![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমরা অনেক সময় টিভিতে কোনো আপত্তিকর কিছু দেখার সময় ভাবি, “থাক, একটু আকটু দেখলে কিছু হবে না। আল্লাহ ﷻ অত কিছু ধরেন না।” ব্যাংক থেকে আসা মাসিক স্টেটমেন্ট-এ সুদের পরিমাণ দেখে নিজেকে বোঝাই, “এত অল্প ব্যাপারে আল্লাহ ﷻ কিছু মনে করেন না। আমি না নিলে অন্য কেউ তো ঠিকই নিত।” বছরের এক বিশেষ রঙ ছোড়াছুড়ির উৎসবে, বিপরীত লিঙ্গের গায়ে হাত দিয়ে রঙ ঘসাঘসি করে এসে ফেইসবুকে পোস্ট দেই, “আহ হা, তোমরা এইসব ছোটখাটো ব্যাপারে এমন বাড়াবাড়ি করছ কেন? আল্লাহ ﷻ অনেক বড়। তিনি এসব ছোটখাটো ব্যাপারে ধরেন না।” অফিসে কেউ এসে তার ফাইলটা সবার আগে পাস করার জন্য একটা দামী বিদেশী সিগারেট সাধলে, তাতে টান দিয়ে ভাবি, “একটু আধটু টানলে আল্লাহ ﷻ ধরেন না। আল্লাহ ﷻ অনেক বড়। আমার মত মামুলি বান্দার দিকে নজর রাখার সময় কোথায় তার?”
আল্লাহ ﷻ সাবধান করে দিয়েছেন—''তোমরা কী করো, সে ব্যাপারে আল্লাহ ﷻ কখনই বেখেয়াল নন।''
এই আয়াতে আল্লাহ ﷻ আরবিতে অত্যন্ত কঠিনভাবে বলেছেন وَمَا ٱللَّهُ بِغَٰفِلٍ — খবরদার! আল্লাহ ﷻ এক মুহুর্তের জন্যও বেখায়াল নন! আমরা টিভিতে আড়চোখে তাকিয়ে কী দেখি, তা আল্লাহ ﷻ খুব ভালোভাবে খেয়াল করেন। আমরা বাচ্চাদেরকে স্কুলে দেওয়ার সময় কাকে ফোন করে কী অফার দেই, সেটা আল্লাহ ﷻ খুব ভালো করে শোনেন। চাকরির ইন্টারভিউ এর আগে মামা-চাচা-খালুকে কী অনুরোধ করি, সেটা আল্লাহ ﷻ রেকর্ড করে রাখেন। বিল দিতে বলার সময় কত টাকা বাড়িয়ে লিখতে বলি, যেন অফিস থেকে বেশি টাকা আদায় করা যায়, সেটার আল্লাহ ﷻ হিসেব রাখেন। আল্লাহ ﷻ এক মুহুর্তের জন্যও বেখায়াল নন।
আল্লাহ الغفور আল-গাফুউর — অনেক পাপ ক্ষমা করেন, الغفار আল-গাফফার — বার বার ক্ষমা করেন। কিন্তু তাই বলে তিনি غَٰفِل গাফিল — বেখায়াল, অসতর্ক, উদাসীন নন। আমাদের নিয়ত যদি হয় আল্লাহর ﷻ ক্ষমার গুণের ফায়দা উঠিয়ে পাপ করে যাওয়া, তাহলে সেটার ক্ষমা পাওয়ার সম্ভাবনা কম।
আল্লাহ ﷻ তাওবাহ বা আন্তরিক ক্ষমা প্রার্থনা গ্রহণ করেন, বার বার করেন, যদি সেই ক্ষমা প্রার্থনার সাথে সেই পাপ আর কখনো না করার প্রতিশ্রুতি থাকে। তাওবাহ এসেছে ت و ب থেকে যার অর্থ: ফিরে আসা। আমরা যদি শুধু মুখে বলি, “আল্লাহ, আমি ভুল করেছি, আমাকে ক্ষমা করে দিন”—তাহলে সেটা তাওবাহ হলো না। তাওবাহ হচ্ছে: ১) যেই ভুল কাজটা করছিলাম সেটা করা বন্ধ করা, ২) অন্যের সাথে অন্যায় করলে তার প্রায়শ্চিত্ত করা বা তাদের কাছে ক্ষমা চাওয়া, ৩) একই সাথে আল্লাহর ﷻ কাছে ভুল করার জন্য ক্ষমা চাওয়া এবং ৪) সেই ভুল ভবিষ্যতে আর না করার জন্য প্রতিজ্ঞা করা।[৫] তাহলেই সেটা তাওবাহ হবে।
আসুন আমরা আন্তরিকভাবে আল্লাহর ﷻ কাছে তাওবাহ করি। এতদিন আল্লাহকে ﷻ উপেক্ষা করে যে সব খারাপ কাজ করছিলাম, ধরে নিচ্ছিলাম যে, আল্লাহ ﷻ অতশত খেয়াল করেন না, সেগুলোর জন্য আন্তরিকভাবে অনুশোচনা করি। আল্লাহ ﷻ কখনই গাফিল নন, কিন্তু তিনি গাফুউর, গাফফার। তাঁর কাছে আকুলভাবে ক্ষমা চেয়ে নিজেকে সংশোধন করলে, তিনি ক্ষমা করে দেবেন বলে কু’রআনে বার বার কথা দিয়েছেন।
সূত্র:
[১] নওমান আলি খানের সূরা আল-বাকারাহ এর উপর লেকচার এবং বাইয়িনাহ এর কু’রআনের তাফসীর।
[২] ম্যাসেজ অফ দা কু’রআন — মুহাম্মাদ আসাদ।
[৩] তাফহিমুল কু’রআন — মাওলানা মাওদুদি।
[৪] মা’রিফুল কু’রআন — মুফতি শাফি উসমানী।
[৫] মুহাম্মাদ মোহার আলি — A Word for Word Meaning of The Quran
[৬] সৈয়দ কুতব — In the Shade of the Quran
[৭] তাদাব্বুরে কু’রআন – আমিন আহসান ইসলাহি।
[৮] তাফসিরে তাওযীহুল কু’রআন — মুফতি তাক্বি উসমানী।
[৯] বায়ান আল কু’রআন — ড: ইসরার আহমেদ।
[১০] তাফসীর উল কু’রআন — মাওলানা আব্দুল মাজিদ দারিয়াবাদি
[১১] কু’রআন তাফসীর — আব্দুর রাহিম আস-সারানবি
[১২] আত-তাবারি-এর তাফসীরের অনুবাদ।
[১৩] তাফসির ইবন আব্বাস।
[১৪] তাফসির আল কুরতুবি।
[১৫] তাফসির আল জালালাইন।
২| ১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩৯
৮৩১আবীর১৯৮৩ বলেছেন: চাদগাজী মন্তব্য বেশীরভাগই ভাল না। লেখক সঠিক বলেছেন। চাদগাজী যদি কোন পয়েন্টে তার বিরোধিতা করতে চান তবে সেটা নির্দিষ্ট করে বলুন। লেখক তো লেখা দিয়ে ভাল কাজ করেছেন। চাদগাজী কু মন্তব্য দিয়ে গুনাহ করেছেন। চাদগাজী তওবা করুন।
©somewhere in net ltd.
১|
১০ ই ডিসেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:১০
চাঁদগাজী বলেছেন:
টেলিভিশন দেখবেন না, পড়ালেখা করবেন না, খেলাধুলা করবেন না, হাসবেন না।
আপনি হয়তো অনেক কুকাজ করছেন, সকাল বিকাল তওবা করেন।