নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দূরে থাকুন; ভালো থাকুন।

ঋণাত্মক শূণ্য

নেগেটিভিটিতে বিশ্বাস করি না; তাই এমন নাম বেছে নিলাম, যা বাস্তব নয়!

ঋণাত্মক শূণ্য › বিস্তারিত পোস্টঃ

দোষটা খালি চাপাইতে পারলেই হইলো!

২০ শে জুন, ২০২০ রাত ১১:৫৪

এমএস টিমস মিটিং এ কড়াকড়ি এক ঝড় বয়ে যাচ্ছে! অমুক সাহেব ঐদিন অফিসে আসছিলেন, তমুক সাহেবও ঐদিন অফিসে আসছিলেন। অমুক সাহেবের করোনা হয়েছে। তমুক সাহেব অমুক সাহেবের কাছ থেকেই করোনাক্রান্ত হয়েছেন।



মিটিং শুরুর কথা ১১টায় হলেও কেউ একজন ১০:৫০এই মিটিং লিংকে ক্লিক করেছে, নোটিফিকেশন পেয়ে আরও গোটা ৭/৮জন জয়েন করেছে। আমি কাটায় কাটায় ১১টায় ঢুকেই দেখি গোটা কয়েক মানুষ অমুক সাহেবকে ধুয়ে ফেলে দিচ্ছেন তমুক সাহেবের করোনাক্রান্ত হবার দোষে।

দু-তিন মিনিট তাদের কথা শুনে নিজেকে আর চেপে রাখতে পারলাম না; ক্ষেপনাস্ত্রের মত প্রশ্নটা ছুড়ে দিলাম। অমুক সাহেব আর তমুক সাহেব যেন কত তারিখে এক সাথে অফিসে গিয়েছিলেন? আর অমুক সাহেবের যেন কত তারিখে করোনা ধরা পড়েছে? তমুক সাহেবেরই বা কবে করোনা ধরা পড়লো?

জানা গেলো অমুক-তমুক সাহেবেরা এক সাথে এপ্রিলের ২৮ তারিখ এক সাথে অফিসে ছিলেন। অমুক সাহেবের করোনা ধরা পড়েছে মে মাসের ২৫ তারিখ। আর তমুক সাহেবের করোনা ধরা পড়েছে জুনের ১৮ তারিখ! এপ্রিলের ২৮ তারিখের পর তাদের দেখা দূরে থাক, একজন আর একজনের সাথে ফোনে কথাও বলেন নাই। কিন্তু সব দোষ অমুক সাহেবের। সবাই মিলে অমুক সাহেবের দোষ ধরতেই ব্যস্ত।

তমুক সাহেবের সাথে কথা বলে জানলাম তিনি করোনা বিষয়টাতেই তেমন একটা বিশ্বাস করেন নাই, তার নিজের কখনও করোনা হবে না এটা মাথাতে রেখেই তিনি বাজার-সদাই করেছেন ইচ্ছা মত; রেষ্টুরেন্টেও গিয়েছেন। এমনকি সৌদী সরকারের এই কড়াকড়ির মধ্যেও তিনি এক বাংলাদেশী নাপিত ভাইকে ডেকে চুলও কাটিয়েছেন কয়েকদিন আগে। এদিকে জানা গেছে যে ঐ বাংলাদেশী নাপিত ভাই নিজেই করোনাক্রান্ত হয়েছেন এবং হাসপাতালে আছেন।

এই খবরটি পেয়ে মিটিং এ সবাইকে অবগত করলাম, সবাই একটু চুপ করলেন ঠিকই। তবে তারা অমুক সাহেবের প্রচুর দোষ খুঁজে পেলেন।

আজকে আবার হোয়াটসএ্যাপ গ্রুপে দেখলাম একজন গবেষণাধর্মী পোষ্ট করেছেনঃ অমুক সাহেবের করোনা ছিলো, সেটা থেকে তমুক সাহেব আক্রান্ত; আর তমুক সাহেব থেকে বেচারা নাপিত ভাইও আক্রান্ত!

----------------------------------------------
এখানে যাদের কথা বলছি, তারা প্রায় সকলেই আমাদের দক্ষিন এশিয়ার কোন না কোন দেশের অধিবাসী। অমুক সাহেবের বড় দোষ, তিনি বাংলাদেশী (আমাদের অফিসে হাতে গোনা দু-তিনজন বাংলাদেশী বলে আমরা কোনঠাসা)। আর আমি যেহেতু অমুক সাহেবকে নির্দোষ প্রমাণ করতে চাইছি; তার অর্থই দাড়ায় আসলেই অমুক সাহেব দোষী!

আর আমরা যাদের উন্নত দেশের বাসিন্দা মনে করি, যাদের মনকে উন্নত মনে করি; তাদের কাছে বিষয়টা তুলতেই তারা এর মধ্যে নাক গলাবেন না বলে দিলেন। মজার বিষয় হচ্ছে এনারা এই সব বিষয়কে এতকাল 'রেসিজম' মনে করতেন, এবং রেসিজমের বিপক্ষে তাদের অবস্থান দেখলে মাঝে মধ্যে নিজের মুখে কালো রং করে নিগ্রো সাজার সাধ জাগতো। কিংবা মনে হতো নাগরিকত্ব চেঞ্জ করে কোন নিপিড়ন চলছে এমন দেশের বাসিন্দা বনে যাই।
----------------------------------------------

আমরা কোন কোন না কোন ভাবে সব সময়ই দোষ চাপাতে ব্যস্ত। দোষ চাপানো শেষ তো কাজ শেষ। বাংলাদেশের পত্র-পত্রিকা স্বাক্ষী, সরকারী দল বিরোধী দলের ঘাড়ে, বিরোধী দল সরকারী দলের ঘাড়ে দোষ চাপিয়েই ক্ষ্যান্ত। কিন্তু কেউ সমস্যা সমাধানের চেষ্টায় নাই। দোষ কোন ভাবে চাপাতে পারলেই যেন পার পেয়ে যাই আমরা। এই অভ্যাস এখন আমাদের প্রতিটি মানুষের শিরায় শিরায় ঢুকে গেছে। দোষ একবার চাপিয়ে দিতে পারলেই সব সমস্যার সমাধান!

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে জুন, ২০২০ রাত ২:২৬

রাজীব নুর বলেছেন: বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে লিখেছেন বলে মনে হচ্ছে।

২১ শে জুন, ২০২০ রাত ২:৫৭

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: পুরা ঘটনাটাই বাস্তব!

২| ২১ শে জুন, ২০২০ ভোর ৪:২৮

রাফা বলেছেন: পলায়নপর মানসিকতার প্রতিটি মানুষই এই দোষে দুষ্ট। সমস্যা মোকাবেলা করতে ভিত মানুষদের মধ্যে এই প্রবনতা প্রকট।
ধন্যবাদ,ঋ.শূণ্য।

২২ শে জুন, ২০২০ রাত ১:০২

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: :(

৩| ২১ শে জুন, ২০২০ ভোর ৬:০১

নেওয়াজ আলি বলেছেন: অপরিসীম ভালো লাগলো।

২২ শে জুন, ২০২০ রাত ১:০২

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: :)

৪| ২১ শে জুন, ২০২০ সকাল ১১:০৯

পদ্মপুকুর বলেছেন: এক ভদ্র দেখতে মানুষকে বাসের মধ্যে এক মহিলাকে চপেটাঘাত করার দায়ে আদালতে আনা হলো। বিচারক বললেন-
: আপনাকে দেখে তো ভদ্রলোক মনে হচ্ছে, আপনি এই মহিলাকে মারলেন কেন?
: স্যার, বাসে আমার পাশে এই ভদ্রমহিলা বসে ছিলেন। কন্ডাক্টর এসে মহিলার কাছে ভাড়া চাইলো। তখন তিনি প্রথমে তার সাইড ব্যাগের বড় চেইনটি খুললেন, তারপর ব্যাগের ভেতরে একটা ছোট পকেটের চেইন খুললেন। এরপর ওটা বন্ধ করে পাশের পকেটের চেইন খুললেন। তারপর সেখান থেকে একটা পার্স বের করে সাইড পকেটের চেইন বন্ধ করলেন। এরপর পার্সের চেইন খুলে ভাড়ার টাকাটা বের করে আবার পার্সের চেইন বন্ধ করলেন। এরপর আবার ব্যাগের সাইড পকেটের .......
: আরে থামেন থামেন। কি চেইন খোলা, চেইন বন্ধ শুর করেছেন?
: তাহলে স্যার আপনিই বলেন, এই চেইন খোলা আর বন্ধ শুনতে শুনতেই আপনি বিরক্ত হয়ে যাচ্ছেন... আর পাশে বসে এটা দেখতে দেখতে আমার কি অবস্থা হয়েছিলো একবার ভাবেন স্যার....


অমুক-তমুক পড়তে পড়তে এই গল্পটা মনে পড়লো।

২২ শে জুন, ২০২০ রাত ১:০২

ঋণাত্মক শূণ্য বলেছেন: হুম!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.