![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বিরক্তির কারনে কপাল ককুঁচকে আছে।
টিপটা অনেক বার চেষ্টা করেও দেয়া যাচ্ছে না,
একটুপর টুপ করে পড়ে যায়।
এই নিয়ে ৬বার চেষ্টা করলাম।
রবার্ট ব্রুসের মত ৭বার চেষ্টার ইচ্ছে হচ্ছে না আজ আর।
ও আবার টিপ দেয়া পছন্দ করে,
এতো কষ্ট করে আজ শাড়ী পরলাম টিপ ছাড়া অপূর্ণ রয়ে যাবে সবই।
মেজাজ খিটখিট হয়ে যাচ্ছে,
কপালের চামড়া কুঁচকে আছে।
ইচ্ছে হচ্ছে সুপারগ্লু দিয়ে টিপ লাগিয়ে বের হয়ে যাই।
যা হবার হবে আজ টিপ ছাড়াই বের হব।
সব পছন্দ পূরণ করাই ক্ষমতা মানুষের নেই।
কিছু অপূর্ণতা থাকেই,এমনিতেও
নিখুঁত কিছু কখনই ভাল না।
নিখুঁত বলতে কিছু নেই কেবলই ধারনা মাত্র।
বিকাল ৪টায় দেখা করার কথা,
চুমকি রোডের এস মোড়ে,
ও আবার এই রোডকে উলঙ্গ ভবন রোড বলে ডাকে,
পাগল একটা।
বারবার ঘড়ি দেখছি,
এক মিনিট দেরী করা যাবে না।
প্রায় দু মাস পর দেখা করতে যাচ্ছি।
একা সাজুগুজু করে একটা মেয়ের এতো পথ একা হাটা মানায় না,
তবুও হাটছি আজ সে এগিয়ে নিতে আসবে না।
আজ কেন আর কোন দিনও আসবে না।
আজকেই শেষ দেখা ব্রেকাপ হবে আজ আমাদের।
ওর কথা নরনারী ভালবাসা মানে অবৈধ সম্পর্ক,
যার সামাজিক কোন বৈধতা এমনকি ধর্মীয় বৈধতা নেই।
সে অবৈধ সম্পর্ক আর রাখবে না।
তাই আমাদের ভালবাসা নামক সম্পর্ক আজ ভাংগা হবে।
বজ্জাত একটা,যদি এমনই ইচ্ছে তাহলে আগে কেন রিলেশন করলি?
পিছনে ঘুরে কত রঙঢঙ করে আমার মন নিলি,
এখন??
থাক বলেই বা কি হবে।
৩.৫৯ মিনিট....
সে আসে নি,
অথচ প্রতিবার সে আগে আসে।
রাগ উঠছে, তবে আজ কিছু বলা যাবে না।
শেষ দিন অন্তত ভাল ব্যাবহার করতেই হবে।
ব্যাগ থেকে আয়না বের করে কপাল কুঁচকানো ঠিক করার চেষ্টা করতে থাকলাম।
না হচ্ছে না,
আরও বাড়ছে।
পিছন থেকে চোখে হাত,হাত ছুঁয়েই বুঝলাম ওর হাত।
হারামী চোখে হাত কেন দিবি?
মেজাজ আরও গরম হয়ে গেল।
আজ ব্রাকাপ হবে এতো রঙঢঙ তো আজ করার সময় না। তবে মুখে কিছুই বললাম না।
সত্যি বলতে আমার একটুও ইচ্ছে নেই ব্রেকাপের।
ছেলেটা বজ্জাত বোকা হলেও ভাল আছে অন্য মেয়েদের দিকে তাকায় না।
এই চার বছরের সম্পর্কে অন্য মেয়ের দিকে তাকানোর অপরাধে কখনো এরে ঝাড়ি দিতে হয় নাই।
৪.১৫মিনিট..
কি ব্যাপার তুমি টিপ কেন পড় নাই।
কথা শুনে ঠাস করে একটা চড় দিতে ইচ্ছে হচ্ছিল।
ব্রেকাপ করবি তারপরেও আবার কপালে টিপ খুজঁস??
জুতায়া লম্বা করে দেয়া উচিত (মনে মনে)।
বাস্তবে মুখে হাসি এই আর কি,
টিপটা থাকছে না পড়ে যায় বার বার।
তাই হয় নাই।
--কলম আছে??
-না, সব সময় কি কলম নিয়ে আসে নাকি?
--আচ্ছা,অপেক্ষা কর দৌড় দিয়ে সামনে থেকে একটা কলম নিয়ে আসি।
-আমি পারব না,অপেক্ষা করতে। চারবছর রিলেশন করে ব্রেকাপ করতে আসছি, কলম দিয়ে কি হবে??
বলার সময় গলা ধরে আসছিল।
বুঝতে দিলাম না, কি দরকার বুঝতে দেয়ার।
উত্তরের অপেক্ষা না করে দৌড়ে চলে গেল, ২মিনিট এর মধ্যে উপস্থিত।
হাপাতে হাপাতে
--আমার দিকে তাকাও তো।
-পারব না,আজ ব্রেকাপ করতে আসছি, তোমার দিকে তাকাতে না।
--তাকাতে বলছি না!
না করতে পারলাম না।
পাগলটা কপালে কলম দিয়ে টিপ একে দিল।
আশ্চর্য ব্যাপার কপাল কুঁচকানো চলে গেছে।
ছেলেটা বুঝেও কিভাবে বিরক্তি দূর করতে হয়।
মন খারাপ হয়ে গেল আজকের পর আর দেখা হবে না।
দেখা হলেও কথা হবে না,চেনা মানুষের অপরিচিত ব্যাবহার।
সূর্য লাল হয়ে আসছে,
শেষ সূর্যাস্ত শেষ মুহুর্ত ভিতরকার অবস্থা আগুনে পুড়ে দগ্ধ লাল হয়ে যাচ্ছি। চোখ দিয়ে পানি আটকানো যাচ্ছে না।
-মোবারক ব্রেকাপ না করলে হয় না?
--না, হয় না। যে সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নেই তা রেখে কি লাভ??
-তোমার একটুও খারাপ লাগছে না?
--কেন খারাপ লাগবে??একটুও লাগছে না,আনন্দ লাগছে উল্টো।
কথাটা শুনে আর আটকানো গেল না চোখের পানি।
নিঃশব্দে চোখ মুছে,
-আচ্ছা,তুমি যখন চাইছ না স্বাধীন তুমি।
একটা কথা রাখবে?
--হুম,বল।
-আজ শেষ দিনের মত আমাকে এগিয়ে দিয়ে আসবে??
--ওকে,দিব।
তবে তোমার হাত দিতে হবে, ব্রেকাপের আগে শেষ বারের মত হাত ধরে একটু হাটতে চাই।
কিছু বলতে পারলাম না,গলা বন্ধ হয়ে গেছে চোখ টলটল। মাথা নেড়ে সায় দিলাম শুধু, না বলার ক্ষমতা নেই।
অথচ এই ছেলেটা হাসছে,
একদম অপরিচিত লাগছে এখন ওকে।
এই মানুষটাই কি সে??
যে আমার রাগ ভাংগাতে ঘন্টার পর ঘন্টা সরি বলতো।
একদিন রাতে রাগ করে ফোন অফ করে ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম।
সারারাত ও হলের সামনে দাঁড়িয়ে কাটিয়েছে, সকালে ফজরে উঠে যখন উঠে বারান্দায় আসলাম ওর ছায়া দেখেই বুঝেছিলাম।
আনন্দ লাগছিল ওর ব্যাকুলতা দেখে সেদিন।
আনন্দ প্রকাশ সেদিন আমার চোখের পানি আর ওর কাধেঁ মাথা রেখেই প্রকাশ হয়েছিল।
এরপর থেকে কখনো কোন দিন এক মিনিটের জন্য আমাদের কোন ঝামেলা হয় নাই।
খুনসুটি হয়েছে, মান অভিমান হয়েছে।
যেখানে ছিল ভালবাসার ছাঁপ।
এখন সব সৃতি।
একটু পর থেকে আমরা আলাদা কেউ কার না।
কথা ছাড়াই নিশ্চুপ হাটছিলাম,
সবই বিশ্বাসঘাতক,সময়ও শুরু করল আজ দ্রুত কেটে যাচ্ছে যাচ্ছে।
পথ ছোট হয়ে গেছে,
মনে হচ্ছে দ্রুত শেষ হয়ে যাচ্ছে।
হটাত নিরবতা ভেঙে মোবারক বলল,
- লিলি তোমার হাতটা দিবে?
--কেন?ব্রেকাপের আগে হাত আর ধরতে হবে না।
-প্লিজ...
না করতে পারলাম না।
হাত যখন ছাড়িয়ে নিলাম,
আমার কনিষ্ঠা আংগুলে একটা ডায়মন্ড আংটি পরা।
কিছুটা অবাক হলেও কিছু বললাম না।
কি বলব বুঝতে পারছিলাম না।
চুপ করে বললাম
-- তোমার রুমালটা দাও তো।
কিছু বলল না ও,
চুপচাপ বাড়িয়ে দিল।
কিছু না বলে চোখ মুছতে মুছঁতে চলে গেলাম,
রুমাল পরেও দেয়া যাবে।
ইস....চোখে এতো পানি কোথা থেকে যে আসে।
ভেজা চোখে পিছনে ফিরে তাকালাম একবার,
গাধাটা হাসছেই শুধু।
গাধার হাসি এতো সুন্দর হয় আর এমন আনন্দ নিয়ে হাসতে পারে জানা ছিল না।
২৯ শে মে, ২০১৭ দুপুর ১২:৪০
দৃষ্টির সীমানায় বলেছেন:
২| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৭ ভোর ৫:৪৮
তপোবণ বলেছেন: ব্রেক-আপ তো হয়নি তাহলে! যাক ভালোই হল। গাধা গুলো সব এমনি করেই ভালবাসে। ভাল লাগল, একটু অন্যরকম তো বটেই।
২৯ শে মে, ২০১৭ দুপুর ১২:৪০
দৃষ্টির সীমানায় বলেছেন: ধন্যবাদ
৩| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৭ সকাল ১১:০৬
ধ্রুবক আলো বলেছেন: মাঝে মাঝে ব্রেক আপ ভালো জিনিস। মানুষ চেনা যায়
২৯ শে মে, ২০১৭ দুপুর ১২:৪০
দৃষ্টির সীমানায় বলেছেন: ঠিক বলছেন ভাই,একদম হাছা কথা
৪| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৭ বিকাল ৩:২৬
রাজীব নুর বলেছেন: প্রেম ভালোবাসা বাদ কাজে মন দিন।
২৯ শে মে, ২০১৭ দুপুর ১২:৪১
দৃষ্টির সীমানায় বলেছেন: জী ভাই,এসব লুতুপুতু করে লাভ নাই।ধন্যবাদ সুন্দর উপদেশের জন্য। :-)
©somewhere in net ltd.
১|
২৬ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৩:২৯
চাঁদগাজী বলেছেন:
ব্রেক-আপ, ব্রুক-আপ, হা হুতাশ