নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সৈয়দ মূসা রেজা

সৈয়দ মূসা রেজা › বিস্তারিত পোস্টঃ

পত্র এবং প্রেমপত্র

০২ রা জুলাই, ২০১৮ দুপুর ১২:৪৫


পত্রের দিন শেষ। কথাটা বাড়িয়ে বলা হলো কি? মনে করতে পারেন শেষ পত্র কবে পেয়েছেন? বা কবে লিখেছেন? আজ কি তা মনে করতে পারেন! না আমিও পারি না। পত্রের কথা উঠলেই পঙ্কজ উদাসের হৃদয়স্পর্শী গজল চিঠ্ঠি আই হ্যায়র কথা মনে পড়বেই। চিঠি লিখুন আর না লিখুন এ গান টিকে থাকবে।

স্কুলের নিচের ক্লাসে পড়ি। টু। বা থ্রি। কারণ তখনও চাঁদপুরের লেডি প্রতিমা গার্লস স্কুল যাই আম্মার সঙ্গে। এক রিক্সাঅলার একদিন বলল, বড়ভাই এই চিঠিটা পড়তে পারবেন?

রুলটানা কাগজে বড় বড় করে লেখা। পড়তে পারছি। লেখক হয়ত আমার চেয়ে বড় বিদ্যাধর ছিলেন না। পড়লাম জোরে জোরে। হাজার ২( মানে হাজার হাজার) সালাম পর সমাচার এই যে শুনিয়া খুশি হইবেন যে আল্লাহ্‌র অশেষ রহমতে আপনাদের মেয়ের শরীর খারাপ হয়েছে। ডাক্তার বলিয়াছেন বমি বমি ভাব বেশিদিন থাকিবে না। দোয়া করিবেন।

মেয়ের শরীর খারাপ কি করে খুশির খবর হয় কিছুতেই বুঝতে পারলাম না। রিকশাঅলা বলল, বড় ভাই খুবই খুশির খবর দিলেন। চলেন সন্দেশ খাওয়াই। শরীর খারাপ কি করে খুশির খবর হয়? যতই জানতে চাই সে বলে, বড় হইলে বুঝবেন। অনেক দিন পরে বুঝেছিলাম। আর সেদিন খেয়েছিলাম দুই দুইটা সন্দেশ। বলতে পারেন ওটা বিদ্যা বেচে প্রথম কামাই!

নবপরিণীতা কন্যার কাছে স্বামীর লেখা প্রথম চিঠি নিয়ে আসতো বয়সী পিয়ন। রেজিস্ট্রি চিঠি কন্যারত্নকে দিয়ে বখশিশের আশার বাইরে অপেক্ষা করতো। পিয়নকে শুধু বখশিশ দেয়া নয় বরং মিষ্টি খাইয়ে বিদায় করতে দেখেছি। পিয়ন কি করে জানতো এটা মেয়েটার স্বামীর লেখা চিঠি? খামের গায় আঁকা নকশা এবং এসেন্সের ভুরভুরে গন্ধই তুলে ধরতো পত্রের পরিচয়!

সে কালে প্রেমপত্র লেখার চটি বই পাওয়া যেত। কখনও তা পড়িনি। পড়ার প্রয়োজনও মনে করে নি। আমাদের সহপাঠীদের অনেকে বইয়ের ফাঁকে এমন বই লুকিয়ে রাখতে বা পড়তে দেখেছি।
সাত ভাই চম্পা নামে পরিচিত এমনই এক সুন্দরী মেয়েকে দীর্ঘ প্রেমপত্র লিখেছিল আমাদেরই এক সহপাঠী। সুশীলা কন্যা চিঠি পাওয়া মাত্র তা তার বাবার হাতে তুলে দেয়। বাবা একটা নোট দিয়ে ওটাকে পাঠিয়ে দেন আমাদের হেডমাস্টারের কাছে।

নোটে লেখা ছিল, দশ-পাঁচটা মেয়ের চেয়ে আমার মেয়ে একটু ভিন্ন। তাকে দেখে দুর্বল স্বভাবের ছেলেদের চিত্ত চাঞ্চল্য হওয়া বিচিত্র নয়। কিন্তু দু:খ হলো, আপনার স্কুলের ছাত্র হওয়া সত্ত্বেও বাংলা বানান এতও ভুল কেন! কেন শুদ্ধ বাক্য লিখতে শিখেনে এখনও।
হেডস্যার ওটাকে পাঠিয়ে দেন বাংলার শিক্ষক ফিরোজ স্যারের কাছে। ফিরোজ স্যার ক্লাসে এসে রাগে ফেটে পড়েন। -দরকার হলে আমাকে কইবি, আমি লিখে দেবো প্রেমপত্র। তারপরও পচা বানান এবং ভুল বাক্য লিখে পাড়ার লোক হাসাবি না! খবরদার। এমন কাজ করবি না। ফিরোজ স্যারের কাছে কেউ সত্যিই প্রেমপত্র লেখাতে নিয়ে গেছিল কিনা জানি না।

যোগাযোগের ক্ষেত্রে ফিডব্যাক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তাও এ প্রেমপত্র জনিত ঘটনা থেকে শিখেছিলাম।

(বার্লোর 'কমিউনিকেশন প্রসেস' বইটা 'যোগাযোগ প্রক্রিয়া' নামে বাংলা করা হয়েছিল । বাংলা একাডেমি থেকে প্রকাশিত বইটাতে ফিডব্যাকের একটা বাংলা হয়ত ছিল। তবে বইটা দশ পাতার বেশি কোনো ভাবেই পড়তে পারিনি। তাই বাংলাটা জানা হয়নি। যদি বাংলা বইটি পুরোপুরি কেউ পড়ে থাকেন – আওয়াজ দিয়েন। দেখা হলে এককাপ কফি খাওয়াবো। আর আপনার অটোগ্রাফ নিয়ে রাখবো।)

আমাদের পাড়ার কাছাকাছি একখানে বসে কথা বলছিলো দুই ট্যান্ডল। -কি করে চিঠি দিলি? অন্যজন জবাব দিল- ক্যান আমের বাড়ার(বীচি)র ভেতরটা খালি করে তার মধ্যে চিঠি ঢুকাই। তারপর একদম ছুইড়্যা মারি মাইয়্যাডার পায়ের কাছে যেয়ে পড়ে।
-মাইয়্যাডা কি করল? –না বাড়াটা হাতে নিল। চিঠিটা খুলল।
-তারপর? চেইত্যা গেল না জবাব দিল? মানে ওর বাপের কাছে কি নালিশ করছে নাকি তোর চিঠির জবাব দিছে?
-এখনও কিছুই করে নাই।
-কয়দিন হইল?
-দশ না না পনর দিন তো হইবোই।
-চেইত্যাও ওঠে নাই! জবাবও দ্যায় নাই! না তোর কেস ঢিলা হইয়া গ্যাছে! আরে তোরে পাত্তাই দ্যায় নাই। ওই খানে কাম অইবো না। অন্যখানে দ্যাখ।#

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই জুলাই, ২০১৮ বিকাল ৪:৫১

রাজীব নুর বলেছেন: পড়লাম।
আর একটু গুছিয়ে লিখুন।

১৯ শে জুলাই, ২০১৮ সকাল ১০:১৫

সৈয়দ মূসা রেজা বলেছেন: ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.