নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

www.nafaji.com

বলুনঃ সত্য এসেছে এবং মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে। নিশ্চয় মিথ্যা বিলুপ্ত হওয়ারই ছিল। [১৭:৮১-পবিত্র কুরআন]

নাফাজি

পেশা: সিনিয়র সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার

নাফাজি › বিস্তারিত পোস্টঃ

রিদ্দা যুদ্ধ ও মুসলিমদের জন্য শিক্ষণীয়

২৩ শে এপ্রিল, ২০১১ বিকাল ৪:৫৪





আবু বকর (রাঃ) এর খিলাফতের বেশীর ভাগ সময়ই রিদ্দা যুদ্ধে পরিপূর্ণ ছিল। রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) এর ওফাতের খবর প্রচারিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই একশ্রেণীর লোক মদীনায় ইসলামী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করে। কিছু গোত্র যাকাত দিতে অস্বীকার করে। একই সময় মুহাম্মাদ (সাঃ) এর সাফল্য অনেকের মনে নবু্য়ত দাবীর আকাঙ্খা জাগিয়ে তোলে। এরা হল আসাদ আন্‌সি, মুসায়লামা, তুলায়হা এবং সাজাহ্‌ নামের এক খ্রীস্টান রমণী। রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) এর ওফাতের খবরে ভন্ড নবীদের বিদ্রোহ প্রকাশ্য রূপ নেয়। এইসব ভন্ড নবী ও বিদ্রোহীদের পরিচালিত আন্দোলন রিদ্দা আন্দোলন (Apostasy Movement) নামে পরিচিত।



আবু বকর (রাঃ) সাহস ও দৃঢ় সংকল্পের সাথে এই বিদ্রোহ দমণ করেন। খলিফা মুসলিম সৈন্যদলকে এগারটি ভাগে বিভক্ত করেন। প্রত্যেকটি সৈন্যদলকে একজন অভিজ্ঞ সেনাপতির অধীনে দিয়ে আরবের বিভিন্ন অংশে প্রেরণ করেন। খলিফা স্বয়ং প্রধান সেনাপতির দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। প্রথমেই মহাবীর খালিদ বিন ওয়ালিদ (রাঃ) তুলায়হাকে পরাজিত করেন। বানু আসাদ গোত্রকে ক্ষমা করা হলে তুলায়হা মদীনায় এসে ইসলাম গ্রহণ করে। তুলায়হাকে দমণ করার পর খালিদ (রাঃ) তামিম গোত্রের আনুগত্য লাভ করেন এবং বানু ইয়ারবু গোত্রের নেতা যে ভন্ড নবী সাজাহ্‌র দলে যোগ দিয়েছিল তাকে পরাজিত ও নিহত করেন। খলিফা ইকরামা (রাঃ) ও শুরাহবিল (রাঃ) কে মুসায়লামার বিরুদ্ধে প্রেরণ করেন। পরবর্তীতে তিনি খালিদ (রাঃ) কে তার বিরুদ্ধে পাঠান। ৬৩৩ খ্রীষ্টাব্দে খালিদ (রাঃ) মুসায়লামাকে ইয়ামামার যুদ্ধে পরাজিত করেন। মুসায়লামাসহ বানু আসাদ গোত্রের অসংখ্য লোক মারা যায়। অন্যদিকে বানু বকর ও পারস্যের সম্মিলিত বাহিণী পরাজিত হলে বাহরায়েন ও ওমানের বিদ্রোহ দমন হয়। দক্ষিণ ইয়ামেনে (যেখানে সর্ব প্রথম বিদ্রোহ শুরু হয়) ভন্ড নবী আসাদ আন্‌সির অনুসারীদের দমন করতে খলিফা মুহাজীর (রাঃ) কে নিয়োগ করেন। তিনি ইয়ামেনে শান্তি স্থাপন করে হাযারমাউতের দিকে অগ্রসর হোন। হাযারমাউতের পূর্ব ও পশ্চিম দিক হতে যথাক্রমে ইকরিমা (রাঃ) এবং মুহাজীর (রাঃ) অগ্রসর হয়ে বিদ্রোহীদের পরাজিত করেন। হাযারমাউত প্রদেশই সবার শেষে আত্মসমর্পণ করে এবং এই বিজয়ের মধ্য দিয়েই রিদ্দা যুদ্ধের অবসান হয়। খলিফা ভন্ড নবীদের বিরুদ্ধে যেমন কঠোর মনোভাবের পরিচয় দেন তেমনই যাকাত অস্বীকারকারীদের বিরুদ্ধে একইরূপ অবস্থান নেন। তাদের বিরুদ্ধে তিনি আলী (রাঃ), তালহা (রাঃ) ও যুবাইর (রাঃ) কে প্রেরণ করেন। তারা বিদ্রোহ দমন করলে যথারীতি যাকাত আদায় হতে লাগল।



রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) এর ওফাতের এক বছরের মধ্যে আবু বকর (রাঃ) রিদ্দা যুদ্ধ সফলভাবে পরিচালনা করেন এবং সকল বিদ্রোহীদের দমন করে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। ইসলামের প্রতি খলিফা ও সাহাবীদের দৃঢ় আনুগত্যই এই বিজয় তরান্বিত করে। এই ঘটনা আমাদের শিক্ষা দেয় যে একজন মুসলিম কখনই মুহাম্মাদ (সাঃ) ছাড়া অন্য কাউকে শেষ নবী ও রাসূল মানতে পারে না এবং ইসলাম পরবর্তী কোন মতবাদ বা কোন আদর্শকেই কোনভাবে বরদাসত্‌ করতে পারে না, সে আদর্শ, সে মতবাদ যতই বড় বা ছোট হোক না কেন। হতে পারে তা সমাজতন্ত্র, হতে পারে তা কাদিয়ানী মতবাদ অথবা কোন অজপাড়া গায়ে জন্ম নেয়া বাউল বা বৈষ্ঞব মতবাদ।



--------------------------------------------------------------------

"মুহাম্মাদ তোমাদের কোন ব্যক্তির পিতা নন; বরং তিনি আল্লাহর রাসূল এবং শেষ নবী। আল্লাহ সব বিষয়ে জ্ঞাত।"[৩৩:৪০-পবিত্র কুরআন]

"তোমাদের জন্যে হারাম করা হয়েছে মৃত জীব, রক্ত, শুকরের মাংস, যেসব জন্তু আল্লাহ ছাড়া অন্যের নামে উৎসর্গকৃত হয়, যা কন্ঠরোধে মারা যায়, যা আঘাত লেগে মারা যায়, যা উচ্চ স্থান থেকে পতনের ফলে মারা যা, যা শিং এর আঘাতে মারা যায় এবং যাকে হিংস্র জন্তু ভক্ষণ করেছে, কিন্তু যাকে তোমরা যবেহ করেছ। যে জন্তু যজ্ঞবেদীতে যবেহ করা হয় এবং যা ভাগ্য নির্ধারক শর দ্বারা বন্টন করা হয়। এসব গোনাহর কাজ। আজ কাফেররা তোমাদের দ্বীন থেকে নিরাশ হয়ে গেছে। অতএব তাদেরকে ভয় করো না বরং আমাকে ভয় কর। আজ আমি তোমাদের জন্যে তোমাদের দ্বীনকে পূর্নাঙ্গ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার অবদান সম্পূর্ণ করে দিলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্যে দ্বীন হিসেবে পছন্দ করলাম। অতএব যে ব্যাক্তি তীব্র ক্ষুধায় কাতর হয়ে পড়ে; কিন্তু কোন গোনাহর প্রতি প্রবণতা না থাকে, তবে নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলা ক্ষমাশীল।"[৫:৩-পবিত্র কুরআন]



তথ্যসূত্রঃ

ইসলামের ইতিহাস - কে আলী

http://historyofislam.com

http://en.wikipedia.org/wiki/Ridda_wars

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১১ বিকাল ৫:৫৫

Abdullah Arif Muslim বলেছেন: জাজাকাল্লাহ। অনেক ধন্যবাদ এমন একটি পোষ্ট দেওয়ার জন্য। আসলে এই ব্যাপারগুলো জানা দরকার। সূরা মুদ্দাসির এ আল্লাহ বলেছেন কুম ফা আনজির অর্থ্যাৎ উঠো সতর্ক করো। উঠার কথা আমাদের কিন্তু উঠছে আসিফ, আলবার্ট, মজ বাশার টাইপের অমুসলিমগুলো। আল্লাহ আমাদের সত্য বুঝার তৌফিক দান করুন। আমীন।

২৩ শে এপ্রিল, ২০১১ রাত ১০:৪০

নাফাজি বলেছেন: সময় যত সামনের দিকে এগিয়ে চলে ভ্রান্ত মতবাদ ও দর্শন ততই বিলুপ্তির পথে ছুটে চলে, ইতিহাস আমাদের তাই শিক্ষা দেয়। জানেন নিশ্চয় সত্য-মিথ্যা ও ন্যায়-অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য নির্ণয় করে দেয়ার জন্য কুরআনের আরেকটি নাম ফুরকান।

২| ১৫ ই মে, ২০১১ দুপুর ২:৫৭

নাফাজি বলেছেন: আল্লাহ যেন আমাদের এই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত অনুসরণ করার সামর্থ্য দান করেন। আমীন।

৩| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ১১:১১

খাজা মুহাম্মদ মাসুম বলেছেন: ভাল লাগলো ।

১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ১১:৫৭

নাফাজি বলেছেন: আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.