নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নাসরীন খান

নাসরীন খান

প্রত্যেক সৃষ্টিরই আলাদা সৌন্দর্য রয়েছে।প্রয়োজন সৃজনশীল মন।

নাসরীন খান › বিস্তারিত পোস্টঃ

সময়ের সওয়ার[শেষ পর্ব]

১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৮:৪৫

কদিন ছুটি কাটিয়ে সজলের অফিসের অনেক কাজ জমে গেছে। বড় স্যারের নির্দেশ মোতাবেক সব কাজ দুদিনের মধ্যেই আপডেট করে অন্য কাজগুলিতে হাত দিবে ভাবছে সজল।
আলীম সাহেব অর্থাৎ স্যার ভাবছেন সজল আর মৃদোলা যদি একটা পরিণতিতে পৌছুতে পারত।কারন তিনি এটুকু ভরসার জায়গা খুঁজে পেয়েছেন যে সজলের কাছে মৃদোলা ভাল থাকবে।বিপত্তি হল হয়ত সত্যি ঘটনাটা সজল জানলে মৃদোলাকে গ্রহণ করতে চাবে না।আসলে ঘটে যাওয়া সেই ঘটনায় মৃদোলার কোন হাত নেই।
আলীম সাহেব মনে মনে স্থির করেছেন সজলকে পাত্র হিসেবে তার পছন্দ যেহেতু উনি নিজেই সজলকে খুলে বলবেন।তাপর সজল রাজি থাকলে দুজনার বিয়ে দেবেন। এক বিকেলে অফিসের পর সজলকে থাকতে বললেন ।।যথাসময়ে সজল তার কক্ষে আসলেন।
-সজল তোমাকে ঘুরিয়ে প্যাচিয়ে না বলে কিছু সরাসরি কথা বলব।তুমি দ্বিধাদন্দ না করে যা সত্যি-সত্যিই ভাববে তা মনের ভিতর না রেখে আমাকে বলে ফেলবে।
-ঠিক আছে স্যার।
-মৃদোলাকে তোমার কেমন লেগেছে।এ কদিনে তুমি যতটুকুন বুঝেছ।
-স্যার,ও ভাল মানুষ , আন্তরিক ,ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন।
-ওকে যদি তোমার সাথে বিয়ে দেই তো তোমার আপত্তি থাকবে?
-স্যার আপত্তি করার কি অন্য কোন কারণ আছে।
-ওর জীবনে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনা আমি তোমাকে জানাব।সেটা হয়ত তোমার আপত্তির কারণ হতে পারে। একজন বাবা হিসেবে মৃদোলার ঘটে যাওয়া ঘটনাটি লুকালে তোমার সাথে প্রতারণা হবে ।সেজন্যই আমি বলছি তোমাকে।
মৃদোলা ইউনিভার্সিটিতে পড়ে তখন ,বোধ হয় থার্ড ইয়ারে।একটা ছেলের সাথে সম্পর্ক হয়ে যায়।আমরা পছন্দও করি ।ছেলেটা আপাদ দৃষ্টে বিনয়ী এবং সুভাষী ছিল।লন্ডনে একটা স্কলারশিপ হয়ে গেছে জানায় এবং তাকে নাকি মাস খানেকের মধ্যেই বাইরে চলে যেতে হবে ।আমরা দেরী না করে বিয়ে দিব সিদ্ধান্ত নিলাম। ছেলের আত্মীয় পরিজনকে নিয়ে আসতে বললাম। সে তার এক মামাকে নিয়ে এলো।সে তার মাকে বাবাকে আনতে পারবে না কারণ তারা দেশের বাইরে গেছেন তার এক মেয়ের কাছে ।সমস্ত কথাই বিশ্বাস করে তার মামার কথাতেই বিয়ে দিলাম।বিয়ের পাঁচ দিনের মাথায় সে জানাল তার পাঁচ লক্ষ টাকা লাগবে আর ব্যাংক জামানত দেখাতে লাগবে আরও বার লক্ষ।পরে জানতে পারি আসলে সে জার্মানিতে থাকে ।ওখানে ড্রাইভিং পেশায় যুক্ত।দেখতে স্মার্ট আর পরিপাটি হওয়ায় এভাবে কয়েক বছর পর দেশে এসে পয়সা ওয়ালা দেখে ফাঁদ পেতে বিয়ে করে ।এবং বিদেশে পারি জমিয়ে বউকে ডিবোর্স লেটার পাঠায় ।ওখানে ওর বউ বাচ্চাও আছে।আমার মেয়ের বেলাতে ও তাই ঘটল।
-আপনারা পুলিশে খবর দেননি কেন।
-ও বিদেশে গিয়ে যখন ছয় মাসেও কোন যোগাযোগ রাখল না এবং তার কয়মাস পর ডিবোর্স লেটার পাঠাল তখন চারিদিকে লোকজন লাগিয়ে এসব তথ্য পাওয়া গেলো।আমার সর্বনাশ যা ঘটল তা আমি আর শোধরাতে পারছি না।আমার মেয়েটা আর বিয়ে করতেই রাজি হয় না।ও প্রায় গৃহবন্দি হয়েই দুই টা বছর কাটিয়েছে।নির্ঘুম রাত কাটিয়েছে।আনন্দহীন দিন কাটিয়েছে।স্রেফ একাকীত্বই ছিল তার সঙ্গী।অনেক ভাবে চেষ্টা করেছি ওকে খুশী করতে, পারিনি।একটা সময় নিজেকে সামলে আবার ইউনিভার্সিটিতে যাওয়া শুরু করে ।আমাদের জীবনে একটু স্বস্তি নেমে আসে তখন।
-স্যার ,আমি কিছুদিন সময় চেয়ে নিচ্ছি।আমার মতামতটা আপনাকে পরে জানাব।আর মৃদোলার জীবনে যা ঘটে গেছে তার জন্য সমবেদনা রইল।
-ওকে, মাই বয়।
সমস্ত ঘটনা শুনার পর আমি স্তব্ধ হয়ে গেছি। কোন কাজেই মনোযোগ দিতে পারছিনা।একি শুনলাম!যা কখনো কল্পনাও করি নি।আমি আসলে এতটাই হতবিহবল হয়ে গেছি যা কখনোই আমার জীবনে হয়নি।সত্যিকার অর্থেই ওকে আমার মনে ধরেছে।কিন্তু বিবাহিত কাউকে জীবনসঙ্গী করব ভাবতেই পারছি না।প্রবোধ দেয়ার চেষ্টা করছি নিজেকে নানা ভাবে।যখন মেয়েটির অসহায়ত্বের কথা মনে হচ্ছে তখন মনটা নরম হয়ে পরছে। আমি স্থির ভাবে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না।শায়লার কথা মনে হচ্ছে যে যদি আমার বোনের ক্ষেত্রে এটিই ঘটত তো আমরা কি করতাম।একটা মেয়ে সেই দোষে দোষী হয়ে একাকী জীবন বয়ে বেড়াবে।এ ভীষণ কষ্টের আর যন্ত্রণার।ওরা তো কিছু লুকচ্ছে না ।অন্য কেউ হলে বিষয়টা লুকিয়ে বিয়ে দিয়ে দিত।ওদের সততাকে শ্রদ্ধা করার মতন।সব ভেবে চিন্তে আমি সিদ্ধান্ত নিলাম হ্যাঁ,আমি মৃদোলাকে বিয়ে করব।তবে আমার পরিবার যাতে ওকে ছোট না ভাবে, মৃদোলা আমার মা বাবাকে যেন না বলে সে জন্য অনুরোধ করলাম।মৃদোলা অনেক ভালো একটি মেয়ে ওকে আমি দুঃখী দেখতে চাইনা।





মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:২১

নিলু বলেছেন: ভালো মন , লিখতে থাকুন

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:০৯

নাসরীন খান বলেছেন: শুভেচ্ছা অনেক।

২| ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ৯:৪৯

আবু শাকিল বলেছেন: ভাল লাগল ।

১৫ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:১০

নাসরীন খান বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.