![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সাহিত্যে ব্যাপক আগ্রহ, আমি কবিতা পড়তে (কদাচিৎ লিখতেও) পছন্দ করি। ইতিহাস আমাকে আলোড়িত করে... আর রাজনীতি আমাকে দর্শন শেখায়।
আগে পড়ে নিন ইসলামে নারী নেতৃত্ব (পর্ব-০১)
আগের পর্বে হাদীসের রেফারেন্স দিয়েছিলাম নারী নেতৃত্ব নিয়ে ইসলাম কি বলে তা সরাসরি উপস্থাপন করতে। এই পর্বে কিছুটা আলোচনার প্রয়োজন বোধ করছি। আগেও বলেছি গঠনমূলক আলোচনাকে ইসলাম সর্বদা উৎসাহ দেয়। আলোচনার প্রসঙ্গে এসে কয়েকটি ভিন্নঘটনা/ব্যাপার উত্থাপন করবো যা আমাদের অনেকাংশে আলোচনায় সাহায্য করবে।
হুদায়বিয়ার সন্ধি দিয়েই শুরু করছি।
৬ষ্ঠ হিজরিতে রাসূল(সাঃ) ৭০০ জন উমরাসঙ্গী আর ৭০টি উট নিয়ে যুল্কাদাহ মাসে উমরা পালনের উদ্দেশ্যে মক্কা অভিমুখে রওনা হলেন।এরপর টানা কয়েকদিনে কুরাইশদের আক্রমণাত্মক মনোভাব এবং কোনভাবেই রাসূল(সাঃ) এবং তাঁর সফরসঙ্গীদের মক্কায় প্রবেশ না করতে দেয়ার ফলশ্রুতিতে আল্লাহ্র নির্দেশে রাসূল(সাঃ) কুরাইশদের সাথে চুক্তিতে আবদ্ধ হোন।
কুরাইশদের প্রতিনিধি ছিল সুহাইল ইবনে আমর। তাকে এমন নির্দেশনা দিয়ে পাঠানো হয়েছিল যে মুহাম্মদ (সাঃ) এর সাথে আপোষ করতে এবং এই আপোষের একমাত্র লক্ষ্য হবে তিনি যে অবশ্যই এ বছর মক্কায় প্রবেশ না করতে পারেন এবং আরবরাও যাতে বলতে না পারে যে মুহাম্মদ (সাঃ) কুরাইশদের উপর বলপ্রয়োগে মক্কায় প্রবেশ করেছেন।
সন্ধি চুক্তির সিদ্ধান্ত পাকাপাকি হয়ে লিখিত রূপ নিতে বাকী, এই সময়ে উমর(রাঃ) আবু বকর(রাঃ) এর নিকটে ছুটে গিয়ে বললেন, “হে আবু বকর, তিনি কি আল্লাহ্র রাসূল নন?” আবু বকর(রাঃ) বললেন,“অবশ্যই”। “আমরা কি মুসলমান নই?” “অবশ্যই”। “কুরাইশরা কি মুশ্রিক নয়?” “হ্যাঁ”। উমর এবার বললেন, “তাহলে কিসের জন্য আমরা আমাদের দ্বীনের ব্যাপারে এভাবে নতিস্বীকার করতে যাচ্ছি?” জবাবে আবুবকর(রাঃ) বললেন, “উমার, তাঁর আনুগত্য কর। আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে মুহাম্মদ(সাঃ) আল্লাহ্র রাসূল।” উমর(রাঃ) বললেন, “আমিও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে তিনি আল্লাহ্র রাসূল।”
তারপর তিনি রাসূল(সাঃ) এর কাছে এসে বললেন,“হে আল্লাহ্র রাসূল, আপনি কি আল্লাহ্র রাসূল নন?” তিনি বললেন, “হ্যাঁ”। “আমরা কি মুসলমান নই?”। “হ্যাঁ”।
“ওরা কি মুশ্রিক নয়?”। “হ্যাঁ”। উমর(রাঃ) আবারো বললেন যে, “ তাহলে কি কারণে আমরা আমাদের দ্বীনের প্রশ্নে এই অবমাননা বরদাশ্ত করতে যাচ্ছি?” রাসূল(সাঃ) বললেন, “আমি আল্লাহ্র বান্দা এবং রাসূল। তাঁর নির্দেশে আমি কখনো লঙ্ঘন করবো না। আর তিনি আমাকে কখনো বিপথগামী করবেন না।”
পরবর্তী কালে উমর(রাঃ) তাঁর এহেন প্রশ্নের জন্য অনুতপ্ত ছিলেন।সেটা বিস্তারিত এখানে উল্লেখ করলাম নাহ।
কুরাইশদের প্রতিনিধি সুহাইল ইবনে আমর আর এই সন্ধি পত্রের লেখক ছিলেন হযরত আলী(রাঃ), রাসূল(সাঃ) আলী(রাঃ)কে বললেন “লেখো,বিস্মিল্লাহির রাহমানির রাহিম।” সুহাইল বলল, “এটা আমার অজানা কথা। তুমি বরং লেখ, “বিস্মিকা আল্লাহুম্মা (হে আল্লাহ্, তোমার নামে)।” রাসূল(সাঃ) এর নির্দেশে আলী(রাঃ) তাই ই লিখলেন।
অতঃপর রাসূল(সাঃ) বললেন, “লিখ, আল্লাহ্র রাসূল(সাঃ) সুহাইল ইবনে আমরের সাথে নিম্নলিখিত মর্মে সন্ধি চুক্তিতে আবদ্ধ হচ্ছেন।” একথা বলার সঙ্গে সঙ্গে সুহাইল ইবনে আমর বলে উঠলো, “আমি যদি তোমাকে আল্লাহ্র রাসূল বলে মানতাম তাহলে তো তোমার সাথে যুদ্ধ বিগ্রহে লিপ্ত হতাম না। শুধু তোমার নাম ও পিতার নাম লিখ।” ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় এ পর্যায়ে আলী(রাঃ) প্রচন্ড ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন এবং এহেন কিছু লিখতে অস্বীকৃতি লিখেন। তখন রাসূল(সাঃ) এর নির্দেশক্রমে তিনি আবার লিখতে বসেন। রাসূল(সাঃ) বলেন, “বেশ, তাই লেখ। আবদুল্লাহর পুত্র মুহাম্মদ নিম্নলিখিত মর্মে আমরের পুত্র সুহাইলের সাথে সন্ধি চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছেন.............................................”
এই চুক্তি সাহাবায়ে কেরামগণের কাছে তাতক্ষণিকভাবেই চরম অপমানজনক মনে হয়েছিল এবং আপাদত দৃষ্টিতে ইসলামের জন্য ও চরম অপমানজনক বলেই মনে হয়। অথচ এই চুক্তিকে ঐতিহাসিকবৃন্দ দেখছেন “ইসলামের সবচেয়ে বড় বিজয়” হিসেবে।
যুহরী বলেন যে, “পূর্বে ইসলামের যতগুলো বিজয় অর্জিত হয়েছে তার মধ্যে এটিই (হুদায়বিয়ার সন্ধি) ছিল সবচেয়ে বড় বিজয়।”
যুহরীর এ উক্তির পক্ষে প্রমাণ এই যে, রাসূল(সাঃ) হুদায়বিয়ায় গিয়েছিলেন ১৪০০ মুসলমানকে নিয়ে। এর মাত্র ২ বছর পরে তিনি যখন মক্কা বিজয় করেন তখন তাঁর সাথে ছিল ১০,০০০ মুসলমান। সুবহানাল্লাহ।
চুক্তি সম্পাদন শেষে রাসূল(সাঃ) যখন মদীনা অভিমুখে রওনা হলেন, তখন সূরা আল ফাতহ নাজিল হলোঃ
“হে নবী, আমি তোমাদের জন্য সুস্পষ্ট বিজয়ের উদ্বোধন করেছি যেন আল্লাহ্ তোমার আগের ও পেছনের সকল গুনাহ মাফ করে দেন, তোমার উপর তাঁর নিয়ামত পূর্ণ করেন এবং তোমাকে নির্ভুল পথে পরিচালিত করেন।”
আল্লাহ্ আরও বলেন যে, “আল্লাহ্ তাঁর রাসূলের স্বপ্নকে সত্যে পরিণত করেছেন। তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন যে তিনি শীগ্রই নিরাপদে ও নির্ভয়ে মক্কায় প্রবেশ করবেন। আল্লাহ্র ইচ্ছায় তোমরা অবশ্যই মসজিদুল হারামে নিরাপদে মাথার চুল মুন্ডিয়ে ও ছেটে নির্ভীকচিত্তে প্রবেশ করবে। সে (আল্লাহ্র রাসূল) সেই জিনিস অবগত হয়েছে যা তোমরা অবগত হওনি। ঐ ঘটনার (হুদায়বিয়া সন্ধি) পরেই নির্ধারিত রেখেছেন আসন্ন বিজয়।”
..........................................
আশা করেছিলাম ২য় পর্বেই পরে ভেবেছিলাম ৩য় পর্বেই পুরো আলোচনা শেষ করবো কিন্তু কলেবর বৃদ্ধির কারণে সম্ভব হচ্ছেনা।
৪র্থ পর্বে ইন শা আল্লাহ্ ইতি টানবোই।
বাকি পর্ব গুলোঃ
ইসলামে নারী নেতৃত্ব (পর্ব-০১)
ইসলামে নারী নেতৃত্ব (পর্ব-০৩)
ইসলামে নারী নেতৃত্ব (শেষ পর্ব)
২১ শে মার্চ, ২০১৩ ভোর ৪:০৭
নীল_সুপ্ত বলেছেন: ৩য় পর্বে শেষ করতে চাইলেও শেষ করতে পারিনি বিধায় দুঃখিত, আশা করি ৩য় এবং শেষ পর্ব পড়বেন
ইসলামে নারী নেতৃত্ব (শেষ পর্ব)
২| ২২ শে মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৩:৫২
ডি মুন বলেছেন: ধন্যবাদ
২৬ শে মার্চ, ২০১৩ ভোর ৪:৫৭
নীল_সুপ্ত বলেছেন: আপনাকেও ধন্যবাদ ।
©somewhere in net ltd.
১|
২০ শে মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৩:১০
ডি মুন বলেছেন: তৃতীয় পর্বের অপেক্ষায় রইলাম,