![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
"প্রত্যেক প্রাণীই মরণের স্বাদ ভোগ করবে ... এই পার্থিব জীবন কিছু বাহ্যিক ছলনার মাল সামানা ছাড়া আর কিছুই নয়।" {সূরা আল-ই-ইমরান, আয়াত ১৮৫} "সত্যিকার ঈমানদার ব্যক্তি হচ্ছে তারা, যারা আল্লাহ তায়ালা ও তাঁর রসূলের ওপর ঈমান আনে, অতঃপর (আল্লাহ তায়ালার বিধানে) সামান্যতম সন্দেহও পোষণ করে না এবং জীবন ও সম্পদ দিয়ে আল্লাহর পথে জিহাদ করে; এরাই হচ্ছে সত্যনিষ্ঠ।" {সূরা আল হুজুরাত, আয়াত ১৫}
আগের পর্ব ...
অন্তর কঠিন হওয়ার কারণ :
অন্তর কঠিন হওয়ার অনেক কারণ রয়েছে। নিম্নে সেগুলি আলোচনা করা হ’ল।-
(১) অন্তরকে দুনিয়ার কাজে ব্যস্ত রেখে আখেরাতকে ভুলিয়ে রাখা : এটা হচ্ছে অন্তর কঠিন হওয়ার সবচেয়ে বড় কারণ। যদি দুনিয়ার ভালবাসা আখেরাতের ভালবাসার চেয়ে প্রাধান্য পায়, তাহ’লে ধীরে ধীরে অন্তর কঠিন হ’তে আরম্ভ করে। ফলে ঈমান কমে যায়, সৎ কাজকে ভারী মনে হয়, দুনিয়াকে ভালবাসা আরম্ভ করে এবং আখেরাতকে ভুলে যেতে থাকে। জনৈক সৎ বান্দা বলেছেন,
‘প্রত্যেক বান্দারই দু’টি চোখ রয়েছে। এক চোখ দিয়ে সে দুনিয়ার বিষয় দেখে। আর অন্তরে যে চোখ আছে তা দিয়ে সে আখেরাতের বিষয় দেখে। আল্লাহ যদি কোন বান্দার কল্যাণ চান, তাহ’লে তার অন্তরে যে চোখ আছে তা খুলে দেন। ফলে আল্লাহ অদৃশ্যের যে ওয়াদা করেছেন সে সেগুলি দেখতে থাকে। আর আল্লাহ যদি অন্য কিছু ইচ্ছা করেন, তাহ’লে তার অবস্থায় তাকে ছেড়ে দেন। তারপর এ আয়াতটি পাঠ করেন, ‘তাদের অন্তর কি তালাবদ্ধ করা হয়েছে’ {মুহাম্মাদ ৪৭/২৪}।
(২) অলসতা : এটা একটা সংক্রামক ব্যাধি। অন্তর এ রোগে আক্রান্ত হ’লে শরীরের সব অঙ্গে তা ছড়িয়ে পড়ে। শরীরের সব অঙ্গ কর্মক্ষমতা হারায়। আল্লাহ বলেন, ‘তারা হ’ল সে সমস্ত লোক যাদের অন্তর, শ্রবণশক্তি ও দৃষ্টিশক্তির উপর আল্লাহ মোহর মেরে দিয়েছেন’ {নাহল ১৬/১০৮}। আল্লাহ মানুষকে যে সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দিয়েছেন, মানুষের উচিত সেগুলি সঠিকভাবে কাজে লাগনো। অন্যথা সেই গাফেলদের জন্য আল্লাহ আযাবের ব্যবস্থা রেখেছেন। আল্লাহ বলেন,
‘আমি বহু জিন ও মানুষকে জাহান্নামের জন্য সৃষ্টি করেছি। তাদের হৃদয় রয়েছে, কিন্তু তারা তদ্বারা উপলব্ধি করে না। তাদের চক্ষু রয়েছে কিন্তু তারা তদ্বারা দেখে না। তাদের কর্ণ রয়েছে, কিন্তু তদ্বারা তারা শোনে না। তারাই হ’ল পশুর ন্যায় বরং তা অপেক্ষা অধিক বিভ্রান্ত। তারাই হ’লো গাফিল বা অমনোযোগী’ {আ‘রাফ ৭/১৭৯}।
(৩) খারাপ বন্ধুদেরকে ভালবাসা ও তাদের সাথে উঠা-বসা করা : কথায় আছে ‘সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ’। মানুষ যার সাথে চলাফেরা করে তার আচার-আচরণ অন্য জনের উপরও প্রভাব বিস্তার করে। রাসূল (ছা.) বলেছেন,
‘সৎ সঙ্গী ও অসৎ সঙ্গীর উদাহরণ আতর বিক্রেতা ও কর্মকারের হাপরের ন্যায়। আতর বিক্রেতার থেকে শূন্য হাতে ফিরে আসবে না। হয় তুমি আতর খরিদ করবে, না হয় তার সুঘ্রাণ পাবে। আর কর্মকারের হাপর হয় তোমার ঘর অথবা তোমার কাপড় পুড়িয়ে দেবে, না হয় তুমি তার দুর্গন্ধ পাবে’।*৩*
ইবনে মাসঊদ (রা.) হ’তে বর্ণিত, তিনি বলেন, একজন লোক নবী (ছা.)-এর নিকট এসে বলল, হে আল্লাহর রাসূল (ছা.)! আমরা সে ব্যক্তি সম্পর্কে কি বলব, যে কোন সম্প্রদায়কে ভালবাসে অথচ তাদের সাথে সাক্ষাত হয়নি? রাসূল (ছা.) বললেন, ‘মানুষ তার সাথেই থাকবে সে যাকে ভালবাসে’।*৪* অন্য হাদীছে রাসূল (ছা.) বলেছেন,
‘বনু ইসরাঈলরা যখন পাপাচারে লিপ্ত হ’ল, তখন তাদের আলেম দরবেশগণ প্রথমদিকে এইসব অন্যায়ের প্রতিবাদ করত। কিন্তু লোকেরা বিরত না হওয়ায় পরে তারা দুষ্টমতি সমাজ নেতা ও বড়লোকদের সাথে উঠা-বসা ও খানাপিনা করত। ফলে আল্লাহ তাদের পরস্পরের অন্তরকে পাপাচারে কুলষিত করে দেন। অতঃপর রাসূল (ছা.) তাদের উপর লা‘নত করেন’।*৫*
(৪) অধিক হারে গুনাহ ও খারাপ কাজ করা : অধিক হারে পাপ বান্দার অন্তরকে কঠিন করে তোলে। রাসূল (ছা.) বলেছেন,
‘যখন বান্দা কোন পাপ করে, তখন তার অন্তরে একটি কালো দাগ পড়ে যায়। যখন সে তওবা করে, তখন সেটা তুলে নেওয়া হয়। আর ইস্তেগফারের মাধ্যমে অন্তরকে পরিষ্কার করা হয়। আর যদি পাপ বাড়তেই থাকে, তাহ’লে দাগও বাড়তে থাকে। আর এটাই হ’ল মরিচা। যেমন আল্লাহ বলেন, না এটা সত্য নয়; বরং তাদের কৃতকর্মই তাদের মনের উপর মরিচারূপে জমে গেছে’ {মুতাফফিফীন ৮৩/১৪} আহমাদ, তিরমিযী।
(৫) মৃত্যুর কষ্ট ও আখেরাতের আযাব ভুলে যাওয়া : মৃত্যু ও আখেরাতের চিন্তা মানুষের অন্তরকে নরম রাখে। কেউ মৃত্যুর কথা ও আখেরাতে জবাবদিহিতার কথা ভুলে গেলে তার অন্তর কঠিন হয়ে যায়।
আগামী পর্বে সমাপ্ত ইনশাআল্লাহ্ ...
রচনাঃ
মুহাম্মাদ আবদুল ওয়াদূদ
তুলাগাঁও, দেবিদ্বার, কুমিল্লা।
*৩* বুখারী হা/২১০১, মিশকাত হা/৫০১০ তাহক্বীক আলবানী ‘আদব’ অধ্যায় ‘আল্লাহর জন্য ভালবাসা’ অনুচ্ছেদ।
*৪* বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৫০০৮ তাহক্বীক : আলবানী ‘আদব’ অধ্যায় ‘আল্লাহর জন্য ভালবাসা’ অনুচ্ছেদ; রিয়াযুছ ছালেহীন হা/১৯,৩৭০,৩৬৮।
*৫* তিরমিযী, মিশকাত হা/৫১৪৮।
০৬ ই আগস্ট, ২০১২ সকাল ১০:২৩
মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই :-)
২| ০৫ ই আগস্ট, ২০১২ বিকাল ৫:৫৪
প্রকৃতির প্রতিফলন বলেছেন: ++++
০৬ ই আগস্ট, ২০১২ সকাল ১০:২৪
মোহাম্মদ নূরে আলম সিদ্দিকী বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
০৫ ই আগস্ট, ২০১২ দুপুর ১:২০
ময়নুল েহােসন বলেছেন: সুন্দর পোস্ট