নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ছোট থাকতে পছনদো করি

নাঈম ফয়সাল নয়ন

সত্য কে সত্য আর মিথ্যা কে মিথ্যা বলার চেষ্টা করি

নাঈম ফয়সাল নয়ন › বিস্তারিত পোস্টঃ

বলি

০৭ ই অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৪:০৬

-"হাসবিনা খবরদার " রাগে থরথর করে কাঁপতে কাঁপতে বলল নিতু। এখনো ৯ বছর বয়সের বাবুল নিতুর দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে হাবলার মত হেসে চলেছে। ঘটনা হলো - নিতু তার বাড়ির ছাদে রংতুলি দিয়ে তার স্বপ্নের নায়ক সাকিব খানের একটা পয়েট্রেট আকছিল। যেখানে দেখা যাচ্ছে সাকিব খান রোমান্টিক ভঙ্গিতে গোলাপ ফুল হাতে নিয়ে দাড়িয়ে আছে। ঠিক এমন সময় কোথা থেকে একটা কালো কাক উরে এসে সাকিব খানের হাতের গোলাপ ফুলটার উপর পায়খানা করেই ফুরুত করে উরে চলে গেলো! বিষয়টা এমনিতেই হাস্যকর তার উপর আবার বাবুল হলো ভয়ঙ্কর বলদ। বাড়ির কাজ কামের জন্য নিতুর মা তাদের গ্রাম থেকে আমদানি করেছে কিছুদিন হলো।
একেতে বাবুলের হাসিতে গা জ্বলছে নিতুর তার উপর আবার বলদটা নিতুর মা কে উদ্দেশ্য করে চেঁচিয়ে উঠলো -" খালাম্মা গো, দেইখ্যা যান একটা কাউয়া আইস্যা আফামনির ফোডোতে হাইগ্যা দিছে! "
কষে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিল নিতু বাবুলের গালে। বাবুল আগের মতোই হাসতে হাসতে নিচে নেমে গেলো।
নিতু আগের কাগজটা ফেলে দিয়ে আবার নতুন উদ্দমে আঁকতে লাগলো তার স্বপ্ন পুরুষের ছবি।
নিতু প্রেমও করেছে একই এলাকার সাকিব নামের একটা ছেলের সাথে। শুধু খান এর জায়গায় আহমেদ হবে। অর্থাৎ সাকিব আহমেদ। সাকিবের প্রেমের প্রস্তাবে নিতু রাজি হয়ছিল শুধুমাত্র ওর নাম সাকিব বলে! এদিকে বাবুলের বলদামীতে অতিষ্ঠ নিতু। কেননা সাকিব একদিন বাবুলের হাতে একটা গিফট বক্স দিয়ে বলেছিল -"এটা তোর আপামনি কে দিবি " আর বাবুল হাসতে হাসতে সেটা নিয়ে গিয়ে নিতুর মার হাতে দিয়ে বলল -"খালাম্মা, এইডা আফামনিরে দিতে কইলো "
নিতুর মা জিজ্ঞাসা করল -"কে দিছে এটা? "
-"মুই চিনিনা, তয় আফামনি হ্যারে জানু কইয়া বুলায় "
সেকি তুলকালাম কান্ড সেদিন বাসায়। নিতুর মা নিতু কে অনেক শাসন করল। আর বাবুর তার সেই হাবলা হাসি নিয়ে একেরপর এক বকা, থাপ্পড় খেতে লাগলো সবার কাছ থেকে। ওই ঘটনার জন্য সাকিবও ছার দেয়নি তাকে। নিতু একদিন বাবুলের গাল ঠেসে ধরলো, আর বলল "হাস!! এবার যতখুশি হাস!!! " প্রচন্ড ব্যথায় বাবুলের চোখে পানি আসলেও তার হাসিটা যেনো লেপ্টেই থাকলো তার মুখের সাথে। সহজ সরল বাবুলের সাথে চলতে থাকলো নানান অন্যায় অবিচার! এভাবে একদিন অন্যায় অবিচার তার সীমানা ছাড়িয়ে চলে গেলো বহুদূরে!
সেদিন নিতু আর বাবুল ছাড়া কেউ ছিলো না তাদের বাসায়। সকাল সকাল নিতুর বাবা, মা গেছেন তাদের গ্রামের বাড়িতে। সন্ধ্যা নাগাদ আবার ফিরে আসবেন তারা।
তখন দুপুরের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পরেছিল বাবুল। ঘুম ভেঙে উঠে বাথরুমে যায় সে। বাথরুমের কমোডের পাশে নিতুর মোবাইল ফোন টা পরে থাকতে দেখে বাবুল। তাৎখনিক ফোনটা হাতে নিয়ে নিতুর ঘরে যায় সেটা দিয়ে আসার জন্য। ধাক্কা দিতেই খুলে যায় দরজা। বাবুল দেখলো নিতু ও সাকিব একে অপর কে দৃষ্টিকটু ভাবে জরিয়ে ধরে শুয়ে আছে! সাকিব, নিতু দুজনই চমকিয়ে ওঠে। বাবুল ততক্ষণে দৌড়ে পালায় সেখান থেকে। কিন্তু পালিয়েই কি নিস্তার পেল সে?
সাকিব বলে উঠলো -" দরজা কেনো লাগাওনি তুমি? "
-"ধুর! একটুও খেয়াল ছিলোনা " জবাব দিলো নিতু।
-"কি হবে এখন? " উত্তেজিত সাকিব বলল আবার!
-" কি আর হবে, হারামজাদাটা আম্মু আসলে তাকে চিল্লিয়ে বলবে -খালাম্মা গো, আফামনি আর ওই পোলাডা লেংটো হইয়া হুইয়া আছিলো -"
-"কি করবো এখন? " জানতে চাইলো সাকিব।
-" তোমাকে কিছু করতে হবেনা, যা করার আমিই করছি " রহস্য আর কঠোর কন্ঠে বলল নিতু। সোজা চলে গেলো রান্নাঘরে। রান্নাঘরের সব জানালা ভালো করে লাগিয়ে দিলো সে। ফুল স্পিডে দুইটা চুলারই গ্যাস ছেড়ে দিলো নিতু! চুলার উপর দুধের হাড়ি বসিয়ে দিয়ে বের হয়ে এলো! -"বাবুল, ওই বাবুল "
-"জী আফামনি " ছুটে এলো বাবুল। ভয়ে কাপতে কাপতে বলল সে -" আমি কাউরে কিচ্ছু কমুনা আফামনি " এই প্রথম তার মুখে হাসি নেই। হাসি বিহীন মুখটা যেন বেশী বেমানান তার। হাসিতেই বেশী ভালো লাগে বাবুলকে।
-" রান্নাঘরে চুলায় দুধ আছে গরম করে ছাদে নিয়ে আয় আমি খাবো " একটা কথাও না বাড়িয়ে হুকুম করে ছাদের উদ্দেশ্যে পা বাড়ালো নিতু।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৫:০২

অনন্য দায়িত্বশীল আমি বলেছেন: ভালো লেগেছে।

০৭ ই অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৫:১৩

নাঈম ফয়সাল নয়ন বলেছেন: ধন্যবাদ জানবেন জনাব।

২| ০৭ ই অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৫:৩১

গেম চেঞ্জার বলেছেন: হায় ব্যবধান- সবল-দুর্বল!! ছোট-বড় লোক!!!

গল্পের গাঁথুনি ভাল লেগেছে। মনযোগ ধরে রেখেছিল!!

০৭ ই অক্টোবর, ২০১৭ বিকাল ৫:৩৭

নাঈম ফয়সাল নয়ন বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া । আমি একেবারেই নতুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.