![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এই বিশ্লেষণটি পর্যবেক্ষণ ও যুক্তির ভিত্তিতে তৈরি।
২০০৮-০৯ সালের দিকে বাংলাদেশ তীব্র বিদ্যুৎ সংকটে পড়েছিল। দিনের পর দিন লোডশেডিং স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছিল। এই সংকট কাটাতে সরকার 'কুইক রেন্টাল' প্রকল্পের মাধ্যমে দ্রুত বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। কয়েক বছরের মধ্যেই দেশের মোট উৎপাদন সক্ষমতা কয়েক হাজার মেগাওয়াট বেড়ে যায়।
বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়ে গেলেও, দেশের অর্থনৈতিক কাঠামো বা শিল্পায়নের হার তখনও ততটা বাড়েনি। ফলে নতুন করে উৎপাদিত বিদ্যুতের জন্য প্রচুর ফাঁকা সক্ষমতা তৈরি হয়—অর্থাৎ উৎপাদিত বিদ্যুৎ ব্যবহার করার মতো পর্যাপ্ত গ্রাহক বা ব্যবহারকারী ছিল না।
বিদ্যুৎ উৎপাদন এমন এক খাত, যেখানে উৎপাদনের খরচ নির্দিষ্ট থাকে—ব্যবহার হোক বা না হোক। একবার উৎপাদন শুরু হলে, উৎপাদকদের টাকা দিতে হয়। অতএব, যদি বিদ্যুৎ বিক্রি না হয়, তাহলেও সরকারের ঘাড়ে সেই খরচের বোঝা থেকে যায়।
এই ব্যবধান পূরণের জন্য বাজারে একটি নতুন শক্তি প্রবেশ করে—ইজিবাইক, বা ব্যাটারিচালিত রিকশা।
২০০৯ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে, বাংলাদেশে ইজিবাইকের সংখ্যা বিস্ময়কর গতিতে বাড়তে শুরু করে। যদিও ইজিবাইক তখনও রোড ট্রান্সপোর্ট আইনে বৈধ ছিল না (নিবন্ধন ও লাইসেন্স ছাড়াই চলছিল), বাস্তবে তাদের চলাচলকে নিরুৎসাহিত করা হয়নি। বরং এক ধরনের অঘোষিত ছাড় দেওয়া হয়েছিল।
কেন?
ইজিবাইক দিনে-রাতে বিদ্যুৎ চার্জ করতে থাকে।
একটি ইজিবাইক প্রতিদিন গড়ে ৩-৪ ইউনিট বিদ্যুৎ ব্যবহার করে।
হাজার হাজার ইজিবাইক মিলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিদ্যুৎ ব্যবহারের একটি নতুন বাজার তৈরি করে দেয়।
অতিরিক্ত উৎপাদিত বিদ্যুতের একটা বড় অংশ এভাবে ব্যবহৃত হতে থাকে, এবং সরকার 'চাহিদা' তৈরির মাধ্যমে উৎপাদন-ব্যয় সামান্য হলেও যৌক্তিক করতে পারে।সরকার সরাসরি কখনো বলেনি যে ইজিবাইক বৈধ। আবার শক্তভাবে ইজিবাইক বন্ধ করতেও যায়নি। কারণ, বাস্তবতা ছিল—এই ইজিবাইকগুলো অতিরিক্ত বিদ্যুৎ ব্যবহারের মাধ্যমে কুইক রেন্টালের উৎপাদনব্যয় আংশিকভাবে বৈধতা দিয়ে থাকতে পারে।
ইজিবাইক বাংলাদেশে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছেছিল শুধুমাত্র "সহজ পরিবহন" হিসেবেই নয়, বরং রাষ্ট্রীয় বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনার নীতিগত জটিলতার সহজ সমাধানও ছিল।
©somewhere in net ltd.