নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নাজমুল হাসান ০০১

আশা”, ছোট্ট এই শব্দটি আমাদের মনে দারুন দোলা দেয়। স্বভাবগত ভাবেই মানুষ চিরকাল আশাবাদী। মানুষ আশায় বেঁচে থাকে, মানুষ আশা নিয়ে বেঁচে থাকে, আশার মাধ্যমেই মানুষ শত কষ্টের বেলাভূমি পেরিয়ে আগামীর জন্য কাজ করে যেতে পারে। দেখতে পারে অপার সবুজাভ স্বপ্নের, দেখাতে পারে কল্পনায় আকা নির্মল দৃশ্যপট।

নাজমুল হাসান ০০১ › বিস্তারিত পোস্টঃ

এত নিচ কেন আমরা ??

১৪ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১০:০৯

মানুষ মাত্রই বিচিত্র, রহস্যময়।

আমরা বাঙ্গালিরা মনে হয় রহস্যময় এর চাইতেও রহস্যময়। বিচিত্র শব্দটাই আমাদের পাশে লজ্জা পায় !!

আজ পহেলা বৈশাখ সারাদিন বাসায় ঘুমাব ঠিক করেছিলাম এবং সকালবেলা নাস্তা করেই কাথামুড়ি দিয়ে আমার উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে বিছানায় ঝাপিয়ে পড়ি। (পুনশ্চঃ আমি এক আজব কিসিমের মানুষ দিনে রাতে যেকোনো সময় ইচ্ছা হলেই ঘুমাতে পারি, আর ঘুমাইতে আমার লাগেও বড় চমৎকার। কবিগুরু বাচিয়া থাকিলে তাকে ঘুম নিয়া একটা সুন্দর গান রচনা করিতে আর্জি করতাম।:D :))

যাই হোক কিছুক্ষন ঘুমানোর পর আমার বাপজান আমার জন্য একটা কাজ বের করেন, যেতে হবে সুদূর কোনাপাড়া(ডেমরার কাছাকাছি), অনেক অনুরধ করলাম যে ইহা বছরের প্রথমদিন আমাকে আমার মত থাকতে দিন কিন্তু তিনি যুক্তি উপস্থিত করলেন যে আজকে যদি আমি আলস্যর মাধ্যমে পার করি সারাবছর এমনই যাবে এই যুক্তিতে আমার মাতাও তার নিরপেক্ষ ভোটটি আমার বাপকে দিয়া দিলেন। স্পষ্টই বুজতে পারলাম আর রক্ষা নাই। অনেক গাইগুই করে বিকেলের দিকে রওয়ানা দিলাম গন্তব্যের দিকে আর যাত্রাপথে যাত্রাবাড়ীতে এক ঘটনা দেখলাম যা আমাকে নাড়া দিয়েছে ভীষণভাবে।

দেখলাম একটি কঙ্কালসার মানুষকে নির্বিচারে কজন মানুষ লাঠি দিয়ে নির্দয়ভাবে মারছে। কাছে গিয়ে জানতে পারলাম সে কিছু একটা চুরি করেছিল এবং ধরা খেয়েছে যার পরিনাম এই মার। কেন মারছেন মানুষটাকে বলে এগিয়ে যাবার চেষ্টা করতেই মানুষজন আমাকে নিন্দা করা শুরু করে এইভাবেঃ

*আপনার মত মানুষদের কারনেই এরা লাই পায়

*আপনার চুরি হইলে বুজতেন

*নিজের চরকায় তেল দেন, ইত্যাদি।

কঙ্কালসার মানুষটি ছাড়া পাবার আশায় আমার দিকে নির্বাক চোখে তাকিয়ে ছিল, এ চাহনি আমি বেশীক্ষণ সহ্য করতে পারিনি, সরে আসি ।



আমরা সাধারন মানুষরা নিজেদের যত ক্ষোভ, বিদ্বেষ যখন কেউ চিপায় আটকে পরে, তা উগড়ে দিতে তার উপর দ্বিধাহীন চিত্তে ঝাপিয়ে পড়ি মহাউল্লাসে। যখন কোন চোর রাজপথ ধরে ছুটে যায় চুরি করে আর আমরা আমজনতা রাজপথ ছেড়ে দেই তার জন্য সভয়ে ! যখনই কেউ তাকে আটকে ফেলে তখন আমরা দূর থেকে এসে, তাকে কিল, ঘুষি, খামছি দেয়ার মাধ্যমে আমাদের বীরত্ব প্রমানে সচেষ্ট হই। এই মানুষগুলোই হয়ত বাসায় গিয়ে গল্প শোনাবে তার পরিবারকে যে আজ আমি একাই এক ছিনতাইকারীকে ঘায়েল করে ফেলেছি যার বড় বড় নখ, বড় বড় দাত, দৈত্যকার চেহারা, ইয়া স্বাস্থ্য আমার এক আঘাতেই সে কুপোকাত, বাসার সবাই চোখ বড় বড় করে, কিছুক্ষন পর পর শিউরে উঠে তার গল্প শুনতে থাকবে এসব দেখে সে গল্পে আরও রঙ চরিয়ে আসমানে নিয়ে ঠেকাবে !!



অথচ চোর সেই কঙ্কালসার মানুষটি যে হয়ত ক্ষিধার দায়ে এক টুকরো রুটি চুরি করেছিল আমরা তাকে মেরেই স্বর্গসুখ পাই। অথচ যারা আমাদের এই সোনার দেশটাকে দুর্নীতির রামরাজ্য বানিয়ে লুটপাট চালাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কিছু বলার বা করার সাহস আমরা বাস্তবে দূরে থাক স্বপ্নেও দেখিনা !!

বাসায় আসার পর আমার মা আমার সামনে ইলিশ,মুরগি, গরু হাজির করে রাতের খাবারে আর সেই কঙ্কালসার মানুষটি সে এখনো হয়ত দুমুঠো খাবার আশায় পথের ধারে বসে আছে এই কথা মনে হতেই আমার গলা দিয়ে আর ভাতের দলা নামেনি অনেক চেষ্টা করেও না, ভাতের প্লেট রেখে বারান্দায় চলে আসি ভাবতে থাকি আবার সেই মানুষটার কথা, সে তো একা নয় আরও আছে তার মত অনেকে...

কিছুক্ষন পর মা এসে পিঠে হাত রেখে বলে, কিরে বাবা তোর কি হয়েছে খাইলিনা কেন? তোর কি মন খারাপ? না-মা কোনমতে উত্তর দিয়ে কান্নাচেপে নিজের রুমে চলে আসি। আর এখন দরজাবন্দ করে দাতচেপে লিখছি, আর পারছিনা চোখটা বড় জ্বালাচ্ছে, ও পোড়া চোখ এত জ্বালাস কেন:((:(( ??

মন্তব্য ১ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ৮:০৪

আমিই মিসিরআলি বলেছেন: হয়ত ক্ষিধার দায়ে এক টুকরো রুটি চুরি করেছিল
আমরা তাকে মেরেই স্বর্গসুখ পাই :( :( :(

ঠিকই বলেছেন আমরা সত্যিই বিচিত্র প্রাণী

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.