![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমাদের মাঝে এমন অনেক মানুষ আছে যাদের মধ্যে মানবিক গুণাবলির বেশ ঘাটতি আছে। আর যখন এই ঘাটতি থাকে তখন যে কোনো মানুষ হয়ে ওঠে অমানবিক বা হিংস্র কোনো পশু। ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যায় অনেক পুরুষ তাদের হীন কৃতকর্মের জন্য কুখ্যাত এবং নিন্দিত। আর এই তালিকায় আছেন ইতিহাসের আলোচিত কিছু নারী চরিত্রও। এ রকম কয়েকজনের কথা লিখেছেন ওবায়দুল গনি চন্দন
আর্মে গ্রেসে : আর্মে গ্রেসে-এর পূর্ণ নাম Irma Ida Ilse Grese, জন্ম ১৯২৩ সালের ৭ অক্টোবর এবং মৃত্যুবরণ করেন ১৩ ডিসেম্বর ১৯৪৫ সালে। জার্মানিতে জন্ম দেয়া আর্মে গ্রেসে চাকরি করতে রাবেন্সবার্গ এবং আসউইসের নাৎসি বাহিনীর কন্সেনট্রেশসন ক্যাম্পে। তিনি এই কন্সেনট্রেশন ক্যাম্পের নারী বিভাগের তত্ত্বাবধানে ছিলেন। মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য Belsen Trial তাকে মৃত্যু দণ্ড দেন। তার বিরুদ্ধে অপরাধের মধ্যে অন্যতম ছিল, তিনি নারী কারাবন্দিদের অত্যাচার করতে খুব ভালোবাসতেন এবং তার এই অমানবিক অত্যাচারের কারণে শতাধিক নারী মৃত্যুবরণ করেন। আর্মে গ্রেসে সব সময় মাজায় একটি পিস্তল এবং ভারি বুট পরে ঘুরে বেড়াতেন। অনেকের ধারণা ছিল, এটা তিনি নিজেকে অনেকটা হিস্র রূপে আত্মপ্রকাশের জন্য করতেন। মাত্র ২২ বছর ৬৭ দিন বয়সে আর্মে গ্রেসের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় ১৩ ডিসেম্বর ১৯৮৫ সালে। যুদ্ধ অপরাধী বিচারে তিনিই সর্ব কনিষ্ঠ যার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
মায়রা হিন্ডলি : মায়রা হিন্ডলি’র জন্ম ১৯৪২ সালে, আর তিনি ইংলিশ সিরিয়াল কিলার হিসেবে কুখ্যাত। তার পার্টনার ইয়ান ব্র্যাডি’র সঙ্গে মিলে সে পাঁচজন নাবালক শিশুদের ধর্ষণ এবং খুন করেন। এই দুজন নরপশু মিলে কিডন্যাপিং, ধর্ষণ এবং শারীরিকভাবে অত্যাচার করেন মোট পাঁচজন শিশুকে যাদের মধ্যে তিন জনার বয়স ১২ বছরের কম এবং দুজনার বয়স ষোলো থেকে সাঁতার এর মধ্যে। তার এই কর্মকাণ্ডের কথা জেনে হিন্ডলিকে পুলিশের হাতে ধরিয়ে দেন তার ১৭ বছর বয়স্ক দেবর। আদালতে যদিও তিনি নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেন কিন্তু তিনটি খুনের জন্য দোষি সাবস্ত্য হওয়ায় তার জাবতজীবন কারাদণ্ড হয়। আর কারাগারে থাকা অবস্থায় ২০০২ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
কাস্টাইলের ইজাবেল : ইজাবেল জন্মগ্রহণ করেন ১৪০১ সালে আর মৃত্যুবরণ করেন ১৫০৪ সালে, জন্মসূত্রেই তিনি কাস্টাইল এবং লিয়নের রানী ছিলেন। আর রাজা হিসেবে তার স্বামী ছিলেন ফারডিন্যান্ড। ইজাবেল এবং তার স্বামী ফারডিন্যান্ড বিখ্যাত ছিলেন স্পেইনকে এক রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য। এ ছাড়াও তৎকালীন স্পেনের মুসলিম এবং ইহুদিদের ধর্মান্তরসহ দেশ থেকে বিতাড়িত করার জন্যও। আর এর জন্য তার নির্দেশে অসংখ্য মুসলিম এবং ইহুদিকে নির্যাতনসহ হত্যা করা হয়। এ ছাড়াও তিনি আরেকটি কারণে ইতিহাসে বেশ বিখ্যাত, আর তা হলো ১৪৯২ সালে ক্রিস্টোফার কলাম্বাসের নতুন বিশ্ব খোঁজার জন্য আর্থিক সহায়তা দানের জন্য। ১৯৭৪ সালে ক্যাথলিক চার্চ তাকে ঈশ্বরের সেবিকা উপাধি দান করেন।
বেভারলি এলেট : বেভারলি এলেট পেশায় একজন সেবিকা হলেও তার নাম দেয়া হয় Angel Of Death। ইংরেজ সিরিয়াল কিলারদের মধ্যে তিনি অন্যতম একজন। তিনি ৪ জন বাচ্চা হত্যা, ৩ জন বাচ্চাকে হত্যার চেষ্টা এবং ৬ জন বাচ্চাকে মারাত্মকভাবে অত্যাচার করেন। ১৯৯১ সালের এপ্রিল মাস থেকে শুরু করে মাত্র ৫৯ দিনের মধ্যে তিনি এই অপরাধ গুলি সংঘটিত করেন। তার কর্ম ক্ষেত্র ছিল Kesteven Hospital। আর এখানেই তিনি এই অপরাধ গুলি করেন। যেহেতু তিনি সেবিকা ছিলেন আর এই হাসপাতালে বাচ্চাদের বিভাগেই কর্মরত ছিলেন তাই তার পক্ষে এখানে অপরাধ ঘটানো বেশ সুবিধাই ছিল। ১৯৯৩ সালে Nottingham Crown Court তাকে দোষী সাবস্ত্য করেন। তার সকল অপরাধের প্রমাণ না পাওয়া গেলেও যে সকল অপরাধের প্রমাণ পাওয়া যায় তার ভিত্তিতে তাকে ১৩টি জীবন চক্র ধরে কারাদণ্ড দেয়া হয় মানে আমৃত্যু কারাদণ্ড।
ইংল্যান্ডের রানী ম্যারি ১ : ইংল্যান্ডের রানী ম্যারি ১ জন্মগ্রহণ করে ১৮ ফেব্রি“য়ারি ১৫১৬ সালে আর মৃত্যুবরণ করেন ১৭ নভেম্বর ১৫৫৮ সালে। ১৫৫৩ সালে তিনি ইংল্যান্ড এবং আয়ারল্যান্ডের রানী নির্বাচিত হন এবং আমৃত্যু রানী থাকেন। রাজ্যে প্রজাদের অত্যাচারের জন্য তিনি বেশ বিখ্যাত ছিলেন, আর এ কারণেই তার নাম দেয়া হয় ‘ÔBloody Mary’। তার এই অত্যাচারের বিরোধীকারীদের তিনি নানাভাবে হত্যা এবং অত্যাচার করতেন। তার নির্দেশে শতাধিক লোককে হত্যা করা হয়। এ সময় প্রায় ৮শ’র মতো পরিবার ইংল্যান্ড ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়, যারা তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ইংল্যান্ডে ঢুকতে পারেনি।
©somewhere in net ltd.