ মরে গেলে, পঁচে-গলে শেষ হয়ে যায়। তার কোন অস্তিত্ব থাকেনা। এই ধারণা সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক। কারণ, শক্তির কোন ধ্বংস বা বিনাশ নেই। শক্তি কেবলমাত্র এক রূপ থেকে অন্য রূপে পরিবর্তিত হতে পারে। তাপ, আলো, শব্দ যেমন একধরনের শক্তি, মানুষের আত্মাও একধরনের শক্তি। তাই বলতে পারি, আত্মা অমর , চিরস্থায়ী।
এবার আসি ভয় প্রসঙ্গে। মানুষ যেন দীর্ঘদিন সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে পারে সেজন্য আল্লাহ মানুষের শরীরে একধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সেট করে দিয়েছেন।
.
মানুষ যদি লক্ষ্য করে, চোখ অথবা মুখের উপর কোন আঘাত আসছে তখন অটোমেটিক তার হাত উঁচু হয়ে যায় এবং আঘাত প্রতিহত করে। শরীরের সেনসেটিভ অঙ্গ যেখানে আঘাত লাগলে বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে, সে অঙ্গে আঘাত লাগার সম্ভাবনা দেখলে হাত সব সময় সে আঘাত প্রতিহত করতে চেষ্টা করে।
.
একটু খেয়াল করলে দেখবেন, দুই হাতের পেশীতে এবং পিঠে কেউ যদি ঘুষি দিতে চায় অথবা লাঠি দিয়ে আঘাত করতে চায় তখন সে অংশের পেশী অটোমেটিক শক্ত হয়ে যায়। আল্লাহ মানুষের শরীরে যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা সেট করে দিয়েছেন সেটা আঘাত প্রতিহত করতে পেশী শক্ত করে দিচ্ছে যেন আঘাতের ফলে শরীরের মাংস থেঁতলে যেতে না পারে।
.
পিচ্ছিল স্থানে আছাড় খেলে অথবা দূর্ঘটনাক্রমে কোন উঁচু স্থান থেকে নিচের দিকে পরে যেতে থাকলে, মূহুর্তের মধ্যে শরীরের ভেতর রক্তের মধ্যে একধরনের তরল পদার্থ মিশিয়ে দেয়া হয়, এই তরল পদার্থের কাজ হলঃ কোন স্থানে কেটে গেলে রক্তকে দ্রুত জমাট বাঁধতে সাহায্য করা। কেউ যদি ঘুমের মধ্যেও স্বপ্নে দেখে যে উঁচু জায়গা থেকে পরে যাচ্ছে তাহলেও ঐ তরল পদার্থ রক্তে মিশিয়ে দেয়া হয়।
.
মানুষ যখন নির্জন স্থানে রাতের বেলা গমন করে তখন এক ধরনের ভয় মানুষকে আচ্ছন্ন করে। এই ভয়টাও মানুষের শরীরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার একটা অংশ। শরীরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা মানুষকে ওয়ার্নিং দেয়, জায়গাটা খুব একটা সুবিধার না, যে কোন সময় বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে পারে।
.
কিন্তু মানুষ যখন মারা যায়, তখন শরীরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রয়োজন একদমই ফুরিয়ে যায়, কারন নিরাপত্তা ব্যবস্থার উদ্দেশ্যই ছিল মানুষকে দীর্ঘদিন সুস্থভাবে বাঁচিয়ে রাখা। তাই মানুষের মৃত্যু হয়ে গেলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আর কাজ করে না এবং তখন ভয় বলতেও কোন কিছু থাকবে না।
.
মৃত্যুর পরে একটা ভয় পৃথিবীর সকল মানুষকে তাড়া করবে, সেটা হল শেষ বিচার দিবসে দুনিয়ার জীবনের সকল কর্মকান্ডের হিসাব আল্লাহর নিকট দিতে হবে। মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনের মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছেন, সেদিন ভয়ে কিশোর বালকেরা বৃদ্ধে পরিণত হবে।
.
"যদি তোমরা সেদিনকে অস্বীকার করো, তাহলে আল্লাহর আযাব থেকে কিভাবে তোমরা বাঁচতে পারবে, যেদিন কিশোর বালকরাও বৃদ্ধে পরিণত হবে?"
(৭৩ঃ১৭)
©somewhere in net ltd.