![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আবীরের হাতে এখন কচকচে এক হাজার টাকার একটি নোট।এইতো কিছুক্ষণ আগেও তার চামড়ার ছেড়া মানিব্যাগটাতে মত্র ১২ টাকা ছিল।বাংলা মটরের রোডের উপর যে ওভার ব্রীজটা আছে,সেখানে আনমনে হয়ে হাটতে হাটতে শেখ মুজিবের মুখের ছবিযুক্ত কাগজটি দেখে আগ্রহের সাথে সেটির কাছে যায়।ঝালমুড়ির এঠো কাগজের নিচে আবীর এটা পাবে কখনো আশাও করেনি।
আবীর এখন বেশ খুশি। মাসের ৪ তারিখে যখন আবীরের পকেটটি সাধারণত ফাকা থাকে, তখন এই এক হাজার টাকার নোটটি অনেকটা কোহিনূর হীরার থেকেও দামি।এই এক হাজার টাকা দিয়ে কি করবে আবীর। ভাবতেই তার মনে হল কতদিন মেসের হালিমা খালার হাতের রান্না ছাড়া আর কিছু খাওয়া হয়না।হঠাত মনে হল যাওয়া যায় তো আজ কোনো ফাস্টফুডে।
একথা চিন্তা করতেই করতেই লাবন্যের কথা মনে পড়ে গেলো। মেয়েটা আবীরের জন্যে কতকিছুই না করে। শেষ জন্মদিনেও ওর জন্যে গোলাপ ছাড়া আর কিছু দিতে পারেনি আবীর। আজ না হয় এক জোড়া পায়েল কিনে লাবন্যকে চমকে দেওয়া যাক।
কিন্তু তা কি করে হয়।লাবন্যের জন্য পায়েল কিনতে গেলে গলির মাথার মামার দোকানের সামনে থেকে আরো ৬/৭ দিন মুখ লুকিয়ে যেতে হবে। মামা যে এখনো আবীরের কাছে ৮০০ টাকা পায়। টাকাটা মামাকে দিলে এক মাস আর সিগারেটের জন্যে মেসের ছোটভাইটার কাছে লজ্জা নিয়ে দাড়াতে হবেনা। কিন্তু রনির মাটির ব্যাংক থেকে আবীর অনেকদিন হল ৬০০ টাকা বের করে নিয়েছে চুরি করে। নিজের রুমমেট বলে রনি আবীরকে অনেক বিশ্বাস করে,আর তাছাড়া রনি নিজের পংগু বাবার জন্যে হুইল চেয়ার কেনার জন্যে ওই ব্যাংকে টাকা জমায়। সেই টাকাটা আগে রাখা জরুরি।পকেটের সেই খুচরা ১২ টাকা দিয়ে আবীর একটা ব্যানসন সিগারেট কিনে ধরাল। চিন্তা করতে করতে আবীর ঠিক করল এই টাকার সিংহভাগ রনির মাটির ব্যাংকেই যাবে। তাই একটু মনের আনন্দে সিগারেট ফুকতে ফুকতে বাসার উদ্যেশ্যে হাটতে লাগল আবীর।
পিছন থেকে হঠাত কে যেন আবীরের পাঞ্জাবীটা টান দিল
- ভাই কিছু টাকা দিবেন?
-- কি করবি টাকা দিয়ে?
- ছোট ভাইটা অনেক কান্নাকাটি করতাসে ঈদের জামার লাইজ্ঞা, অরে একটা জামা কিনে দিতাম
মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আবীরের নিজের বোনের কথা মনে পড়ে গেলো। আবীরের বাবা মারা যাবার পর ঠিক এভাবেই ওর ছোট বোন একদিন ঈদের জামার জন্যে বলেছিল।
-- তোর কোলে এটা তোর ভাই?
- হ
-- সত্যিই ঈদের জামা কিনবি ত?
- হ সত্যি
-- নাহ তোদের নিয়ে বিশ্বাস নাই, চল আমি কিনে দেবো।
আবীর মেয়েটার সাথে মার্কেটে গিয়ে ওর ভাইয়ের জন্যে একটা লাল রঙের পাঞ্জাবি কিনে দিলো। আবীর ওই ভাইবোনের চোখে মুখে আনন্দের হাসিটা উপভোগ করল খুব। তারপর ওদের বিদায় দিয়ে আবার হাটতে শুরু করল আবীর। পকেটে আর মাত্র ২০ টাকা আছে। একটা সিগারেট কি কিনব?
নাহ থাক কাল বাসে করে ভার্সিটি যেতে টাকাটা কাজে লাগবে। এইসব চিন্তা করতে করতে আবীর আবার পথ চলা শুরু করল....
২| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:১৭
Nafiz Shovon বলেছেন: ধন্যবাদ পাঠক ভাই, এটি আমার প্রথম ব্লগ
৩| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:৪৭
নেফার সেটি বলেছেন: নাফিজ ভাই সুন্দর হয়েছে গল্পটা। আমি রাকিব।
৪| ১৮ ই আগস্ট, ২০১৫ রাত ১১:০৯
Nafiz Shovon বলেছেন: ভাই যে
©somewhere in net ltd.
১|
১৬ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১:১৪
শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: শিক্ষামুলক গল্প। এইসব ছোটখাট মানবিক বোধই মানুষকে মানুষ বানায়