![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বহুকাল আগের কথা। :-D
তখন সবে কলেজে ভর্তি হয়েছি।
বাড়ি থেকে কলেজ রোজ ২০ কিলোমিটার পথ যাতায়ত করতে হয়। কলেজের পোলাপান হইলেও মনে আছিলো বহুত দুঃখ।
পড়া না পারলে পিটাইতো এবং সেইসাথে কান ধরাইয়া একদম মাঠের
মাঝখানে দাড়া করাইয়া রাখতো। তাই জীবন বাজী রাইখা পড়া রেডি করতাম। কলেজের ছাত্র হইয়াও ভাগ্যের নির্মম পরিহাসের দরুন
স্কুল ড্রেস ছাড়তে পারি নাই।
সাদা সার্ট আর নেভি ব্লু প্যান্ট যেন নিত্য দিনের সঙ্গী। একদিন পড়ে না গেলে কলেজে ঢুকতেই দেবে না! কলেজ ১ দিন কামাই দিলেই ২০ টাকা অর্থদন্ড!
আরো কত কি। কলেজ পালিয়ে যে সিনেমা দেখবো তারও কোন সুযোগ নেই কারন, দুইটা সিনেমা হলের একটা বাংলা স্যারের বড় ভাইয়ের আরেকটা পরিসংখ্যান স্যারের ভায়রার।
কলেজ থেকে ওখানে বলা ছিল সাদা ড্রেসের কলেজের পোলা যদি আসে আগে পিটন শুরু করবেন তারপর আমাদের ফোন করবেন।
এভাবেই চলছিল, দুইটা বছর একদম মাইনকার চিপায় ছিলাম।
তো যাইহোক, একবার কয়েকজন ফ্রেন্ড মিলে মনস্থির করলাম কলেজ
পালিয়ে ভারত দেখতে যাব(বর্ডারের কাছ থেকে)।
যেই ভাবা সেই কাজ।
অতি সতর্কতার সহিত সাইকেল নিয়ে কলেজের সীমানা পার হলাম। যাত্রা শুরু হলো... দীর্ঘ ৪ ঘন্টা সাইকেল চালিয়ে ৫০ কিলো পথ পাড়ি দিয়ে ভূরুঙ্গামারী পৌছে গেলাম।
সবাই খুবই ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলাম। আরো কিছুদূর যাওয়ার পর এক হোটেলে খাওয়া দাওয়ার জন্য ঢুকলাম। খাওয়া শুরু হলো। খেতে খেতে এক জেঠু
কে শুধাইলাম.. জেঠু ভারত আর কদ্দুর? জেঠু দাঁত কেলিয়ে বলতে লাগলো (রংপুর অঞ্চলের ভাষায়)... ভারত এলায় কডে বাহে? যদ্দুর
আচ্চেন আরো অদ্দুর যাওয়া নাগবে!!
পুরাই টাশকি খায়া গেইলাম। কয় কি? ৫০-৬০ কিলো পথ আসলাম আর ব্যাটায় কি কয় এগুলা? গেল মেজাজটা একদম ৭২ হইয়া। তাহলে ভারত
দেখা কি হবে না?
চিন্তা করে দেখলাম যতদুর এসেছি এখান থেকে বাড়ি ফিরে যেতেই রাত হয়ে যাবে। আর তাই কালবিলম্ব না করে ভারত দেখার ইচ্ছাটাকে এক প্রকার মাটি চাপা দিয়ে হোটেল থেকে সোজা বাড়ির পথে রওনা হলাম। ওখান থেকে কুড়িগ্রাম শহরে ফিরে আসতেই এশার আযান দিলো এবং বাড়িতে পৌছুলাম রাত ১০ টায়। ১২০ কিলোমিটারের ও বেশী সাইকেল চালিয়েছিলাম ঐ দিন। পরদিন আর বিছানা থেকে ওঠা সম্ভব হয় নাই। দুইদিন পর কলেজ গিয়ে ৪০ টাকা ধরা খাইলাম।
©somewhere in net ltd.