নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তখন খুব খড়া চলছিল\nজল ছিল না নদী খালে বিলে\nশুধু কিছু বৃষ্টির ফোঁটা\nজমেছিল কবিতায়

মেহেদী রবিন

মেহেদী রবিন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভেজা উঠোন

০৭ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ১২:৪৮



আকাশ শ্রাবণ মেঘে কালো
হঠাৎ সজোর বর্ষণে সতর্ক লোকালয়;
উঠোন জুড়ে পাতা ছোট-ছোট থালা-বাটি সংসার
তাড়া-হুড়োয় জড়ো করে
কোন ভাবে বুকে চেপে
ছোট মেয়েটিও আশ্রয় নেয় কাছেরই এক টিনচালা ঘরে।

বাতাস-মেঘ-জল, তর্জন-গর্জন,
পূর্বাকাশে জ্বলে বাজ-অশনির সংকেত;
আশে-পাশেই এলোপাথারি ছিটে
আরো যারা জনা মানুষ কতক ছিলো
দৌড়ে এসে তারাও জমাট বাধলো সেই
একমাত্র টিন-চালাকাশে;
ভিড় করে দরজায় কিছুক্ষণ শাপ-শাপান্ত সুরে
কাকে যেন খিস্তি পারলো
তারপর শান্ত হল গাঢ় অন্ধকারে।

সে আঁধারে ঢাকা ছোট্ট মেয়েটির মৃদু চঞ্চলা চোখে
আর্ত প্রয়োজনেই হল আবিষ্কৃত
টিনের বেড়ায় লেপ্টে থাকা একটি ছিদ্র;
মানুষের নিঃশ্বাস আর গুঞ্জন অতিক্রমের
এই যেন তার একমাত্র উপায় ।
ছিদ্রটির 'পরে আধা-বোজা চোখ রেখে দেখে
অস্পষ্ট উঠোনের বুকে
খোঁজে সদ্যই ফেলে আসা
বানে-ভাসা সংসারের ইতিবৃত্ত, ফোলানো গালে
সারা সকালের পাতানো খেলা ভোলে,
মায়ার বাঁধন ছেড়ে তার গাঢ় অদ্বিতীয় দুখে।

সেই শোকও হয় না স্থির;
সময়েরই চতুর চালে,
প্রকৃতির সাজানো ছলে ভোলে হাজার
দুখিনী তার অতীতের নীড়।
গৃহিণীর অভিজ্ঞ চোখ সাড়া দেয় অন্য কোন গল্পে,
হয়তোবা অতীতের দুঃখ ভুলতেই।

ছিদ্রপাশের মেয়েটিও খুঁজে পেল আরেকটি গল্প
উঠোনের ওপাশে বৃষ্টি অন্ধ জংলার কাছে
উঁকি মারে একটি কুকুর
ল্যাংচাতে ল্যাংচাতে খোঁড়া দুটি পায়ে,
প্রতি পদক্ষেপে রুগ্ন দেহ কাঁপে
খোঁচা লেগে ভাঙা হাড়ে
যেন ফুঁড়ে যাবে চিমসা ভেজা শরীর।
কষ্টার্জিত হামাগুড়ি সহায় করে এদিক-ওদিক
খোঁজে বর্ষণ মাঝে মাথা গোঁজার আশ্রয়।

দেখে বুঝে ঘোলা চোখে
পা বাড়ায় অবশেষে
মেয়েটির উঁকি দেয়া টিন চালা দিকে।
কাঁদা মাখা জলে মাখা-মাখি হয়ে
অল্প অল্প করে স্বল্প সময় পরে
এসে থামে চালা ঘরের খোলা দরজায়।
তখনই হঠাৎ চালা ঘর থেকে এক বড় কাঠখণ্ড
উড়ে গিয়ে আঘাত হানলো খোঁড়া জীবটির ভাঙা পায়ে।
চালা ঘরে চাপা হিস-হিস স্বরে কে যেন গাল পাড়ে
ল্যাংড়া কুত্তারে দেয় স্বীয় জাতের পরিচয়
শ্বাপদের দাঁত ঘষে দাঁতে,
চালা ঘরের বাকি লোকে সায় দেয় তাতে।

অস্পষ্ট ধোঁয়াশা তুলে মর্ত্যে নামে স্বর্গ সুরা,
তারই মাঝে দুটি করুণ কালো আলুথালু চোখে
অবাস্তব আশায় শুধু ফিরে ফিরে চায়
সে টিন চালা ঘরের দিকে।
কিছু চাপা আর্তনাদ অচল নালিশ হয়
কিছু কাই-কুই শব্দ সজল মিলায়।

এদিকে অমিয় রাগিণী রাগে বৃষ্টি নির্ঝর
ধুয়ে মুছে দিয়ে যায় মানুষের আবাস,
শুধু মাঝে মাঝে বজ্রপাতে যেন কার ক্রোধের আভাস ভেসে আসে
আর একাকী ছিদ্রের পাশে
কিছু অবোধ অভিমানে ভাঙে গৃহিণীর দ্বিতীয় সংসার।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ১২:৫৪

নতুন বিচারক বলেছেন: ভাল লাগা কবিতা ।

০৭ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ১:০৮

মেহেদী রবিন বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ। খুব খুশি হলাম।

২| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ১:০২

অরুনি মায়া অনু বলেছেন: ভাল লিখেছেন

০৭ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ১:১১

মেহেদী রবিন বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ। অনেক বড় পাওয়া ভেবেই প্রশংসাটা নিলাম ।

৩| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ১:১৩

দেবজ্যোতিকাজল বলেছেন: হুম...ভাল্ুু

০৭ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ১:১৭

মেহেদী রবিন বলেছেন: আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুবই খুশি হলাম। অনুপ্রাণিত হলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ।

৪| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৬ সকাল ১০:২০

টাইম টিউনার বলেছেন: বন্ধু ভাল ভাল লা গা রেখে গেলাম ।কবিতা বিশাল বড় তাই ছন্দ খুঁজ তে যাইনি ......

০৭ ই আগস্ট, ২০১৬ দুপুর ১:০৭

মেহেদী রবিন বলেছেন: তোমার ভালো লেগেছে , এর চেয়ে ভালো ছন্দ আর কি হতে পাড়ে বন্ধু।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.