নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

\"দুইশো চার\"

নাভিদ ফারাবী

বাংলা ভাষার অক্ষরগুলোকে এদিক সেদিক ঘুরিয়ে ফিরেয়ে ভাষাটার সাথে বেয়াদবী করি। বেয়াদবীগুলোর মধ্যে নকশা খুঁজতে গেলে গোলকধাঁধায় পড়বেন বলে দিচ্ছি।

নাভিদ ফারাবী › বিস্তারিত পোস্টঃ

ট্রান্স সিলভা

১২ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:৪৭


ঘড়ির কাঁটা পাঁচটা ছাড়িয়ে ডানদিকে অনেকখানি এগিয়ে এসেছে।
ট্রান্স সিলভায় করে বাসায় যাচ্ছি। অফিসের জ্যাম শুরু হয়ে যাওয়ায় রাস্তায় গাড়িগুলো রিগর মর্টিস হওয়া লাশের রক্তের মত জমাট বেঁধে আছে। নড়াচড়ার নাম গন্ধ নেই।
মিরপুরগামী যে কোন বাস দেখলেই দৃষ্টিসীমার মধ্যে থাকা ষাট শতাংশ পাবলিক হামলে পড়ছে বাসের দরজায়। হেল্পারটা চোখমুখ কংক্রিটের মত করে দরজার পাশের জানালাটা দিয়ে শার্ট প্যান্ট পড়া সাহেবসুবোদের দেখছে। ভাবটা এমন "খুব তো অফিস টফিসে যাতায়াত হয় কিন্তু দরজা খুললেই তো সিটে বসে দুটাকা কম দেবার জন্য বাপ মা তুলে গালি-গালাজ করবি।"
দু তিন স্টপেজে এরকম দেবতাসম ক্ষমতা ভোগ করার পর ধানমন্ডির পরে একটা স্টপেজে গেট খোলা হল। খোলামাত্রই বানের স্রোতের মত জনা দশেক লোক পটাপট উঠে পড়ল।
হেল্পারটা হাউমাউ করতে করতে কাঁচা মরিচ টাইপ গড়নের একটা ছেলেকে গেট থেকে সরিয়ে আবার গেট লাগিয়ে দিল।
নতুন ওঠা জনাদশেকের মধ্যে ছয় সাত জন দাঁড়িয়ে। সিট, রড ধরে ঝুলছে।
বাস ঢিমেতালে এগুচ্ছে। হেল্পার তার নির্দিষ্ট স্থানে দাঁড়িয়ে আবার দেবতার ক্ষমতা উপভোগ করতে লাগল।
কলেজগেটের কাছাকাছি আসতে আসতে দাঁড়িয়ে থাকা পাবলিকদের সবাই মোটামুটি বসে গেছে। আমার পাশের জন সেই দাঁড়িয়ে থাকা স্রোতের মধ্যে বসতে পারা একজন। কাকে যেন শতশত ইমোজি সহকারে আধাখ্যাচড়া বাংলিশে ম্যাসেজ দিচ্ছে মেসেঞ্জারে আর আমি আড়চোখে দেখে পাঠোদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছি। হেডফোন সাথে না থাকলে আমার ব্যাকআপ শয়তানটা ওভারটাইম খাটে।
শ্যামলীতে গেট খোলা হল আবার। আবারও হুড়মুড়িয়ে জনতার স্রোত খেলে গেল। জনা সাতেক দাঁড়িয়ে।
আমার পাশের সহযাত্রীর কপাল কুঁচকে একসাথে হল।
-"ওই হেল্পারের বাচ্চা! বালের সিটিং সার্ভিস তর? আহিস ২০ টাকা ভাড়া নিতে।"
হেল্পার আবার দেবতা হয়ে গেছে৷ সে এখন দুনিয়ার বাইরে বলে হয়ত কথাটা শুনল না ৷ তবে আমার কাছে জিনিসিটা ভালই লাগল।
এই লোক নিজেই দাঁড়িয়ে ছিল কিছুক্ষন আগে, সিট পাওয়ার সাথে সাথেই জাত মন্দিরের বারো তলায় উঠে নিচের দিকে থুতু ফেলতে তার এক বারও বাঁধল না। যে মানুষ ট্রান্স সিলভা বাসের ফ্যানের নিচে একটা সিট পেলেই ইতিহাস ভুলে যায় সে মানুষের তো যথেষ্ট টাকা হলে জন্মসাল ভুলে গিয়ে নিজেকে আদম (আঃ) এর ব্যাচমেট মনে হবার কথা।
যত যাই হোক ভাড়া নিতে আসলে একটা জম্পেশ কাইজা হবে। ততক্ষনে আমি হয়ত নেমে যাব কিন্তু আমি লিখে দিতে পারি এই লোক যে কোন মূল্যেই হোক ২০ টাকার কমই দেবে।
এসব মানুষেরই টাকা হয় আসলে ৷ স্বভাব যার এমন তার কি আর টাকা না হয়ে পারে?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.