নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
হাসপাতালের বিছানাটায় মরা মানুষের গন্ধ
আড়ষ্টতা জমে বুকের গহীনে
ওষুধের গন্ধে বিস্বাদ সবেতে
সবচেয়ে অপছন্দের স্হানটিতেই
ঠিকানা স্হায়ি করেছি,তারপর
একভোরে শেষ হবে পথচলা
পৃথিবীনামক গ্রহতে পদযাত্রা
থেমে যাবে জীবণের গতি............
না!এখন আর ভাল লাগেনা।ভাবতেও ইচ্ছে করেনা বিথীর।শুধু মনে হয় হাতে পায়ে ধরে যদি রাজী করাতে পারত আর মৃত্যুর ফেরেশতাকে বলতে পারতএক্ষুনি নিয়ে যাও।কষ্টটা কমে যেত।বাচ্চা দুটোর মুখের দিকে তাকাতে ইচ্ছে করেনা।মনে হয় জন্ম দিয়েছি শুধু গড়তে অপারগ আমি।কোন দায়িত্বপালন করতে পারলাম না।আমার ভবিষ্যত স্বপ্নের দুজোড়া হাত আমাকে জড়িয়ে ধরবেনা আর।ভাবতে অবাক লাগে আমার দেহে ,আমার মধ্যে ছিল ওদের বাস?মিষ্টি করে হাসলে দুজনই আমাকে জড়িয়ে জিজ্ঞেস করত-----মামণি,তোমার মনটা অনেক খুশি কেন?
--আমার রাজপুত্রদের পেয়ে
তখন ওরা আহলাদে গদগদ হয়ে দুজন দুপাশের গালে একসাথে চুমো খেত।
আজ সকালে ওদের বাবা দুজনকেই নিয়ে এসেছিল কিন্তু ওরা আমার কাছে আসেনি।অসুস্থতার কারণে আমার চেহারার পরিবর্তন,হাতে স্যালাইন চলে,কখনো ব্লাড ব্যাগ।মুখে ইনফ্যাকশনের জন্য ঠোট দুটো মোটা হয়ে গেছে।সব মিলিয়ে ওরা ভয় পায় কাছে আসতে।মনে হয় যত তাড়াতাড়ি আমাকে মৃত্যু দেয় প্রত্যেকটি মানুষের জন্যই ভাল।বিথীর স্বামী ফিরুজ ,এত ভাল মানুষ ,তার কষ্টও আর সহ্য হচ্ছে না ।অফিস করছে ,সংসার সামলাচ্ছে ।টাকার জোগাড় করাও কষ্ট হচ্ছে।তার পৈত্রিক জমি বিক্রিরও কথা চলছে।ও ভাবছে -তার আগেই যদি আমি মরে যেতাম তাহলে অন্তত বাচ্চা গুলোর ভবিষ্যততো থাকতো।
রাতে সে হাসপাতালের করিডোরে পাতা চেয়ারে ঘুমায়।ফজরের নামাজ পরে অফিসের ঊদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়।ঢাকার বাহিরে যেতে হয় তাকে।লোকটার জানের উপর দিয়ে যাচ্ছে এত ঝামেলা।তবু সে চায় আমি যেন কষ্ট না পাই।আমি তাকে কিছুই বুঝতে দেইনা।আমার ভিতরের কষ্টের ভাঙ্গাগড়া যা চলছে।অবশ্য গড়ছে না কিছুই শুধু ভাঙ্গনের খেলা চলছে।রক্তের ডাব্লিউ-বি-সি বেড়ে যাচ্ছে, আর-বি-সিকমে যাচ্ছে।কিছু খেতেও পারছি না,বমি হচ্ছে।
শরীরটা ক্রমশ খারাপের দিকে যাচ্ছে।
এমনি করেই থামবে বাঁশি
থামবে করুন বোল
সুখের দোলায় শরৎ বনে
দুলবে না কাশফুল
অল্প বেলার গল্প শেষে
বিদায় সবুজ মন
একা চললাম অচিন পথে
রইল আপন জন।
মৃত্যুর আগেকার সেই করুন চাহনি ,ফিরুজের দুটো হাত চেপে ধরে বিথী কুকড়ে উঠছিল বারবার।মৃত্যু যন্ত্রনায় ছটপট করছিল।কিছু বলতে পারছিল না ।মুখের অবয়ব ছিল বিভৎস।সুন্দর মিষ্টি সেই মিষ্টি মুখটা দেখলে যে কেউ আৎকে উঠবেএখন।বাচ্চা দুটোকে আনা হয়নি সেজন্যই ।একটা চোখ মনে হয় ভেতরে গলে আটকে গেছে।তবু ফিরুজ ওর হাত দুটো ধরে থেকে চোখের পানি ফেলছে।
১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:১০
নাসরীন খান বলেছেন: কিছুদিন অাগে অামার ১জন অাত্মীয়া ক্যান্সারে মারা গিয়েছে তার জন্য লিখা ।অাল্লা তাকে শান্তিতে রাখবেন সে প্রর্থনা সবার কাছে।
©somewhere in net ltd.
১| ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:০৯
হাসান মাহবুব বলেছেন: বিষাদাক্রান্ত হলো মন। গল্পের সাথে কবিতাগুলোও চমৎকার হয়েছে।