![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নাম যতই লম্বা হোক, কথা আমার শর্টকার্ট
হুরমত মিয়া। একজন শোকাহত মানুষ। ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে তার বাবা পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী এবং তাদের এদেশীয় দোসরদের হাতে শহীদ হয়েছেন। এতদিন তিনি জানতেন যে, ৭১-এর পরপরই তার বাবার পাকি খুনিদের ছেড়ে দেয়া হয়েছে, আর তাদের সহযোগিরা পোষাক পাল্টেছে। ৭১-এ তারা হয়ত ধর্মের দোহায় দিয়ে তার বাবাকে খুন করেছিল, কিন্তু স্বাধীন দেশে খুন এখনও অব্যাহত আছে অন্য দোহাই দিয়ে, এবং এখন খুন-খারাবী নয়, এগুলোর বিচার চাওয়াটাই অপরাধ হয়ে দাঁড়িয়ছে। তাই বাবার খুনিদের বিচারের আশা তিনি প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন।
কিন্ত হঠাৎ একদিন ইমরান নামে এক যুবক এসে তাকে বললো, শাহবাগে নাকি তার বাবার খুনিদের সনাক্ত করে তাদের ফাঁসির বন্দোবস্ত করা হয়ে গেছে। শুনে হুরমত মিয়া হুরমুর করে সেখানে গেলেন। কিন্তু গিয়েই দেখলেন সেখানটায় স্থাপিত একটি মঞ্চে শা. ক, মু. মা, আ. হু, সু. কা নামক কয়েকজন ব্যক্তি, যারা হুরমতের মতোই নিজেদের তার বাবার উত্তরাধিকার মনে করেন। যাই হোক হুরমত ভাবলেন, উত্তরাধিকার হয়েও যার তার বাবার জমাজমি দাবি করতেছেন না, তারা আর যাই হোন লোক হিসেবে খারাপ হবেন না। আর তাই তাদের দেখানো লোকগুলোকেই তার বাবার খুনি হিসেবে ধরে নিয়ে তাদের ফাঁসির ব্যাপারটি মুটামুটি চূড়ান্ত করে বাড়ি ফিরে এলেন। পাশাপাশি হুরমত ধরে নিলেন যাই হোক এতগুলো লোক যখন বলছে এরা আমার বাবার খুনি, সুতরাং বিষয়টা সত্য না হয়ে যায় না।
এবার তার মনে হলো বাবার খুনিদের ফাঁসিতো হলো, তো বাবা যেহেতু শ্রমিক ছিলেন তাই তার কয়েকজনজন সহকর্মীকে মিষ্টিমুখ করাবেন। যথারীতি তিনি আশুলিয়ার শ্রমিক সমাবেশে গেলেন এবং দেখলেন এই লোকগুলো সেখানেও আছেন। তাই তিনি যথারীতি তাদের মিষ্টি খাইয়ে আসলেন।
এরপর ভাবলেন বাবার স্মরণে একটা নাগরিক শোকসভা করা দরকার। আহ্বান জানালেন নাগরিকনেতৃবৃন্দকে, কোনও সমস্যা ছাড়াই ঐ লোকগুলোকে পেয়ে গেলেন, হয়ে গেল শোকসভা।
এবার তার মায়ের আবদার হলো কয়েকজন নারীকে নিয়ে একটু মাতম করবেন। এই লোকদের মধ্যে যেহেতু একজন নারীও আছেন, সেহেতু তার সুবাদে সে ব্যবস্থাও হয়ে গেল।
হঠাৎ আওয়াজ উঠলো শাহবাগীরা নাস্তিক। তো এই অভিযোগ থেকে বাঁচার জন্যে ইমরান নামের যুবকটির আলেম সমাজের সহায়তার প্রয়োজন হলো। উপরের লোকগুলো বললেন, আরে ভাই আমাদেরকে কি আলেম মনে হয় না? সুতরাং উনাদেরকে নিয়ে হলো ওলামা সমাবেশ, ফাওয়ের উপর তারা বাবার কুলখানিটাও করে দিলেন।
হুরমত দেখলেন এই লোকগুলো একাধারে তার বাবার উত্তরাধিকার, গনজাগরণের নেতা, শ্রমিক সমাজের প্রতিনিধি, সচেতন নাগরিক সমাজ, নারীসমাজ, আলেম ওলামা সবই। এবং তাদের একই কথা, কেষ্ট বেটাই চোর। কিন্তু যখন হুরমত দেখলেন ব্যানার আলাদা হলেও তাদের মুখ দিয়ে যেহেতু তার বাবার খুনিদের ফাঁসি ছাড়া আর কোনও কথা বেরুচ্ছে না, কেমন যেন খটকা লাগলো।
পরিশেষে বোমা ফাটলো। ঐ যুবক ইমরান বললো, নষ্টরাই নাকি মুক্তিযোদ্ধা। হুরমতের অন্তরাত্মা কেঁপে উঠলো। এই অপমান তার গায়ে সইলো না। কিন্তু সে কী করবে? ভাবলো- এদেরকে ডেকে বাবার পরিত্যাক্ত সহায় সম্পত্তি দিয়ে দেব। তবুও যেন তারা তার বাবার নামে এসব কথা না বলে।
কিন্তু অসহায় হুরমতের আর কতটুকুই বা সম্পদ আছে? তারচেয়ে খবর নিয়ে জানা গেল ঐসব উত্তরাধিকাররা প্রতিবছর যে পরিমান বৈদেশিক মুদ্রা হাসিল করেন, তার বাবার সম্পদ এর হাজার ভাগের একভাগও হবে না।
২| ১৮ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ৮:৩০
তথই বলেছেন: রংপুর মেডিকেল এ ইমরান কাক্কুর চাঁদাবাজির কথা কেউ ভুলে নাই . হেতে মনে করে মুক্তিযুদ্ধও এমন কিছু ছিল । তাঁর কিছু হাম্বা অনুসারী আসে , যারা ইসলামকে গালি দিলে কইতে চায় ধর্ম যার যার , ইমরান রে কিছু কইলে তাঁদের আসল লেঞ্জা দেখা যায় , খয়ের কে ছিল তাও জানতে মুন চায়
©somewhere in net ltd.
১|
১৮ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ৮:২৯
পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: হুরমত কাহিনী
লবণে চিনি