নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তোমাদের এ শহর ছেড়ে চলে যাচ্ছি। দূরে! বহু দূরে! ঈগল চোখের আড়াল খুঁজে নিচ্ছি- যেখানে সমস্ত পাপী স্বীকারোক্তি দেয় তাদের আকন্ঠ পাপের। অন্তত তারা সত্যের আড়ালে পাপ করে না; পাপ নিয়ে করে না কোন মিথ্যাচার!

নয়ন বিন বাহার

আমাদের একেক জনের জীবনের এক একটা নির্দিষ্ট বিন্দুতে এসে আমাদের আশপাশে যা হচ্ছে তার উপর নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ফেলি। তখন জীবনের নিয়ন্ত্রন নেয় ভাগ্য। এটাই দুনিয়ার সবচেয়ে বড় মিথ্যা।

নয়ন বিন বাহার › বিস্তারিত পোস্টঃ

বানরের রুটি ভাগ : আমাদের শিক্ষা

১৮ ই জুন, ২০২০ রাত ৮:২০

আমরা সবাই বানরের রুটি ভাগ করার গল্পটা জানি। দু:খের বিষয় হল, আমরা আমাদের প্রাত্যহিক জীবন যাপন থেকে গল্পের বানরটিকে তাড়াতে পারিনি। সে বানর গল্প থেকে একেবারে বাস্তবে এসে প্রতিনিয়ত আমাদের ঘাড়ে নি:শ্বাস ফেলে। আমরা সেই বানরদেরকে পরম যত্নে লালন পালন করি।

আচ্ছা, গল্পটা আবার একবার শুনে নি।

দুই ইঁদুর বন্ধু গৃহস্থের রান্নাঘর থেকে একটা রুটি উদ্ধার করেছে। দুজন সমান ভাবে ভাগের ব্যাপারে একমত হল। ভাগও করা হল। কিন্তু দুজনেই ভাবল তার ভাগেরটা ছোট। অন্যটা বড়। তারা কিছুতেই একমত হতে পারছে না। পাশ দিয়ে যাচ্ছিল এক বানর। বানর ঘটনা শুনল। শুনে হাসল। ইঁদুরদেরকে উপহাস করে বলল, আরে বলদের দল, এটাতো একটা খুবই সোজা হিসাব। তোদের মাথায় বুদ্ধি কম, তাই তোরা এর সমাধান করতে পারছিস না। এতবড় জ্ঞানীর দেখা পেয়ে ইঁদুর দ্বয় ভাবল, হতে পারে। তারা বানরকে খুব করে অনুরোধ করল রুটিটা সমান ভাগে ভাগ করে দিতে। বানর রুটির বড় অংশ থেকে এক টুকরো খেয়ে দেখে এটা ছোট হয়ে গেছে। সে আবার অন্য অংশ থেকে একটু খেয়ে ফেলে। দেখে ওটা ছোট হয়ে গেছে। আবার বড় অংশ থেকে কিছুটা খেয়ে ফেলে। এভাবে চলতে চলতে সামান্য এক টুকরো রুটি ছাড়া বাকীটা বানর খেয়ে ফেলেছে। এতক্ষণে ইঁদুর দুটোর টনক নড়ল। তারা মরিয়া হয়ে বলল, তুমিতো পুরোটাই খেয়ে ফেললে। তোমাকে দিয়েছি রুটি ভাগ করতে, খেতে দিইনি। আমরা বুঝতে পেরেছি তোমার মতলব। তোমাকে আর ভাগ করতে হবে না। আমাদের রুটি আমাদেরকে দিয়ে দাও। বানর এক অট্টহাসি দিয়ে বলল, ওকে, তোমাদের রুটি তোমরা ভাগ করবে, তাতে আমার কি! তো এতক্ষণ যে তোমাদের জন্য আমি পরিশ্রম করলাম তার পারিশ্রমিক দিবে না? এই বাকী রুটির অংশ হল আমার পারিশ্রমিক। আর শোন, আমার পারিশ্রমিক কিন্তু আরো বেশি। তোমরা আমার নিজের লোক বলে এই এত কমে মেনে নিলাম। এই বলে রুটির টুকরো নিয়ে বানর এক লাফে গাছে উঠে বসল। ইঁদুর দুটো তাদের অর্জিত সম্পদ হারালো।

এখানে কয়েকটি বিষয় লক্ষণীয়-

এক. ইঁদুর দুটোর মধ্যে মতভেদ ছিল অংশত। কেউ বলেনি পুরোটা তার।

দুই. বানর যখন তাদের বুদ্ধিকে আন্ডারএস্টিমেট করেছে তখন তারা বিভ্রান্ত হয়ে গেছে।

তিন. যেহেতু তাদের দুজনের মধ্যেই লোভ কাজ করছিল সেহেতু খুব সহজেই বানর তার স্বার্থসিদ্ধি করতে পারল।

চার. এই ভাগ-বাটোয়ারা বা বিচার যাই বলি না কেন তা যুগ যুগ ধরে চলে না। একসময় শেষ হতে বাধ্য। ততদিনে দুপক্ষই সমান ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

এবার আমরা সামাজিক প্রেক্ষাপটের দিকে তাকাই।

আপনার আশে পাশে যতগুলো বিরোধ, মামলা, রেষারেষি, ভেজাল দেখেন সেগুলো একটু পর্যবেক্ষণ করুন। দেখবেন উপরের চারটি লক্ষণীয় বিষয়ের সাথে মিল আছে।

অর্থাৎ তাদের বিরোধ হল কিছু অংশ নিয়ে। সেটার পরিমান সমগ্রের তুলনায় কখনো চার ভাগের একভাগ নয়। আরও অনেক কম। এই নিয়ে তারা আরও বুদ্ধিমান (বানর) কারও কাছে গিয়ে সঠিকতা কামনা করে। আর বুদ্ধিমানরা (বানর) তাদেরকে সুকৌশলে নিজেদের জালে বন্ধি করে ফেলে। যেহেতু তারা নিজেদের লোভ ছাড়তে পারে না তাই শুধু অপর পক্ষকে হারাতে চায়। এটা একসময় তার ইগোর বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। আর ঐ বুদ্ধিমানরা (বানর) তাদের ইগোর দোহাই দিয়ে নি:শেষ পর্যন্ত তাদেরকে টেনে নিয়ে যায়। যতদিন এই খেলা (মামলা, ভেজাল, বিরোধ ইত্যাদি) চলবে ততদিন (বানর যেমন টুকরো টুকরো করে সমস্ত রুটি শেষ করল) বানরের (বুদ্ধিমানদের) লাভ। শেষ পর্যন্ত যদিও একপক্ষ জিতে অথবা মাঝপথে তাদের বুদ্ধি বিকশিত (বানরের চালাকি বুঝতে পারা) হয় তখন দেখা যায় বানরের মত উপকারী বন্ধু সেজে অবশিষ্টাংশও গলাধ:করণ করে ফেলে।

পুনশ্চ: আমাদের সমাজে এই বানর কারা? এদেরকে আপনি চিনেন? একটু খেয়াল করলেই এদেরকে চিনতে পারবেন। এরা এটাকে পেশা বানিয়ে ফেলেছে। ভাববেন না অবৈধ পেশা। রীতিমত বৈধ।

বি.দ্র. : সমাজের ইঁদুরগণ বানরের পেশাকে বৈধতা দেয়।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই জুন, ২০২০ রাত ৯:২২

চাঁদগাজী বলেছেন:


আমার মনে হয়, আমাদের ভাগযোগের সমস্যাগুলো এর চেয়ে (রুটির ) একটু বেশী কমপ্লেক্স; আমাদের সমাজে একটা বড় সমস্যা হচ্ছে ভুমি নিয়ে; এখানে ভুমিদস্যুরা জিতে যাচ্ছে বেশীরভাগ।

১৮ ই জুন, ২০২০ রাত ৯:৪৫

নয়ন বিন বাহার বলেছেন: ভূমি দস্যুরা বিভিন্ন ধরণের ফাঁদ তৈরী করে রাখে। এরা ডিভাইড এন্ড রুল পদ্ধতিতে কাজ করে থাকে। এরা সতর্ক দৃষ্টি রাখে যেন প্রতিবেশিরা একে অন্যের বিষয়ে নাক না গলাতে পারে। এতে তারা লাভবানই হচ্ছে।

২| ১৮ ই জুন, ২০২০ রাত ১১:৫০

রাজীব নুর বলেছেন: এই সমাজের সবচেয়ে খারাপ লোক হলো- রাজনীতিবিদদের ছত্রছায়ায় থাকা লোকজন।

১৯ শে জুন, ২০২০ রাত ১২:৫১

নয়ন বিন বাহার বলেছেন: এদেরকে নর্দমার কীট বলেলেও কম বলা হবে। তবে এদেরকে তারা পালে।

৩| ১৯ শে জুন, ২০২০ রাত ১২:১৭

সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: বুদ্ধি করে নিজের সহায় সম্পদ নিজকেই দেখে রাখতে হয়!

১৯ শে জুন, ২০২০ রাত ১২:৫০

নয়ন বিন বাহার বলেছেন: একটুখানি বেশি পাওয়ার লোভ মানুষকে অধ:পতিত হতে সাহায্য করে।

৪| ২৬ শে জুন, ২০২০ দুপুর ১২:০১

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বহু বছর ধরে এই ভুমিকায় আছে একটি অভিবাসীদের দেশ যার নাম যুক্তরাষ্ট্র।

২৬ শে জুন, ২০২০ বিকাল ৫:৫২

নয়ন বিন বাহার বলেছেন: আমরা সবাই এ গল্পের বানর হতে চাই। বানর হতে না পেরে কোন ফাঁকে যে ইঁদুর দশায় পড়ি তা নিজেরা বুঝতে পারি না।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.