![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নব্বইয়ের দশকের কথা। সে সময় ঢাকায় তাঁত বিষয়ক এক আধা-সরকারি সংস্থায় কাজ করি। পদবীতে মূল্যায়ন কর্মকর্তা হলেও অফিসের কাজে মাগনা ছবি তুলে দেই। আড়ালে কেউ কেউ তুচ্ছার্থে ‘ক্যামেরাম্যান’ বলে হাসাহাসি করে নিজেদের অক্ষমতার জ্বালা মেটান। মিরপুর বেনারসি পল্লীতে একদিন ছবি তুলতে গেছি।
আপন মনে সূতা কাটছেন এক নারী শ্রমিক। জানালা দিয়ে আলো এসে পড়েছে। সে ছবি তোলার জন্য ক্যামেরা তাক করতেই ঝাঁঝিয়ে উঠলেন তিনি । -‘ক্যামরা সরান, ফটু তুইলেন না।’
-‘জ্বি বোন।’ বলে সরে আসলাম। কারখানার মালিক তেড়ে আসলেন নারী শ্রমিকের দিকে। তাকে থামালাম হাতের ইশারায় । আমার সঙ্গে ছিলেন অফিসের এ জি এম খায়ের সাহেব। নিপাট ভালমানুষ। তিনি অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলেন।
-‘দেখেন গুলশান-বনানীর কোনও বাসায় ঢুকে ইচ্ছামতো ছবি তুলতে পারব না। বা কোনও অফিসে ঢুকেও ছবি তুলতে পারব না। ইনি ছবি তুলতে দিবেন না। সেটা তার ইচ্ছা। মানা উচিত।’ আশেপাশের অন্যান্য নারী কর্মীরাও কথাগুলো শুনলেন।
ওই এলাকার পাশেই ছবি তুলছিলাম সে সময় পিছন থেকে এক নারীর কণ্ঠ শুনতে পেলাম। -‘ভাইজান, আইয়েন ছবি তুলেন।’ ওই নারী দাঁড়িয়ে আছেন। রাগ বা বিরক্তি নেই চেহারায়।
জানালার আলোটা সরে গেছে। তারপরও ছবি তুললাম কয়েকটা। -‘শোনেন, খিদায় মাথা গরম হইয়াই থাকে। ছবি তুললে কি আমার প্যাট ভরবো!’ –‘না ভরব না।’ সায় দিলাম আমি। ছবি তোলা শেষে কারখানা থেকে বের হয়ে আসার সময় নারী শ্রমিক বললেন, -‘আগে খবর দিয়া আরেক দিন আইয়েন, ভাল কাপড় পইর্যা আমু, অনেক ছবি তুইলেন ভাইজান।’ বলেছিলাম আসবো কিন্তু বেনারসি পল্লীতে এরপর আর যাওয়াই হয়নি।
©somewhere in net ltd.