নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আস্‌সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ

"সত্যিকার ঈমানদার ব্যক্তি হচ্ছে তারা, যারা আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রসূলের ওপর ঈমান আনে, অতঃপর (আল্লাহ তায়ালার বিধানে) সামান্যতম সন্দেহও পোষণ করে না এবং জীবন ও সম্পদ দিয়ে আল্লাহর পথে জিহাদ করে; এরাই হচ্ছে সত্যনিষ্ঠ।" {সূরা আল হুজুরাত, আয়াত ১৫}

মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী

"প্রত্যেক প্রাণীই মরণের স্বাদ ভোগ করবে ... এই পার্থিব জীবন কিছু বাহ্যিক ছলনার মাল সামানা ছাড়া আর কিছুই নয়।" {সূরা আল-ই-ইমরান, আয়াত ১৮৫} "সত্যিকার ঈমানদার ব্যক্তি হচ্ছে তারা, যারা আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রসূলের ওপর ঈমান আনে, অতঃপর (আল্লাহ তায়ালার বিধানে) সামান্যতম সন্দেহও পোষণ করে না এবং জীবন ও সম্পদ দিয়ে আল্লাহর পথে জিহাদ করে; এরাই হচ্ছে সত্যনিষ্ঠ।" {সূরা আল হুজুরাত, আয়াত ১৫}

মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ধূমপানের ক্ষতিকর দিক

১৫ ই জুন, ২০১১ সকাল ১০:২৪

ধূমপান একটি মারাত্মক ক্ষতিকর ও বিপদজনক অভ্যাস। ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এ সম্পর্কে জানে না এমন লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না। কারণ সিগারেটের প্যাকেটের গায়েই লেখা থাকে ‘সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর’। তারপরও অনেকেই দেদারছে ধূমপান করছে। অধিকাংশ ধূমপায়ী ধূমপানের মারাত্মক ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে অবহিত নন।



ধূমপান কাকে বলে?

Smoking refers to the inhalation and exhalation of fumes from burning tobacco in cigars, cigarettes and pipes. চুরুট, সিগারেট এবং পাইপের মাধ্যমে জ্বলন্ত ধোঁয়া নিঃশ্বাসের সাথে টেনে নেওয়া এবং তা বের করে দেওয়ার প্রক্রিয়াকেই সাধারণত ধূমপান বলে।



ধূমপানের ক্ষতিকর দিক সমূহ

১. ধূমপান একটি বদ অভ্যাস। এর জন্য বিশ্বে প্রতি বছর মারা যায় প্রায় ৩৫ লক্ষ মানুষ। ১৯৫০ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত শুধু উন্নয়নশীল দেশগুলোতেই মারা গেছে প্রায় ছয় কোটি লোক। আর এদের অর্ধেকই ছিল যুবক শ্রেণী।

২. সিগারেটের ধোঁয়ায় যে নিকোটিন থাকে তা হিরোইন অপেক্ষা শক্তিশালী।

৩. ধূমপানকারী দেশে ও সমাজে সর্বমহলে একজন ঘৃণিত ব্যক্তি হিসাবেই বিবেচিত হয়।

৪. ধূমপান হল অপচয়। আর আল্লাহ তা‘আলা অপচয় সম্পর্কে বলেন, ‘কখনো অপব্যয় করো না। অবশ্যই অপব্যয়কারীরা হচ্ছে শয়তানের ভাই’ {সূরা বনী ইসরাইল, আয়াত ২৬-২৭}।

৫. ধূমপান মানুষের জ্ঞান-বুদ্ধি লোপ করে। কারণ সে নিশ্চিত জানে যে ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, তারপরও সে তা পান করে।

৬. ধূমপায়ী তার ছেলে-সন্তান এবং উত্তরসূরীদের জন্য একজন আদর্শহীন ব্যক্তিতে পরিণত হয়।

৭. ধূমপানের অভ্যাস একজন মানুষকে ছিয়াম পালন হতে বিরত রাখে। কারণ ছিয়াম রাখলে সে ধূমপান করতে পারে না।

৮. ধূমপান মানুষের অপমৃত্যু ঘটায়। আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে যে, সমগ্র পৃথিবীতে ধূমপানের কারণে যত বেশি অপমৃত্যুর ঘটনা ঘটে, অন্য কোন রোগ-ব্যাধির কারণে তত ঘটে না।

৯. ধূমপানের কারণে শরীরে তাপ বৃদ্ধি, প্রদাহ, জ্বালাপোড়া ইত্যাদি দীর্ঘ মেয়াদি রোগ-ব্যাধি দেখা যায়।

১০. ধূমপানের কারণে রক্তনালিগুলো দুর্বল হয়ে যায় এবং অনেক সময় তার রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

১১. ধূমপানকারীর ফুসফুস, মুত্রথলি, ঠোঁট, মুখ, জিহ্বা ও কণ্ঠনালি, কিডনী ইত্যাদিতে ক্যান্সার হয়।

১২. ধূমপান স্মরণশক্তি কমিয়ে দেয় এবং মনোবল দুর্বল করে দেয়।

১৩. ইন্দ্রিয় ক্ষমতা দুর্বল করে। বিশেষ করে ঘ্রাণ নেয়া এবং স্বাদ গ্রহণের ক্ষমতা লোপ পায়।

১৪. ধূমপায়ীদের শ্রবণশক্তি কমে যায়। সম্প্রতি উইনকনসিন বিশ্ববিদ্যালয় ৩৭৫০ জন লোকের উপর এক সমীক্ষা চালায়। সেখানে লক্ষ্য করা যায় যে, অধূমপায়ীদের চেয়ে ধূমপায়ীদের শ্রবণশক্তি কমার সম্ভাবনা শতকরা ৭০ ভাগ বেশী। গবেষকরা আরো দেখেছেন যে, একজন ধূমপায়ীর ধূমপানকালীন সময়ে কোন অধূমপায়ী উপস্থিত থাকলে তারও একই সমস্যা দেখা দেবে।

১৫. ধূমপানের ফলে মানুষ দুর্বল হয়ে পড়ে এবং বার বার সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়। ধূমপায়ী সব সময় দুর্বলতা অনুভব করে এবং আতঙ্কগ্রস্ত থাকে।

১৬. হার্টের সাথে সম্পৃক্ত ধমনিগুলো ব্লক হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল হয়। এমনকি বক্ষ ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

১৭. ধূমপান উচ্চ রক্ত চাপের কারণ হয়।

১৮. ধূমপানের ফলে যৌনশক্তি বিলুপ্ত হতে থাকে।

১৯. ধূমপানের ফলে হজমশক্তি কমে যায়, ধারণক্ষমতা লোপ পায় এবং শরীর ঢিলে হয়ে যায়।

২০. ধূমপানের ফলে পাকস্থলী ক্ষত হতে থাকে এবং যকৃৎ শুকিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

২১. ধূমপানের ফলে মুত্রথলি যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয় এবং প্রস্রাব বিষাক্ত হয়।

২২. ধূমপান নির্মল পরিবেশকে দূষিত করে। এর ফলে স্ত্রী-পরিজন, সহযাত্রী, বন্ধু-বান্ধব ও আশে-পাশের লোকজনের কষ্ট হয়ে থাকে। বাসে, ট্রেনে ও অন্যান্য যানবাহনে প্রকাশ্যে ধূমপান করার ফলে অনেক সহযাত্রী নীরবে কষ্ট সহ্য করে মনে মনে ধূমপায়ীকে অভিশাপ দেন। আবার কেউ প্রতিবাদ করে বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়ে যান। অনেকে প্রতিবাদ করতে গিয়ে অপমানিত হন। কখনো ধূমপানকারীরা ধোঁয়ালো কন্ঠে বলে উঠে একটা গাড়ী বা ট্রেন কিনে তাতে আলাদাভাবে চলাফেরা করলেই হয়। কেউ কেউ আবার এও বলেন যে, ‘মনে হয় গাড়ীটা উনি নিজেই কিনে নিয়েছেন বা গাড়ীটা মনে হয় তার বাবার’। জেনে রাখা উচিত, চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে, ধূমপানকারীর প্রতিবেশী শারীরিকভাবে ধূমপায়ীর মতই ক্ষতিগ্রস্ত হন। হাদীছে প্রতিবেশীকে কষ্টদানকারী ব্যক্তি জাহান্নামে যাবে বলে হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করা হয়েছে। আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখেরাতে বিশ্বাস রাখে, সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়’ (বুখারী হা/৪৭৮৭; মুসলিম হা/৬৮)।



উল্লিখিত মন্দ দিকগুলো প্রমাণ করে যে, ধূমপান অতীব ক্ষতিকর। এ ব্যাপারে দুনিয়ার সুস্থ বিবেক সম্পন্ন প্রতিটি মানুষ একমত। আল্লাহ বলেন, ‘তিনি (নবী) তাদের ভালো কাজের আদেশ দেয়, মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে, যে তাদের জন্যে যাবতীয় পাক জিনিসকে হালাল ও নাপাক জিনিসসমূহকে তাদের ওপর হারাম ঘোষণা করে’ {সূরা আল আ‘রাফ, আয়াত ১৫৭}। আলোচ্য আয়াতে ক্ষতিকর বস্ত্তগুলো হারাম করা হয়েছে। সুতরাং ধূমপানকে ইসলাম অনুমোদন করে না।



আল্লাহ আরো বলেন, ‘নিজেদের হাতেই নিজেদের ধ্বংসের অতলে নিক্ষেপ করো না’ {সূরা আল বাক্বারা, আয়াত ১৯৫}। এ আয়াতও প্রমাণ করে যে, ধূমপান নিষেধ। কেননা ধূমপান মানুষের জীবনকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়। অধিকাংশ ধূমপানকারী ব্যক্তি মারাত্মক দূরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুমুখে পতিত হয়।



কেউ কেউ বলেন যে, ধূমপানের মাঝে কিছু ভাল দিকও আছে। যেমন সাময়িক চিন্তামুক্তি ও ক্লান্তি দূর করা ইত্যাদি। কিন্তু এই কারণে যদি ধূমপান বৈধ হয়। তাহলে মদ, জুয়া ইত্যাদিও বৈধ হবে। কেননা তাতেও রয়েছে কিছু ভাল দিক। আল্লাহ বলেন,

‘(হে নবী,) এরা তোমাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবে; তুমি (তাদের) বলে দাও, এ দুটো জিনিসের মধ্যে অনেক বড়ো ধরনের পাপ রয়েছে, (যদিও) মানুষের জন্যে (এতে) কিছু উপকারিতাও রয়েছে; কিন্তু এ উভয়ের (ধ্বংসকারী) গুনাহ তার উপকারিতার চাইতে অনেক বেশী’ {সূরা আল বাক্বারা, আয়াত ২১৯}।



আল্লাহ তাআলার এ বাণী দ্বারা বুঝা যায় যে, মদ-জুয়ার মধ্যে উপকারিতা থাকা সত্ত্বেও তা হারাম করা হয়েছে। ধূমপান তো মদ-জুয়ার চেয়েও জঘন্য। কারণ এতে কোন ধরনের উপকারিতা নেই। বরং ১০০ একশ ভাগই ক্ষতি।



আবার ধূমপানের সাথে জাহান্নামের খাবারের একটা সাদৃশ্য রয়েছে। যেমন- আল্লাহ জাহান্নামীদের খাদ্যের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, ‘(জাহান্নামের) এ (খাবার)-টি (যেমন) তাদের পুষ্ট করবে না, তেমনি (তা দ্বারা) তাদের ক্ষুধাও মিটবে না’ {সূরা আল গাশিয়া, আয়াত ৭}। ধূমপান তথা বিড়ি, সিগারেট, চুরুট কিংবা তামাক, জর্দা, গুল ইত্যাদিও সেবনকারীর জন্য কোন প্রকার পুষ্টির যোগান দেয় না, ক্ষুধাও নিবৃত্ত করে না।



অতএব আসুন! আমরা সকলে মিলে আমাদের সমাজকে ধূমপান মুক্ত করার আপ্রাণ চেষ্টা করি। আল্লাহ আমাদের তাওফীক্ব দান করুন- আমীন!!



রচনাঃ হাফেয হাবীবুল্লাহ আল-কাসিম

মন্তব্য ৯ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ১৫ ই জুন, ২০১১ সকাল ১০:৩১

১১স্টার বলেছেন: ভালো লাগলো। আর আমি তো ছেড়েই দিয়েছিএখানে

১৫ ই জুন, ২০১১ রাত ৮:০০

মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী বলেছেন: -
ধূমপানের মতো নিকৃষ্ট অভ্যাস ছাড়তে পারার জন্য আপনাকে অভিনন্দন।

২| ১৫ ই জুন, ২০১১ সকাল ১১:০৪

জাফরিন বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। প্রিয়তে। ধুমপান বিরোধী যে কোনও আন্দোলনে আমি অংশগ্রহণ করতে চাই। দরকার হলে আওয়াজ দেবেন।

১৫ ই জুন, ২০১১ রাত ৮:০৪

মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী বলেছেন: -
ইনশাআল্লাহ আওয়াজ দেবো ... আপাততঃ অনুরোধ ব্লগসহ যতোগুলো মাধ্যমে সম্ভব হয় আওয়াজ তুলুন, তামাক ও তামাক খাওয়াকে ঘৃণা করুন। ধন্যবাদ আপনাকে জাফরিন।

৩| ১৫ ই জুন, ২০১১ সকাল ১১:১৪

রিপেনডিল বলেছেন: ধূমপানের কিছু উপকারী দিক---- আমার বক্তব্য

১৫ ই জুন, ২০১১ রাত ৮:১৫

মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী বলেছেন: -

৪| ১৫ ই জুন, ২০১১ দুপুর ১২:৩৪

মনিরাজ সরকার বলেছেন: প্রিয়জনের ঝাড়ি খেয়ে ধুমপান কমায় দিছি...........
ইনশাআল্লাহ ছেড়ে দিব...........দোয়া করবেন ভাইজান যেন পুরাপুরি ছাড়তে পারি
ধন্যবাদ ভাল থাকবেন

১৫ ই জুন, ২০১১ রাত ৮:১৭

মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী বলেছেন: -
দোয়া করলাম ... আবার আপনি মানুষ হয়ে ফিরে আসুন সত্যিকারের সভ্য সমাজে ... ধন্যবাদ আপনাকেও।

৫| ১৬ ই জুন, ২০১১ সকাল ১১:০৮

মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী বলেছেন: তবে ধূমপানের সবই ক্ষতি নয় বরং এর কমপক্ষে তিনটি উপকারীতাও আছে ...
(১) ধূমপায়ী বা তামাক সেবনকারী কখনও বৃদ্ধ হবে না,
(২) এদের বাড়ীতে কখনও চোর ঢুকবে না এবং
(৩) এদেরকে কখনও কুকুর কামড়াবে না। :-D

আরো বিশদ জানতে চাইলে শুনুন নিচের লেকচারটিঃ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.