নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি স্বপ্ন দেখি আবার নিজেই ভাঙি, আবার গড়ি অশ্রু দিয়ে আমার আমি কে

বিবেকের এর সাথে যুদ্ধ করি তাতেই আমার আমি কে ফিরে পাই আমার বিবেকের আঙিনায়

ক্ষুদ্র ছেলে

প্রবাসী ক্ষুদ্র ছেলে যা পেয়েছি তাতেই অনেক খুশি দেয়ার মতো কিছুই নেই নেয়ার জন্য আসা আপনাদের থেকে ।

ক্ষুদ্র ছেলে › বিস্তারিত পোস্টঃ

আজ অশ্রুসিক্ত ভাবে বলতেই হচ্ছে ''আজ আমি স্বাধীন।''

১১ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১০:১৩

আজ অশ্রুসিক্ত ভাবে বলতেই হচ্ছে ''আজ আমি স্বাধীন।''
তখন আমি ক্লাস সিক্সে পড়ি। ও আগে পরিচয় করিয়ে দেই, আমার বাবা একজন সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন।
এখন নেই। আর থাকবেই বা কিভাবে? তিনি তো আর আগের মত নেই। এক রাতের কথা,
যে রাতেই শেষ করেছিল বাবার অনেক অনেক স্বপ্ন, বাবা আসছিলেন একা,
অফিসের কাজের চাপের কারণে এর আগে ও অনেকবার দেরি হত এ আর নতুন কি ছিল!
রিকশা না পাওয়াই বাবা হেটেই ফিরছিলেন। আমার বাবা খুব সৎ সাহসী ছিলেন।
সেই সততটাই তার জীবনে কাল হয়ে নেমে আসে। বাবা একা ছিলেন ওরা কয়েকজন তাই সাহস থাকা সত্তে ও পারেননি।
বাবার দুটি পা আর দুটি তারা......... মৃত্যু পর্যন্ত যেন আর কিছু করতে না পারে সেই জন্য তারা সেই কাজ করছিলেন মনে হয়।
ওভাবেই ভালই চলছিলো আমাদের সংসার হঠাৎ একদিন স্কুল থেকে ফিরে শুনেছিলাম বাবা আর নেই।
আমার এই নাম না বাবা জোর করেই রেখেছিলেন। ''স্বাধীন'' আজ হয়ত বাবা সে জন্যই আমাকে স্বাধীনতা দিয়ে গিয়েছিলেন।
আর বকা দিবো না, আর স্কুলে যাওয়ার জন্য বার বার বলবো না,
পকেট থেকে না বলে টাকার জন্য আর নালিশ করবো না তোর মাকে।

এখন ও পুরো স্বাধীনতা পাওয়া হয়নি।
বাবার যাওয়ার পরে মা অনেক কষ্ট সব কিছু গিছিয়ে নিলেন। ও বলা হয়নি!
আমার বোন মিষ্টি আমার থেকে এক বছরের ছোট আসলেই সে এই পৃথিবীর সব থেকে মিষ্টি মেয়ে ছিল।
সে আমার থেকে ছোট হওয়া সত্তে ও যেন আমার দাদি মা ছিল।
এর পিছনে কারণ ও ছিল মা সারাক্ষণ কোন না কোন কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন,
মাকে বিরক্ত করতে যেমন আমার মন চাইতো না।
ঠিক তেমনই আমার এই বোনটির তাই সে বাধ্য হয়ে হলে ও মা এবং বোন দুই দায়িত্ব নিয়ে ব্যস্ত থাক্ত।
এভাবে ভালই চলছিল......... হঠাৎ এক রাতে মা খুব অসুস্থ হয়ে ছিলেন,
আমাদের ডাকাই গেলাম কিছুক্ষণ কথা বলার পরে মা বললেন যাও তোমরা ঘুমাও গিয়ে, এই কথা বলে মা ও নিজে ঘুমা আসলেন।
কিন্তু সেই ঘুম আর ভাঙে নাই। চলে গেলেন মা আমাদের ছেড়ে।
আমার মা খুব কঠোর প্রকৃতির ছিলেন, তিনি কোন কাজ হবে না বুঝতেন না।
যে ভাবেই হোক ধৈর্য সহকারে এখন হল না তাতে কি? পরে আবার চেষ্টা করবো,
শেষ পর্যন্ত তিনি করেই দম নিতেন। আর তিনি আমাদের সাথে এত নরম,

এত ধৈর্য সহকারে কথা বলতেন যে আমারা যতো বড়ই ভুল করি না কেন তিনি রাগ করে কথা বলতেন না।
সব সময় বুঝিয়ে বলতেন এভাবে না এভাবে। স্বাধীনতার বাঁকি আর কিছু দিন!
এর কিছু দিন পরেই বোনটির বিয়ে দেয়া হয়, ভালই চলছিল......
আমি হোটেলে থাকতাম যার কারণে খাওয়া পরা সব নিজেই করতে হতো!
ক্লিয়ার ভাবে বলতে গেলে যে আমার নিজের খরচ সম্পূর্ণ নিজেকেই যোগাড় করতে হতো।
অনেক গুলো ছেলে/ মেয়েকে পড়াতে হতো যা থেকে সব খরচ আসতো।
তাতে আমার কোন অভিযোগ ছিল না।

কিন্তু বৃষ্টি এসে সব এলোমেলো করে দিল! ভাবছেন বৃষ্টি কিভাবে এলোমেলো করতে পারে!
হ্যা পারে এই বৃষ্টি ছিল একজন মেয়ে যার সব কিছুই আমার ভাল লাগতো।
বৃষ্টির সাথে আমার পরিচয় হয় হঠাৎ বৃষ্টির মতো করে।
আমার এক ছাত্রীর খালাতো বোন অনেক দূর থেকে এখনে এসেছে লিখা পড়া করার জন্য,
তার নাম বৃষ্টি হলে ও খুব মিষ্টি একজন মেয়ে এভাবেই আমাদের ভালোবাসার দিন মধুময় দিন গুলী ভালই চলছিল......
আর দিন ও যে কখন কিভাবে চলে গেছে আমি টেরই পাইনি,
পরীক্ষার পরে ও বলছে বাড়ি ফোন এসেছিল! তো কি হইছে ? বৃষ্টিঃ কাল আমি বাড়ি যাচ্ছি আমিঃ কেন এত তাড়াহুড়া কিসের ?
বৃষ্টিঃ না মা বলল কেন যানি না খুব তাড়াতাড়ি যেতে হবে আমি অনেক বুঝালাম কিন্তু মা কিছুতেই মানল না।
তাই আমাকে কালকের মধ্যেই যেতে হবে।
আমিঃ খুব ভয়ের স্বরে বললাম ওকে যাও খুব তাড়াতাড়ি ফিরে এসে,

ও যাওয়ার সময় খুব কাদতেছিল আমি কিছুই বুঝতে পারলাম না ভেবে নিলাম যে হয়ত আমাকে ছেড়ে যাচ্ছে বলেই কাদতেছে।
কিন্তু না ওর কান্নার মানে ছিল অন্য কিছু যা ও আমার কাছে প্রকাশ করতে পারে নাই। যদি আমি কোন অঘটন ঘটিয়ে ফেলি!
তাই সে নীরব হয়ে মনের কষ্ট গুলো মনে নিয়েই চলে গিয়ে ছিল। অনেক দিন চলে গেল সে আসে না কেন? জানতে তার বাবার কাছে ফোন দিলাম,
আমিঃ আঙ্কেল বৃষ্টি আছে? আঙ্কেলঃ না বাবা কিন্তু তুমি কে?

আমিঃ জী আঙ্কেল আমি ওর বন্ধু অনেক দিন হল বাড়িতে গিয়েছে আসছে না দেখে ফোন করলাম
আঙ্কেলঃ বৃষ্টির তো বিয়ে হয়ে গেছে ওর শ্বশুর বাড়ির লোকজন আর চায় না, যে সে লিখা পড়া আর করুক।
যান বাবা ওর শ্বশুর বাড়ির লোকজন না খুব ভাল আর জামাই অনেক বড় চাকরি করে।
আমি আর কোন কথা না বলেই ফোন রেখে দিলাম। হয়ত তিনি হ্যালো... হ্যালো...
করছিলেন যা আমার কানে এসে পোঁছাই নাই।
আর আমার বুক ভাঙার শব্দ ও তার কানে গিয়ে পোঁছাই নাই।
আমি সব কিছু বাদ দিয়ে চলে এলাম বিদেশে, আসার পরে সব কিছুই ভালই চলছিল......
হঠাৎ খবর এলো আমার বোনের বাচ্চা হবে আমি অনেক খুশি আমি মামা হবো কিন্তু এ তো হওয়ার নয়!
আমি যে ''স্বাধীন'' বাচ্চা প্রসব করতে কি যেন সমস্যা হয়। সঠিক কেউ বলে নাই আর শুনেই বা কি হবে বোন আর নেই।
''আজ আমি স্বাধীন''






আমি ব্লগে কয়েকদিন হল ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।
ধন্যবাদ ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন।


মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.