নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তোমাদের এ শহর ছেড়ে চলে যাচ্ছি। দূরে! বহু দূরে! ঈগল চোখের আড়াল খুঁজে নিচ্ছি- যেখানে সমস্ত পাপী স্বীকারোক্তি দেয় তাদের আকন্ঠ পাপের। অন্তত তারা সত্যের আড়ালে পাপ করে না; পাপ নিয়ে করে না কোন মিথ্যাচার!

নয়ন বিন বাহার

আমাদের একেক জনের জীবনের এক একটা নির্দিষ্ট বিন্দুতে এসে আমাদের আশপাশে যা হচ্ছে তার উপর নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ফেলি। তখন জীবনের নিয়ন্ত্রন নেয় ভাগ্য। এটাই দুনিয়ার সবচেয়ে বড় মিথ্যা।

নয়ন বিন বাহার › বিস্তারিত পোস্টঃ

হুদাই প্যাঁচাল : নয়ন বিন বাহার

১৪ ই মে, ২০১৫ দুপুর ২:১১

সরু রাস্তা।
একজন পথচারী পথ দিয়ে যাচ্ছে। রাস্তায় দুজন লোক পথ আগলে দাঁড়ানো। পথচারী যেতে পারছেনা। বলল- ভাই পথ ছাড়েন।
লোকদুটো রুক্ষ মেজাজে বলল- কেন!
পথচারী বিষ্মিত হল। বলল- পথ আগলে দাঁড়িয়ে আছেন, আবার বলছেন কেন, আপনাদের সমস্যা কি?
লোক দুটো একে অন্যের দিকে দৃষ্টি বিনিময় করল। সে দৃষ্টিতে বুনো কৌতুহল। যেন এরকম কথা তারা আগে আর কখনো শুনেনি।
একজন বলল- ভাই,আপনার সমস্যার কথা বলছিলেন। বলেন কি সমস্যা?
পথচারী এবার অবাক এবং বিরক্ত হল। বলল- ভাই আপনারা পথ আগলে দাঁড়িয়ে আছেন। আমি যেতে পারছিনা।
লোকদুটির একটি আরেকটিকে বলল- এই তুই নাকি ওকে ধরে রেখেছিস? ছেড়ে দে লোকটি চলে যাক।
দ্বিতীয় লোক (ক্ষেপে গিয়ে)- একদম ফালতু কথা বলবি না। আমি লোকটিকে ধরে রাখিনি। এই ভাই আমি কি আপনাকে ধরে রেখেছি?
পথচারী- না ভাই আমি তো সে কথা বলিনি।
দ্বিতীয় লোক- তবে যে করিমা বলল। এ্যাঁ।
পথচারী লোকটি এবার খুব রেগে গেল। বলল- এই যে ভাই রাস্তা কি আপনাদের বাপের যে মানুষের পথ আগলে দাঁড়িয়ে থাকবেন আর ঝগড়া করবেন? পথ ছাড়ুন বলছি।
করিম নামের লোকটি বলল- ফজু হাদারামটা কি বলল? রাস্তাটা যেন কার বলল?
ফজু- রাস্তা নাকি ওনার বাপের।
করিম- (খ্যাঁক খ্যাঁক করে হেসে) তাই নাকি! এ বলে পথচারীর দিকে তাকাল জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে।
পথচারী দিশেহারা হয়ে গেল। সে কি বলল আর ওরা কি বানাল। সে সত্যিই মেজাজ হারাল। তবুও স্থির থেকে বলল- দেখুন ভাই রাস্তা কিন্তু কারও বাপের না এটা সরকারের রাস্তা।
করিম এবং ফজু একেবারে চমকে উঠল। বলে কি লোকটা। সরকারের রাস্তা। তারা যেন বিশ্বাস করতে পারছেনা। করিম অবিশ্বাস্য ভঙ্গিতে ফজুকে জিজ্ঞেস করল- কার রাস্তা বলল?
ফজু - সরকারের।
এবার করিম পথচারীর দিকে পূর্ণদৃষ্টিতে তাকাল। বলল- ভাই রাস্তাটি কার বললেন?
পথচারী- কেন রাস্তাতো সরকারের।
করিম- ভাই সত্য করে বলেন। সত্য?
পথচারী- এখানে মিথ্যের কি আছে? এটাতো সবাই জানে।
ফজু- ভাই কসম করে বলেন।
পথচারী- (মহা বিরক্ত হয়ে), ভাই আপনাদের এসব প্যাচাল রাখেন। আমাকে যেতে দেন। যত্তসব ফালতু জিনিস।

এমন সময় একজন লোক এসে করিম এবং ফজুকে লক্ষ্য করে বলল- কিরে কি হয়েছে? কি নিয়া প্যাঁচাল পাড়স? এ্যাঁ।
করিম- ওস্তাদ, এই লোকটা বলল, রাস্তাটা নাকি আপনার।
ওস্তাদ- এতে সমস্যা কোথায়? লোকটিকে উদ্দেশ্য করে বলল, কি ভাই, সমস্যা?
পথচারী- ভাই ওরা মিথ্যে বলছে। রাস্তা আপনার একথা আমি বলিনি।
ওস্তাদ- কিরে! (কপাল কুঞ্চিত করে) লোকটি তো অস্বীকার করল।
করিম এবং ফজুকে একটু অপ্রস্তুত দেখাল। করিম পথচারীকে বলল- এই আপনিতো ডাহা মিথ্যুক। একটু আগে বললেন রাস্তাটি সরকারের। এখন অস্বীকার করলেন?
পথচারী যেন দেহে প্রান ফিরে পেল। বলল- হ্যাঁ বলেছি তো । রাস্তা সরকারের।
করিম কে খুব খুশি দেখাল। সে ওস্তাদের দিকে তাকিয়ে বিজয়ের হাসি হাসল।
ওস্তাদ- এইতো লাইনে এসেছে।
পথচারী খুবই অবাক হল। সে এদের কথাবার্তা কিছুই বুঝতে পারল না। ফ্যাল ফ্যাল করে শুধু চেয়ে রইল। সে কিছু বুঝে উঠার আগেই ওস্তাাদ লোকটি হুংকার দিয়ে বলল- ফজু করিমা! এই পাঁঠাটা(পথচারীকে) আমার রাস্তায় কেন এসেছে জিজ্ঞাসা করেছিস?
করিম- স্যরি, ওস্তাদ ভুল হয়ে গেছে। এই বলে তারা দুজন পথচারীকে মারতে শুরু করল। পথচারী কিছু বুঝে ওঠার আগেই কয়েক রাউন্ড একতরফা আক্রমন চলল। সে একেবারে নাজেহাল হয়ে গেল।
ওরা তিনজন মারপিট শেষ করে চলে যাওয়ার সময় পথচারীকে জিজ্ঞাসা করল- আমাকে চিনেছিস?
পথচারী কোন মতে মাথা নাড়িয়ে বলল- না।
ওস্তাদ বলল- আমি আবুল মাল সরকার।
পথচারী ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেল। সে এতক্ষনে বুঝতে পারল তার ভুলটা কোথায় হয়েছে। সে রাস্তাটা সরকারী বলেছে আর ওরা মনে করেছে ওদের নামে সরকার শব্দটা থাকার কারনে ওদের রাস্তা। কি সাংঘাতিক!
কিন্তু তার চেয়েও সাংঘাতিক অবস্থা বুঝার সময় তার হয়নি।
যখন বুঝতে পারল তখন দেখল তার সবকিছু ছিনতাই হয়ে গেছে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.