![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এনালগ যুগের পুরোনো মানুষ গুলি হারিয়ে যাচ্ছে।
হারিয়ে যাচ্ছে তাদের গল্প ও ইতিহাস।
যে গুলি আমাদের কাছে রীতিমত
অবাস্তব মনে হত।
দু আনার চাল,আট আনার ডাল, চার পাঁচ টাকায় খাঁসি আট দশ টাকায় একটা গরু যাদের বাজার মুল্য ছিল।
এই মানুষ গুলি খুবই সাদাসিধে ট্রাইপের হতেন।
তার মধ্যে দেলোয়ারে বাপ (দেলু বাপ)ছিলেন আরো সাদাসিধে। তার পোশাকাদি, কথাবার্তা,ও চলাফেরায় ছিল প্রাচীনতার ছাঁপ।
খুব বেশী মনে পড়ে, তার একজোড়া জুতা ছিল। ট্রাকের ট্রায়ার কেটে বানানো।
এই জুতা জোড়া তিনি দুই যোগ অর্থাৎ দীর্ঘ চব্বিশ বছর ব্যবহার করেছেন।
বৃদ্ধ মানুষ, অধিকাংশ সময় খালি পায়েই হাটতেন। মাঝেমধ্যে কোনদিন যদি ভুলে মসজিদে জুতা রেখে যেতেন।
জুতার দিকে কেও ফিরেও তাকাত না। একান্ত কোথাও যাওয়ার সময় যদি জুতা জোড়া না পেতেন সোজা চলে আসতেন মসজিদে,
তিনি জানতেন, ভুলে হয়তো জুতা মসজিদে ফেলে এসেছেন। তার জুতা কেও নেবেনা। এসে ঠিকই দেখতেন, কোন এক স্থানে তার জুতা পড়ে আছে।
মুখে দাঁত নেই কুঁজো হয়ে গেছেন।
লাঠিতে ভর করে হাটেন।
তবুও কোন ক্লান্তি নেই, দৈনন্দিন প্রয়োজন গুলি নিজের গায়ের
জোরেই সেরে ফেলেন।
দীর্ঘ দিন পর যখন বাড়ি যেতাম।
সামনাসামনি দেখা হলে, ডাক দিতেন এই ছ্যারা কহন আইছো,বালা আছো বলেই হাসি দিতেন মুচকি হাসি........ফাঁকা মুখে চামড়ায় ভাঁজ পড়া মুচকি হাসিটা
অনেক আনন্দ দিত।
বার্ধক্যের নির্মমতা, তার চামড়ায় ভাঁজ ও মেরুদণ্ড বাঁকা করে ফেললেও মুখের অকৃত্রিম হাসিটা কেড়ে নিতে পারেনি।
আজ হঠাৎ কি যেনো মনে করে বাসায় ফোন করলাম মা'র সাথে কথা বলার জন্য, গত এক সপ্তাহ যাবৎ মার সাথে কথা হয়না।
কিছুক্ষণ কথা বলার পর মা বললেন,..... শুনছো ঐ যে দেলু বাপ আছে না,(ইসরাফিল) সে মারা গেছে।
কথা টা শুইনাই কলজেটা মোচড় দিয়ে উঠলো আহহ............ এই মানুষ টা চলে গেল.....!!!
আমি হতভাগা তার জানাযা টাও পড়তে পারলাম না। খবর টা পাইলাম তিন দিন পর।
খুবই খারাপ লাগছে মানুষ টার জন্য।
ডিজিটাল যুগে এমন মানুষ কল্পনাও করা যায়না।
আল্লাহ তা'য়ালা তার সমস্ত গোনাহ মাফ করে দিন।
এবং জান্নাতুল ফিরদাউস নসিব করুন।
©somewhere in net ltd.