![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
[মনটা বিক্ষিপ্ত ছিল, কিছুতেই কাজে মন বসছিল না। ধূমপানের উদ্দেশ্যে অফিস থেকে বাইরে বের হয়েছি একটু।
এক লোক ভ্যানে করে ঔষধ বিক্রি করছেন দেখলাম। ভ্যানের ছোট্ট মাইক থেকে তাঁর কণ্ঠ ভেসে আসছে। সিগারেট টানতে টানতে সেই কণ্ঠ শুনতে লাগলাম আমি]
সনমানিত ভদ্র মহাদায়গণ, আসসালামুআলাইকুম।
আমি বাংলাদেশ আয়ুর্বেদিক মেডিক্যাল এশোশিয়াশনের পশিক্ষণ পেরাপ্ত কবিরাজ মোহাম্মদ মিন্টু, আপনাদের মিন্টু ভাই বলছি।
আমি হাটে বাজারে, গ্রাম গঞ্জে পচার-পাবলিছিটির মাইধ্যমে বিভিন্ন জেলায় একটা কবিরাজী অষুধ বিকিরি করি।
আমার পতিটি প্যাকেটের গায়ে লেখা আছে- ‘দেশ হারবাল বোনাজি কির্মিনাশক ও গেশটিকের মহা অষুধ’।
এক নম্বরে, যারা বলছেন আমি গুরা কির্মির জ্বালায় রাইতে গুমাইতে পারি না।
আবার এই গুরা কির্মির কথা শুইন্যা কেউ লজ্জা শরম পাইবেন না। এই গুরা কির্মি খাদ্যনালী ছিদ্র কইরা ফালায়, মল দুয়ার ঘাউ কইরা ফালায়, অশ্বরোগ বানায়, ক্যালসিয়াম চুইষ্যা খায়া ফালায়। ফলে চুখের জুতি কমে যায়, মুখের লুচি কমে যায়, পেরালাচেস হইতে পারে।
এই গুরা কির্মি ফেলানের জন্য বহুত ব্যবস্থা নিসেন, অনেক নামি দামী কম্পানীর অষুধ খাইয়াও গুরা কির্মি ফালাইতে পারেন নাই। সব সময় দেখা যায় মল দুয়ারে ডিস্টাব দেয়।
আমি ওই দাদুভাইকে চেলেন্সের মাইধ্যমে বলছি, আসেন আমার গাড়ীর নিকট। আজকে রাইতে ভাত খাবার পরে তিনটা টেলবেট হালকা গরম পানি দিয়া গিল্যা খাইবেন। ইনশোআল্লা আল্লার রহমতে ভোর রাইতে তলপেটটা ভার হবে, সকালে একবার মলত্যাগ করবেন। ময়লার সাথে গুরা কির্মি গুলা ধানের তুষের মত পড়বে, নিজের চুখে দেখতে পারবেন। যুদি দেখতে চান, বাচ্চাদেরকে একটা সাদা পলিথিনে মলত্যাগ করাবেন, দেখবেন হাজার হাজার গুরা কির্মি।
পতিটি প্যাকেটের মূল্য দশ টেকা, দশ টেকা, দশ টেকা।
দাদা, মানুষ মানুষের শত্রু হইতে পারে, তার চাইতে বড় শত্রু হইল এই গুরা কির্মি। এই গুরা কির্মির মাথাটা সুঁইর চাইতে বেশি ধারালো। সে পা’র তালু ছিদ্র করে মাথার তালু দিয়া বাইর হইতে পারে, আপনার আমার দেহের যেই কোন এস্থানে পরবেশ করতে পারে।
পতিটি মেডিক্যালের সামনে দুই চাইরজন রুগী পাওয়া যায় খাদ্যনালী ছিদ্র হইয়া গেছে। খাদ্যনালী ছিদ্র হওয়ার মূল কারণ কিন্তু গুরা কির্মি। কোন ডাক্তার কোন কবিরাজ বলবে না গুরা কির্মি পুইষ্যা রাখেন, সবাই বলবে গুরা কির্মি ফালাই দেন।
আমাদের এই অষুধখানা শীত-গরম সব মসুমে খাওয়া যায়। তবে সাবধান, এই অষুধটা গর্ভ অবস্থায় মা-বোনদের খাওয়াইবেন না।
পতিটি প্যাকেটের মূল্য দশ টেকা, দশ টেকা, দশ টেকা।
দুই নম্বরে, যারা বলছেন গেশটিক।
বুক জ্বলে, গলা জ্বলে, শিশ ওঠে, গ্যাস ওঠে, গলায় আঙ্গুল দিয়া বমি করতে হয়।
এই গেশটিক কোমাবার জন্য অনেক নামি দামী কম্পানীর গেশটিকের অষুধ খাইছেন, গেশটিক কোমাতে পারেন না। থাবায় থাবায় বিলাতি সোডা খাইছেন গেশটিক কোমাতে পারেন না।
আমি ওই দাদুভাইকে অনুরোধ করে বলব, বিলাতি সোডা কেউ খাইবেন না। ওই বিলাতি সোডায় নাড়িভুড়ি গুলা জ্বালায়ে দেয়। অকালে মিত্যুভরন করবেন বিলাতি সোডা খাইলে, কেউ খাইবেন না।
আমার শিক্ষক পিন্সিপাল আব্দুর রব খান একটা কথাই বলেছেন- সর্ব রোগের মূল হইল কষা।
যার শরীরে আছে কষা, তার থাকে না কোন দশা।
কষায় বাত, কষায় গেশটিক, কষায় জোন্টিস, কষায় ক্ষয়রোগ, কষায় ডায়বেটিস, কষায় এপানডিশ, কষায় সর্বরোগের মূল। কষায় তৈরী হয় ক্ষুদ কির্মি, গুরা কির্মি।
আজকে রাইতে ভাত খাবার পরে তিনটা টেলবেট হালকা গরম পানি দিয়া গিল্যা খাইবেন। ইনশোআল্লা আল্লার রহমতে ভোর রাইতে তলপেটটা ভার হবে, সকালে একবার মলত্যাগ করবেন। এক সপ্তা-পোনারোদিন আগে যে ময়লা কাস্রা আবর্জনা গেশটিকের পয়জন এসিড জমছিল, সবকিছু পেটটা কাচায় নামায় দিবে।
দুই গেলাস টিউবোয়েলের পানি খাইবেন, সাথে সাথে গেশটিক বন্ধ। এক মাসের ভিতরে কোন গেশটিকের অষুধ খাইতে হবে না, এইটা আমার মুখের কথা না।
যাদের রেগুলার পায়খানা কিলিয়ার আছে, তার শরীরে বারোয়ানি রোগ থাকে না। পেটটা পরিষ্কার হইয়া যাবে, শরীরটা হালকা হইয়া যাবে, গেশটিক জর্ম নিতেও এক মাস টাইম লাগবে। আর ময়লার সাথে গুরা কির্মি গুলা যে কি পরিমাণ পড়বে, নিজের চুখে দেখতে পারবেন।
দাদা, জামা কাপুড়ে ময়লা হইলে যেমন সাবান দিয়া ধোয়ার পরোজন আছে, ঠিক তেমনি করে এই পেটের ভিতরে ময়লা কাস্রা আবর্জনা থাকলে পেটটাকেও পরিষ্কার করার পরোজন আছে।
কোন রোগ নাই, একটা পেট পরিষ্কারের সাবান মনে কইরা উগ্যা প্যাকেট নেবেন।
পতিটি প্যাকেটের মূল্য দশ টেকা, দশ টেকা, দশ টেকা।
[ঔষধ সেবন না করেও হালকা শরীর ও মনে ফিরে গেলাম কাজে]
২৯ শে মার্চ, ২০১৫ সকাল ১১:১৯
নাসিরউদ্দিনখান বলেছেন: যাহ্ !
©somewhere in net ltd.
১|
২৯ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ১:৪২
ক্ষতিগ্রস্থ বলেছেন: কৃমির ওষুধের সব ক্যানভাসারও এত ভাল বলতে পারে না...