![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আজ ভোর বেলায় একটা অদ্ভুত স্বপ্ন দেখলাম। ঠিক অদ্ভুত নয়, স্বপ্নটা ছিল খুব বেশী দুঃখের। মনটা একদম খারাপ হয়ে গেল। বিরহ নামক বস্তুটা আমাকে সবসময় আকর্ষন করে, তাই বলে সবসময় ট্রাজেডি আমি কামনা করিনা। পৃথিবীতে আজ ভালোবাসার বড় অভাব। এই অভাবের দিনে বিরহ প্রীতি খুব বেশী দৃষ্টি কটু। আবার হতে পারে এটা সবার কাছ থেকে নিজেকে আলাদা করে রাখার প্রয়াস। যেটাকে ঠিক রুচিকর বলে মনে হয়না।
আর এই ভুল ধারনা নিয়ে আজ অনেকে আমাকে ভুল বুঝেছে। অবশ্য আমার তাতে খুব বেশী তি বৃদ্ধি হয়নি। তার পরেও মনে একটা খোঁচা অনুভব করি। মানুষ কত সহজে মানুষকে ভুল বোঝে। আসলে দোষ কিছুটা আমার নিজেরও। আমি বরাবর একটু একা থাকতে পছন্দ করি। কারন ভালোবাসা নামক বস্তুটির সাথে আমার এক ধরনের তিক্ত সমপর্ক রয়েছে। আজ থেকে প্রায় আট বছর আগে আমার একজন কে ভালো লেগেছিল।ঠিক ভালোলাগা নয়, পরে জেনেছিলাম তাকে আমি ভীষন রকম ভালোবেসে ফেলেছি। কৈশোরের প্রেম প্রায় সবার েেত্রই হয়, তার পরেও আমার মনে হয় আমারটা ছিল একটু অন্যরকম। ঘটনাটি ছিল মোটামুটি এরকম,
"দিনটি ছিল 94সালের 2রা ফেব্রু্রয়ারি। বিকেল বেলায় মাঠে খেলতে গিয়েছি্। সেদিন খেলা হয়নি । ফিরে আসার পথে দেখি একটি বাড়ির ভিতর থেকে এক বন্ধু ডাকছে। ছয়দিন হলো সেখানে নতুন ভাড়াটিয়া উঠেছে। সেখানে গিয়ে পরিচয় হলো সবার সাথে। আর পরিচয় হলো বিশেষ একজনের সাথে। সেই দিনটির প্রতিটি ম হ র্ত আজও চোখের সামনে ভাসে।
একটি লাল রংয়ের লংস্কার্ট পরেছিল সে। তার নামটি উহ্য রাখলাম, কারন এই নামটি আমাকে এত বেশী আলোড়িত করে গেছে যে আজ তা আমার হৃদয়ের এক অয় ত। এই নাম মুখে এনে আজ আর নতুন করে রক্ত ঝরাতে চাইনা। যাহোক, যা বলছিলাম, সেদিন খেলা হলো ওদের বাসার সামনে। সেখানেই ঘটেছিল বেশ কিছু নাটকীয় ঘটনা যার ফলাফল আজ আমার বিবাগী ভালোবাসা। ঘটনা সংপে করার জন্য আজ আর তা উল্লেখ করছিনা। এরপরের ঘটনা খুবই সাধারন, এক সাথে বসে গল্প করেছি, বৃষ্টিতে ভিজেছি দুজনে, মাঝে মাঝে সাইকেল চালাতাম একসাথে। তবে যেটি সবচেয়ে ভালোবাসতাম তাহলো রাতে কারেন্ট চলে গেলে হাত ধরে রাস ায় হাঁটা। বন্ধুদের শ্রদ্ধা পেয়েছি বলে কোন বিরূপ মন ব্য শুনতে হয়নি কখনো। আর ছিল কিছু ভালোলাগা ন, মানঅভিমান, দুষ্টুমী, আর যা আমাকে প্রচন্ড ভাবে নাড়া দিয়েছিল তা ছিল তার চোখের জল। সেই মায়াবী চোখের চাহনী আজও আমাকে কাঁদায়। এসব সাধারন ঘটনা আমার কাছে হয়েছিল অনন্য সাধারন। কারন এই ভালোবাসার মধ্যে কোন খাঁদ ছিলনা। ছিলনা কোন চাওয়া পাওয়া। ওকে আমি ভালোবাসতাম কারন ওর সানি্নধ্য আমার ভালোলাগত। কোন শারীরিক আকর্ষন ছিলনা আমার ভালোবাসায়। ওকে দিয়েছিলাম কতটুকু জানিনা, তবে আমি তার কাছে আমি চিরজীবন ঋনী আমাকে কিছ দিনের জন্যে হলেও ভালোবাসার নিখাঁদ রূপটি দেখাবার জন্য। এই নিকের ভালোবাসার বিনিময়ে যে দুঃখ পেয়েছি তারপরেও মনে কোন ােভ নেই। কজনই বা এমন ভালোবাসা পায়। আমরা কেউ কখনও জানতে চাইনি ভালোবাসি কিনা, তবে এমন কিছু কথা বলেছিলাম আমরা যা তারই ইংগিত। আজ সেগুলো বলতে ইচেছ করছেনা, আমার হৃদয়েই থাক। তারপরেও আজ আমি তাকে কোন অনুযোগে বাঁধবোনা।
এভাবে স্বপ্নের মধ্যে কেটে গেলো এক বছর আট মাস। তারিখটা ঠিক মনে নেই, তবে মাসটি ছিল অক্টোবর। নানু হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লেন, তাকে দেখতে গেলাম বাড়ি। যাবার আগে দেখা করতে গিয়েছিলাম ওর সাথে। বিধাতার পরিহাসের কাছে নতি স্বীকার করলাম। সেদিন বাসায় ছিলনা ও। তার দুদিন আগের দেখাই ছিল সে বাড়িতে আমাদের শেষ দেখা। একুশ দিন বাড়িতে ছিলাম। সেই সময় গুলোতে বুঝেছিলাম ওকে আমি কি প্রচন্ড ভালোবাসি। তাই ঠিক করলাম বাসায় ফিরে সবার আগে ওকে আমার ভালোবাসার কথা বলব। এক বুক আশা নিয়ে বাড়ি ফিরলাম। ফিরে এসে দেখি ওরা বদলী হয়ে চলে গেছে । কোথায় কেউ বলতে পারলোনা। মানুষ মাঝে মাঝে কেন বাঁচতে চায়না সেদিন তা বুঝতে পেরেছিলাম। অবুঝের মতো অনেক কিছুই করেছিলাম যা শুনলে আৎকে উঠতে হবে। এরপর জীবনের গতি থেমে পড়ল আমার। ভালোর হাত ছেড়ে মন্দের দিকে হাত বাড়ালাম। এভাবে অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে এস.এস.সি পাশ করলাম। কলেজের ভর্তির ফরম নিতে বাবার সাথে ঢাকা গেলাম। ফেরার পথে সাভারের কাছে বাস জ্যামে আটকা পড়ল। এ.সি বাস, তাই কোন অসুবিধে ছিলনা। জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখি ছেলেমেয়েরা স্কুলে যাচেছ। হঠাৎ চোখ আটকে গেল একটি স্কুল ড্রেসের উপর। ঐতো আমার হারিয়ে যাওয়া ভালোবাসা। পাশে বাবা না থাকলে কি করতাম জানিনা, তবে সেদিন কিছুই করিনি। সারাপথ মুখখানির কথা চিন া করতে করতে আসলাম, আর কাপুরুষ বলে নিজেকে ঘৃণা করতে শিখলাম। প্রায় দুবছর পর তাকে আবার দেখলাম। এতটুক প্রশান ি নিয়ে জীবনের পথে চলা শুরু করলাম। কোন কিছুতে আর মন লাগাতে পারলাম না। স্মৃতি গুলো এত কষ্ট দিত তা বলে বোঝানো যাবেনা। বন্ধুরা স্বান না দিত এবং এটাও জানতো যে এ শুধু তাদের ব্যর্থ প্রয়াস। এরই মধ্যে এইচ.এস.সি পাশ করলাম এবং একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলাম। সৃষ্টিকর্তার কাছে শ ধু একটাই প্রার্থনা করতাম যেন একবার তার সাথে দেখা হয়। মানুষের একটা আশা তিনি বোধহয় পুরণ করেন। আবার দেখা হলো তার সাথে, ঢাকায়। অবশ্য এবার সে একা ছিলনা। হৃদয়ে নতুন করে আঘাত পেতে চাইনি বলেই ফিরে চলে আসলাম। অবাক কান্ড, সে ঠিকই চিনেছিল এবং ডেকেওছিল আমার নাম ধরে। না শোনার ভান করে ফিরে আসলাম। আবার সাত বছর পর আমাদের দেখা হলো। কিন্তু এবার আর মনে কোনো দোলা জাগলোনা, ব্যথাটাই শুধু বাড়ল। সে আজ অন্যের, একথা জানার পর তার জন্য যেসব পাগলামী করেছি সেগুলো ছেড়ে দিয়ে নতুন করে জীবন শুরু করতে চাইলাম। আবারও বাধ সাধলো নিয়তি। একদিন এক বন্ধুর সাথে সংসদ ভবনে বেড়াতে গিয়েছিলাম। কিছুন পর একটি ছেলে আমায় ডাকলো। নামটি শুনে চমকে তাকালাম। কারন এই নামে পৃথিবীতে আমাকে একজনই ডাকতো। মনে করলাম সে হয়ত ভুল করছে। পরে ভুল ভাঙ্গলো। সে আমাকে এক জায়গায় নিতে এসেছে। বন্ধুর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে কিছু দুর গিয়ে দেখি সে দাঁড়িয়ে আছে। কি এক দুর্নিবার আকর্ষনে ফিরতে পারলামনা। হয়ত দেখার লোভটা ছিল। আমাকে থেমে যেতে দেখে সেই কাছে চলে এলো। বহুদিন পর আবার মুখোমুখি দাঁড়ালাম আমরা। ভিতরটা দুমরে মুচড়ে যাচিছল । কত দিনের কত কথা জমে আছে, কিন্তু কিছু্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্্ই বলতে পারছিলামনা। সেই প্রথমে কথা বললো। আহ! কতদিন পর তার কথা শুনলাম। কান্না মেশানো অভিমান বারবার বেড়িয়ে আসতে চাইছিল। অনেক কথা হলো। আমার কথা শুনে খুব দুঃখ পেল। সবচেয়ে আহত হয়েছিল আমার রেজাল্ট শুনে। বলল নতুন করে শুরু করতে। বলেছিলাম চেষ্ঠা করবো। ভালোবাসার মানুষের কথা জিজ্ঞাসা করল। বললাম একজনকে কথা দিয়েছিলাম, কিন্তু সে কথা রাখেনি। শুনে চুপ হয়ে গেল ও। তারপর আমাকে বলল ওর হাত ধরতে। বলেছিলাম সে অধিকার আমি হারিয়ে ফেলেছি। ও আমার কাছে ফিরে আসতে চাইলো, কিন্তু আমি তাকে ফিরিয়ে দিয়েছিলাম। বলেছিলাম তার কাছে আমার আর নতুন করে কিছু পাওয়ার নেই। আমার শুদ্ধ ভালোবাসার প্রতীক ছিল সে। সেই শুদ্ধতা সে গড়েছে , আবার ভেঙ্গেছেও সে নিজে । এখন বাকী আছে শুধু তার শরীর, যার কোন প্রয়োজন আমার নেই। আমাকে অপ্রস্তুত করে দিয়ে খুব কেঁদেছিল সে। যে চোঁখের জন্য নিজের সব কিছু বিসর্জন দিয়েছি, সেই চোঁখের জল আমার ভিতরটা গুঁড়িয়ে দিয়েছিল সেদিন, কিন্তু পরাজিত করতে পারেনি । তাকে বোঝালাম যে তার বর্তমানের সাথীটি আমার চেয়ে অনেক ভালো, আমি এখন একজন অন ঃসার শ ন্য এক মানুষ যার অভিধানে ভালোবাসা বলে কোনো শব্দ নেই। এরকম অনেক কিছুই বলেছি তাকে। শুধু বলিনি তার জন্য কাটানো নিঘর্ুম রাতের কথা, পশুর মতো বোবা কান্না করার কথা, সাত বছর ধরে প্রতিদিন একটি করে চিঠি লেখার কথা, জোছনা রাতে একাকী হাটার কথা, জন্মদিনে উপহার কিনে নদীতে বিসর্জন দেয়ার কথা। এসব কিছুই বলিনি তাকে। বলিনি এক দুঃখী ছেলের ব্যথা, তার পরিবর্তিত জীবনের কথা। বিদায় বেলায় শুধু বলেছিলাম সে যেন সুখী হয়। ফেরার পথে তার দেয়া ঠিকানা ও ফোন নাম্বার পুড়িয়ে ফেলেছি পাছে যদি আবার দেখার লোভ হয়। ফেরার পথে স্কুটারচালক কেমন করে যেন তাকিয়েছিল। হয়ত দুফোঁটা চোঁখের জল ফেলেছিলাম। এই ছিল তার সাথে আমার শেষ দেখা। যে ছেলেটি ওকে ভালোবাসে তার ভালোবাসার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সেদিন আমি ফিরিয়ে দিয়েছি আমার জীবনের সবচেয়ে বড় সমপদ। আমি চাইনি ছেলেটির অবস্থা আমার মতো হোক। আমার ভালোবাসার মানুষকে ফিরিয়ে দেবার সাহস আমার আছে, কিন্তু কারও ভালোবাসাকে অপমান করার মতো সাহস আমার নেই।"
শুরু করেছিলাম একটি স্বপ্নের কথা বলে। আজ তাকে খুব মনে পড়ছে। কেমন আছে সে? আজ তাকে বলবো, "ভালোবাসি তোমায়, ভালোবেসেছিলাম, ভালোবেসে যাব যততদিন বেঁচে থাকি। আমি আর এখন কাঁদিনা। যখনই তোমাকে মনে পড়ে, চোখ বন্ধ করে তোমার কথা ভাবি। তখন মনেই হয়না যে আমি একা। তবে মাঝে মাঝে স্মৃতি গুলো বড় বেয়ারা হয়ে যায়। ধুলো হয়ে চোখে ঢুকে যায়। অবাধ্য চোখ তখন কয়েক ফোঁটা জল ফেলে। আমার কি দোষ বলো, আমিতো কাঁদতে চাইনা। চোখে ধ লো পড়লে তাতো জলে ভরে উঠবেই।"
আজ আমি কোন দুঃস্বপ্ন দেখতে চাইনা। আমার সমস সুখের বিনিময়ে হলেও সে যেন সুখে থাকে অহর্নিশ , এই সুখ স্বপ্নই আমি চিরদিন দেখতে চাই। এতটুকু প্রশান ি নিয়ে আমি বাঁচতে চাই।
ফেরারী সময় আজ বলে আমায়,
ফিরে এসো আজ তোমার ভালোবাসায়
ফিরতে চেয়েছি আমি, অনেক দিন পর
তবুও ফেরা হলোনা আমার
ফেরারী সময় আবারও ডাকে আমায়
ফেরা কভু হয়না আমার
দৃষ্টি প্রদীপ জ্বেলে চেয়ে দেখি আমি
ভুলে ভরা জীবনের শুধু পরাজয়।
২| ৩০ শে জানুয়ারি, ২০০৭ রাত ১১:৫৪
ভাবনা বলেছেন: কষ্ট পেলাম। দোয়া করি, আপনার কষ্ট যেন কমে।
©somewhere in net ltd.
১|
২২ শে নভেম্বর, ২০০৬ দুপুর ১২:১৮
নাহিদ বলেছেন: প্রেম কখনো হাসায়
কখনো কাদায়
প্রেম কখনো গভীর নিদ্রায় সুখ পাখিকে
বিভোর ভাবে স্বপ্ন দেখায়
কখনো স্বপ্ন ভেঙ্গে
উদাসীনভাবে মরুভূমিতে হেছড়ায়।