নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নেগেটিভিটিতে বিশ্বাস করি না; তাই এমন নাম বেছে নিলাম, যা বাস্তব নয়!
ঠিক কার মৃত্যুর পর প্রথমবারের মত মৃত্যুর যে নিঃসঙ্গতা সেটা বুঝেছিলাম মনে নেই। তবে এটা মনে আছে যে মাগরীবের নামাজের পর আমার মামাদের পারিবারিক কবরস্থানের পাশে দাড়িয়ে ঝিঝি পোকার শব্দ আমাকে প্রথমবার মৃত্যু সম্পর্কে নাড়া দিয়েছিলো।
তখন খুব সম্ভবত ৬ষ্ঠ/৭ম শ্রেণীর ছাত্র; মাগরীবের নামাজ পড়ে একটু এগিয়ে গিয়ে কবর স্থানের পাশে দাড়িয়ে যে ঝিঝি পোকার শব্দ শুনেছিলাম, তার মধ্যে কেমন যেন একটা একাকিত্ব অনুভব করেছিলাম। আজও সেই সন্ধার কথা মনে আছে।
কবরস্থান কেমন যেন একটা অদ্ভুত জায়গা; গমগম করতে থাকা শহরের মাঝে যে কবরস্থান, সেখানেও যেন নিস্তব্ধতা নেমে আসে। আমাদের গ্রামের বাড়ি কারও একজনের মাটির তৈরী ঘরে ঢুকেছিলাম; জানতে পেরেছিলাম মাটির তৈরী ঘরে নাকি সাধারণ টিন বা বেড়া দিয়ে তৈরী ঘর থেকে কম শব্দ প্রবেশ করে। মাটির নিচে কবরে কেমন?
আমি যখনই কারও সামনে বলি যে 'জন্মের থেকেও মৃত্যু বড় সত্য'; তখন তারা আর্গুমেন্টে জড়ায় পড়ে। বলে জন্ম না হলে মৃত্যুর প্রশ্ন নাই; তাহলে জন্ম আর মৃত্যু দুইটাইতো সমান সত্য। কিন্তু আমি ভাবি অন্য ভাবে। কিভাবে?
একটা বাচ্চা মায়ের পেট থেকে বের না হওয়া পর্যন্ত মায়ের পেটের ভিতরে যতই নড়াচড়া করুক, আমরা তখনও ধরে নেই না যে বাচ্চাটার জন্ম হয়েছে। পেট থেকে যেদিন বের হয়, সেদিনই তার জন্মদিন হিসাব করি; আর বছর বছর অহেতুক যে জন্ম উৎসব আমরা পালন করি, সেটাও কিন্তু ঐ পেট থেকে বের হবার দিনটাকেই কেন্দ্রকরে করি। কিন্তু পৃথীবিতে এমন প্রচুর বাবা মা আছেন, যারা তাদের পেট থেকে বের হওয়া সন্তানকে কোলে নিয়েছেন মৃত অবস্থায়। পেট থেকে বের হবার আগেই বাচ্চা মারা গেছে।
আবার আমার একটা সন্তান হবেই এমনটা আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি না। কত দম্পতি আছেন যারা দুনিয়ার সব ডাক্তার-কবিরাজ বেঁটে খেয়েও একটা সন্তানের মুখ দেখতে পায় না। কিন্তু যে সব দম্পতির একটা বাচ্চা হয়, সেই বাচ্চার জন্য লিখে দেওয়া যায় যে এই বাচ্চা একদিন না একদিন মরবে। কবে? আমরা জানি না; আমাদের জেনে কাজও নেই। তবে মৃত্যু সত্য।
অর্থাৎ জন্মটা অবধারিত নয়; কিন্তু জন্মালে মৃত্যু অবধারিত; এমনকি জন্মের প্রক্রিয়ার মধ্যেও মৃত্যু হতে পারে যে কারও।
জন্মের আগে মানুষ মরেছে; জন্মের সময় মানুষ মরেছে; জন্মের পর পর মানুষ মরেছে; জন্মের এক মাস পর, দুই মাস পর, ৫/১০/১১ মাস পর, এক বছর, পাঁচ, দশ, ২০, ৩০, ৪০, ৫০....... এভাবে বিভিন্ন বয়সে মানুষ মরেছে। আপনি যে হন, যা হন, যা করেন না কেন, জন্ম যেহেতু হয়েছে মৃত্যু আপনাকে স্পর্শ করবেই করবে। মৃত্যুর কোন বয়স নেই।
মজার বিষয় হচ্ছে আমরা এই শেষ কথাটা বুঝি না; আমরা ধরেই নেই যে একজনের বয়স অনেক হতে হবে, তারপর তাকে মরতে হবে। তা না হলে তার মৃত্যুকে 'অকাল প্রয়াণ' বলে চালায় দিতে হবে। কেন? এর মানে কি দাঁড়ায় যে নির্দিষ্ট একটা বয়সের পর মরলে তাকে 'অকাল প্রয়াণ' তো বলাই হবে না; বরং আমরা ঠেলে তাকে মৃত্যুর মুখে দিয়ে আসবো?
কবর স্থান, প্রচন্ড নিস্তব্ধ এক জায়গা; কিন্তু প্রতিনিয়ত সেই কবর স্থানই পৃথীবির সব চাইতে বড় আওয়াজে আপনাকে জানান দিচ্ছে যে আপনাকে একদিন সেখানে যেতেই হবে। শুনতে পান কি?
২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১২:০৯
ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: ভালো তো; মৃত্যুর কথা ২বার স্বরণ করা হবে।
২| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৯:৪৮
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: হুম
সবচে নিশ্চিত এবং কঠিন সত্যকে আমরা এড়িয়ে থাকতে চাই! অস্বীকার মূলত সেই অজানা ভয়ে থেকেই উৎসরিত মনে হয়!
জেনেও তাই তাকে ভুলে থাকতে বাকী সব যজ্ঞে নিজেকে ভ্যস্ততার অজুহাত মূলত সত্য থেকে পালানোরই নামান্তর!
মৃত্যুর শুন্যতা সত্যিই অসীম শুন্য!
জ্ঞান যেখানে থমকে যায়- মহাসগরের পারে দর্শকের থেমে যাবার মতো।
সাধকদের কেউ কেউ আচেন মৃত্যুর মহাসগরেও জ্ঞানের, সাধনার জাহাজে চলাফেরা করেন- খুবই সীমিত তারা!
সুনিশ্চিত এই মৃত্যুকে যতই এড়িয়ে যাবার ভুলে থাকবার চেষ্টা থাকুক না কেন, তাকে মানতেই হবে।
কুল্লু নাফসিন জাঈকাতুল মাউত- মৃত্যুর পেয়ালা পান করতে হবে।
মৃত্যু এবং পান শব্দ দুটো আমাকে খূব ভাবায়!
পোষ্টে ++++
২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৯ রাত ১২:১০
ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: হুমমমম
©somewhere in net ltd.
১| ২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৯ সকাল ৭:৩৪
রাজীব নুর বলেছেন: লেখাটা দুইবার এসেছে।