নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি খুব সহজ এবং তার চেয়েও বেশী সাধারন একজন মানুষ । আইটি প্রফেশনাল হিসেবে কাজ করছি। টুকটাক ছাইপাশ কিছু লেখালেখির অভ্যাস আছে। মানুষকে ভালবাসি। বই সঙ্গে থাকলে আমার আর কিছু না হলেও হয়। ভালো লাগে ঘুরে বেড়াতে। ভালবাসি প্রকৃতি; অবারিত সবুজ প্রান্তর। বর্ষায় থৈ থৈ পানিতে দুকুল উপচেপরা নদী আমাকে টানে খুব। ব্যাক্তিগতভাবে বাউল, সাধক, সাধুদের প্রতি আমার দুর্বলতা আছে। তাই নামের শেষে সাধু। এই নামেই আমি লেখালেখি করি। আমার ব্লগে আসার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। শুভকামনা রইলো। ভালো থাকুন সবসময়। শুভ ব্লগিং। ই-মেইলঃ [email protected]
পাশেই স্ট্যান্ড করে সাইকেলটি দেখিয়ে মাঈনুল আমাকে জিজ্ঞেস করলো,
কাকা তুমার সাইকেল?
নাহ কাকা। এটা আমার না।
আমি চালাই?
চালাও।
তার পক্ষে এটায় উঠা সম্ভব নাহ। কিন্তু আগ্রহের অভাব নেই।
সে বেল বাজানোর চেষ্টা করলো।
চেন ঘুরালো।
ছোটদের কাছে সাইকেল বিস্ময়, আনন্দের নাম।
আমি যখন খুব ছোট তখনো সাইকেল নিয়ে আমার ব্যাপক উত্তেজনা কাজ করতো। মনে আছে আমরা যখন আজিমপুরে থাকতাম, আজ থেকে ৩৫ বছর আগের কথা
তখন ঘণ্টা হিসেবে ভাড়া নিয়ে সাইকেল চালিয়েছি।
আট আনা, এক টাকায় অনেকক্ষণ সাইকেল চালানো যেতো। সারা দুপুর টো টো।
সেই ঢাকা
আহা আমাদের সেই সোনালী শৈশব হারিয়ে গেছে।
আজিমপুর লিটল এনজেলস স্কুলের কথা।
কবির নাম কি লিখছোস? পেছন থেকে আমার সহপাঠীর ফিসফিস কণ্ঠে জানতে চাওয়া।
আমি তখন ক্লাস ফাইভে পড়ি। স্কুলের পরীক্ষা চলছে আমাদের। আমিও চুপচুপ করে বললাম, কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর!
সে কি বুঝলো কে জানে লিখতে গিয়ে লিখলো,
'কবি গরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর'!!
পরে তার এই লেখা ক্লাসের সবাইকে পড়ে শোনানো হলো। ক্লাসে হাসাহাসি। আমাদের রাগী আপা পর্যন্ত হাসছেন।
আমার সহপাঠীকে কানে ধরে বেঞ্চিতে দাঁড় করিয়ে রাখা হলো। শেষে সে জানালো সে আমার খাতা দেখে লিখেছে।
অথচ আমার খাতায় সঠিকটাই লেখা ছিল। নকল নিয়ে এই হচ্ছে আমার শৈশব স্মৃতি।
পরে পুরো বছর সবাই তাকে ক্ষেপাতো
"কবি গরু" বলে!
১৯৮৭ সনে আমি যখন নাইনে পড়ি তখন পরীক্ষার আগের রাতে তানিয়া ফোন করতো, মাসুদ
শোন, তুই কিন্তু আমার সামনের বেঞ্চে বসবি।
ক্যান?
আমি বুঝেও না বোঝার ভান করতাম। সে আমাকে নানাভাবে পটাতে চেষ্টা কিরে যেতো। একসময় আমি রাজী হতাম বসতে।
এই অনুরোধের কারণ ছিল সে যাতে পরীক্ষার সময় আরাম করে আমার খাতা দেখে লিখতে পারে।
এমন ফোন পরীক্ষার আগের রাতে আরো বেশ কয়েকজনই করতো। আমাদের শৈশবে এসবকে পাপ, করাই যাবে না এমন মনে হতো না।
এগুলো শৈশব কৈশোরের সহজাত অভ্যাস মনে হয়েছিল।
আমরা উত্তেজনা নিয়ে এসব করেছি।
ক্লাস টেনে রূপক খুব আনন্দ নিয়ে বলতো, মাসুদের এমন বাজে হাতের লেখা
অথচ আমি দুই তিন বেঞ্চ পেছন হতে দেখেও ঠিকঠাক বুঝতে পারি।
দূরে বসেও নকল করতে পারে বলে তার সেকি উচ্ছ্বাস!!
এই উচ্ছ্বাস ছিল খুশী আর আনন্দের।
অপাপবিদ্ধ।
(রূপকের কথা অনেকদিন পর লিখলাম। আমার স্কুলের এই বন্ধুটি আমাদের মাঝে নেই।
একটি সড়ক দুর্ঘটনায় দীর্ঘদিন আগেই আমাদের ছেড়ে চলে গেছে।)
এসএসসির সময়
স্যারের চোখ ফাঁকি দিয়ে আমি যাকে কারিগরি অংকন দেখিয়ে দিয়েছিলাম সে লেটার পেয়েছিল
অথচ আমি ৭৮।
খারাপ লাগেনি। বরং আনন্দে মেতেছি। আমার একটু খানি সহায়তায় যে বন্ধুটি লেটার মার্কস পেয়েছিল তাতে আমি অনেক পাপ করে ফেলেছি!!
তার জন্য আমার বা মাকে ডেকে স্কুল থেকে টিসি দেবে বা এমন অপমান করবে- এসব আমাদের সময় কল্পনাতেও আসেনি। আমরা যে খারাপ স্কুলে পড়েছি তাও নয়। তখন সে সময়ে সেই স্কুলগুলো ঢাকার সেরা স্কুলের তালিকায় ছিল। অভিজাত স্কুলই ছিল।
তবু পরিবেশ
পারিপার্শ্বিকতা এমন সহজ সাধারণ ছিল।
আমরাও ছিলাম অন্যরকম।
শিক্ষক শিক্ষিকারা ছিলেন আপন।
কাছের জন।
১৯ শে মে, ২০২৩ রাত ১১:০৯
নীলসাধু বলেছেন: আন্তরিক ধন্যবাদ আহমেদ জী এস ভাই।
আশা করছি কুশলে আছেন।
কোন ভাবনা চিন্তা নেই। অনাবিল আনন্দের দিন ছিল সেইসব দিন।
সবার জীবনেই সেই সময়টা অফুরান অনন্দের।
ভালো থাকবেন। সতত শুভকামনা।
২| ২০ শে মে, ২০২৩ রাত ১২:০৭
কাছের-মানুষ বলেছেন: অনেকটা নষ্টালজিক হলাম।
আমার নিজের কোন সাইকেল ছিল না, তবে ভাড়া নিয়ে সাইকেল চালানো ছিল আমার নেশার মত, মনে আছে আধা ঘন্টা ৫ টাকা এবং এক ঘন্টা ১০ টাকা দিয়ে সাইকেল চালাতাম। স্কুল ছুটির পর দৌড়ে যেতাম সাইকেল চালাতে।
একটি ঘটনা মনে পরল, আমার এক চাচাতো ভাই কে অপরিচিত এক ছেলে এসে ভাগিনা ডাকল এবং অনুরোধ করল সাইকেল ভাড়া করে দিতে। আমার চাচাতো ভাই সাইকেল চালানোর লোভে নিজে দায়িত্ব নিয়ে সাইকেল ভাড়া করে দিল, সেই কথিত মামা সাইকেল নিয়ে হয়ে গেল গায়েব, সাইকেল মালিক ধরল আমার চাচাতো ভাইকে! এলাকায় এই ঘটনা তখন ছিল সবার মুখে মুখে!
আগে নকল করে একজনেরটা আরেকজন দেখে লেখা ছিল খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার!
০৫ ই জুন, ২০২৩ দুপুর ১:০২
নীলসাধু বলেছেন: আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন।
আগে সাইকেল ভাড়ার বিষয়টা ছিল স্বাভাবিক। আমরা অনেকে চালিয়েছি। আপনার চাচাতো ভাইয়ের কথা শুনে মজা পেলাম।
আর পরীক্ষায় টুকটাক দেখাদখি ছিল নির্মোহ সুন্দর। জীবন বা পারিপার্শ্বিকতা সব্বই ছিল ভিন্ন। সেই দিন হারিয়ে গেছে।
৩| ২০ শে মে, ২০২৩ রাত ১২:০৯
চারাগাছ বলেছেন: দারুণ নস্টালজিক!
চমৎকার সব স্মৃতি পড়ছি ব্লগে।
২৫ শে মে, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:১৮
নীলসাধু বলেছেন: আন্তরিক ধন্যবাদ চারাগাছ।
ভাল থাকুন।
শুভকামনা।
৪| ২০ শে মে, ২০২৩ রাত ১২:১৭
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
ভাল লাগল আপনার সোনালী দিনের শৈশব স্মুতি ।
আসলেই সে সময় সাইকেল চালনা শিখা ছিল
এক বিরাট প্রকল্প । শিখার জন্য সাইকেলের
যোগান হতে শুরু করি প্রশিক্ষন দাতার সাবধানী
হুসিয়ারী গাইডেন্স , মেনে না চললে ছিল বিপদ
মানলেও ছিল বিপদ , পদে পদে সাইকেল নিয়ে
পড়ে গিয়ে হাত পা ছড়ে যাওয়া আরো কত কি
যার অনেক কিছুই বলেছেন আপনি সুন্দর করে।
আমার সাইকেল চালনা শিক্ষার অভিজ্ঞতাও
প্রায় এমনই ছিল , তবে বেতাল বাজত আত্মীয়
স্বজন কেও সাইকেলে করে আমাদের বাড়ীতে
বেড়াতে এলে তার সাইকেল নিয়ে চলে যেতাম
গ্রামের শেষ প্রান্তে , ফেরার তরে থাকতনা কোন
সময় জ্ঞান, আত্মীয় যখন ফেরার জন্য সাইকেল
খুঁজত তখন সেটা না পেয়ে লাগিয়ে দিত মহা
হৈ চৈ , তার আঘাতটা যেতো আমার উপর
দিয়োই সাইকেল নিয়ে ঘরে ফেরার পরে ।
যাহোক সে সব স্মৃতি ছিল আনন্দময়ই।
অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইল ।
৫| ২০ শে মে, ২০২৩ রাত ১:৫০
শার্দূল ২২ বলেছেন: হুমায়ুন আজাদ বলেছিলো আমি হিংসা করি নতুন প্রজন্মকে, আমি বলি -আমার দুঃখ হয় নতুন প্রজন্মের জন্য, এমন সুন্দর স্মৃতি গুলো ওরা পাবেনা কোনদিন। তারা যন্ত্রে খাবে যন্ত্রে ঘুমাবে যন্ত্রে সম্পর্ক যন্ত্রেই শেষ আর যন্ত্রের ভালোবাসাতো দেখছি।
অনভুব করতে পারছি আপনার সেই নিঃষ্পাপ সময় গুলো।
শুভ কামনা
০৫ ই জুন, ২০২৩ দুপুর ১:০০
নীলসাধু বলেছেন: আন্তরিক মন্তব্যে ভালো লাগা রইলো।
সত্যি সেই সময়টা ছিল নিষ্পাপ। অনাবিল আর নির্মল সুন্দরে ভরা।
ভালো থাকুন। নিরন্তর শুভকামনা।
৬| ২০ শে মে, ২০২৩ রাত ২:৫২
মিরোরডডল বলেছেন:
আট আনা, এক টাকায় অনেকক্ষণ সাইকেল চালানো
পেছনে তাকালে এখন নিশ্চয়ই মনে হয় ওটা হয়তো কোন স্বপ্ন ছিলো।
'কবি গরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর'!!
এটা মজার ছিলো
একটি সড়ক দুর্ঘটনায় দীর্ঘদিন আগেই আমাদের ছেড়ে চলে গেছে।
আমারও এক ফ্রেন্ড চলে গেছে সড়ক দুর্ঘটনায়।
এরকম চলে যাওয়া মেনে নেয়া কষ্টের।
একটা তরুণ প্রান হঠাৎ করেই চলে গেলো!
স্যারের চোখ ফাঁকি দিয়ে আমি যাকে কারিগরি অংকন দেখিয়ে দিয়েছিলাম সে লেটার পেয়েছিল
অথচ আমি ৭৮।
সত্যিই দিনগুলো ছিলো সহজ সরলে মাখামাখি।
মধুর স্মৃতিগুলো শেয়ার করার জন্য থ্যাংকস।
৭| ২০ শে মে, ২০২৩ রাত ৩:০১
মিরোরডডল বলেছেন:
শার্দূল ২২ বলেছেন: তারা যন্ত্রে খাবে যন্ত্রে ঘুমাবে যন্ত্রে সম্পর্ক যন্ত্রেই শেষ আর যন্ত্রের ভালোবাসাতো দেখছি।
হা হা হা ............ সো ট্রু।
বলতে নেই কিন্তু আমার মনে হয় এটা একটা অসুস্থ জীবন।
যন্ত্রের ব্যবহার থাকতেই পারে কিন্তু সেটা যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু।
এই যে সারাক্ষণ যন্ত্রেই ডুবে থাকা, এটাই যেন জীবন, এই অবস্থাটা খুব দুঃখজনক!
এর বাইরেও জীবনে অনেক কিছু আছে জানার বোঝার করার, সেটা থেকে ওরা দূরে সরে যাচ্ছে।
৮| ২০ শে মে, ২০২৩ দুপুর ১২:০৮
শেরজা তপন বলেছেন: নিশ্চিত ভাবে আমাদের প্রজন্মের কাছে এটা নস্টালজিক। প্রযুক্তির উৎকর্ষের সাথে সবাইকে তাল মিলিয়ে চলতে হবে এটি স্বাভাবিক তাল মিলিয়ে চলতে যারা পারবেনা তারা পিছিয়ে যাবে। আসলে প্রতিটা প্রজন্মের শৈশবের একটা সৌন্দর্য আছে- সেটা তাদের মত করে তাদের ভাবতে দেয়া উচিত। আমাদের ফেলে আসা স্মৃতিগুলোকে ধরে শুধু চলে গেল খুঁজে পাবো না আর আসবে না এসব বলে হা হুতাশ করতে অন্তত আমি রাজি নই।
আমার ১৪ বছরের ইংলিশ মিডিয়ামে পড়া ছেলে সেদিন দেখলাম তার পরবর্তী প্রজন্ম নিয়ে বেশ চিন্তিত!! তারা নাকি দারুন শৈশব পেয়েছে পরের ছেলেপেলের যে কি হবে তাই নিয়ে সে ভীষণ ভাবিত
তবে চমৎকার লেগেছে আপনার স্মৃতি কথা স্মৃতিকথার মাঝে ডুবে গেলাম ক্ষনিককালের জন্য।
০৫ ই জুন, ২০২৩ দুপুর ১:০৫
নীলসাধু বলেছেন: প্রতিটি প্রজন্মের কাছেই তার শৈশব সবচেয়ে সুন্দর। সোনালী সময়। আমরা হয়তো এটা বুঝতে চাই না। যে সময়ের জনব্য আমরা হা হুতাশ করছি সেই সময় যেমন নেই তারপরেও কিন্তু সময় থেমে আছে এমন নয় এই চলমান সময়ের রেখাপাতে কেটে যাওয়া প্রহরই আমাদের জীবন।
আন্তরিক ধন্যবাদ জানবেন।
শুভকামনা।
৯| ২১ শে মে, ২০২৩ বিকাল ৫:৩৮
শাওন আহমাদ বলেছেন: আমার এক বন্ধু ছিলো যে কিছু জিজ্ঞেস না করেই সামনের জনের খাতে দেখে হুবুহু লিখে ফেলতো এবং যার খাতা দেখে লিখত তার চেয়ে নাম্বারও বেশি পেতো।
২৫ শে মে, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:১৭
নীলসাধু বলেছেন: হা হা
এমন প্রতিভাবান আছে।
মজা লাগলো শুনে।
ভালো থাকবেন। সতত শুভকামনা।
১০| ২৩ শে মে, ২০২৩ সকাল ৮:৪০
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ভালো লাগলো স্মৃতিচারণ।
২৫ শে মে, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:১৬
নীলসাধু বলেছেন: আন্তরিক ধন্যবাদ সাড়ে চুয়াত্তর।
ভালো থাকবেন।
©somewhere in net ltd.
১| ১৯ শে মে, ২০২৩ রাত ১০:৫৫
আহমেদ জী এস বলেছেন: নীলসাধু,
সে সময়গুলো আসলেই ছিলো সোনালী রংয়ে মাখা।
ভাড়ায় সাইকেল আমরাও চালিয়েছি। তখন ঘন্টা ছিলো চার আনা। বহুকষ্টে দলেবলে কষ্ট করে চার আনা জুটিয়ে সাইকেল ভাড়া আনতুম আমাদের মহল্লা থেকে প্রায় মাইলখানেক দূরের সোনালী সিনেমার (বরিশাল) কাছ থেকে । ছোট মানুষ ছোট সাইকেল। একজনে চালাতো আর বাকীরা পিছনে পিছনে দৌড়ে আসতুম। পালা করে চালাতুম। চালাতে গিয়ে হাত-পায়ের ছাল চামড়া ছিড়ে যেতো পড়ে গিয়ে।
আহা সেই যে আমার নানা রংয়ের দিনগুলি.....
স্মৃতি কথায় ভালোলাগা।