![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আওয়াজ দিতে চাই!!! আমি সত্য অন্বেসী। সত্য বলতে দ্বিধা করি না। সত্যের জন্য লড়াই করি।এতে কারো এলার্জি হইলে আমার কিছু করার নাই।
যারা হয়তো ভাবছেন নিজের বাসায় যদি গোলাপ গাছ থাকত তাহলে কতনা ভালো হতো , তাছাড়া গোলাপ এর অনেক চাহিদা থাকায় গোলাপ চাষ কে ব্যাবসা হিসেবে নিতে পারেন।
কিন্তু উপযুক্ত চাষ পদ্বতি না জানার জন্য গোলাপ গাছ লাগাতে পারছেন না??
তাদের জন্য আমাদের এখন কার পোস্ট , তাই আর দেরি কেন, আসুন কাজের কথায় আসা যাক।
গোলাপ ফুলকে ফুলের রাণী বলা হয়। রঙ, গন্ধ ও সৌন্দর্যের জন্য গোলাপ ফুল সবার কাছেই প্রিয়। এর ইংরেজি নাম Rose ও বৈজ্ঞানিক নাম Rosa sp. আমাদের দেশে নানান রঙ ও জাতের গোলাপ ফুল চাষ করা হয়ে থাকে। যেমন-ক্রিমশন গ্লোরি, পাপা-মাইল্যান্ড, টিপটপ, হানিমুন, সানসিল্ক, রোজিনা, গোল্ডেন ইত্যাদি। জাত ভেদে গোলাপ ফুলের রঙ, আকৃতি ও গন্ধ ভিন্ন হয়ে থাকে। আমাদের দেশের সাভার, যশোর, কুষ্টিয়া প্রভৃতি জায়গায় এখন ব্যবসায়িক ভিত্তিতে গোলাপ ফুল চাষ ও বাজারজাত করা হচ্ছে।
বাজার সম্ভাবনা ।
আমাদের দেশে সারাবছরই গোলাপ ফুলের চাহিদা থাকে। সৌখিন মানুষ তার ঘর সাজানোর জন্য ফুল ব্যবহার করে। এছাড়া বিয়ে, গায়ে হলুদ, বিভিন্ন সভা, সমাবেশ অনুষ্ঠানের স্থান ফুল দিয়ে সাজানো হয়ে থাকে। তাই বলতে গেলে সারাবছরই ফুলের চাহিদা থাকে। আমাদের দেশের প্রায় সব জেলা শহরে ফুলের দোকান দেখা যায়। এসব ফুলের দোকানে ফুল সরবরাহ করে আয় করা সম্ভব। এছাড়া গোলাপ ফুল চাষ করে দেশীয় বাজারে বিক্রয়ের পাশাপাশি ফুল বিদেশেও রপ্তানী করা সম্ভব। এক্ষেত্রে বিভিন্ন রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান সহায়তা দিয়ে থাকে। রজনীগন্ধা ফুল বিদেশে রপ্তানি করার জন্য এসব প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করা যেতে পারে।
গোলাপ ফুল উৎপাদন কৌশল
* চাষের উপযোগী পরিবেশ ও মাটি
জলবায়ু
মাটির প্রকৃতি
অক্টোবর-নভেম্বর মাস চারা লাগানোর উপযুক্ত সময়। দীর্ঘস্থায়ী সূর্যের আলোযুক্ত খোলামেলা আবহাওয়া ফুল উৎপাদনের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন। মোটামুটি ঠান্ডা আবহাওয়ায় গোলাপ ভালো জন্মায়।
গোলাপ চাষের জন্য পানি নিষ্কাশনের সুবিধাসহ বেলে দো-আঁশ, দো-আঁশ অথবা এঁটেল দো-আঁশ মাটি সবচেয়ে উপযোগী। মাটির পিএইচ ৬-৭ এর মধ্যে থাকা উচিত।
জাত
গোলাপ ফুলকে অনেক শ্রেণীতে ভাগ করা যেতে পারে। তবে উল্লেখযোগ্য শ্রেণীগুলো হলো-
১. হাইব্রিড টি (Hybrid Teas) : এ শ্রেণীর ফুলগুলো বেশ বড়, সুগঠিত ও অনেক পাপড়িবিশিষ্ট। কাটা ফুল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ক্রিমশন গ্লোরি, পাপা-মাইল্যান্ড, টিপটপ ইত্যাদি এ শ্রেণীর জাত।
২. ফ্লোরিবান্দা (Floribunda) : এ শ্রেণীর ফুলগুলো আকারে ছোট এবং থোকায় ধরে। কতকগুলো জাত কাঁটা ফুলের জন্য চাষ করা হয়। হানিমুন, সানসিল্ক, টিপটপ ইত্যাদি এ শ্রেণীর জাত।
৩. পলিয়েন্থা (Polyantha) : এ শ্রেণীর ফুলগুলো আকারে অপেক্ষাকৃত ছোট এবং বড় বড় থোকায় ধরে। জর্জ এলগার, ক্যামিও, আইডিয়াল ইত্যাদি এ শ্রেণীর জাত।
৪. মিনিয়েচার (Miniature) : এ শ্রেণীর গাছ ছোট, পাতা ছোট এবং ফুল ছোট ছোট হয়। রোজিনা, গোল্ডেন, ইয়ালো ডল ইত্যাদি এ শ্রেণীর জাত।
তথ্যসূত্র : কৃষি প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল, জুন ২০০৭, Microfinance for Marginal and Small Farmers (MFMSF) Project, প্রজেক্ট ম্যানেজমেন্ট সেল-১, পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ), ঢাকা।
বংশবিস্তার
কাটিং, গুটিকলম ও ‘টি’ বাডিং এর মাধ্যমে গোলাপের বংশবিস্তার করা হয়। কাটিং ও গুটি কলম জুলাই-আগস্ট মাসে এবং ‘টি’ বাডিং ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে শেষ করতে হয়।
জমি তৈরি
১. সাধারণত চারা রোপণের ২-৩ সপ্তাহ আগে জমিকে গভীরভাবে চাষ ও মই দিয়ে মাটি ঝরঝরে ও সমান করে নিতে হবে।
২. এরপর জমিতে ১.২ মিটার চওড়া ও পরিমাণমত লম্বা উঁচু বেড তৈরি করে নিতে হবে।
৩. দু’টি বেডের মাঝখানে পানি নিকাশ ও সেচের জন্য নালা তৈরি করতে হবে।
৪. বেডে গাছ লাগানোর জন্য এক মিটার গভীর এবং ৬০ সে.মি. চওড়া গর্ত করতে হবে।
৫. গর্ত করার সময় ২০ সে.মি. গভীর উপরের মাটি আলাদা করে রেখে বাকি মাটির সাথে ১০ কেজি কম্পোস্ট, আধা কেজি খৈল ও একমুঠো হাড়ের গুঁড়ো মিশিয়ে নিতে হবে।
৬. বাকি উপরের মাটির সাথে প্রয়োজনমত গোবর মিশিয়ে গর্ত ভরাট করে নিতে হবে।
৭. বড় জাতের গোলাপের জন্য বেশি গোবর সার মিশিয়ে গর্ত ভরাট করতে হবে। বড় জাতের গোলাপের জন্য এক গর্ত থেকে অন্য গর্তের দূরত্ব ৬০ সে.মি. এবং ছোট জাতের জন্য ৩০ সে.মি. দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
চারা রোপণ
১. নতুন চারা না লাগিয়ে এক বছর পুরানো চারা লাগানো উচিত।
২. গর্তের মধ্যে চারা সোজাভাবে লাগাতে হবে।
৩. চারার শেকড় মাটি দিয়ে সম্পূর্ণ ঢেকে দিতে হবে।
৪. জোড় কলমের মাধ্যমে তৈরি চারার জোড়ের জায়গাটি মাটি থেকে অন্তত ৩-৪ সে.মি. উপরে রাখতে হবে।
সার প্রয়োগ
কৃষকদের মতে গুণগত মানসম্পন্ন ভালো ফলন পেতে হলে গোলাপ ফুলের গাছে যতটুকু সম্ভব জৈব সার প্রয়োগ করতে হবে। মাটি পরীক্ষা করে মাটির ধরণ অনুযায়ী সার প্রয়োগ করতে হবে। তবে জৈব সার ব্যবহার করলে মাটির গুণাগুণ ও পরিবেশ উভয়ই ভালো থাকবে। বাড়িতে গবাদি পশু থাকলে সেখান থেকে গোবর সংগ্রহ করা যাবে। নিজের গবাদি পশু না থাকলে পাড়া-প্রতিবেশি যারা গবাদি পশু পালন করে তাদের কাছ থেকে গোবর সংগ্রহ করা যেতে পারে। এছাড়া ভালো ফলন পেতে হলে জমিতে আবর্জনা পচা সার ব্যবহার করা যেতে পারে। বাড়ির আশেপাশে গর্ত করে সেখানে আবর্জনা, ঝরা পাতা ইত্যাদির স্তুপ করে রেখে আবর্জনা পচা সার তৈরি করা সম্ভব।
সেচ
১. চারা রোপণের পর, চারার গোড়ায় প্রাথমিক অবস্থায় ঘন ঘন পানি দিতে হবে।
২. চারা মাটিতে ভালোভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে নতুন ডালপালা ছাড়ার পর খরা মৌসুমে প্রতি ১০ দিন পর পর একবার সেচ দিলেই চলবে।
৩. প্রতিবার পানি সেচের পর গাছের গোড়ার মাটি ঝরঝরে করে দিতে হবে।
রোগবালাই ও তার প্রতিকার
গোলাপ ফুলের বাগানে পোকার আক্রমণ হলে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত জৈব কীটনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে পোকা দমন না হলে স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ইউনিয়ন পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তা অথবা উপজেলা কৃষি অফিসে পরামর্শের জন্য যোগাযোগ করা যেতে পারে।
চাষের সময় পরিচর্যা
১. চারার জোড়া জায়গাটির নিচের অংশ থেকে অর্থাৎ শিকড় গাছ (Root stock) হতে কোন ডালপালা বের হলে ধারালো ছুরি দিয়ে কেটে দিতে হবে।
২. গাছের প্রথম দিকে বের হওয়া পুষ্পকুঁড়ি ভেঙ্গে দিলে পরবর্তীতে গাছ বড় আকারের ফুল দিবে।
৩. মার্চ-এপ্রিল মাসে পচা গোবর এবং কম্পোস্টের মালচ গাছের গোড়ায় দিতে হবে।
৪. বয়স্ক ডালে ফুল ভালো হয় না। তাই সাধারণত অক্টেবর-নভেম্বর মাসে গোলাপ গাছের ডালপালা ছাঁটাই করতে হবে। ছাঁটাইয়ের সময় মরা ডাল, রোগাক্রান্ত ডালপালা ইত্যাদি ধারালো ছুরি দিয়ে কেটে ফেলতে হবে।
৫. গাছের বৃদ্ধির উপর নজর রেখে গোলাপ গাছে হালকা, মধ্যম এবং ভারী ছাঁটাই করতে হয়। প্রথম বছরে গাছ ছাঁটাইয়ের কোন প্রয়োজন হয় না।
৬. ছাঁটাইকৃত ডাল যেন শুকিয়ে না যায় তার জন্য ডালের সামনে ছত্রাকনাশক ঘন করে গুলে তুলির সাহায্যে লাগিয়ে দিতে হবে।
৭. ডাল পালা ছাঁটাইয়ের পর গোলাপ গাছের গোড়া থেকে ২০ সে.মি. দূরে গোল করে মাটি খুঁড়ে শেকড়কে বের করে দিতে হবে। ৮-১০ দিন এ অবস্থায় রেখে দিলে শেকড়ে বাতাস ও রোদ লাগবে। এতে গাছের গোড়ায় থাকা ক্ষতিকর পোকামাকড় ধ্বংস হবে।
উৎপাদিত ফুলের পরিমাণ
প্রতি বিঘা জমি থেকে প্রতি দিন গড়ে প্রায় ৪০০টি ফুল পাওয়া যায়।
গোলপ ফুল উৎপাদন খরচ
* ১বিঘা (৩৩ শতাংশ) জমিতে ফসল উৎপাদন খরচ
খরচের খাত
পরিমাণ
আনুমানিক মূল্য(টাকা)
বীজ/চারা
৫০০টি
২৫০০
জমি তৈরি
------
১৫০০
পানি সেচ
----
৫০০
শ্রমিক
৫ জন
১০০০
সার
প্রয়োজন অনুসারে জৈব সার
এই সার বাড়িতেই তৈরি করা সম্ভব। তাই এর জন্য অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন নেই।
কীটনাশক
প্রয়োজন অনুসারে জৈব বা রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহার
নিজস্ব/দোকান
জমি ভাড়া
একবছর
৪০০০
মাটির জৈব গুণাগুণ রক্ষা ও উৎপাদন খরচ কমানোর জন্য জৈব সার ও জৈব কীটনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে লাভের পরিমাণ বাড়তে পারে।
তথ্যসূত্র : মাঠকর্ম, চাটমোহর, পাবনা, অক্টোবর ২০০৯
মূলধন
এক বিঘা (৩৩ শতাংশ) জমিতে গোলাপ ফুল চাষের জন্য প্রায় ১০০০০ টাকার প্রয়োজন হবে। মূলধন সংগ্রহের জন্য ঋণের প্রয়োজন হলে নিকট আত্মীয়স্বজন, সরকারি ও বেসরকারি ঋণদানকারী ব্যাংক বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান (এনজিও)-এর সাথে যোগাযোগ করা যেতে পারে। এসব সরকারি ও বেসরকারি ঋণদানকারী ব্যাংক বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান (এনজিও) শর্ত সাপেক্ষে ঋণ দিয়ে থাকে।
প্রশিক্ষণ
গোলাপ চাষ করার আগে অভিজ্ঞ কারও কাছ থেকে গোলাপ ফুল চাষ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিতে হবে। এছাড়া চাষ সংক্রান্ত কোন তথ্য জানতে হলে স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ইউনিয়ন পর্যায়ে কৃষি কর্মকর্তা অথবা উপজেলা কৃষি অফিসে যোগাযোগ করা যেতে পারে। এছাড়া বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে। এসব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্ধারিত ফি এর বিনিময়ে কৃষি বিষয়ক প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে।
রং ,গন্ধ ও সৌন্দর্যের জন্য গোলাপ ফুল সবার কাছেই খুব প্রিয়। বিভিন্ন অনুষ্ঠানের স্থান ও ঘর সাজানোর জন্য গোলাপ ফুলের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে । তাই বাণিজ্যিক ভিত্তিতে গোলাপ ফুল চাষ করে বাড়তি আয় করা সম্ভব।
©somewhere in net ltd.
১|
২০ শে আগস্ট, ২০১৪ রাত ৮:০২
মুদ্দাকির বলেছেন: উপকারি পোষ্ট , সামু চাইলে নির্বাচিত করতে পারে