নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

www.nafaji.com

বলুনঃ সত্য এসেছে এবং মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে। নিশ্চয় মিথ্যা বিলুপ্ত হওয়ারই ছিল। [১৭:৮১-পবিত্র কুরআন]

নাফাজি

পেশা: সিনিয়র সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার

নাফাজি › বিস্তারিত পোস্টঃ

বদিউজ্জামান - সাঈদ নূরসী

২১ শে মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৪:৪৪

১৯৬০ সালে তুরস্কে কট্টর সেক্যুলারিস্ট জাতীয়তাবাদীরা সেনাবাহিণীর সহায়তায় একটি ক্যু ঘটায়। সেনাবাহিণীর একটি অংশ আলপারস্লান তুর্কীসের নেতৃত্বে একটি কবরের সন্ধানে বেরিয়ে পরে। অতঃপর তারা যখন তাদের কাঙ্ক্ষিত কবরের সন্ধান পায়, তখন সেই কবর খুরে সেখান থেকে দেহাবশেষ অজ্ঞাত স্থানে সরিয়ে ফেলে। এটা ছিল সাঈদ নূরসীর কবর, যিনি বদিউজ্জামান নামে সুপরিচিত। এই কট্টর সেক্যুলারিস্ট জাতীয়তাবাদীদের উদ্দেশ্য ছিল তুরস্কের বুক থেকে সাঈদ নূরসীর আদর্শের মৃত্যু ঘটানো। কি ছিল তার আদর্শ?



কুর্দী বংশোদ্ভূত নূরসীর জন্ম ১৮৭৬ সালে পশ্চিম তুরস্কে। ওসমানীয় সাম্রাজ্যের (Ottoman Empire) সূর্য তখন ডুবছিল। নিজ শহরেই তিনি প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। ধর্মীয় নানা বিষয়ে তিনি তৎকালীন তুরস্কের অন্যান্য পন্ডিতদের সাথে বিতর্কে লিপ্ত হয়ে সুখ্যাতি অর্জন করেছিলেন। তীক্ষ্ম স্মরণশক্তির অধিকারী ও সুবক্তা হওয়ার কারণে তাকে উপাধি দেয়া হয়েছিলো বদিউজ্জামান, যার অর্থ, সময়ের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব। তিনি তৎকালীন তুরস্কে প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থায় সন্ত্তষ্ট ছিলন না। তিনি চেয়েছিলেন এর সংস্কার। তিনি চেয়েছিলেন বিজ্ঞান ও ধর্মীয় শিক্ষার সমন্বয় সাধণ করতে।



প্রথম বিশ্বযুদ্ধে তিনি সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন এবং রাশিয়ার কাছে যুদ্ধবন্দী হিসেবে গ্রেফতার হোন। সেখান দুবছরেরও অধিক সময় অতিবাহিত করেন। ১৯১৮ সালের বসন্তে তিনি রাশিয়ান ক্যাম্প থেকে মুক্তি লাভ করে স্বদেশে ফিরে আসেন। তিনি নিজ দেশে সাদরে আমন্ত্রিত হোন এবং "দারুল হিকমাহ আল ইসলামিয়া" নামের একটি ইসলামিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সদস্য নির্বাচিত হোন।



পরবর্তীতে ওসমানীয় সাম্রাজ্যের পতন হয় এবং তুর্কী প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। মোস্তফা কামাল, সাঈদ নূরসীকে আঙ্কারায় আমন্ত্রণ জানান। তিনি আঙ্কারায় পৌছেই বুঝতে পারেন, কামাল কট্টর সেক্যুলারিজম ও নাস্তিক্যবাদের বীজ বোপন করেছেন। আঙ্কারায় আট মাস অবস্থান করার পর তিনি উপলব্ধি করেন, যেই আদর্শ দ্বারা কামাল তুরস্ককে পরিচালিত করছেন তার সাথে আপোস করা তার পক্ষে সম্ভব নয়। তিনি ঘোষণা করেন, "আমি পৃথিবীকে প্রমাণ করে দেখাবো যে, কুরআন অবিনশ্বর, অফুরন্ত সূর্যের ন্যায়"। তিনি রচনা করেন ছয় হাজার পৃষ্ঠাব্যাপী পবিত্র কুরআনের এক তাফসীর, নাম তার রিসালে নূর



নূরসীর মতে এই সময়ের সবচেয়ে বড় শত্রু নাস্তিক্যবাদ, সেক্যুলারিজম, বস্ত্তবাদী দর্শন এবং সমাজতন্ত্র। নূরসীর লেখা, তার চিন্তাধারা তুরস্কে জনপ্রিয়তা লাভ করতে থাকে। এমনকি সমাজের বুদ্ধিজীবি সম্প্রদায় ও সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যেও তার দর্শন আলোড়ন সৃষ্টি করে। তার এই ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তার কারণে সরকার তাকে তুরস্কের আদর্শের বিরুদ্ধাচারণের অজুহাত তুলে গ্রেফতার করে। অবশ্য ১৯৫৬ সালে তিনি এইসব অভিযোগ থেকে মুক্তি লাভ করেন। ১৯৬০ সালের ২৩ শে মার্চ, তুরস্কের উরফা (গ্রীক ভাষায় এডেসা) নগরীতে ইসলামের এই মহান মুজাদ্দিদের জীবণাবসান হয়।



আজ ২০১৫ সালে এসে আমরা তুরস্কে যে ইসলামী পুনরুত্থান দেখতে পাই তার মূলে রয়েছেন এই বদিউজ্জামান সাঈদ নূরসী। তুরস্কের বর্তমান প্রেসিডেন্ট এরদোগান, সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ্ গুল, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী আহমেদ দাভুতোগুল, ইসলাম প্রচারক ফাতেহউল্লাহ্ গুলেন সহ আরো অসংখ্য তাত্ত্বিক, বুদ্ধিজীবি উনারই অনুসারী।



তথ্যসূত্রঃ

Bediüzzaman Said Nursi

Said Nursî

Risale-i Nur

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৪:৫১

সাদী ফেরদৌস বলেছেন: ছবিতে দেখা যাচ্ছে তার দাঁড়ি নাই , আমাদের দেশের হুজুর রা উনি এদেশে থাকলে তাকে নিশ্চিত কাফের ফতোয়া দিতো ।

২১ শে মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৫:৪২

নাফাজি বলেছেন: আমি যতদূর জানি, তৎকালীন সময়ে দাড়ি রাখা, ইসলামী পোশাক নিষিদ্ধ ছিল। নরাধম কামাল আধুনিকায়নের নামে, ইসলামী পোশাকের পরিবর্তে পাশ্চাত্য পোশাক, আরবী বর্ণমালার পরিবর্তে ল্যাটিন বর্ণমালা ধারণ করেছিলেন। হয়তোবা সে কারণেই তার দাঁড়ি নেই।
তিনি দেখতে যেমনই হোন না, তার উদ্দেশ্য, তার নিয়ত, তার কাজ ছিল মহৎ। একজন মহান মুজাদ্দিদের ন্যায় ইসলামী পুনরুত্থানে তিনি অসাধারণ ভূমিকা রেখেছিলেন।

২| ২১ শে মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৫:৪২

মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেছেন: ভাল লাগল জেনে...

২১ শে মার্চ, ২০১৫ বিকাল ৫:৪৫

নাফাজি বলেছেন: ধন্যবাদ।

৩| ২১ শে মার্চ, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০২

পুরান লোক নতুন ভাবে বলেছেন: @সাদী ফেরদৌস দাড়ি নবীজি(সাঃ) এর সুন্নত!! মুসলমানের প্রথম লক্ষন হচ্ছে দাঁড়ি!! ঠিক জানি না উনি কি ধরনের ইসলাম প্রচার করছেন!! জানলে ভালো হতো!!

৪| ২১ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ৮:২৬

মুহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেছেন: ভাই, আপনাদের প্রেক্ষাপট বুঝতে হবে। তুরস্কে কামাল আতাতুর্ক প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে নাস্তিকতা বাস্তবায়ন করেছেন। তুরস্কে, মিশর এসব দেশে দাড়ি রাখা নিষিদ্ধ ছিল। এখনো সম্ভবত সরকারি চাকুরি যারা করে তাদের দাড়ি রাখা নিষেধ!

২১ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ১০:৫২

নাফাজি বলেছেন: জহির ভাই, ওদের সাথে কুতর্কে জড়াবেন না। সমাজে কিছু মানুষ আছে, যারা ইচ্ছাকৃতভাবে মূল বিষয় থেকে আপনার দৃষ্টি সরিয়ে দিবে। আর এই পোস্টের মূল বিষয় হলো, সাঈদ নূরসী ও তুরস্কে ইসলামী পুনর্জাগরণ।

৫| ২২ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ১২:২৯

কাল্পনিক_ভালোবাসা বলেছেন: ওদের সাথে কুতর্কে জড়াবেন না। সমাজে কিছু মানুষ আছে, যারা ইচ্ছাকৃতভাবে মূল বিষয় থেকে আপনার দৃষ্টি সরিয়ে দিবে। আর এই পোস্টের মূল বিষয় হলো, সাঈদ নূরসী ও তুরস্কে ইসলামী পুনর্জাগরণ।


++

সহমত। পোস্টে ভালো লেগেছে।

২২ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ১২:৩৬

নাফাজি বলেছেন: সহমত পোষণ করার জন্য ধন্যবাদ

৬| ২২ শে মার্চ, ২০১৫ দুপুর ১২:৪৮

আছিফুর রহমান বলেছেন: বাংলাদেশে কখনোই হয়তো একজন সাইদ জন্মাবে না। যদি জন্মায় চরমোনাই তরিকা বলবো বেডা কাফের, তার দাড়ি নাই, জামাত কইবো, সে দেশের জনগনকে ইসলাম থেকে সরিয়ে নিচ্ছে, মুক্তমনা গ্রুপ কইবো, বেডা আইছে ইসলাম ফালাইতে, আমরাই সেরা বাকি সব দুচি, আর আমরা সাধারণ মানুষ একবার এই পক্ষে আরেক বার ঐ পক্ষে, এর মধ্যে তার স্বাভাবিক মৃত্যু হইবো, ফারাবিরা স্ট্যাটাস দিবো তার জানাজার নামাজ যে পরাইবো সে মুনাফিক, তাকে কতল করতে হইবো। শফি পন্থিরা লোকের মৃত্যুর পর একজন মুনাফিকের মৃত্যু হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলন করবো।
আমার এলাকার এক ভাই কথায় কথায় খুব সম্ভবত আলী(রঃ) এর একটা উক্তি বলে "যেই দেশে গুনিলোকের কদর নাই, সেই দেশে কখনোই গুনি লোক জন্মগ্রহণ করবে না।"

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.