![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
রাত্রির নির্জনতায় নিঃসঙ্গ কেঁদে কেঁদে, একদিন হয়তো তুই অজান্তেই মরে যাবি, তবুও তুই জানবি না পাষাণ এ বুকে কতটুকু ভালবাসা তোর জন্যে জমা রাখি।
এই তো মাস ছ'সাতেক আগের কথা। একদিন সকালবেলা আরিফ ফোন দিল। তখন আমি ঘুমেই ছিলাম। বালিশের নিচ হাতড়ে মোবাইলটা কানে লাগাতেই আরিফ কনগ্রাচুলেশন জানাল। আমি থতমত খেয়ে গেলাম। কনগ্রাচুলেশন জানানোর মতো তো কিছু ঘটার কথা না। একূল অকূল সবকূল ভাবতে ভাবতে জিজ্ঞেস করার আগেই আরিফ হাসতে হাসতে বলল, 'মামা মিষ্টি কবে খাওয়াবা?' আমি ভ্রু কুঁচকে চিন্তা করতে লাগলাম। ব্যাপার কি তা বুঝার জন্যে বললাম, 'কিসের মিষ্টিরে?' মুখের হাসি আকর্ণ বিস্তৃত করে বলল, 'ব্যাটা তুই বাপ হয়েছিস এখন মিষ্টি খাওয়াবি না!!' আমি তখন আকাশ থেকে পড়লাম। বিয়েই করি নি, আমার বাচ্চা আসবে কোথা থেকে!! আরিফকে ফাজলামি বন্ধ করে আসল কথা বলতেই বলল, 'মামা জুহির তো মেয়ে হয়েছে একটা, তুই তো বাবা হয়েছিস।' আরিফের কথা শুনে হাসতে হাসতে আমি বিছানায় গড়াগড়ি দিলাম। আহারে জুহির কথা তো ভুলেই গিয়েছিলাম। এত বছর পরও মানুষ আমারে লজ্জার কথাগুলো আবার স্মরণ করিয়ে দেয়। আমি তাকে হাসতে হাসতে বললাম, 'মিষ্টি তো জুহি খাওয়াবে তোরে, আমি কেনো?' এ কেমন বন্ধু বান্ধব জুহি মা হওয়ার পিছনে আরেকজনের কৃতিত্ব আর সে কিনা আমার কাছে মিষ্টি চায়। আরিফ হাসতে হাসতে বলল, 'মামা নিজেরে বাবা বাবা লাগতাছে নাকি রে তোর?' আমি বললাম, 'না রে মামা মামা লাগতাছে।' আমাকে উপদেশ দিলো, 'শোন বাবা বাবা না লাগলে মারজুক রাসেলের 'বাবা বাবা লাগছে' নাটকটা দেখ। চরম ফিলিংস পাবি।' আরেকটু হাসিঠাট্টা করে ফোন রেখে দিলাম। এদিকে খবর চাওর হয়ে গেছে। একান ওকান হয়ে সবর্ত্র চড়িয়ে গেছে আমার বাবা হওয়ার ঘটনা। আমি পড়লাম মুশকিলে। শেষ পর্যন্ত আমার বিয়ের প্রস্তাব আসার সময় যদি কন্যাপক্ষ জানে আমার একটা মেয়ে আছে তাহলে আর বিয়েই করতে পারব না। আজীবন কুমার থেকে যাব। দুঃখের কথা চিন্তা করতে করতে ফেইসবুকে ঢুকে আমাদের বন্ধুবান্ধব সার্কেলের সিক্রেট গ্রুপ 'চাচা পার্টি'তে একটা পোস্ট করলাম।
'চাচারা খবর জানো নাকি জুহি তো মা হইছে। আমার তো খুব খুশি লাগতাছে।'
ওরা আমার পোস্টে এমন করল যে কমেন্টের বন্যায় আমার লুঙ্গির গিঁটে টান পড়ল। কোনরকম মানইজ্জত নিয়ে পালিয়ে আসলাম।
তখন মাত্র কলেজে ভর্তি হয়েছি। নতুন শহরে আমি মফস্বলের সদ্য কিশোর পেরোনো তরুণ। স্কুল জীবনটা বালক বিদ্যালয়ে পড়ার দরুণ কখনও কোন মেয়ের সাথে তেমন কথা বলা হয়ে উঠেনি। মেয়ের সাথে কথা বলতে গেলে আমার হাঁটু কাঁপাকাঁপি বেড়ে যেত। কোনসময় তোতলামি না করলেও ঐসময়ে তোতলামি আরম্ভ হয়ে যেত। কলেজে ভর্তি হওয়ার পরই দেখি ক্লাসে একেকটা ডানাকাটা পরী। ক্লাসের বাইরে অন্য সেকশনগুলোতেও একই অবস্থা। ছেলেদের মধ্যে যাদের সাথে বন্ধুত্ব তৈরী হলো, দেখি তারা একেকটা করে মেয়ে বগলদাবা করতেছে। আমার তখন মনে হল আমিও কেউ একজনকে বগলদাবা করি নাহলে এই দৌড়ে পিছিয়ে পড়ব। যেই ভাবা সেই কাজ। প্রথমে একটা মেয়েকে খুব পছন্দ হলো কিন্তু বাঁধ সাধলো তার উচ্চতা। এমনিতেই আমি তেমন লম্বা না আবার খাটো না কিন্তু ঐ মেয়েটা খাম্বার মতো লম্বা। চেহারায় অভিনেত্রী মীমের মতো তিল আর একই রকমের হাসি। তার উচ্চতার জন্যে আমার এই প্রেমটা শুরু হওয়ার আগেই ভেঙ্গে গেল। তবুও আশাহত হলাম না, নতুন উদ্দীপনায় কাজ শুরু করলাম। ক্লাসে লক্ষ্য করলাম একটা মেয়ে প্রায় আমার উচ্চতারই শান্তশিষ্ট মেয়ে। ক্লাসে তেমন একটা কথা বলে না, চুপচাপ থাকে। মাথায় স্কার্প পড়ে, দেখতে পুরোদস্তুর ভদ্র মেয়ে। আমি ভাবতে লাগলাম বিয়ে করলে এরকম ভদ্র মেয়েকেই করা উচিত। গায়ের রঙ উজ্জ্বল গৌরবর্ণের হওয়ার চেয়ে তার টোলপড়া হাসি আমার হৃদকম্পন বাড়ানোর জন্যে দায়ী। আমি টপ করে তার প্রেমে পড়ে গেলাম। প্রেম পড়ামাত্রই আমি নিজেকে আবিষ্কার করি সিনেমা হলে। বিশাল পর্দায় যেমন ছবি দেখা হয় চারপাশ অন্ধকার থাকে তেমনি তাকে আশেপাশে সবর্ত্র দেখতে লাগলাম, বাকী সব অন্ধকার। প্রেমে পড়লাম ভালো কথা তাকে তো জানাতে হবে যে তাকে আমি ভালবাসি কিন্তু জানানোর কোন উপায় পেলাম না। তাকে জানানোর আগে পুরো ক্লাস চুপিসারে জানিয়ে দিলাম তার আর আমার কথা একটু রঙচঙ মিশিয়ে। এসব কথা শুনে কেউ আর তার দিকে অন্য নজরে তাকাত না। জুহিকে পাবার আগেই সে আমার হয়ে গেল। কল্পনায় তাকে নিয়ে লাল নীল বাতি জ্বালালে তো হবে না, বাস্তবে হওয়া চাই কিন্তু তার সাথে কথা বলতে ভয় পাই। কারন আমার প্যালপিটিশন না তার বিশাল দেহরক্ষী সদৃশ বান্ধবী রিনি। রিনির চেহারা দেখলেই ভয়ে আমার কলিজার পানি শুকিয়ে যেত। আজ পর্যন্ত সে পানি শুকিয়ে যাওয়ার কারন বের করতে পারি নি। জুহিকে বলতে না পারলেও শুরু করলাম না বলা কথাগুলো একটি ডায়েরীতে লেখা। প্রতিদিন ক্লাসে যাই, তার দিকে তাকিয়ে থাকি; সে কলেজ বাসে বাসায় যায়, আমি কেন্টিনের সামনে দাঁড়িয়ে তার চলে যাওয়া দেখি। বাস চলে গেলে আমি হোস্টেলে ফিরে আসি। রাতে টেবিলে পড়তে বসলে তার কথা ভেবে কারিকুরি শুরু করি। ডায়েরীতে কত কথা, কবিতা; কবিতার সাথে মিলিয়ে প্রচ্ছদ আঁকি। আঁকতে আঁকতে আর লেখতে লেখতে ডায়েরী প্রায় শেষ। এর মধ্যে ষান্মাসিক পরীক্ষা চলে আসে। অতি মনোযোগের সাথে পড়ালেখা করার কারনে চার বিষয়ে বিশাল আকারের ডাব্বা মারি।
ক্লাসে একদিন পদার্থের স্বপন স্যার দেরি করে আসায় তাকে আধঘন্টা বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখে। বেচারী কেঁদেটেদে অবস্থা খারাপ। তার কান্না দেখে হঠাত্ করে দেখি আমার গাল বেয়ে নোনা পানি পড়ছে। এত প্রেম তবুও আর বলা হয় না তাকে কিছুই। ষান্মাসিক পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে একদিন তার ব্যাগে ডায়েরী ঢুকানোর ফাজলামি করি যেন সে বাসায় গিয়ে ব্যাগ খুলে ডায়েরীটা পায়। কিন্তু সাহস আর সুযোগ হয়ে উঠেনি তার ব্যাগ পর্যন্ত গিয়ে ব্যাগের জিপার খুলতে। ব্যর্থ মনোরথে আরও মাসখানেক চলে গেল। একমাত্র জুহি ছাড়া ক্লাস আর হোস্টেলের প্রায় সবাই জেনে গেল আমার প্রেমসাগরে হাবুডুবু খাওয়ার কথা। তখন হোস্টেলে আমার দুই বন্ধু তানভীর আর শিশির মেয়ে পটানোর জ্ঞানের ভান্ডার নিয়ে দাঁড়াল আমার সামনে। তারা আমাকে কুবুদ্ধি দিতে লাগল কিভাবে ডায়েরীটা দিয়ে আমি জুহিকে না বলা কথাটুকু বলতে পারি।
একদিন হুট করে শরীরের রক্ত গরম হয়ে গেল। ধ্যাত শালা! বললে আজকেই বলব আর দেরি করা চলবে না। পরে যদি সে অন্য কারোর দিকে ঝুঁকে পড়ে। এরপরও দুদিন কেটে গেল জুহিকে আর বলার সুযোগ পাই না, ডায়েরী হাতে নিয়ে ঘুরি।
তৃতীয়দিন তাকে একা পেয়ে গেলাম কেন্টিনের আশেপাশে। সেদিন বুকে একটু সাহস পেলাম কারন তার দেহরক্ষী বান্ধবী রিনি ক্লাসে আসেনি। আমি বন্ধুবান্ধবের কাছ থেকে উত্সাহ নিয়ে বুকে ফু দিয়ে সাহসের সঞ্চার করে কেন্টিনের সামনে জুহিকে ডাক দেই। জুহি টোলপড়া গালে মিষ্টি হেসে আমার কাছে আসতেই আমি ডায়েরী এগিয়ে দিয়ে তাকে বলি, 'এটা তোমার জন্য'
'এটা দিয়ে আমি কি করব?'
ডায়েরী হাতে নিয়ে খানিকটা উল্টেপাল্টে দেখল।
'এটা তো তোমার জিনিস!'
'আমি তোমাকে গিফট করছি এই জন্য এটা তুমি নিবা' বলেই আমি দৌড় দিয়ে তার সামন থেকে পালিয়ে গেলাম। বন্ধুবান্ধবের কয়েকজন তখন পরামর্শ দিল, 'তুই এখান থেকে চলে যা। বলা যায় না তার সামনে এখানে থাকলে তোরে খারাপ ভাবতে পারে'।
আমি নাচতে নাচতে হোস্টেলে ফিরলাম।
পরেরদিন কলেজে যাওয়ার পরই হুলস্থুল কান্ড। জুহি গোল করে ঘিরে কিছু একটা বলছে মেয়েদেরকে আর ছেলেদের সবার আমার কাছে একই জিজ্ঞাসা, 'কিরে তুই নাকি জুহিকে প্রপোজ করছস আর সে রাজি?' তাদের সব প্রশ্নের উত্তরে মুচকি হাসি দিয়ে ক্লাসে ঢুকি একেবারে শুরুর আগে। গিয়ে বসি পিছনের দিকে মেয়েদের সারির কাছে যেন তাকে দেখা যায়। বার দুয়েক তার সাথে চোখে চোখ পড়ল। কয়েক সেকেন্ড তাকিয়েও ছিল।
তার পরের দিন ক্লাসে যাই। জুহির সাথে বারকয়েক দৃষ্টি বিনিময় হয়েছে। এরই মধ্যে এক ক্লাসের ফাঁকে বাইরে যাই তখন অন্য সেকশনের বন্ধুরা জিজ্ঞেস করল কতদূর কাহিনী। আমি হাত শূন্যে বারদুয়েক ডানে বামে নিয়ে ইশারা দিয়ে বললাম, 'যা দেখছি সব পজেটিভ।' টিফিনের বিরতিতে ক্লাসে বসে আছি তখন খবর পেলাম আমার বাবা মা এসেছেন। ছেলে হোস্টেলে থাকে, যোগাযোগ হয় না তাই দেখা করতে হুট করে তারা চলে আসেন। আমি ক্লাস থেকে বের হওয়ার সময় পুরো ক্লাসজুড়ে কয়েকজনের শোরগোল শুনি, 'তূর্য্যের আব্বা আম্মা আসছে তার বউ দেখার জন্যে।' যাবার আগে শেষবার দেখি জুহি বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে। দুয়েকজন অতি সাহসী হয়ে তার কানের কাছে গিয়ে বলল, 'এমনিতে তো ভদ্রতা চিনো না, শশুড় শাশুড়ির সামনে গেলে পা ধরে সালাম কইরো।'
বাবা মার সাথে দেখা করা শেষে ফিরে এলাম আবার কলেজ বিল্ডিংয়ে। সাথে আরেকটা বন্ধু। হাঁটতে হাঁটতে এপাশ থেকে ওপাশে ক্লাসের সামনে নজর দিচ্ছিলাম। ক্লাসের পিছনের দরজার সামনে দুই সেকশনের মেয়েদের জটলা। ক্লাসের আশেপাশে যেতেই আমার কাছে এগিয়ে এল শম্পা নামের এক মেয়ে। সে এসে বলল, 'জুহি তোমাকে কি যেন বলবে।' শম্পা চলে যাওয়ার সাথে সাথে জুহি এসে আমার সামনে হাজির।
'তুমি কক্ষনো আর আমাকে নিয়ে এসব লিখবে না, যদি লিখো তাহলে আমি ডাইরেক্ট প্রিন্সিপাল স্যারের কাছে বিচার দিব। তুমি এক্ষনি তোমার ডায়েরীটা নিয়ে যাবে।' এসব শুনে আমি নির্বাক তাকিয়ে থাকলাম তার দিকে। জো হুকুম জাহাপনা টাইপে তার পিছন পিছন সব মেয়ের জটলার মধ্যে ক্লাসে ঢুকলাম। সে তার ব্যাগ থেকে ডায়েরী বের করে 'নেও তোমার ডায়েরী' বলে ছুঁড়ে মারল ডায়েরীটা ক্লাসের অন্য প্রান্তে। এখন ভাবি কি দরকার ছিল এরকমভাবে অপমান করার। তখন আমি বেচারা মাথা নিচু করে সামনের দরজা দিয়ে ক্লাস থেকে বের হয়ে গেলাম। ক্লাসের মধ্যে হুড়োহুড়ি লেগে গেল দুই দলে ভাগ হয়ে। একদল ডায়েরী অনুসন্ধানে গেল, আসলেই তাতে কি লেখা আছে তা দেখতে। আরেকদল পুরোই হতবাক, তারা আমাকে ঘিরে জটলা তৈরী করল ব্যাপারটা বুঝার জন্যে। আমি অকালে প্রেম হারানোর বেদনায় মেঝেতে পা ছড়িয়ে বসলাম।
মজার কথা হলো আজ প্রায় চারপাঁচ বছর হয়ে গেছে। জুহির কথা পুরোই ভুলে গিয়েছিলাম। এই ডায়েরী ছুঁড়ে ফেলার কাহিনী রাতারাতি স্কুল ও কলেজময় ছড়িয়ে পড়ল। দেখা গেল আমি যাদেরকে চিনি না তারাও আমাকে চিনে এবং ডায়েরীর কাহিনী জানে। কলেজ জীবনের বাকী দেড় বছর আমি অপমানিত মুখ তুলে তাকাতে পারিনি। কোন মেয়ের সাথে ভয়েই কথা বলিনি। আমার কলেজের সুন্দর মূহুর্তগুলো নিমেশে উধাও হয়ে গেল। তবে দুয়েকটা সাহসী কাজ করেছিলাম। কলেজ ম্যাগাজিনে একটা সায়েন্স ফিকশন গল্প লিখলাম জুহিকে নিয়ে। আমার জীবনের প্রথম গল্প ঐটা। সায়েন্স ফিকশনের ভিতরে চরম বাজেভাবে যে প্রেমকাহিনী ঢুকানো যায় তা আমার ঐ গল্প পড়লে যে কেউ বুঝতে পারবে। গল্পের কাহিনীতে জুহি ও তার মামাত ভাইয়ের প্রেম কাহিনী দিয়ে এতই রস এনেছিলাম যে আটমাস পর ম্যাগাজিন বের হওয়ায় যখন সে গল্প দেখল আমার উপর ভীষণ ক্ষেপে গেল। 'পাইছে কি তূর্য্য আমারে' বলে হুংকারও দিলো। অথচ এর আগে জুহির একখানা পোট্রেট আমি এঁকে পুরো ক্লাসে দেখিয়েছিলাম। তখনও বলেছিল, 'পাইছে কি তূর্য্য আমারে।' যে দেহরক্ষী বান্ধবী রিনিকে ভয় পেতাম সেও আমাকে ডেকে বলল, 'তূর্য্য চমত্কার এঁকেছো। একেবারে আসল ছবির মতো।'
কলেজ জীবন শেষ জুহির সাথে আমার দেখাও শেষ। প্রায় বছরখানের পর জুহির বিয়ের আগে এক বন্ধু জানাল সে নাকি তার গৃহশিক্ষকের সাথে নবম শ্রেণী থেকে প্রেম করছে এবং তার সাথেই বিয়ে। আমি আকাশ থেকে পড়লাম, এই মেয়েও প্রেম করা চিনে তাহলে। আমি জুহির গায়ে হলুদের দিন তার বাসার সামনে খানিক সময় দাঁড়িয়ে ছিলাম। হাজারো বাতির আলোতে ঝলমল তার বাসা। ততদিনে আবেগ শুকিয়ে গেছে তবুও বুকের এক কোনে হালকা চাপ অনুভব করলাম।
সময় আসলে এভাবেই অতীতের উপর প্রলেপ সৃষ্টি করে দেয়। যে জুহির জন্যে কত পাগলামি করেছি তাকেও ভুলে গেলাম। জুহিকে না পাওয়ার পর অনেককেই আঁকড়ে ধরতে চেয়েছি আমার জীবনে কিন্তু কেন জানি না তারা সবাই বালির মতো মুঠো গলে বের হয়ে গেছে। হাত খুলে দেখি যখন একরাশ শূণ্যতা কাজ করে বুকে।
''তোর কাছ থেকে মুঠোভরা ভালোবাসা নিয়ে
দৌড়ে এসে দরজা বন্ধ করে
মুঠি খুলে দেখি ভালোবাসা নাই
আঙ্গুলের ফাঁক গলে মিলিয়ে গেছে সব;
ফাল্গুনের রোদে শুকাতে দেয়া ভালোবাসারাও
উবে যায় কর্পূরের মত,
বেঁয়ে পরে দু’হাতে
ভালোবাসা ধরা যায় না, ভালোবাসা ধরা যায় না।''
[কিছুকথাঃ 'নুসরাত আলী জুহি'কে উত্সর্গ করা হল। তাকে উত্সর্গ করা এটা তৃতীয় ও শেষ গল্প। জুহির কাছে ক্ষমাপ্রার্থী তার এতসব ঘটনা জনসম্মূখে প্রকাশ করে দেওয়ার জন্যে।
গল্পে যে কবিতাটা তা রিক (Real Demon) ভাইয়ের। রিক ভাইকে ধন্যবাদ।]
১২ ই জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:২৫
আকিব আরিয়ান বলেছেন: ২১ শে জুন, ২০১৩ রাত ৯:৫৯ এ কমেন্ট ছিল,
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে জুন, ২০১৩ সকাল ১১:২১
ইরফান আহমেদ বর্ষণ বলেছেন:

নাহ........... মাইয়া জাতি আসলেই খারাপ