নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানুষের সন্ধানে

মোঃ নজরুল ইসলাম

লেখক, সম্পাদক, প্রকাশক এবং ডিজাইনার

মোঃ নজরুল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

গান কি গায়কের নাকি লেখকের?

১৩ ই জুলাই, ২০১৩ সকাল ৯:১০

আমার মনে একটি প্রশ্ন সব সময় ঘুরে বেড়ায় যে, এখন যে গানটি আমি শুনতে পাচ্ছি সেটা কার:- সুরকারের? না কি শ্রোতার? না কি গায়কের? না যে ব্যক্তি তার মনের চিন্তা-ভাবনা আবেগ দ্বারা এর কথা গুলো রচনা করেছেন?

সুরকার গানের মালিকানা দাবি করতে পারেন কারণ গানটি যত দিন যত জন কন্ঠ দিয়ে যাক না কেন গানের সুর কিন্তু তেমন পরিবর্তন হয় না তবে কোন কোন গানে দুই বা ততোধিক বার ভিন্ন ভাবে সুরারোপ করা হয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে যদি একজন সুরকার গানটিকে নিজের বলে দাবি করেন তবে সেটা অযৌক্তিক হবে না।

একটি গানের অসংখ্য শ্রোতা থাকে। তাই গানের স্বত্ব দাবী করতে পারে না তবে কখনো দাবী করেছেন এমন প্রমান এখনো পাওয়া যায় নি। তবে হ্যাঁ, দাবি করলে হয়ত কেউ কেউ স্বত্ব পেয়ে যেতেও পারে। যদি একজন গায়ক একটি গান একবার গেয়েই তার মালিকানা বার বার প্রচার করে তার স্বত্ব পেয়ে যেতে পারেন তবে শ্রোতাও পাওয়ার যোগ্য কারণ সেও তো গানটি শুনেছে বা এখনো শুনছেন।

একজন কন্ঠ শিল্পী একটি গানে কন্ঠ দিয়ে গানটিকে নিজের বলে প্রচার করেন গর্বের সাথে। আমরাও তার গান বলে স্বীকার করে নেয়। কখনো শিল্পী কোথাও কোনো প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছেন বলে আমার জানা নেই। বর্তমানে অনেক প্রকার কন্ঠ শিল্পী খোঁজার আয়োজন করা হয়। সেখানে শোনা যায়- আজ আমি গাইব “শ্রদ্ধেয় --- স্যার/ম্যাডামের ----” গানটি। আর গানটি শোনার পর “--- স্যার/ম্যাডাম” যদি ঐ আয়োজনের বিচারক হয়ে থাকেন তবে তিনি সন্তুষ্ট হয়ে বিশেষ কমেন্টও দিয়ে থাকেন। আমার প্রশ্ন হলো গানটি যদি “--- স্যার/ম্যাডাম” এর হয়ে থাকে তবে গানটি তো এই প্রতিযোগীরও যিনি এই মাত্র গানটিতে কন্ঠ দিলেন। কারণ গায়ক বা গায়িকার পরিবর্তনের সাথে সাথে গায়কিতেও কিছুটা পরিবর্তন হয়ে থাকে কিন্তু সুর বা কথার কোন পরিবর্তন হয় না। যদি কোন প্রতি যোগী গানটিকে প্রথম শিল্পীর কন্ঠ অনুকরণ করে থাকে তবে তাকে সুধরে দেওয়া হয়, “ গানটি কিন্তু কপি করা হয়েছে। তোমাকে তোমার নিজের কন্ঠ দিয়ে গান করতে হবে। নিজের জায়গা নিজেকে তৈরি করে নিতে হবে। কখনোই মূল শিল্পীর কন্ঠ অনুকরণ করে গান করা যাবে না। অন্যের কন্ঠ নকল করে বড় শিল্পী হওয়া যাবে না।” ইত্যাদি ইত্যাদি ভাবে তিরস্কার করা হয়ে থাকে।

librarybd

তবে একটি গানের যে প্রকৃত স্বত্বাধিকারী সে কিন্তু কখনো তার স্বত্ব দাবি করেন না। কারন তার সম্পদের ভান্ডার অসীম সে দিতে জানে। সবাই জানি যার পেটে ক্ষুধা আছে সেই কেবল খেতে চাইবে এটাই স্বাভাবিক। একটি গান একবারই লেখা হয়। যত বার সুরারোপ বা যত জনই গানটি গাইতে থাকুক না কেন গানের কথা কিন্তু পরিবর্তন হয় না। যে সম্পদ স্থায়ী সে সম্পদ ক্রয় বিক্রয় করা যেতে পারে, স্বত্ব দেওয়া যেতে পারে। যার অবস্থান-আকার-আয়তন নির্ণয় করা সম্ভব নয় তার মালিকানা কেউ পেতে পারে না; যা আমাদের কন্ঠ শিল্পীরা পেয়ে থাকেন। একটিই গান বহুজন গাইবেন আর তার স্বত্বাধিকারী হবেন প্রথম যে জন গেয়েছেন এটা কোন ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। যদি প্রথম শিল্পী মালিকানা পেয়ে থাকেন তবে শেষ যে শিল্পী গাইবেন তারও মালিকানা পাওয়ার অধিকার আছে। অথবা একটি গান একটি শিল্পী মাত্র গাইতে পারবেন অন্য কেউ যদি গানটি গেয়ে থাকেন তবে তাকে অপরের গান অনুকরণ বা নকল করার জন্য শাস্তি পাওয়া উচিত।

আচ্ছা গানের জন্য কি কোন কপি রাইট আইন নেই? না কি কন্ঠ শিল্পী গানটিকে গানের স্রোষ্টার নিকট থেকে গানটিকে ক্রয় করে তার পর কন্ঠ দিয়ে থাকেন। হয়ত তাই হবে না হলে যাঁরা গান রচনা করেন তাঁরা এতটা আড়ালে চলে যান কেন? তাঁদের দারিদ্র্য সংসার ত্যাগী হয় না কেন? তাঁরা প্রকৃত সম্মান পায় না কেন? সকল রেডিও, টিভি চ্যানেল গুলোতে যত প্রকার গানের অনুষ্ঠান হতে দেখা যায় সেখানে কত শত গান পরিবেশন হয় কিন্তু গীতিকারের নাম খুব বেশি শোনা যায় না, হাতে গোনা কয়েক টি অনুষ্ঠান ছাড়া। বর্তমানে যে সকল প্রতিযোগী গানের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করেন আর যে গানটি পরিবেশন করবেন তার প্রকৃত গীতিকার বা সুরকারের নাম বলতেও পারেন না। আমার তো মনে হয় একজন শিল্পী যদি ১০০ টি গানের স্বত্ব প্রচার করেন তবে তার নিকট ঐসকল গানের গীতিকারের নাম জানতে চাওয়া হয় তবে সব কটি গানের গীতিকার বা সুরকারের নাম বলতে পারবেন কী না সন্দেহ আছে।

বাংলা প্রবাদ আছে: আগাছার বাড় বেশি। আর হয়ত একারনেই একজন শিল্পী একবার কন্ঠ দিয়েই গানের স্বত্বাধিকারী বনে যান। যেখানে সেখানে গানটিকে নিজের বলে প্রচার করতে পারেন। আর প্রকৃত গানের লেখক বা স্বত্বাধিকারী থেকে যান লোকচক্ষুর অন্তরালে। অনাহারে অর্ধহারে দিন যাপন করেন। তাই আমরা প্রতি নিয়ত ভালো ভালো গান পাই না। ভালো গানের লেখক পাই না। এর এই কারনে যে সব গান আমরা প্রতি দিন শুনতে পাই সেই গান কেই একটু ভিন্ন ভাবে শোনার আকুলতা নিয়ে কন্ঠ শিল্পী বাছায় করতে হয়। একই গান কখনও শিশু, কখনো কিশোর বয়সী নারী বা পুরুষ কন্ঠে ধারণ করতে হচ্ছে পুরাতন গানটিকে একটু ঘসামাজা করে নতুন রূপ দিতে।

SRISTY PROKASHONI

আসুন আমরা বাস্তব সত্যকে মেনে নিই। প্রকৃত গানের স্রোষ্টকে সম্মান করি। নতুন গায়ক/গায়িকা না খুজে বরং নতুন লেখক ও সুরকার খুজে বের করি যাতে নতুন নতুন সুরে নতুন নতুন গান উপহার পেতে পারি। আমাদের প্রকৃত জ্ঞান হোক।

http://www.librarybd.com/index.php

SRISTY PROKASHONI

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.