নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

হাভাত

ভাল ছেলে

হাভাত › বিস্তারিত পোস্টঃ

একটা ছোট গল্পের বই

১৪ ই আগস্ট, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:২১



আজ বুধবার দিনটা আমার জন্য ভাল না মন্দ তা জানি না। আমি সকাল ৯ টায় ঘুম থেকে উঠি তার পর নাস্তা করি,এটাই আমার নিয়ম। আমি একজন ভবঘুরে type মানুষ । নাস্তা করে বের হলাম , একা একা ঘুরতেসি। ঘুরতে ঘুরতে গেলাম ৩২ নাম্বারে। হঠাৎ দেখি ৩২ number e এক মহিলা কাদসে । কেন কাদসে ? জানার আগ্রহ সবারই হয় । আমি তার বেতিক্রম নয়…। মহিলার হাতে ছিল ছোটদের বই , সেই বইটা নিয়ে মহিলা বিনাকি করসে আর কাদসে । আমি ভাবলাম মহিলা টাকা নেওয়া জন্য এসব করসে , অনেক মানুষ ই এখন এসব করে। তাই দূর থেকে দেখছিলাম। মানুস দারিয়ে আসে আর মহিলার কান্না দেখসে । মহিলার কাদতে কাদতে চোখের জল শুকিয়ে গেছে, তবুও তিনি কাদতেছেন……………।



অনেক খন try করার পর জানতে পারলাম মুল ঘটনা। মহিলার নাম লাকি খানম ।সেই মহিলার একমাত্র সন্তান রাকিব। বাবা মার আদরের সন্তান । ছেলে জা চায় তাদিতে একটু ও দেরি করেন না , এতবেসি আদর করে যে বলার মত না…। ছেলেকে নিয়ে তাদের অনেক সপ্ন। ছেলে বড় হবে অনেক কিছু করবে । সব বাবা মা জা আশা করে ।

রাকিব ক্লাস ফোর পড়ে , একটু জেদি type r …। তো মায়ের সাথে বায়না ধরেসে বই মেলায় যাবে। যাবে টো যাবেই । তার বাবা জব করে সেই কারনে ছেলে কে মেলায় নিয়ে জেতে পারে না । বই মেলা জাওয়া কারন টার বন্ধুরা মেলা থেকে ঘুরে এসেছে এবং তারা অনেক গল্প করেসে তার কাছে বই মেলা সম্পরকে। অনেক ঘুরে বেড়ানো যায়, ice crime খাও যায় ইতাদি। তার মন আর মানে না কবে তার মা টাকে বই মেলায় নিয়ে যাবে !!!।

রবিবার বেলা ১২ টায় মা ছেলে বের হল মেলার উদ্দেশে, যাতে তারা ৪টার মধেয় বাসায় ফিরতে পারে । বাসা থেকে বের হতেই হোচট খায় রাকিব এর মা , রাকিব বলে কি হয়েছে মা ? লাকি খানম বলে, আজকে দিন টা কোন ঘটনার মুখোমুখি হতে হয় কে জানে…। বাসার সামনে ice crime এর দোকান ,বাসা থেকে বের হলে একটা ice crime টার চাই কি চাই। সে দিন অ তার বেতিক্রম ঘটেনি। দোকানদার বলে আপা আপনার ছেলেটা এতো জেদি………। রাকিব এর মা বলে , ভাই একে নিয়ে আর পারছি না, এইযে দেখেন আজকে মেলায় জাওয়া জন্য জেদ করসে। দোকানদার বললে, নিয়ে জান আপা ছোট পলাপান ঘুরতে চাবেই, ঘুরতে তো সবাই চায় আপা । তারা ৩২ নাম্বার থেকে বাসে উঠার জন্য হাটতে লাগলো। বাসে উঠার আগে কত গল্পো, এটা কি ,উটা কি প্রশ্নের কোন শেষ নেই। বাস থেকে তারা শাহবাগ নামলো। মা তার ছেলে কে দেখায়ে দেয় , ওইটা জাতীয় জাদুঘর, কিছু দূর জাওয়া পর দেখায়দেয় চারুকলা ইন্সটিটিউট। রাকিব কে তার মা বলে তুমি ভালো ছবি আকতে পারলে এইখানে পড়তে পারবে। তারপর কবি নজরুল ইসলাম এর কবর দেখিয়ে দিয়ে বলে ইনি আমাদের জাতীয় কবি,রাকিব এর মা রাকিব কে প্রশ্ন করে তুমি চল চল কবিতা টা জাননো ? রাকিব বলে “ হ্যা মা আমি তো পারি, তোমাকে শুনায়”। রাকিব তার মাকে কবিতা টা আবৃতি করে শুনায়। গল্পে গল্পে তারা বই মেলায় পৌছে যায়। বই মেলায় অনেক মানুষ দেখতে রাকিবের ভালই লাগছিল ,মানুষ স্টলে স্টলে ঘুরসে আর বই দেখেছে ।তার মাও বই দেখেসে বিভিন্ন ধরনের রান্নার বই। রাকিব তার মাকে বলল, “চলটো মা ছোটোদের বই কই পাওয়া যায় দেখি” । তা মা তাকে কিচিরমিচিয়া নামক ছোটদের বইয়ের স্টলে নিয়ে গেলো। রাকিব মনের আনন্দে বই দেখসে , বিভিন্ন ধরনের বই। কোনটা ছেড়ে কোনটা নিবে সে বুঝতে পারছে না। অনেক ঘটা ঘটির পর একটা বই পছন্দ হল , বইটার নাম “ ছোট গল্পের বই”। তার অনেক পছন্দ বই টা । রাকিব বইটা বার বার উল্টাতে থাকে। মাকে বলে “ মা এই বই বইটা পড়তে কত দিন লাগবে ?” । বইটা সে কখন পড়বে তার জন্য তার মাথা খারাপ হয়ে গেছে। মাকে বলে “ মা আর মেলা ভাললাগছে না চলও বাসায় “। লাকি খানম বুঝতে পারে বইটা পরার জন্য সে এমন জেদ করছে । তারা শাহবাগ থেকে বাসে উঠলো। রাকিব বাসে উঠে মায়ের পাশে বসে মায়ের গায়ে হেলান দিয়ে আরাম করে পই এর পাতা উল্টাতে লাগলো। লাকি খানম ভাবেন ইস আমার ছেলেটা যদি এরকম ছোটোই থাকতো, কোতো না ভাল হত। ছেলে বড় হবে , বিয়ে করবে, এ ভাবে কি মার পাশে থাকবে? হঠাৎ ঘোর কেটে গেল হেল্পার এর ডাকে”আপা আপনে ৩২ নাম্বারে নাম্বেন না ?” । লাকি খানম ছেলে কে নিয়ে নামলেন বাস থেকে । রাকিব বলল “মা বাদাম খাব”। বাদাম ওয়ালার কাছথেকে ১০০ গ্রাম বাদাম কিনলেন। তার এক হাতে বাদাম এক হাতে হান্ড bag । পাশে ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। রাস্তা পার হতে হবে তাদের , একটার পার একটা গাড়ি যাইতেছে সা… সা… সা… করে। রাস্তা পার হওয়ার মত chance পাওয়ায় মুসকিল।

কিছু খন পর গাড়ির চাপ কমলো। রাকিব এবং তার মা রাস্তা পার হওয়া জন্য পা বাড়ালো,একপা এগুতেই একটা কার এসে break করল রাকিব এর কাছে ,রাকিব ভয়ে চিৎকার করে সামনে দৌড় দিল ,কিন্তু সে খেয়ালি করেনি আর একটা গাড়ি আসতেছে। লাকি খানম চিৎকার করতে লাগলো…………। মায়ের চিৎকার রাকিবের কান পযন্তু আর পৌছাল না । তার আগেই একটা কার এসে ধাক্কা দিল ছোটো শরীর টাকে ,ছিটকে পরল হাতে থাকা ছোট গল্পের বই টা আরেক পাশে পরে থাকল রাকিবের নিথর দেহ টা ……………লাকি খানম চিৎকার করে জ্ঞান হারিয়ে ফেললেন। পরে রইল নতুন ছোট গল্পের বই টা । বইটা আর পড়া হল না রাকিবের…………………।



লাকি খানম ছেলের শোকে মাঝে মাঝে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন। কখন ৩২ নাম্বার সুটে এসেছেন টা কেও বলতে পারে না………………।



আমি এই ঘটনা টা শুনেছি রাকিবে এক মামার কাছ থেকে । সে যখন বলছিলেন তখন কথার খেই বার বার হারিয়ে ফেলছিলেন,তার মধে্য যে চাপা কষ্ট তিনি বের করতে পারছিলেন না , আমার সাথে কথা বলার সময় হাও মাও করে কেদে ফেলেন।



নাফিজ

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.