নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আয়েশ করে, আলসেমিতে...

অলসদের দিয়ে কী আর হয়। আলসেমি ছাড়া!

মুনির হাসান

অলস লোক। নানা কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকার খায়েশ কিন্তু করতে পারি না!

মুনির হাসান › বিস্তারিত পোস্টঃ

শেষ হইয়া হইল না শেষ

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ৮:৫২

ছোটবেলায় যখন ছোটগল্প পড়তাম তখন মাঝে মধ্যে মনে হতো আহা এর পর কী হইল? অনেক গল্পই ‘অত:পর তাহারা সুখে শান্তিতে বাস করিতে লাগিল’ টাইপের নয়। রবীন্দ্রণাথ ঠাকুরের ভাষায় এটা হলো ‘শেষ হইয়াও হইল না শেষ’।

এজন্য মনে হয় বড় বড় লেখকরা সিকুয়েল লিখেন এবং সিনেমা বানান। এটা যে কেবল গল্পের বা উপণ্যাসের বেলায় হয় তা কিন্তু নয়। উপন্যাসের বেলায় কোনকোনটি তিনটি পর্যন্ত গড়ায় এবং বিখ্যাত ট্রিলজি হয়। যেমন সমরেশ মজুমদারের উত্তরাধিকার, কালবেলা আর কালপুরুষ। কোনটি দুইটিতে থেমে যায়। সঞ্জীবের লোটাকম্বল। (কম্বলের ব আর স্বামীর ব যে আলাদা এটি মনসুর মুসা স্যারের সঙ্গে পরিচয় না হলে কোনদিন জানতে পারতাম না। সে গল্প আর একদিন)। গল্প সংকলনের নামের বেলায়ও এটি হতে পারে। যেমন সত্যজিৎ রায়।

এক ডজন গল্প, আরো এক ডজন, এবারো বারো, আরো বারো ... এরপর লোকেরা ভেবেছিল উনি তার আর পার করতে পারবেন না। কিন্তু সবাইকে চমকে দিয়ে এর পরেরটির নাম হয় - একের পিঠে দুই। আমি অবশ্য ওনার পরের সংকলনের নাম ঠিক করে রেখেছিলাম - এক দশ দুই! কিন্তু, তার আগেই তিনি চলে গেলেন।



এ যে চলে যাওয়া এটিই আমাদের ভাবিয়ে তুলেছিল বেশি। আমাদের মানে বুয়েটে আমরা যারা একসাথে পড়তাম, একসঙ্গে গল্প করতাম, টিএসসিতে ঘুরতে যেতাম। আমরা ভাবতাম আচ্ছা বিশ্বসাহিত্যের যে অসাধারণ ছোটগল্পগুলো আছে, যার অনেকগুলো রবি ঠাকুরের মতে ক্লাসিকের মর্যাদা পেয়েছে, সেগুলোর কী হবে।



বুয়েটে পড়ার সময় আমাদের এ বিশেষ অনুভুতি হয় (এখন হয় কি না জানি না)। আমরা মনে করতাম এ সকল সমস্যার সমাধান আমাদেরই করতে হবে। আমাদের মধ্যে এ লাইনে সবচেয়ে সৃজনশীল ছিল আজম খান (ইলেকট্রিক্যাল, এখন ব্যবসায়ী, কানাডায় আসা যাওয়ার মধ্যে আছে]। আর ছিল গোলাম মোস্তফা (মোস্তফা তানিম নামে লেখালেখি করে, তার ম্যাকগাইভার মামা নামে একটি বই এর আমি প্রকাশক ছিলাম, সে এক অভিজ্ঞতা, পরে একদিন,,,)। দুই বিরল সাহিত্যিকের নেতৃত্বে আমরা কাজ শুরু করলাম।



আমাদের প্রথম পছন্দ ছিল রবীন্দ্রণাথের পোস্টমাস্টার। কারণ হলো এই গল্পের কারণে বকা আমরা সবাই খেয়েছি। চট্টগ্রাম মুসলিম হাই স্কুলে পড়ার সময় আমাদের একজন স্যারকে আমরা রতন স্যার বলতাম ( আহারে সেদিনগুলো...)

তা বাড়ি ফেরার পর আমাদের পোস্টমাস্টারের কী হলো। সেভাবে আমরা বেশ কিছু গল্প শেষ করি। কিন্তু সেগুলো কোথাও প্রকাশিত হয় নি।



বেশ কিছুদিন আগে কোন এক আড্ডায় আমাদের সে গল্প শেষ করার কথা বলার পর রস-আলোর সম্পাদক সেগুলো ছাপতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। দীর্ঘ ২০-২২ বছর পর আমি স্মৃতি থেকে পোস্টমাস্টারের গল্পের আমাদের দেওয়া ফিনিশিং উদ্ধার করি। নানান এডিটিং‌এর হাত ঘুরে আজকে সেটি প্রথম আলোর রস‌-আলোতে প্রকাশিত হয়েছে



রাতে মিলুর সঙ্গে যোগাযোগ করে বলেছি আজমকে খবর দিতে, যাতে আমরা বাকী গল্পগুলোও উদ্ধার করতে পারি।



বদরুল ভাইকে হলের ডাইনিং সম্পাদক পদে দাড় করিয়ে সে জন্য সমগ্র বুয়েট জুড়ে কমিটি গঠন করা, অন্য হলে মিছিল করা (বাকিটুক পরে)।



যেবার আমি হলে নির্বাচন করলাম সেবার আমার সম্পাদিত ‘স্পর্ধা’ পত্রিকার নির্বাচনী সংখ্যায় সম্পাদকীয় অংশটি ফাকা রাখা হয়। রাতের বেলায় ছাপানোর আগে দেখা গেল ম্যাটার শর্ট। তখন সম্পাদকীয়টা অন্য নামে ছাপিয়ে একটি বক্স খালি রাখা হয়। নিচে লেখা হয় ‘সম্পাদক যেহেতু নিজে একটি প্যানেলের প্রার্থী কাজে তার লেখা সম্পাদকীয় প্রকাশ করা হলো না।‘ স্বপন বড়ুয়া ছিল এই পত্রিকার প্রকাশক। স্পর্ধায় আমরা ছেপেছিলাম একজন প্রার্থীর আত্মকথা। সেটিও আগামীতে কোথাও ছাপার ইচ্ছে আছে!!!



আজকাল মাঝে মধ্যে পুরোনো দিনের কথা মনে পড়ে। বুঝতে পারি বুড়ো হচ্ছি। মাত্র দিন দুই আগে ছেলেকে বলেছি বুয়েট লাইফে প্রায় প্রতিদিন আহসান উল্লাহ হল থেকে হেটে হেটে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে যাওয়ার গল্প। ও জানতে চেয়েছে রিকশা বা বসে যেতাম না কেন। বলেছি টাকা ছিল না বলে হেটে যেতে হতো। বুয়েট লাইফে দ্বিতীয় ক্যালকুলেটরের জন্য বাবার টাকা পাঠানোর গল্পটা বলেছি।



এ প্রজন্ম কী এসব কষ্টের কথা বুঝতে পারে???





সবার সেকেন্ড ডিফারেন্সিয়াল নেগেটিভ হোক।



মন্তব্য ৭ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ৮:৫৮

সাদাচোখ বলেছেন:
আপনারও সেকেন্ড ডিফারেন্সিয়াল নেগেটিভ হোক।

আর দোকানগুলোও পুরো দমে চলুক।

:)

২| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ৯:১১

হাম্বা বলেছেন: +++++++++

৩| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ৯:২৩

অনিকেত কবি বলেছেন: এ প্রজন্ম কী এসব কষ্টের কথা বুঝতে পারে??

পারে...পারে....কেউ জানে...কেউ কেউ জানে না...!

সেকেন্ড ডিফারেন্টিয়াল নেগেটিভ হোক :)

৪| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ৯:২৮

ক্যামেরাম্যান বলেছেন: আপনি মনে হয় আসলেই বুড়িয়ে যাচ্ছেন। আপনার লেখা সাধারণত বেশ গুছানো হয়। আজকের যেন একটা কেমন কেমন। একটা থেকে আরেকটাতে খূব দ্রুত চলে গেলেন। হয়তো মন কোন কারণে বিক্ষিপ্ক বা শুধূই নষ্টালজিয়ায় ভূগছেন।

আপনার লেখার শেষ প‌্যারাটা পড়ে মনে পড়লো আমার বড়চাচার কথা, যিনি বুয়েটেরই সিভিল এর ডিন ছিলেন কোন একসময়। আমার বাপ-চাচারা খূব ছোটবেলায় এতিম হয়েছিলেন। অভাবের সাথে সংগ্রাম করে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। বড়চাচার কাছে শুনেছি পড়াশোনার খরচ জোগাড়ের জন্য হাটের দিন ১ ডজন করে ম্যাচ কিনে এক বক্স এক বক্স করে বিক্রি করতেন। বিক্রি শেষ হলে আরো এক ডজন কিনতেন। বুয়েটে পড়ার সময় এমনও দিন গেছে টাকার অভাবে নাশতা না করেই ক্লাসে গেছেন। একদিন নাকি বাসের মধ্যে ক্ষূধায় কাতর হয়ে বমি করে ফেলেছিলেন, মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলেন। বাসেরই সহযাত্রী কোন এক দয়ালু লোক বোধহয় সেটা বুঝতে পেরেছিলেন। বাস থেকে নামিয়ে আট আনার মূড়ি কিনে দিয়েছিলেন।

আমি বোধহয় কল্পনাও করতে পারবো না এতো কষ্ট করে পড়ালেখার।

জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ....

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ৯:৪৯

মুনির হাসান বলেছেন: প্রিয় ক্যামেরাম্যান,
আমি অবস্থাপন্ন ঘরেরই সন্তান, তারপরও আমার বাবা আমাকে হাতে অফুরন্ত টাকা দিতেন না। কোনমাসে একটু এদিক ওদিক হলে মাসের শেষে সকালের নাস্তাকে ট্রাপে ফেলতে হতো আর রাতের খাবারে ডাইনিং‌এ প্রথম ব্যাচে খেতে হতো। ১৮৮৯ থেকে দৈনিক সংবাদে লিখতে শুরু করি। এ সময় আমাদের সঙ্গে ছাত্র সংগঠন করতো এমন একজন, তখন সে ইন্টারমিডিয়েট পড়তো, তাকে পড়ানোর জন্য অনুরোধ করে। তারপর তাকে পড়াতে শুরু করি। টিউশনি শুরু করার পর থেকে বেশ ভাল ছিলাম।
দেখার চোখ বানানোর জন্য সারাদিন হাটতাম। অথচ সে চোখ কিন্তু হলোই না। আমার বউ বলে আমি নাকি কিছু দেখিই না।
পুরো হাটাটা মনেহয় ব্যর্থ!

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ৯:৫৪

মুনির হাসান বলেছেন: রস আলোর শব্দ লিমিটে কাটা গেছে অনেক। পুরো গল্পটা আরো বড়। আশা করি এখানে বা অন্য কোনখানে ছাপানো যাবে।

৫| ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১০ বিকাল ৩:৫৯

ইসতিয়াক আহমদ আদনান বলেছেন: রস+আলোর লেখাটা ভাল লেগেছিল। বাকিটা এখানেই দিয়ে দেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.