![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি নরাধম অধার্মিক প্রেমিক। প্রেম, রাষ্ট্র , সমাজ, সিসটেম যার কাছে তালগোল পাকিয়ে গোলগাল কিছু একটা হয়ে গেছে
হিমুঃ স্যার !
হুমায়ূন আহমেদঃ আরে হিমু তুমি। এইখানে স্বর্গে কিভাবে এসেছ ?
হিমুঃ আমাদের দেশের বিজ্ঞানীরা এও ধরনের টাইম মেশিন আবিস্কার করেছেন।
যেটা দিয়ে এক ডাইমেনশন থেকে আরেক ডাইমেনশনে যাওয়া যায়।
হুমায়ূন আহমেদ : বাহ ভালো তো। তা কি জন্যে এসেছ বল।
হিমুঃ আজকে আপনার জন্মদিন স্যার। তাই আপনাকে নিতে এসেছি।
হুমায়ূন আহমেদঃ শুনো হিমু। মৃত্যু প্রকৃতির একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। মানুষের উচিত নয় সেটাকে ভাঙ্গা।
হিমুঃ জি স্যার। কিন্তু রুপা যে আপনার জন্য কেক নিয়ে বসে আছে। মাজেদা খালা পোলাও, বেগুন ভাজি আর আলুর ভর্তা রান্না করেছে। ভালোবাসার মানুষগুলোর জন্য তো নিয়ম ভাঙ্গা যায়।
হুমায়ূন আহমেদঃ অযৌক্তিক কথা বলবে না হিমু। আজকে যদি মিসির থাকত এখানে তোমার গালে একটা থাপ্পর মারত। অন্যকথা বল। তোমার মহামানব হওয়ার প্রক্রিয়া কতদুর।
হিমুঃ ভালোই স্যার। সপ্তাহে চারদিন হরতাল থাকে। আমিও আরামে রাস্তায় হাঁটতে পারি। স্যার স্বর্গ থেকে তো চাঁদ অনেক কাছে। জোছনা টা নিশ্চই আপনি অনেক উপভোগ করেন।
হুমায়ূন আহমেদঃ আসলে ব্যাপারটা আপেক্ষিক। চাঁদ পৃথিবী থেকেই সুন্দর। জোছনা বিলাস করার জন্য পৃথিবীতে থাকার আবশ্যকতা আছে। তাছারা ভালোবাসার জিনিসগুলোর খুব কাছে যেতে নেই।
হিমুঃ স্যার আপনার কি মনে হয়, রুপা আমার জন্য কতদিন অপেক্ষা করবে ?
হুমায়ূন আহমেদঃ যতদিন করা যায়। ভালোবাসার ব্যাপারে মেয়েরা অনেক জেদি হয়। আবার এই জিদের কারনে সে তোমার থেকে দূরে সরেও যেতে পারে।
হিমুঃ স্যার, রুপা আপনার জন্য একটা উপহার পাঠিয়েছিল।
হুমায়ূন আহমেদঃ কই দাও।
হিমুঃ ওহহ। সরি স্যার। আমিত ভুলেই গিয়েছিলাম আমার পাঞ্জাবীর পকেট নেই।
হুমায়ূন আহমেদঃ ভালো।
হিমুঃ স্যার আজকে তাহলে আসি।
হুমায়ূন আহমেদঃ শোন হিমু। তুমি একবার এখানে এসে প্রকৃতির নিয়ম ভেঙ্গেছ। আবার যদি পৃথিবীতে ফিরে যাও তাহলে নিয়মটা আবার ভাঙ্গা হবে। প্রকৃতি সেই প্রতিশোধ তোমার কাছের কারো উপরও নিতে পারে। তার চেয়ে বরং তুমি আমার সাথেই থেকে যাও এখানে।
হিমুঃ এটা আসলে আপনার অজুহাত স্যার। কারণ আপনি এখানে অনেক একা অনুভব করেন। আপনি পৃথিবীর সবাইকে অনেক মিস করেন। আমাকেও। তাই আপনি আমাকে এখানে থেকে যেতে বলছেন।
হুমায়ূন আহমেদঃ হয়ত তাই
হিমুঃ না স্যার। থাকা সম্ভব না। হিমুরা মায়ার বন্ধনে জড়াতে পারেনা। আজকে তাহলে উঠলাম স্যার।
হুমায়ূন আহমেদঃ বিদায়
হিমুঃ স্যার একটা কথা।
হুমায়ূন আহমেদঃ কি ?
হিমুঃ শুভ জন্মদিন স্যার......
[ বিদ্রঃ ইহাকে সাহিত্যের দৃষ্টি কোণ থেকে বিচার করা ধৃষ্টতা হবে। ইহা একটি পাঁড় হুমায়ুন ভক্তের মনের কল্পনা মাত্র। আশা করি সেই দৃষ্টি তেই দেখবেন ]
নন্দিত নরকে থেকে শুরু। তারপর মানুষটার প্রতি ভালোবাসা শুধু বেড়েছেই। বাংলা সাহিত্য, নাট্য ও সিনেমা জগত কে যে একাই নিজের কাঁধে বহন করেছেন। হুমায়ূন আহমেদ সম্পর্কে প্রয়াত সুনিল গঙ্গপাধ্যায় বলেছিলেন " আমি ঢাকা আসলে তার নুহাশ পল্লীতে যেতাম। পৃথিবীর আর কোন লেখক পুরো একটা গ্রাম সাজিয়েছেন বলে আমার জানা নেই "
ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টারে একবার দুই বাংলার সাহিত্যিকদের একটা মিলন মেলা হয়েছিল। ভক্তরাও যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল। আমার দুই প্রিয় সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার আর হুমায়ূন আহমেদকে দেখার সুযোগ আমি হাত ছাড়া করিনি। সেই মিলন মেলায় সমরেশ মজুমদার হুমায়ূন আহমেদ কে বলেছিলেন " আচ্ছা হুমায়ূন। এই যে সাহিত্য, নাটক, চলচিত্র এতো কিছু তুমি ম্যানেজ কর কিভাবে।"
স্যার এর উত্তর ছিল " কি যে বলেন না দাদা। আপনাদের কাছে থেকেই তো শিখছি। "
মহান মানুষরা মনে হয় এমনি হয়। বিনয়ি, নিরহঙ্কার।
আমরা আপনাকে ভুলিনি স্যার। হৃদ মাঝারে রেখেছি। শুভ জন্মদিন
©somewhere in net ltd.