নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Restless

I want to make me as a blog writter.

রাশিদুল ইসলাম নাহিদ

I like to explain the international affiars.

রাশিদুল ইসলাম নাহিদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

কে হবেন ভারতের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী

০৬ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ৯:৫৫

আগামী ২০১৪ সালের নির্বাচনে ভারতে ক্ষমতা দখলের লক্ষ্যে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ১৩ সেপ্টেমবর গুজরাটের তিন বারের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেই তাদের প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে বাজিমাত করার চেষ্টায় মাঠে নেমেছে। আদভানির মতো প্রবীণ নেতার আপত্তিকেও গ্রাহ্য করেননি সংঘ পরিবারের আশীর্বাদপুষ্ট উগ্র হিন্দুবাদী নেতারা। পরে অবশ্য দলের প্রধান রাজনাথ সিং এবং বিজেপির অন্যান্য নেতারা আদভানি কে বুঝিয়েছেন যে, কংগ্রেসের বিপক্ষে নির্বাচনে জিততে মোদির কোন বিকল্প নেই। তাই দল থেকে নরেন্দ্র মোদিকে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী ঘোষণা করায় তুষ্ট হতে না পারলেও ইতোমধ্যে আদভানির ক্ষোভের রেশটা অনেকটাই শীতল হয়েছে। কারণ মোদি নিজেই আদভানির সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলে সমালোচনার উর্ধ্বে উঠতে চেষ্টা করছেন।



অন্যদিকে বিজেপি কর্তৃক মোদিকে আগামী নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী ঘোষণা করায় ক্ষমতাসীন জোটে কিছুট শঙ্কা ও অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। কেননা মোদি আসার অর্থই হলো সাম্প্রদায়িকতা ও হিন্দু উগ্রবাদের পুনরুত্থান। এছাড়া ক্ষমতাসীন কংগ্রেসে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী নিয়ে নেতারা সংকটে পড়েছে। মনমোহন সিং ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী পদে লড়বেন না। রয়েছে কংগ্রেস সভানেত্রী তনয়া রাহুল গান্ধি। মনমোহন সিংসহ দলের একাংশ রাহুল গান্ধির নাম ইতোমধ্যে প্রস্তাব করেছেন। কিন্তু সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধি এখনো মনস্থির করতে পারেননি। কারণ ত্রিপুরার বিধান সভা নির্বাচনে কংগ্রেসের আসন সংখ্যা আরো কমেছে। কংগ্রেসের ঘাঁটি বলে পরিচিত অনেক রাজ্যের বিধান সভা নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবি ঘটেছে। যেখানে রাহুল গান্ধির চমক তেমন কোন কাজে আসেনি। এদিকে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং সৎ ও প্রচ্ছন্ন চারিত্রিক বৈশিষ্টের অধিকারী হলেও তার আমলে কয়লা খনি, ইতালি থেকে হেলিকপ্টার ক্রয়ের দুনীর্তিসহ যে বড় বড় কয়েকটি আর্থিক কেলেঙ্কারির ঘটনা ঘটেছে দলীয় প্রভাবের কারণে কাউকে তিনি বিচারের সম্মুখীন করতে পারেননি। এছাড়া অর্থনৈতিক মন্দা, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি ও সাম্প্রতিক ডলারের বিপরীতে রুপির দরপতন ইত্যাদি বিষয় গুলোকে ইস্যু করে মাঠে নেমেছে বিরোধীদল বিজেপি।



অতিসম্প্রতি মনমোহন সরকার ভারতের দরিদ্র জনগোষ্ঠির খাদ্যের নিরাপত্তার উদ্দেশ্যে সংসদে খাদ্য নিরাপত্তা বিল পাশ করলেও এর সুফল জনগণ এখন পাচ্ছে না। তাই কংগ্রেস এর থেকে কোন রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করতে পারছে না। তবে মোদির বিরুদ্ধে কংগ্রেস নির্বাচনী প্রচারণায় কিছুটা সুবিধা করতে পারবেন। কারণ মোদি হচ্ছেন কট্টর হিন্দু জাতীয়বাদী নেতা। যাকে গুজরাট দাঙ্গার ‘কসাই’ হিসেবে অনেকেই জানে। যিনি মূলত সংখ্যাগরিষ্ট হিন্দুদের ভারতে হিন্দু জাতীয়তাবাদ ছাড়া আর কিছুই দেখতে পান না। আর মোদির এই উগ্রবাদের বিষয়কে সামনে রেখে কংগ্রেস তাদের ‘ধর্মনিরপেক্ষতার’ স্লোগানকে মোক্ষম হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চাইছে। তবে কংগ্রেসের এই নিরপেক্ষ প্রগতির পতাকা কতটুকু সহায়ক হবে তা সময়ের উপরেই ছেড়ে দেয়া যাক।







সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের মুসলিম অধ্যুষিত মুজাফফরনগরে যে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় অর্ধশতাধিক মানুষ নিহত ও ৪০ হাজারের বেশি মানুষ উদ্বাস্তু হয়ে ৩৮ টি শরনার্থী শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে, সেই দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণে আনতে ইউপিএ জোট সরকার অনেক সময় বিলম্ব করেছে। যদিও পরে সোনিয়া গান্ধি, রাহুল গান্ধি ও মনমোহন সিং দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেছে এবং ভুক্তভোগি মুসলিমদের সান্তনা দিয়েছে। এদিকে এ পরিস্থিতিকে মোদি উত্তর প্রদেশসহ দেশের আইন শৃঙ্খলার অবনতি ও কংগ্রেসকে ‘ধর্মনিরপেক্ষ পর্যটক’ বলে কটাক্ষ করে মুসলিমদের প্রতি সহমর্মিতা দেখানোর চেষ্টা করছে। যদিও মোজাফফরনগরের দাঙ্গায় আগুনে ঘি ঢেলে দেয়ার কাজটি বিজেপিই করেছে। কারণ বিজেপি পুরাতন দাঙ্গার একটি ভিডিও ক্লিপ ইউটিউবে ছেড়ে দিয়ে দাঙ্গার মাত্রাটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে ঠেলে দিয়েছে। কারণ এই দাঙ্গার ফলে রাজনৈতিক ফায়দা লুটে নেয়া বিজেপির জন্য কিছুটা সহায়ক হবে। তাই মুজাফারনগরের দাঙ্গাকে রাজনৈতিক খেলা হিসেবে ব্যবহার করছে রাজনৈতিক দলগুলোও। কারণ এর ফলে বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুদের ভোট নিজেদের ভোটব্যাংকে নেয়ার চেষ্টা করবে। অন্যদিকে মুলায়ম সিংয়ের সমাজবাদি পার্টি (এসপি) গত দেড় দশক থেকে মুসলিম সংখ্যালঘুদের প্রতিনিধিত্ব করলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে মুসলমানরা তাদের উপর আর ভরসা করতে পারছে না। মুসলিম অধ্যুষিত মুজাফফরনগরে লোকসভার ১৫ টি আসন রয়েছে। এই ভোট এখন পাবে কংগ্রেস ও মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টি (বিএসপি) এবং মায়াবতী পূর্বে বিজেপির সঙ্গে অনেকবার জোট করেছে। সেক্ষেত্রে লাভবান হচ্ছে বিজেপি। একদিকে দাঙ্গাকে ব্যবহার করে সংখ্যাগরিষ্ট হিন্দুদের ভোট অন্যেিদকে মায়াবতীর বিজেপি জোটে আসার সম্ভাবনা। কারণ মুলায়ম সিং যাদব মায়বতীর প্রতিদ্বন্দ্বী। যাদব ইউপিএ জোটে থেকে গেলে মায়াবতীর বহুজন সমাজ পার্টি বিজেপিতে যোগ দিবে এটাই স্বাভাবিক।



অন্যদিকে, সাংগঠনিকভাবেও কংগ্রেস বেশ নাজুক অবস্থায় রয়েছে। দীর্ঘ সময় পর পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্টের দুর্গ ভেঙ্গে পড়লেও সেখানে জায়গা করে নিয়েছে মমতার তৃর্ণমূল। কংগ্রেস এখানে নিজের ঘরে ফসল তুলতে পারেনি। আসন্ন নির্বাচনে তৃণমুল কংগ্রেস বিজেপি জোটে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। কারণ বিভিন্ন ইস্যুতে কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্কের অবনতি এর অন্যতম কারণ।



যাহোক,দুর্নীতির ভয়াবহ থাবা কংগ্রেস রোধ করতে পারেনি, এছাড়া সাংগঠনিক দুর্বলতা, প্রার্থী নির্বাচনে বিড়ম্বনা, সাম্প্রতিক হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণে দীর্ঘসূত্রিতা, রুপির দরপতন ইত্যাদি বিষয়গুলোকে বিজেপি কংগ্রেসের বিরুদ্ধে নির্বাচনি ইস্যু হিসেবে ব্যবহার করলেও মোদি কী পারবে দিল্লির মসনদে বসতে? মোদিা কারিশমা কি পারবে দিল্লিতে হিন্দুত্বের ধ্বজা তুলে ধরতে? লোকসভায় এই মুহূর্তে ঠিক যে জায়গায় দাঁড়িয়ে রয়েছে বিজেপি অর্থাৎ আসন বলয়ে যে ঘাটতি রয়েছে সেখান থেকে ক্ষমতার মসনদে বসা খুব একটা সহজ নয় বলেই মনে করছেন ভারতীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। লোকসভার ৫৪৫টি আসনের মধ্যে বিজেপি’র ঝুলিতে রয়েছে ১১৬ আসন। আর আসন বাড়লেও ১৮০ এর উপরে যাবে না। ক্ষমতা দখল করতে গেলে বিজেপিকে পৌঁছতে হবে ম্যাজিক ফিগার ২৭২-এ। এ ফিগার ছুঁতে বিজেপি’র সামনে একমাত্র পথ দেশজোড়া সমর্থন। কিন্তু রাজনৈতিক দল হিসেবে সর্বভারতীয় উপস্থিতি নেই বিজেপি’র। সেক্ষেত্রে আঞ্চলিক দলগুলোর উপরই প্রধান দুই দলকে নির্ভর করতে হবে। আগামী নির্বাচনের পূর্ব পর্যন্ত দুই জোটেই ব্যাপক ভাঙ্গাগড়া হবে। এই লক্ষ্যে ঝাঁপাতে চাইছেন মোদি। সেই জন্য, ইতিমধ্যেই ঘনিষ্ঠ অমিত শাহকে উত্তর প্রদেশে দায়িত্বে দিয়েছেন। দলে ফেরানোর চেষ্টা চলছে দলের এক সময়ের সম্পদ উত্তরর প্রদেশের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী কল্যাণ সিংকে। মোদি চাইছেন বিক্ষুব্ধ ইয়েদুরাপ্পাকে ঘরে ফিরিয়ে কর্ণাটকের হাল ফেরাতে। এর পাশাপাশি পাঞ্জাবে আকালি, তামিলনাডুতে জয়ললিতাকে পাশে পাওয়ার চেষ্টা চলছে। তবে উগ্র হিন্দুত্ববাদী ভাবমূর্তির কারণে মোদির হাত ধরা সম্ভব নয় বলে ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে সাবেক সঙ্গী সংযুক্ত জনতা দল ও বিজু জনতা দলের মত দলগুলো। অন্যদিকে মুসলিম ভোটব্যাংকের কারণে বিজেপির হাত ধরতে চাইছে না সমাজবাদী পার্টি। বহুজন সমাজ পার্টি ও তৃণমূল কংগ্রেস বিজেপি’র সাথে জোটের সম্ভাবনা থাকলেও অবস্থা এখনো স্পষ্ট নয়। ফলে, যাবতীয় বাধা কাটিয়ে মোদির একার কারিশমায় বিজেপি আদৌ ক্ষমতা দখল করতে পারবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ বিজেপি’র অন্দরেই।



তবে মোদির প্রার্থীতা ঘোষনার পরই ভারতের অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক বিষয়টাকে ভারতের জন্য বিপজ্জনক বলে মনে করছেন। কেননা মোদি ক্ষমতায় আসলে ভারতের সংখ্যালঘুদের অধিকার অনেকটাই খর্ব হবে। কারণ মোদি সর্বদাই হিন্দু জাতীয়তাবাদকেই প্রাধান্য দিয়ে এসেছেন। এছাড়া মোদি ক্ষমতায় এলে ভারতের পারমাণবিকরণকে আরো বেশি প্রাধান্য দেবেন বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। কারণ মোদি ইতোমধ্যে পাকিস্তান বিরোধী বক্তৃতা দিয়ে হিন্দুদের মন জয় করতে চাইছেন। ফলে পাকিস্তানের সাথে ভারতের কাশ্মীর সমস্যাসহ সীমান্ত সমস্যা নিয়ে আরো বেশি জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে। যদিও বিজেপির অটল বিহারী বাজপেয়ী প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন কাশ্মীর সমস্যা নিয়ে অনেকদূর সমঝোতার পথে অগ্রসর হয়েছিলেন, কিন্তু ভারতের অভ্যন্তরীন উগ্র হিন্দু কূটনীতির কারণে তা আলোর মুখ দেখেনি। এছাড়া বিজেপি ক্ষমতায় থাকাকালীন বাংলাদেশের সাথে ভারতের সীমান্ত সংঘর্ষ হয়েছিল। মোদি আসলে এটা আবারো শুরু হবে বলেই অনেকে আশঙ্কা করছেন। সর্বপরী, অভ্যন্তরীণ ও প্রতিবেশি দেশের সাথে সম্পর্কের দিকগুলো বিবেচনা করেই বিশ্লেষকরা একটু শঙ্কিত হয়েই বলছেন ’মোদি আসছেন’,কেননা মোদি মানেই হিন্দু উগ্র জাতীয়তাবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার পুনরুত্থান। তবে আগামী নির্বাচনে ভারতে যে জোটই সরকার গঠন করুক না কেন, বাংলাদেশের সাথে ঝুলিয়ে থাকা অমীমাংসিত ইস্যুগুলোর ব্যাপারে শিগগিরই সমঝোতায় পৌঁছার সম্ভাবনা কম।



রাশিদুল ইসলাম নাহিদ

শিক্ষার্থী (মাষ্টার্স)-আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ,জাবি



মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১১:৫৩

বেকার সব ০০৭ বলেছেন: আগে ব্ংলাদেশের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী আসুক তারপর ভারতের টা কমু নে

২| ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ৯:১২

পথহারা সৈকত বলেছেন: এই রেন্ডিয়াদের নিয়ে না লিখলে চলেনা ?

৩| ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৪৯

চারশবিশ বলেছেন: আমি

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.