নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাদা কালো দর্পণে আঁকাআঁকি

আকিব আরিয়ান

রাত্রির নির্জনতায় নিঃসঙ্গ কেঁদে কেঁদে, একদিন হয়তো তুই অজান্তেই মরে যাবি, তবুও তুই জানবি না পাষাণ এ বুকে কতটুকু ভালবাসা তোর জন্যে জমা রাখি।

আকিব আরিয়ান › বিস্তারিত পোস্টঃ

নীলের মাঝে লীন ভালবাসা

০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:০৬





চার দেয়ালের মাঝে বসে থেকে থেকে দুনিয়াটা ক্রমশ ছোট হয়ে আসছে লীনার। একটা সময় ছিল যখন দাপিয়ে বেড়াত পুরো ক্যাম্পাস জুড়ে। বন্ধু বান্ধবীদের আড্ডায় প্রাণবন্ত ছিল। ফুচকা চটপটি খাওয়া, ভীষণ ঠান্ডায় আইসক্রীম খাওয়া, রিকশায় করে বৃষ্টিতে ভেজা সবকিছুতেই আনন্দ ছিল তার। নীলয়ের চোখে চোখ রেখে পাড়ি দিত বহুদূরের পথ। ভালোবাসাবাসির প্রতিটা মূহুর্ত ছিল অসাধারণ। আর এখন সারাদিন রুমে বসে থাকে। ক্যাম্পাসে যাওয়া হয় না অনেক দিন। বন্ধুবান্ধবীর সাথে তেমন যোগাযোগই নেই। নীলয় এখনও ফোন দেয়। ফোন বাজতেই থাকে লীনা ধরে না। নীলয়কে কিছু বলার মত ভাষা তার নেই। আস্তে আস্তে পুরো দুনিয়াটা তার কাছে বিষাক্ত হয়ে উঠছে। কাউকে ভালো লাগে না, কিছুতেই মন বসে না। আগের মত গান শোনাও হয় না। টেডিবিয়ারটা অযতনে পড়ে থাকে চেয়ারের নিচে। সারাদিন লীনা ঘুমিয়েই কাটায়। বাসার কেউ তাকে ইদানীং তেমন ঘাটাচ্ছে না। সবাই যার যার কাজে ব্যস্ত। সবাই মনে করছে লীনার ভার্সিটি হয়তো বন্ধ তাই বাসায় সারাদিন ঘুমায়। গত রবিবার বিকেলে নীলয় এসে দাঁড়িয়েছিল রাস্তার ঐপাশে। লীনার জানালার দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়েছিল যদি লীনাকে একবার দেখা যায়। লীনা যখন দেখতে পেল তাকে ঠাস করে পর্দা সরিয়ে দিল। নীলয় হতাশ হয়ে আরও কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকল। মানুষ বদলে যায় সময়ের সাথে সাথে, কিন্তু লীনার হঠাত্‍ করেই এই বদলে যাওয়া নীলয় মেনে নিতে পারছে না। ভালবাসার মানুষটির অবহেলা সহ্য করার শক্তি কোন মানুষেরই নেই। নীলয় দিন দিন ভেঙ্গে পড়ছে। তার কি দোষ সে নিজেই বুঝতে পারছে না।







ভাসির্টিতে ভর্তি হওয়ার তিনচার মাস পর লীনা খেয়াল করল যে একটা ছেলে প্রায়ই তার আশেপাশে ঘুরঘুর করে। সোমা একদিন বলল ছেলেটা নাকি তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। লীনা তেমন একটা পাত্তা দিল না ছেলেটাকে। অনেক ছেলেই তো তার পিছনে ঘুর ঘুর করে, এটা তেমন কোন ব্যাপারই না। কিন্তু সে না চাইলেও খেয়াল করত ছেলেটা তার মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করছে। পহেলা বৈশাখে বান্ধবীদের নিয়ে ভার্সিটিতে মেলায় একটা ছোট্ট স্টল দিয়েছিল লীনা। পান্তাভাত আর ইলিশ মাছের। ছেলেটা সারাদিনে এগারো প্লেট পান্তা আর ইলিশ খেয়ে ফেলল। লীনা অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল ছেলেটার দিকে। আর কোন স্টলেও ছেলেটা যায় নি। বিল দিতে গিয়ে ছেলেটা বলল, 'এগারো প্লেটের দাম রাখেন।' লীনা চোখ না তুলেই জিজ্ঞেস করল, 'কয়জনের বিল?'



'জ্বী আমি একাই খেয়েছি।'



লীনা চট করে মাথা ঘুরে তার দিকে তাকাল। ছেলেটে চলে যাওয়ার পরে বান্ধবীরা অনেক ঠাট্টা মশকরা করল লীনার সাথে। ছেলেটা বাকী টাকা নিয়ে যায় নি তখন। লীনা এমনিতেই খুঁজছিল তাকে টাকা ফেরত দেওয়ার জন্যে। কিন্তু যখন জানতে পারল ছেলেটা এত পান্তাইলিশ খেয়ে শয্যাশায়ী তখন মুখ ফসকে হাসি বেরিয়ে আসল। কিন্তু পরক্ষণেই মনটা উদাস হয়ে গেল। বেচারা ভালবাসার কথা মুখ ফুটে বলতে না পেরে কতকিছুই না চেষ্টা করতেছে। সপ্তাহখানেক পরে ভার্সিটিতে ঢুকার পথে ছেলেটাকে পেয়ে গেল লীনা। পথ আটকাল সে, 'এই যে মিস্টার টাকা যে ফেরত নিতে হয় তা কি জানেন না?'



'কিসের টাকা?'



'ও মা ভুলে গেলেন নাকি? সেদিনের পান্তা ইলিশ খেয়ে বাকী টাকাটা তো নিলেন না। এই টাকাটা থাকলে হয়তো আরও ভাল চিকিত্‍সা করাতে পারতেন পেটের।'



ছেলেটার বিব্রতমুখ দেখে বেশ মজা পেল লীনা। টাকা হাতে নিয়ে চলে যাচ্ছিল ছেলেটা, ডাক দিল আবার লীনা, 'এই যে শুনুন'



ঘুরে দাঁড়াল ছেলেটা।



'আপনার নামটা তো জানা হলো না'



'নীলয়'



'আপনি কি আমাকে কিছু বলতে চাইছেন? বেশ কিছুদিন ধরে লক্ষ্য করছি আমার পিছুপিছু ঘুরঘুর করছেন।'



'জ্বী না। আপনাকে বলার কিছুই আমার নাই। ও হ্যাঁ আপনার পিছুপিছু আমি ঘুরি নাই। কথা হলো এ ছোট ভার্সিটিতে যেদিকেই যাই না কেন আপনার সাথে আমার দেখা হয়ে যায়।'



বলেই হনহন করে চলে গেল নীলয়। লীনা চোখ বড়বড় করে তার গমনপথের দিকে তাকিয়ে রইল।







চিরকুট পেয়ে অনেকক্ষণ ভাবতে লাগল কে হতে পারে? পাগলটা কে? হঠাত্‍ মনে পড়ল নীলয়ের কথা। ভার্সিটিতে একমাত্র এই পাগলের দ্বারাই সব সম্ভব। ক্লাস চলাকালীন সময়ে বাইরে থেকে একটা ঢিল এসে পড়ল লীনার মুখে। বাসিত স্যারের চোখ এড়ালো না ব্যাপারটা। তিনি কিঞ্চিত রাগতস্বরে লীনাকে ডেকে হাতে নিয়ে চিরকুটটা পড়লেন।



'অপ্সরীরা খেলা করে সাদা মেঘেদের ডানায়,



কাকভেজা হয়ে প্রথম দর্শন কোন এক বরষায়।'



চিরকুট পড়ে তার ভ্রুদুটো কুঞ্চিত করলেন। চশমার ফাঁক দিয়ে লীনা তা দেখতে পেল। স্যার তাকে ক্লাস থেকে বের করে দিলেন এবং ধমকের সাথে বলে দিলেন, 'আমার ক্লাসে বসে থাকাকালীন অবস্থায় এসব চলবে না। বাইরে গিয়ে করো। যাও।'



লীনা কোন উচ্চবাচ্য না করে ক্লাস থেকে বের হয়ে গেল। তার এখন ইচ্ছে করছে নীলয়কে সামনে পেলে কষে দুটো থাপ্পড় লাগাবে। সাহস নাই আবার প্রেম করতে আসে। ক্যাম্পাসে ঘুরে না পেয়ে কেন্টিনে উঁকি দিল লীনা। দেখল আরও দুই বন্ধুকে নিয়ে কফি খাচ্ছে নীলয়। দেখে মেজাজটা পুরো চড়ে গেল তার। ঝট করে চিরকুটটা টেবিলে ফেলে বলল, 'এসবের মানে কী?'



নীলয় হা করে তাকিয়ে রইল।



'শুধু আপনার জন্য আমাকে স্যার আজকে ক্লাস থেকে বের করে দিল। আপনাকে যে আমার কি করতে মন চাইছে। সাহস নাই মিয়া আবার প্রেম করতে চান।'



নীলয়ের বন্ধুরা কিছু না বলে চুপ থেকে মজা লুটছে। ইতিমধ্যে আশেপাশের সবার দৃষ্টি লীনার দিকে। নীলয় আস্তে করে উঠে লীনার চোখে চোখ রেখে বলল, 'আমি তোমাকে ভালবাসি'



সাথে সাথে হাসির রোল বয়ে গেল পুরো কেন্টিন জুড়ে। নীলয়ের বন্ধু কোথা থেকে একটা রজনীগন্ধার স্টিক দিয়ে বলল, 'গাধা ফুল দিতে হয় জানছ না?'



নীলয়ের হাত থেকে ফুল নিয়ে লীনা মারতে লাগল নীলয়কে। দুটো আঘাতেই স্টিক ভেঙ্গে গেল। সবাই হাসতে লাগল আবার। নীলয় লজ্জায় মাথা নুইয়ে রইল। লীনা ফোঁসফোঁস করে কেঁদে কেন্টিন থেকে বেরিয়ে গেল।







বেঘোরে ঘুমিয়ে ছিল লীনা। হঠাত্‍ করে চমকে উঠল কারো হাতের শীতল স্পর্শে। চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে সোমা বসে আছে তার মাথার পাশে।



'কিরে তোর শরীর এত গরম কেন?' সোমার গলায় উত্‍কন্ঠা।



'নারে জ্বরটর কিছু না এমনিতেই'



'তোর হয়েছেটা কি? ভার্সিটিতে আসস না কেন?'



লীনা নিষ্পলক চোখে তাকিয়ে রইল সোমার দিকে।



সোমার কাছ থেকেই শুনল নীলয় নাকি ইদানীং খুব ছন্নছাড়া জীবনযাপন করছে। তাকে দেখলেই নাকি বুঝা যায় কিছু একটা হয়েছে নীলয়ের।



এসব শুনে লীনার কষ্ট লাগল কিন্তু তার করার কিছুই নেই। 'শোন সোমা নীলয়কে বলিস যেন আমাকে ভুলে যায়। সে আমাকে কোনদিনও পাবে না। তার যোগ্যতাই নাই।' 'এসব কি বলিস রে।' সোমা অবাক না হয়ে পারল না। যে নীলয়ের সাথে সম্পর্ক হওয়ার পর লীনাকে খুঁজেই পাওয়া যেত আড্ডায়। সারাদিন থাকত নীলয়ের সাথে। কত শত স্বপ্নের কথা শুনিয়েছিল সোমাকে নীলয়কে নিয়ে কিন্তু হঠাত্‍ করে কি এমন হলো যে কারনে নীলয়ের কাছ থেকে এখন দূরে দূরে থাকছে লীনা। সোমার মাথায় কিছুই ঢুকল না। সোমা আবার জিজ্ঞেস করল, 'কি হয়েছে তোর বল না আমাকে?' 'দোস্ত চল একটা জায়গায় তোকে নিয়ে যাব। যাবি?' 'কোথায়?' 'আছে। অনেকদিন ধরে ঘর থেকে বের হই না। আজ তোকে নিয়ে একটু ঘুরতে বেরুব। এই যা।'







মাসদেড়েক আগের কথা। খালাতো বোনের বিয়ে খেতে লীনা ও তার বাসার সবাই চাঁদপুরে যায়। গায়ে হলুদের দিন বিকেলে গিয়ে তারা পৌঁছে। অনেক দিন পর খালার বাসায় গিয়ে অনেক ভালো লাগে লীনার। খালার বাসায় আসার পর নীলয়কে ফোন করে জানায়। অনেক খুনসুঁটি করে ফোনে। গায়ে হলুদের সময় বাকী সব মেয়েদের সাথে শখ করে লীনা হলুদ শাড়ি পড়ে। মাথায় গাঁদা ফুল দিয়ে খোঁপাও বাঁধে। গায়ে হলুদ ও মেহেদী সন্ধ্যা শেষ হতে হতে অনেক রাত হয়ে যায়। সারাদিন জার্নি করে এসে ক্লান্তিতে লীনার ঘুম চলে আসে। সারা বাসায় এত মানুষ যে কোথায় ঘুমাবে বুঝতে পারে না। খালার বড় মেয়ে শীলার কথামতো ভিতরের এক রুমে কাপড় পাল্টে গিয়ে শুয়ে পড়ে সে। তখনও অনুষ্ঠান শেষ হয় নি। ঘুমের মধ্যে টের পেল তার উরুসন্ধির ফাঁকে শক্তমতো কি যেন একটা জিনিস আটকে আছে। তার সালোয়ার হাঁটু পর্যন্ত নামানো। হুট করে তার ঘুম ভেঙ্গে যায়। পাশ ফিরে দেখতে চেষ্টা করে কিন্তু নড়তে পারে না। তার কোমর তলপেট ব্যাথায় অবশ হয়ে যাচ্ছে। টের পেল কি যেন উরু গড়িয়ে পড়ছে। হাত দিয়ে ছাড়াতে চেষ্টা করল। হাতে লাগল রক্ত, ব্যাথায় চোখ অন্ধকার হয়ে আসছে। চিত্‍কার দেওয়ারও শক্তি পাচ্ছিল না। লীনার নড়াচড়ার কারনে তার পাশে ঘুমানো পুরুষটির জেগে উঠলেন। দুজন দুজনের দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল। 'লীনা তুমি!! ওহ স্যরি। আমি আসলে বুঝতে পারি নি। আমি মনে করেছি শায়লা।'



'দুলাভাই আপনি এটা কি করলেন?' মিনমিন করে বলল লীনা।

'বিশ্বাস করো লীনা আমি ইচ্ছে করে করিনি। এটা জাস্ট একটা দূর্ঘটনা। বিবাহিত মানুষ ঘুমের ঘোরে তোমাকে আমার স্ত্রী মনে করেছিলাম।'

লীনা ব্যাথা আর সম্ভ্রম হারানোর দুঃখে নিঃশব্দে কাঁদতে লাগল। ভয় পেতে লাগল রুমে ঘুমানো বাকীরা যদি টের পেয়ে যায়। 'লীনা দেখো আমি বুঝতে পারি নি এটা যে তুমি। এখন কি করব?'

লীনা কিছু না বলে নিঃশব্দে কাঁদতে লাগল। 'দেখো দূর্ঘটনা যখন ঘটেই গেছে তখন কেঁদে আর কি লাভ? এর চেয়ে অর্ধসমাপ্ত কাজটা শেষ করি।'

লীনা কিছুই বলল না।







এক বিরাট দালানের সামনে রিকশা থামাল লীনা। রিকশা থেকে নেমে সোমা জিজ্ঞেস করল, 'কোথায় নিয়ে এসেছিস?' 'রিকশায় তোকে এতক্ষণ কি বললাম? এটা সেই দুলাভাইয়ের অফিস।' কাচ ঘেরা কক্ষে আরিফুর রহমান ব্যস্ত বিভিন্ন ফাইল নিয়ে। স্লাইডিং ডোরে টান পড়তেই চোখ তুলে তাকালেন, লীনাকে দেখে অবাক হলেন। 'আরে লীনা তুমি? হঠাত্‍ এই অসময়ে।'

চেয়ারে বসতে বসতে লীনা বলল, 'দুলাভাই আপনার সাথে আমার কিছু জরুরী কথা আছে।'

'এখানেই বলবে?'

'হুম।' হাতের ফাইলপত্র গুছিয়ে রেখে বললেন,

'হুম বলো কি বলবে?'

'দুলাভাই আয়্যাম প্রেগনেন্ট!'

'মানে?' আরিফের চোয়াল ঝুলে পড়ল। মুখ হা করে তাকিয়ে আছে লীনার দিকে।

সোমা ঘাড় ঘুরিয়ে বলল, 'তুই প্রেগন্যান্ট! আগে বললি না কেন?'

'আমার পেটে যে বাচ্চাটা আছে তার বাবা হচ্ছেন আপনি।'

'হোয়াদ্দ্যা হেল! আমি বাবা হতে যাব কেন?'

'বিয়ের আগের দিন রাতের ঘটনায় আপনার স্পার্ম থেকেই আমি কনসিভ করেছি।'

'কার সাথে না কার সাথে করে পেট বাঁধিয়েছো এখন আসছো আমাকে ফাঁসাতে। ইউ প্রস্টিটিউট। তোমাদের জন্যে দেশে এত ব্রোথেল আছে তাতে যাও না কেন? নগদে টাকা পাবা। আমার মতো লোক ফাঁসানোর দরকার পড়বে না।'

'মুখ সামলে কথা বলুন। আপনি আমাকে নষ্ট করেছেন।' আরিফের দৃঢ়তায় হতবাক, দিশেহারা লীনা কান্না করাটাও ভুলে গেছে। 'আই সেইড দ্যাট ওয়াজ এন এক্সিডেন্ট নাথিং এলস। তোমার যদি এবরশন করাতে টাকা লাগে তো আমি দিতে পারি। এছাড়া কোন হেল্প তো অবশ্যই না। ইটস্ টোটালি ইম্পসিবল টু টেক ফাদারহুড।'

'দ্যাটস এনাফ দুলাভাই। থ্যাংকস। চল সোমা' বলে গটগট করে বেরিয়ে এল লীনা। অফিস থেকে বেরিয়ে রাস্তায় এসে আর কান্না সামলাতে পারছে না লীনা। ঝরঝর করে কেঁদে যাচ্ছে সে, সোমা যে কিছু করবে তাও বুঝতে পারছে না।









কয়েকদিন পরের ঘটনা। বাথরুম থেকে বমি করে মাত্র বের হয়েছে লীনা। তার মা বমির আওয়াজ পেয়ে রুমে ঢুকলেন। ততক্ষণে তিনি বুঝে গেলেন যা বুঝার। ঠাস করে একটা চড় বসালেন লীনার গালে। 'অলক্ষী মরতে পারলি না? এই মুখ দেখাস কেমন করে মানুষরে।' সন্ধ্যার পর থেকে মাথা ঝিমঝিম করতেছে। লীনার মা তার বাবা বাসায় আসার পর মেয়ের কীর্তিকলাপ বলেছেন। লীনার বাবা পুরোপুরি নিশ্চুপ, কিছুই বলেন নি তিনি। শুধু কাকে যেন ফোন দিলেন লীনা ঠিক বুঝতে পারল না।



লীনা গুণে গুণে সাতচল্লিশটা ট্যাবলেট খুঁজে পেয়েছে ঘরে। সে ঠিক করেছে এ মুখ আর কাউকে দেখাবে না। কিছুক্ষণ পর ড্রইংরুমে কয়েকজনের আলাপ আলোচনার শব্দ পেল। এর মধ্যে নীলয় আর সোমার কন্ঠও সে ধরতে পারল। তারা ঠিক কি নিয়ে আলাপ করছে ধরতে পারল না লীনা। নিজেকে তার উদভ্রান্তের মত মনে হচ্ছে। অনুভূতিশূণ্য মনে হচ্ছে।



লীনার বাবা মায়ের সামনে নীলয় দোষ স্বীকার করে নিল। লীনার মা রাগে গজগজ করতে লাগলেন আর লীনার বাবা বললেন, 'এই সমস্যার সমাধান কি এখন? তুমি কি সমাধান দিবে?'



'আপনারা যদি অনুমতি দেন তবে আমি আজ রাতেই লীনাকে বিয়ে করতে পারি।' লীনার বাবা নীলয়ের দিকে তাকালেন। নীলয় এগিয়ে যাচ্ছে লীনার রুমের দিকে। লীনা কয়েকটা ট্যাবলেট গুলিয়েছে কোকের মধ্যে। সে জানে না ড্রইংরুমে কি কথাবার্তা হয়েছে কার সাথে কাদের। এদিকে নীলয় সবকিছু ভুলে নতুন সূচনার আনন্দে বিভোর। নীলয় দরজার সামনে দাঁড়িয়ে খটখট করে আওয়াজ করল।



মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১:১২

অপ্রচলিত বলেছেন: মন্তব্য নেই কেন? দারুণ লিখেছেন। খুব ভালো লাগলো গল্পটি।
১ম ভালো লাগা আর অনেকগুলো প্লাসের শুভেচ্ছা
+++++++++++++++++++++++++++++++++++++

ভালো থাকুন নিরন্তর।

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১০:০৬

আকিব আরিয়ান বলেছেন: :) ধন্যবাদ। আমার ব্লগ এমনিতে খুব কম লোকে পড়ে, কমেন্টটাও খুবই দুর্লভ ব্যাপার :D

২| ২০ শে মে, ২০১৪ ভোর ৫:১১

অঘটনঘটনপটীয়সী বলেছেন: আপনি নাকি লিখতে পারেন না??? এই তার নমুনা!!!

২০ শে মে, ২০১৪ দুপুর ১:৩২

আকিব আরিয়ান বলেছেন: লেখা হয় নি তো লল

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.