![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
চারণ সাংবাদিক বলতে এমন ব্যক্তিদের বোঝানো হয় যারা স্বপ্রণোদিত হয়ে নাগরিক সাংবাদিক হিসেবে মাঠে কাজ করেন। গবাদিপশু যেমনি খাদ্য সংগ্রহের জন্য বিস্তীর্ণ চারণ ভূমি বা মাঠে বিচরণ করে থাকে।স্তুতিগায়কও চারণ কবি হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন তৃণমূল পর্যায়ে বিস্তৃতি ঘটিয়ে। চারণ সাংবাদিক এমন একজন আদর্শ বা ব্যাপকভাবে গণমাধ্যম কর্মী যারা মফস্বল এলাকায় অর্থাৎ প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিচরণ করে থাকেন। কৃষকের সুখ দুঃখ, গ্রামের মানুষের সংকট সম্ভাবনা, প্রাকৃতিক বিপর্যয়, পরিবেশ দূষণ, সামাজিক নিরাপত্তা, গ্রামের সাধারণ মানুষের সুখ দুঃখ আনন্দ বেদনা। প্রকৃতি , পরিবেশ, গাছপালা, নদী নালা, রূপ বৈচিত্র্য প্রাণ বৈচিত্র্য, তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের আঞ্চলিক ভাষা সংস্কৃতি, কৃষিনির্ভর চাষাবাদের লাভ ক্ষতি, স্বাবলম্বী হওয়ার প্রেরণা, অবকাঠামো উন্নয়ন স্বাস্থ্য শিক্ষা, বিজ্ঞান ভিত্তিক, গ্রামীণ খেলাধুলা, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সাথে সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি, জন নিরাপত্তা। মানুষের ক্যারিয়ারের উন্নয়ন, চারু ও কারুকলা শিল্পের সমস্যা সম্ভাবনা, সাধারণের কর্ম ও জীবনমুখী শিক্ষা , ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষায় সচেতনতা বৃদ্ধি, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ, মাছ , হাঁস মুরগি ও গরু ছাগল ও পশু পাখির যথাযথ পালন, চিকিৎসা সচেতনতা বৃদ্ধি, সমবায় ও যথাযথ জ্ঞানের মাধ্যমে পূঁজি গঠন ও বিনিয়োগ, বিনোদন বন ও বণ্যপ্রাণী সংরক্ষণ, সভ্যতা , মানবিক গুণাবলী গঠনে উদ্বুদ্ধ করা, জমি জমা নিয়ে ঝগড়া ফ্যাসাদ এড়িয়ে যেতে সুষ্ঠু ও যথার্থ প্রতিবেদনের মাধ্যমে সংকট নিরসন কল মানবিক সমাজ গঠন, বাজারে পণ্যের যথাযথ বিপণন, বিদ্যুৎ সুবিধা অসুবিধা , অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা , স্বাস্থ্য সুবিধাবঞ্চিতদের সুবিধার আওতায় আনতে প্রতিবেদন লিখে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ, ধর্ম বর্ণ লিঙ্গ নিয়ে বিভ্রান্তি নিরসনসহ হাজারো সমস্যা সম্ভাবনা তুলে ধরাই চারণ সাংবাদিকের কাজ। আমাকে অনেকেই চারণ সাংবাদিক বলেন এবং চারণ সাংবাদিকতা কি বুঝতে ও জানতে চান তাই এই লেখায় সামান্য কিছু তুলে ধরার চেষ্টা। সময় সুযোগ পেলে ধারাবাহিক লেখার চেষ্টা করবো।চারণ কি ? চারণ সাংবাদিকতা বাংলা ভাষাভাষী সাংবাদিকের মধ্যে যারা তৃণমূল পর্যায়ে কঠোর অধ্যাবসায়, পরিশ্রম এবং ব্যতিক্রমী লেখনীর মাধ্যমে মফস্বল অঞ্চলের মানুষের সুখ দুঃখ অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন বাংলাভাষী অপর মফস্বল সাংবাদিকদের দৃষ্টিতে চারণ সাংবাদিক হিসেবে ফুটে উঠেন। বাংলাদেশের বাইরে এই চারণ সাংবাদিক উপাধি বা সম্বোধন দৃষ্টি আকর্ষিত হয়নি। বাংলা উইকিপিডিয়ায় চারণ সাংবাদিক বিষয়ে উপস্থাপিত তথ্য যা আমার সম্পাদনা যেখানে আমি নিজেকে আড়াল করেছি। ভেবেছিলাম কেউ না কেউ এই লেখা সম্প্রসারিত করে সমৃদ্ধি করবেন। দুঃখ জনক হলেও সত্য তা আর হয়ে উঠেনি। মফস্বল অঞ্চলের সাংবাদিকদের বড় বাধা হচ্ছে - গুছিয়ে লেখে যথাযথ যথার্থ লিখে উপস্থাপন করতে না পারা। জীবনে যত না লিখেছি তার অনেক অনেক বেশি সহযোগী সাংবাদিকদের লিখে দিয়েছি। বড় সমস্যা হচ্ছে এই লিখে দেয়ার প্রেক্ষিতে কিছুদিন গেলে নিজের পরিচিতি সম্প্রসারিত হয়। একপর্যায়ে অহমিকা চলে আসায় তারা আর এগুতে পারেনা। তখন তারা এই সাংবাদিকতাকে পূঁজি করে তদবির বাণিজ্য আবার অনেকে রাজনীতিসহ নানান কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত করে মূল স্রোত থেকে ছিটকে যায়। উপরোক্ত সংকট সৃষ্টির ছাড়াও বড় একটি সংকট সৃষ্টি করে যা আমার কাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে অর্থাৎ আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার এবং তার বা তাদের কর্মকাণ্ড আমার বিরোধী হওয়া মানেই হচ্ছে প্রতিপক্ষ হিসেবে একটি শক্তি লোকসমাজেও যার গুরুত্ব বিবেচনায় তিনিই বড় ভাই মুই কি হনু রে ভাব। এতে সৃজনশীল সাংবাদিকতায় বাধাগ্রস্ত হয়। বাংলাদেশ ব্যতিরেকে বিশ্বের অন্য যেকোনো দেশের বাসিন্দা হলে আমাকে নিয়ে নিশ্চয়ই লেখার আগ্রহ দেখাতো। এক্ষেত্রে অর্থাৎ লেখালেখিতে আমরা এখনো কতো দুর্বল তা সহজেই অনুমেয় হয়। যাই হোক মূল আলোচনায় ফিরে আসি। আমার দৃষ্টিতে একজন চারণ সাংবাদিক হলেন তিনি যিনি মফস্বল অঞ্চলে অগণিত বিষয়ে তার বিচরণ। হাজারো বিষয় আছে যা অযত্নে অবহেলায় পড়ে আছে। মফস্বলে সাংবাদিকতার চারণভূমি । অগণিত উৎস আনাচে কানাচে পড়ে আছে। গাছপালা উদ্ভিদ, পশু পাখি, হাট বাজার, অবহেলিত রাস্তা ঘাট, মানুষের সুখ দুঃখ আনন্দ বেদনা, স্থানীয় রাজনীতি, অপ রাজনীতি, আইনশৃঙ্খলা, প্রকৃতি পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন প্রভাব, খেলাধুলা, সংস্কৃতি ধর্ম তথ্য ইতিহাস ঐতিহ্য সংস্কৃতি অর্থাৎ একটি পত্রিকা অফিসে সকল স্টাফ মিলে যা করেন মফস্বলের সাংবাদিকদের একা আরো অনেক অনেক বিষয় নিয়ে কাজ করতে হয়। অধিকাংশ ক্ষেত্রে নিজের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর মত বিষয়। এত কিছুর পরও পত্রিকা কর্তৃপক্ষ অনেক সংবাদ ফেলে দেন কিংবা পরিত্যাগ করেন। একবারও ভাবা হয়না এই সংবাদটির পেছনে লুকিয়ে ছিল শ্রম ঘাম অভিব্যক্তি যা চিরকালের জন্য হারিয়ে গেল। সকল বাঁধা ডিঙিয়ে বলতে হয় চারণ সাংবাদিক যিনি মফস্বলের এমন একজন সাংবাদিক যিনি তার লেখনীর মাধ্যমে ছোট খাট লেখাও পাঠকের নজরে আনেন। পাশাপাশি তিনি যেকোনো বিষয়কে লিখনী মাধুরী দিয়ে শ্রুতিমধুর করে নিউজ পরিবেশনে সিদ্ধহস্ত বা ওস্তাদ। সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্মভাবে নানা প্রতিকূলতা ডিঙিয়ে নিউজ পাঠকের নজরে আনেন। যদিও এক্ষেত্রে নানান প্রতিবন্ধকতা থাকে। মফস্বলের মানুষ অতি সাধারণ জীবনযাপন করলেও যথাযথ জ্ঞানের অভাবে সব কিছু বুঝতে চান না। কিছু কুচক্রী মহল থাকে যারা সাংবাদিকের যথার্থ লেখা ভুল ভাবে উপস্থাপন করে শত্রু বানিয়ে দেন। এতে প্রতিনিয়ত তাকে চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হয়। এখানে কে বড় সাংবাদিক নিজেকে জাহির করতে একে অপরের সাথে টুক্কাটুক্কি তো রয়েই আছে। একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা ভালোবাসা যেন সোনার হরিণ। তারপরও অনেক মফস্বল সাংবাদিক আছেন যারা সাংবাদিকতায় অবদান রেখে চলেছেন। যাদের উপর সমাজের মানুষের আস্থা আছে। নানা প্রতিকূলতা পাড়ি দিয়ে লিখে থাকেন। আমি মুক্তাগাছা ময়মনসিংহ অঞ্চলের খুব কম বিষয়ই আছে যা লিখি নাই। ১৯৯১ সালের শেষ দিকে লেখালেখি শুরু। সেই সময়ের প্রকাশিত লেখা সংরক্ষণে রাখিনি। এরপর কি ভেবে বা আগামীর কথা ভেবে কাটিং সংরক্ষণ করেছি। তারপরও অনেক কাটিং মিসিং হয়ে গেছে। যা আছে তাও কম নয়। এখন ইন্টারনেট প্রযুক্তির যুগ তাই কাটিং নির্ভর লেখালেখি থেকে বেরিয়ে এসে সোস্যাল মিডিয়ায় সম্পৃক্ত হওয়ার চেষ্টা করেছি। অ্যাক্সেস নিয়েছি ব্লগেও। বিডি নিউজ, সামহোয়্যার ইন ব্লগ, প্রথম আলো ব্লগ, ইংরেজি কাগজ ব্লগ, ন্যাশনাল নিউজসহ অনেক প্লাটফর্মে কাজ করার সুযোগ হয়েছে। প্রথম আলো ব্লগ হারিয়ে যাওয়ায় আমার অনেক লেখাও হারিয়ে গেছে। জীবনে সব চাইতে বেশি লিখেছি ইউকে বিডি নিউজ পোর্টালে। সেই পোর্টালের লেখাও তারা সংরক্ষণ করেনি। এ দুঃখ বলে বোঝানোর মতো না । এতকিছুর পরও কিছু লেখা বিডি নিউজ সংরক্ষণ করে রেখেছেন এজন্য কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। যেসমস্ত ওয়েব সাইট হারিয়ে গেছে সেখানের লেখাগুলোও আর নেই। জীবনে কতো হাজার লেখা হারিয়ে গেছে তা আজ মনেও নেই। যা আছে তাও থাকবে কি না তাও জানা নেই। এখন আর আগের মতো লিখতে মন সাড়া দেয় না। সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে শরীরের অনেক অঙ্গ প্রত্যঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আগের মত পারিনা। নিয়মিত হাঁটা হয় না। জীবনের অর্জিত অর্থ কড়ি প্রায় সবই ব্যয় হয়ে গেছে এসব করতে গিয়ে। এতে বিন্দুমাত্র দুঃখ নেই। সমাজ সমাজের মানুষের জন্য কিছু করতে পেরেছি এর চেয়ে বড় পাওয়া আর কি হতে পারে ভেবে। অনেকেই অনেক কিছু হতে পেরেছেন যা আমি পাইনি। মেধাবী ছাত্র হিসেবে সমকক্ষদের কেউ ইঞ্জিনিয়ার, কেউ ডাক্তার, আমলা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়েছে। চেষ্টা করলে হওতো আমিও তা হতে পারতাম। যদিও ভাগ্যে নেই বলে হতে পারি নাই। এতেও দুঃখ নেই কারণ মানুষ যা চায় সবসময় তা পায় না। নিজের অনেক অভিব্যক্তি ফেসবুক পোস্টে তুলে ধরেছি। মফস্বলের সাংবাদিকই নন সকল সাংবাদিকের কাজ হচ্ছে অপরের বিষয় মেলে ধরা। আমরা পর্দার বাইরে। ফেসবুক বদৌলতে নিজেকে তুলে ধরার সুযোগ হয়েছে তাই আবোল তাবোল বকতেই থাকি। এসব যে প্রলাপ তা বুঝি। হয়তো এই প্রলাপ কারো কাছে সংবেদনশীল। তারপরও নিজেকে মেলে ধরতে চাই সীমাহীন দিগন্তের পথে যেখানে লুকিয়ে আছে আগামীর সম্ভাবনা। এতে হয়তো মুখোশের আড়ালে লুকিয়ে থাকা মনোনেশ দাসকে দেখা যাবে বিবর্ণ চরিত্রে ক্লান্তি আর অবসাদ জীবন যেখানে সারাক্ষণ বিচরণ করে শোক গাঁথা অবচেতন মন। মফস্বল সাংবাদিক হিসেবে নিজের কাজকে সর্বাগ্রে দেখি যেখানে কারো দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে সত্য তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে কমিউনিটিতে যাচাই বাছাই শেষে প্রচারের কাজে ব্যবহার করি। যদিও কখনো পরিমাপ করতে সক্ষম হইনি এসব আদৌ নিউজ কাঠামোয় গড়া কি না। ইন্টারনেট প্রযুক্তির বদৌলতে লেখা ছবি ভিডিও প্রকাশের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক প্লাটফর্মে ছড়িয়ে পড়ছে। চেষ্টা করি এথেকে কমিউনিটির মানুষের মাঝে সংলাপের মাধ্যমে সচেতনতায় শিক্ষণীয় কি না। মফস্বলের সাংবাদিক হিসেবে নির্ভুলভাবে তথ্য উপস্থাপনের চেষ্টা করি। কমিউনিটির মানুষের প্রতি সচেতন হিসেবে দায়িত্ববোধ থেকে সামাজিক সচেতনতায় পরিসর বৃদ্ধিতে প্রধান্য দেই। কারো দ্বারা প্রভাবিত না হয়ে সত্যকে সুন্দর মনে করে নিরপেক্ষতার পথ অনুসরণ করার চেষ্টা করি।
মৌলিক সুবিধাবঞ্চিত মানুষ, অধিকার বঞ্চিত মানুষ, রাজনীতি অর্থাৎ ভিলেজ পলিটিক্স গ্যাড়াকলে পড়া অসহায় মানুষ , অবক্ষয়ের শিকার মানুষ , কুশিক্ষা অশিক্ষা, সামাজিক রোষানলের শিকার, ধর্ম বর্ণ, ক্রিড়া, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি সম্পর্কিত নিউজ বেশি করা হয়। সাংবাদিকতা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় মফস্বলের সাংবাদিকদের ভূমিকা কম নয় কারণ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহি করতে সাহায্য করে। সামাজিক ন্যায়বিচার প্রচারে সাহায্য এবং অন্যায় ও শোষণের বিরুদ্ধে প্রচারণার অংশ যা কমিউনিটিতে ইতিবাচক পরিবর্তনের অংশ।
©somewhere in net ltd.