নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যাচ্ছেতাই

েনহ।ল

েনহ।ল › বিস্তারিত পোস্টঃ

। । । * **রুদ্র মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ এর কিছু কবিতা *** । । ।

২৭ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৩ রাত ১২:৪৭



{{{{{{{{{{বিষ । । । --------------



যেমন রক্তের মধ্যে জন্ম নেয় সোনালি অসুখ

তারপর ফুটে ওঠে ত্বকে মাংসে বীভৎস ক্ষরতা।

জাতির শরীরে আজ তেম্নি দ্যাখো দুরারোগ্য ব্যাধি

ধর্মান্ধ পিশাচ আর পরকাল ব্যবসায়ি রূপে

ক্রমশঃ উঠছে ফুটে ক্ষয়রোগ, রোগের প্রকোপ



একদার অন্ধকারে ধর্ম এনে দিয়েছিল আলো,

আজ তার কংকালের হাড় আর পঁচা মাংসগুলো

ফেরি কোরে ফেরে কিছু স্বার্থাণ্বেষী ফাউল মানুষ-

সৃষ্টির অজানা অংশ পূর্ণ করে গালগল্প দিয়ে।

আফিম তবুও ভালো, ধর্ম সে তো হেমলক বিষ।



ধর্মান্ধের ধর্ম নেই, আছে লোভ, ঘৃণ্য চতুরতা,

মানুষের পৃথিবীকে শত খণ্ডে বিভক্ত করেছে

তারা টিকিয়ে রেখেছে শ্রেণীভেদ ঈশ্বরের নামে।

ঈশ্বরের নামে তারা অনাচার করেছে জায়েজ।



হা অন্ধতা! হা মুর্খামি! কতোদূর কোথায় ঈশ্বর!

অজানা শক্তির নামে হত্যাযজ্ঞ কতো রক্তপাত,

কত যে নির্মম ঝড় বয়ে গেল হাজার বছরে!

কোন্ সেই বেহেস্তের হুর আর তহুরা শরাব?

অন্তহীন যৌনাচারে নিমজ্জিত অনন্ত সময়?

যার লোভে মানুষও হয়ে যায় পশুর অধম।



আর কোন দোজখ বা আছে এর চেয়ে ভয়াবহ

ক্ষুধার আগুন সে কি হাবিয়ার চেয়ে খুব কম?

সে কি রৌরবের চেয়ে নম্র কোন নরোম আগুন?



ইহকাল ভুলে যারা পরকালে মত্ত হয়ে আছে

চলে যাক সব পরপারে বেহেস্তে তাদের

আমরা থাকবো এই পৃথিবীর মাটি জলে নীলে,

দ্বন্দ্বময় সভ্যতার গতিশীল স্রোতের ধারায়

আগামীর স্বপ্নে মুগ্ধ বুনে যাবো সমতার বীজ}}}}}}}}









****************







{{{{{{{{{{বিষবৃক্ষ ভালোবাসা-----------





তোমার না-থাকা ভালোবেসে কিছু ভুলকে বেধেছি বক্ষে,

কিছু বলো নাই-ভুল বৃক্ষকে অবাধে দিয়েছো বাড়তে।



তুমি কিই জানতে

ওই তরু নয় স্বাস্থ্যোপযোগী,ওতো সেই বিষবৃক্ষ।

তুমি কি জানতে ওই ভুল বোধ কতখানি ক্ষতি,নষ্ট !

তাহলে আমার ভুল নির্মাণ-করোনি তা কেন ধ্বংস ?



এটুকু জীবনে এই অপচয়,ভুল পথে এই যাত্রা-

মিছে কষ্টকে ভালোবেসে এই আত্মহনন যজ্ঞে

কেন জল ঢেলে নেভাওনি এর হোমানল-বিষ-অগ্নি ?



না পাওয়াটাকেই যদি পেয়ে যাই তবে না পাওয়াই হয় সত্য,

গুটিকয় হাতে পাওয়ার নীড়টি থাকে ক্রীতদাস-বন্দী-

আমার প্রাপ্য এই ধোয়া-জালে চিরদিন হল ভ্রষ্ট।



তুমি বলো নাই এই ত্যাগ হবে কারো স্বার্থের টেক্কা

সারা জীবনের সঞ্চয় দিয়ে একজন রবে ব্যর্থ,

তুমি বলো নাই-তুমি বলো নাই- অমোঘ নিয়তি মিথ্যে।



পেতে চাই গ্রাস অঞ্জলি ভরে যা-কিছু আমার প্রাপ্য,

তোমার থাকাকে বুক ভ'রে চাই,না-থাকা কিছুকে চাই না।}}}}}}}









*****************







{{{{{ব্যথা দাও,বুকে রাখবো----------





ব্যথা দাও,বুকে রাখবো

ব্যথার জন্যই তো হৃদয়

আঘাতে বুক ভাঙবে না

বুকে ব্যথা আছে।



গলিত লাভাগুলো বেদনার

্যেন ঘনীভূত পাথরের দেহ

আঘাতে পাথর কখনো গলে না

গলে না হৃদয়।



পাহাড়ে ধস নামলে কখনো

মা্টি অনায়াসে পেতে দেয় বুক।

তুমি যাবতীয় দুঃখকে ছুঁড়ে দাও

আমি বুক পেতে নেবো

বুক ভাঙবে না।



দুয়ার বন্ধ করলেই

আমি ফিরে যাবো নির্বিকার,

অস্বীকার করো মেনে নেবো।



এলবামে স্মৃতি নেই বলে

আদৌ দুঃখ করি না,

সোনালি নিসঙ্গতায় আমার

বিচিত্র দুঃখের সমাবেশ সঞ্চয় - ।



ব্যথা দাও,বুকে রাখবো

ব্যথায় ভাঙবে না বুক

বুকে ব্যথা আছে।}}}}}}}}}}}





******************









{{{{{{{{

আমি সেই অবহেলা------------







আমি সেই অবহেলা

আমি সেই নতমুখ

নিরবে ফিরে যাওয়া

অভিমান ভেজা চোখ

আমাকে গ্রহন কর

উৎসব থেকে ফিরে যাওয়া

আমি সেই প্রত্যাখ্যান

আমি সেই অনিচ্ছা নির্বাসন বুকে

নেয়া ঘলাতে চাঁদ

আমাকে আর কী বেদনা দেখাবে

তপ্ত শীশার মতন পুড়ে পুড়ে একদিন

পাথর হয়েছি শেষে

হয়েছি জমাট শিলা

তবু সেই পাথরের অন্তর থেকে কেঁদে ওঠে

একরাশ জলের আকুতি

ঝর্ণার মত নেমে যেতে চায় কিছু মাটির শরীরে

আমি সেই অবহেলা

সেই নতমুখ

পাথরের নিচের করুন বেদনার জল

আমাকে গ্রহন করো "



কবির প্রতি শহরতলী পরিবারের অগাধ শ্রদ্ধাঞ্জলি}}}}}}}}}





****





{{{{{{{{{{{{{কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প--------------





তাঁর চোখ বাঁধা হলো।

বুটের প্রথম লাথি রক্তাক্ত করলো তার মুখ।

থ্যাতলানো ঠোঁটজোড়া লালা-রক্তে একাকার হলো,

জিভ নাড়তেই দুটো ভাঙা দাঁত ঝরে পড়লো কংক্রিটে।

মা…..মাগো….. চেঁচিয়ে উঠলো সে।



পাঁচশো পঞ্চান্ন মার্কা আধ-খাওয়া একটা সিগারেট

প্রথমে স্পর্শ করলো তার বুক।



পোড়া মাংসের উৎকট গন্ধ ছড়িয়ে পড়লো ঘরের বাতাসে।

জ্বলন্ত সিগারেটের স্পর্শ

তার দেহে টসটসে আঙুরের মতো ফোস্কা তুলতে লাগলো।



দ্বিতীয় লাথিতে ধনুকের মতো বাঁকা হয়ে গেলো দেহ,

এবার সে চিৎকার করতে পারলো না।



তাকে চিৎ করা হলো।

পেটের ওপর উঠে এলো দু’জোড়া বুট, কালো ও কর্কশ।

কারণ সে তার পাকস্থলির কষ্টের কথা বলেছিলো,

বলেছিলো অনাহার ও ক্ষুধার কথা।



সে তার দেহের বস্ত্রহীনতার কথা বলেছিলো-

বুঝি সে-কারণে

ফর ফর করে টেনে ছিঁড়ে নেয়া হলো তার শার্ট।

প্যান্ট খোলা হলো। সে এখন বিবস্ত্র, বীভৎস।



তার দুটো হাত-

মুষ্টিবদ্ধ যে-হাত মিছিলে পতাকার মতো উড়েছে সক্রোধে,

যে-হাতে সে পোস্টার সেঁটেছে, বিলিয়েছে লিফলেট,

লোহার হাতুড়ি দিয়ে সেই হাত ভাঙা হলো।

সেই জীবন্ত হাত, জীবন্ত মানুষের হাত।



তার দশটি আঙুল-

যে-আঙুলে ছুঁয়েছে সে মার মুখ, ভায়ের শরীর,

প্রেয়সীর চিবুকের তিল।

যে-আঙুলে ছুঁয়েছে সে সাম্যমন্ত্রে দীক্ষিত সাথীর হাত,

স্বপ্নবান হাতিয়ার,

বাটখারা দিয়ে সে-আঙুল পেষা হলো।

সেই জীবন্ত আঙুল, মানুষের জীবন্ত উপমা।

লোহার সাঁড়াশি দিয়ে,

একটি একটি করে উপড়ে নেয়া হলো তার নির্দোষ নখগুলো।

কী চমৎকার লাল রক্তের রঙ।

সে এখন মৃত।



তার শরীর ঘিরে থোকা থোকা কৃষ্ণচূড়ার মতো

ছড়িয়ে রয়েছে রক্ত, তাজা লাল রক্ত।



তার থ্যাতলানো একখানা হাত

পড়ে আছে এদেশের মানচিত্রের ওপর,

আর সে হাত থেকে ঝরে পড়ছে রক্তের দুর্বিনীত লাভা- }}}}









-------------********---------------

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১:৩৫

সানড্যান্স বলেছেন: আমার খুব প্রিয় কবিদের একজন।
আমার আরেকজন বেশ ভাল লাগার কবি আছেন-আবুল ফজল, ট্রাই করে দেখতে পারেন!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.