নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

থামেনি ভাবনা গুলো, এলোমেলো; যন্ত্রনা নেই, স্বস্তি নেই, শান্ত ভাবনারা সব। ছুটছে ছুটছে ছুটছে- বিরামহীন.

নুরুল আমিন খোকন

থামেনি ভাবনা গুলো, এলোমেলো; যন্ত্রনা নেই, স্বস্তি নেই, শান্ত ভাবনারা সব। ছুটছে ছুটছে ছুটছে- বিরামহীন.

নুরুল আমিন খোকন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভালবাসি শুধু তোকে

০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১:০৩


আয়নার সামনে বসে নিজেকে বার বার
দেখে নিচ্ছে লীনা। কাজল টা ঠিকমত
দেওয়া হয়েছে তো, চুল গুলো ঠিক আছে তো!
হ্যাঁ, সব ঠিক। একদম পারফেক্ট। গাঢ়
করে কাজল দিয়েছে আজ লীনা। নীল
জামাটাও অনেক মানিয়েছে। হাত
ভর্তি চুড়িও পরেছে । সব মিলিয়ে খুবই
সুন্দর
লাগছে আজ লীনাকে।
আজ শিশির এর
সাথে দেখা করতে যাবে লীনা। আজ ওদের
প্রথম দেখা। তাই লীনা এমন সেজেছে।
শিশির আজ লীনাকে প্রোপোজ করবে।
লীনাও প্রায় রাজি। প্রায় এক মাস
আগে ওদের ফোনে পরিচয়। কথা বেশী হয়নি।
SmS এই সাড়াদিন চ্যাট হয়।
অপরিচিত ছেলেটিকে লীনার কেন যেন খুব
পরিচিত মনে হয়। শিশির লীনার ঠিক
মনের
মত একটা ছেলে। এই কয় দিনে একজন আরেক
জন এর খুব আপন হয়ে গেছে।
শিশির এর সাথে লীনা রিলেশন
করতে চাচ্ছে অনেকটা তীর্থ'র উপর রাগ
করে।

তীর্থ লীনার বেস্ট ফ্রেন্ড। সেই কলেজ
লাইফ থেকে ভার্সিটির এই থার্ড ইয়ার
পর্যন্ত তারা একসাথে ছায়ার মত। একজন
ক্লাসে না গেলে আরেক জনও যেত না।
সুখে দুখে একসাথে। ওদের বন্ধুত্ব
দেখে অন্যদের হিংসা হত।
একদিন সব বন্ধুরা মিলে আড্ডা দিচ্ছে।
হঠাৎ
করে তীর্থ লীনার কানে কানে বলল
-"ভালবাসি তোকে"
: কি????
- কানে শুনিস না? বললাম
ভালবাসি তোকে।
: হারামি! এক থাপ্পরে সব দাঁত ফেলে দিব।
- দে। তারপর দাঁত ছাড়া জামাই
নিয়ে ঘুরবি। কার কি!!

তারপর লীনার বিশাল এক কিল গিয়ে পড়ল
তীর্থ'র পিঠ বরাবর।।
ঐদিন রাতে শুধু তীর্থর ঐ কথাটাই
মনে পরছিলো নিধির।
পরদিন আবার ক্যান্টিনে বসে তীর্থ একই
কথা বলল। লীনা সাফ না করে দিল। বলল
বন্ধু
আছে বন্ধুই থাকবে। ওসব রিলেশন টিলেশন
লীনার পছন্দ না।
কিন্তু যত দিন যেতে থাকে লীনার
মনে তীর্থ'র জন্য একটু একটু কেমন যেন
ফিলিংস লাগতে থাকে। কিন্ত মুখে কখনও
স্বীকার করত না।
কিন্ত নিধি একদিন শুনল তীর্থ নাকি অন্য
একটা মেয়ের সাথে রিলেশন করেছে। এখন
তীর্থ লীনাকে আগের মত সময় দেয় না।
বেশী কথাও হয় না। ওদের বন্ধুত্বে ফাটল
ধরতে লাগলো যেটা লীনা কখনও চায়নি।
তীর্থ'র অবহেলা লীনাকে খুব কষ্ট
দিতে থাকে। তাই লীনা ঠিক করল সেও
রিলেশন করবে। তীর্থকে দেখিয়ে দিবে ও
রিলেশন করে সুখে আছে।
ফাইনাল হয়ে গেল লীনা রিলেশন করবে।

লীনার বান্ধুবী নীলিমা একদিন ফোনে ওর
এক কাজিনের সাথে লীনাকে পরিচয়
করিয়ে দিল। যার নাম শিশির। তারপর
থেকেই দুজনের এত দূর পর্যন্ত আসা।
আজ হঠাৎ তীর্থ'র কথা মনে পরতেই লীনার
চোখে জল টলমল করতে লাগলো।
কিন্ত না। ঐ বদের হাড্ডিটার জন্য এখন
চোখের জল ফেলে কাজলটা নষ্ট করার কোন
মানে নাই। জল টুকু পরতে দিল না নিধি!

শিশিরএর SmS আসলো
-রেডী হইছো?
: হ্যাঁ। তুমি?
-হ্যাঁ। বের হও।
: ওকে। কই থাকবা তুমি?
-নদীর পাড়ের বট গাছটার নিচে।
: ওকে, বের হচ্ছি আমি।

লীনা শিশির এর আগেই পৌছে গেল।
কিন্তু গিয়ে দেখলো সেখানে বদের
হাড্ডি তীর্থ টা বসে আছে।
- কিরে তীর্থ তুই এখানে কি করছিস?
: এমনি ঘুড়তে আসলাম। আর তুই এত সাজুগুজু
করে এখানে!! বয়ফ্রেন্ড হইছে নাকি?
দেখা করতে আসছিস নাকি?
-হুম ঠিকই ধরেছিস। তুই এখন যা এখান
থেকে।
ও চলে আসবে এখনি।
: আহা একটু থাকি না.... তোর বয়ফ্রেন্ড
টাকে একটু দেখে যাই। আর
তোকে একলা রেখে কিভাবে যাই আমি।
-ওকে. থাক।

লীনা শিশির কে Sms দিল। কিন্ত রিপ্লাই
আসলো না। তারপর কল দিল লীনা। কিন্ত
একি
.
..
...
লীনা কল দিচ্ছে শিশির কে, কিন্ত তীর্থ'র
ফোনটা কেন বাজছে!! আবার কল দিল।
আবারও একই কাহিনি।
তীর্থ হাসতে হাসতে ফোনটা বের
করে লীনাকে দেখালো। লীনা রাগে আগুন
হয়ে চিৎকার দিয়ে বলল
-"এসব এর মানে এর
মানে কি????????????? ??"
: রাগ করিস না আগেই। আমার কথা শুন
আগে।সব বলছি।আয় ঘাস এর উপর বসি।
তারপর তীর্থ শুরু করল।
: আমি যখন তোকে বললাম ভালবাসি তোকে'
তখন তুই আমাকে একদম না করে দিলি। তুই
এসব পছন্দ করিস না। কিন্ত আমার জন্য তোর
ফিলিংস টা ঠিকই বুঝতাম। কিন্ত তুই
মুখে কখনও স্বীকার করতে চাইতি না। তাই
তোর কাছে আমার রিলেশনের
মিথ্যা অভিনয় করলাম। তোকে এভয়েড
করতে থাকি। ভেবেছিলাম আমার
অবহেলা সহ্য
করতে না পেরে আমাকে বলে দিবি তুই
আমাকে ভালবাসিস। কিন্ত তুই
উল্টো টা করলি। আমার কাছ
থেকে আরো দূরে চলে যেতে থাকলি।
নীলিমারকাছে শুনলাম তুই রিলেশন
করতে চাচ্ছিস আমার উপর জিদ করে। তাই
নীলিমা কে দিয়ে আরেকটা নাটক করলাম।
নীলিমার কাজিন শিশির হয়ে তোর
সাথে কথা বলতে থাকি।
ফোনে বেশী কথা বলিনি কারন যদি কন্ঠ
চিনে ফেলিস। আর যে কয়দিন
কথা বলেছি অনেক
কষ্টে গলা চেপে কথা বলেছি যাতে বুঝতে না পারিস।
তাই SmS এই সারাক্ষন আলাপ করেছি।
আস্তে আস্তে এই পর্যন্ত এসেছি। আগে কিছু
বলিনি কারন আমি চেয়েছি আজ
তোকে প্রোপোজ করব বলে।
- শয়তান!!!! তুই এরকম করতে পারলি!!! আর
আমি যদি সত্যি সত্যি অন্য
কাউকে ভালবেসে ফেলতাম??
: কখনই না। আমি জানি তুই এটা কখনও
পারতি না। প্রত্যয়
কে ভালবাসতে পেরেছিস কারন
এটা আমি ছিলাম। আর আমি নীলিমার কাছ
থেকে সব সময় খবর নিতাম অন্য
কারো সাথে তোর কথা হয় কিনা।
-শয়তান তোর চুল
গুলো আমি টেনে টেনে ছিড়বো।
: ছিড়। তারপর সবাই তোকেই বলবে এই
সুন্দরি মেয়েটার জামাই টাক মাথা।
এবার লীনা হেসে ফেলল...
:লীনা?
-হুম?
: আমি না তোকে অনেক ভালবাসি। তুই
একবার বল আমাকে ভালবাসিস।
- তীর্থ মাইর খাবি। আমার
লজ্জা লাগছে কিন্ত। যা ভাগ বলছি।
: প্লিজ বল। আচ্ছা তোর হাতটা একটু দিবি?
- কেন?
:তোর হাতটা ধরে নদীর তীর দিয়ে হাটবো।
-না দিব না।
:কেন?
- আগে বল সারাজীবন
এভাবে পারবি তো ধরে রাখতে??
: হ্যাঁ। সারাজীবন আগলে রাখবো তোকে।

মনে হচ্ছে যেন
দুটো প্রজাপতি হেঁটে যাচ্ছে নদীর তীর
দিয়ে।
হঠাৎ করে কে যেন তীর্থ'র
কানে কানে বলে দেয় "ভালবাসি শুধু তোকে"....

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.