![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমাদের জাতীয় পতাকা আমাদের আবেগ আর তার সন্মান-অসন্মান।
হিমালয়ের পলিবিধৌত এই বদ্বীপটা নানা চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে আজ বাংলাদেশ। পলি মাটি মানে নরম আর উর্বর মাটি। এই মাটিতে অল্প বা প্রায় বিনা পরিশ্রমেই ফলে সোনার ফসল। আর এজন্যই এই দেশটাকে কবি রবীন্দ্রনাথ বলেছেন সোনারবাংলা। এই দেশের ভূ-প্রকৃতির কারণে এদেশের মানুষে মন সেই পলিমাটর মতোই নরম আর আবেগে পূর্ণ। যে কারণে এখানকার মানুষ অনেকটাই কবি স্বভাবের। বলা চলে স্বভাবকবি।
আমাদের এই দেশের মানুষের আবেগ অনুভূতির প্রকাশটাও লক্ষণীয়। আমাদের আবেগ অনুভূতির প্রকাশ প্রভাব সর্বব্যাপী। আমাদের মা, আমাদের দেশমা, আমাদের ভাষা, আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের জাতীয় পতাকা, আমাদের জাতীয়সঙ্গীত, সব ব্যাপারেই এমনকি আমাদের জাতীয় জীবনের নানান গুরুত্বপূর্ণ দিনে সেই আবেগ যেন আরো বেশি বাঁধভাঙ্গা জোয়ারের মত উপছে পড়ে।
জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিনগুলোতে আমরা জাতীয় পতাকা উত্তোলন করি। জাতীয় পতাকা উত্তোলন সবার জন্য বাধ্যতামূলক নয়; তবে আমরা আমাদের আবেগের কারণে পতাকা উত্তোলন করি। আমরা পতাকা উত্তোলন করি গাড়িতে, বাড়িতে, দোকানে, অফিসে আর নানা প্রতিষ্ঠানে নানা যায়গায়। দেশের আবেগপ্রবণ মানুষের এই আবেগ অনুভূতির বিষয়ে কোনো কথা বলা আমার উদ্দেশ্য নয়। আমার উদ্দেশ্য আমাদের দেশের জাতীয় পতাকা হচ্ছে জাতির মর্যদা-সন্মান আর মননের প্রতীক। আমরা কি আমাদের পতাকার এই মর্যদা সন্মানের বিষয় সম্পর্কে আদৌ জানি? না, সজ্ঞানে আমরা তা উপেক্ষা করি?
জাতীয় পতাকা উত্তোলন বাধ্যতামূলক না হলেও একবার কেউ জাতীয় পতাকা তুললে তা সুর্যাস্তের সাথে সাথে নামানো দেশের আইনি বাধ্য বাধ্যবাধকতা আর জাতীয় পতাকার সন্মানের বিষয়। আর পতাকা একবার উঠানো হলে তা যথা সময়ে না নামানো শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আমি অত্যন্ত দুঃখ আর পরিতাপের সাথে লক্ষ্য করছি যে, আজকাল আমরা সবাই আবেগের জোয়ারে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করি বটে, কিন্ত তা আর সন্মানের সাথে যথাযথ সময়ে না নামিয়ে দিনের পর দিন উত্তোলিত রেখে রঙ বিবর্ণ হয়ে যাওয়া বা ছিড়ে যাওয়া পর্যন্ত ওড়াতেই থাকি। আমাদের জাতীয় পতাকার প্রতি এহেন অবজ্ঞা বা অসন্মান কি অজ্ঞতা না ইচ্ছাকৃত অপরাধ? কথিত এই অপরাধের বিষয়ে আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থার নির্লিপ্ততাও এক্ষেত্রে কম দায়ী নয়। আমি দেশের স্বাধীনতার ৪৫ বছরে, আজও দেখিনি বা শুনিনি যে এই অপরাধ অজ্ঞতার ব্যাপারে দেশের মানুষের জন্য কোনো সচেতনতা বা জাতীয় পতাকার অসন্মানের জন্য আদৌ কারো কোনো শাস্তি হয়েছে। দেশের যে কোনো প্রান্তে এই আইন ভঙ্গের জন্য কারো শাস্তি হলে তা যেমন হতে পারে এক মহান দৃষটান্ত এবং দেশের গণমানুষের জন্য তা হতে পরে পতাকার প্রতি শ্রদ্ধা-সন্মান সচেতনতার একটা শিক্ষা। দেশের কোথাও কি কেউ নেই যিনি এ ব্যাপারে একদিন দৃষ্টান্তমূলক একটা ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করতে পারেন?
এতো গেল পতাকা নামানোর বিষয়। পতাকা তৈরি ও তার সঠিক মাপের ব্যাপারে এবং কে কোথায় কোন মাপের পতাকা কিভাবে উত্তোলন করতে পারবে তারও একটা নিয়ম নিশ্চয়ই আছে। সেই নিয়ম যথাযথভাবে পালন হয় কিনা আমাদের আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বা ম্যাজিষ্ট্রেসি কি এ ব্যাপারে কোনো ভূমিকা নিতে পারেনা?
আমি আশা করি আমার এই লেখা কারো না কারো দৃষ্টিগোচর হবে এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমি চাইনা দেশের মানুষের প্রাণের প্রিয় লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাণের বিণিময়ে অর্জিত আমাদের জাতীয় পতাকার বর্তমান এই অসন্মান অনন্তকাল ধরে চলতেই থাক। সংশ্লিষষ্ট সকলের বোধদয় হোক আর আমাদের প্রাণপ্রিয় এই পতাকার সন্মান সমূন্নত থাকুক।
জয়বাংলা।
জয় বঙ্গবন্ধু।।
আমার সোনারবাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি।।
©somewhere in net ltd.