নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিশ্বজোড়া পাঠশালাতে সবাই ছাত্র-ছাত্রী, \nনিত্য নতুন শিখছি মোরা সদাই দিবা-রাত্রী!

নীল আকাশ

এই ব্লগ-বাড়ির সমস্ত লেখা সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। লেখকের অনুমতি ছাড়া এই ব্লগ-বাড়ির কোনো লেখা অন্যকোথাও প্রকাশ করা যাবে না।

নীল আকাশ › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প: নাবিলা কাহিনী ২ – হৃদয়ে রঙধনু!

৩১ শে মার্চ, ২০১৯ বিকাল ৪:৩৮



সন্ধ্যা প্রায় সাতটা বাজে। রাস্তায় প্রচন্ড জ্যামে প্রায় একঘন্টা দেরী করে চেম্বারে পৌছে নাবিলা দেখল, পাঁচজন পেশেন্ট ওয়েটিং রুমে বসে আছে। চেয়ারে বসেই নাবিলা তাড়াতাড়ি রিসিপশনিস্টকে ফোনে ডেকে পাঠাল। প্রতিটা পেশেন্টের একটা হিসট্রি ফাইল থাকে, কথা বলার আগে সেগুলি ভালোমত আবার দেখে নিতে হয়। ওর কাছে যেইসব পেশেন্ট আসে তাদের মানসিক সমস্যাগুলি জটিল পর্যায়ের হয়। ট্রিটমেন্টগুলিও নরমাল নয় যে, হাল্কা একটু শুনেই প্রেসক্রিপশন ধরিয়ে দিলেই হবে। মাঝে মাঝে এত জটিল সব কেস আসে যে, নিজেরই মাথা ধরে যায় কথা শুনতে শুনতে! আজকে কপালে কি আছে কে জানে……..

এক
শফিক যখন রুমে ঢুকল তখন নাবিলা আয়েশ করে চা খাচ্ছিল। চা খাওয়া বন্ধ করে শফিকের পেশেন্ট ফাইলটা হাতে নিল নাবিলা। একদম নতুন, আজকেই তাহলে প্রথম এসেছে! এন্ট্রি টাইম ধরলে প্রায় দেড়ঘন্টা ধরে বসে আছে। নাবিলা শফিকের প্রাথমিক তথ্যগুলি একবার ভালো করে দেখে নিল।
নাম - শফিকুর রহমান।
বয়স - ২৩ বছর
বৈবাহিক অবস্থা - অবিবাহিত
পেশা - ছাত্র, স্নাতক পর্যায়ে চতুর্থ বর্ষ, অর্থনীতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
পরিবারের অবস্থান - দিনাজপুর, বর্তমানে ঢাকা ভার্সিটির এসএম হলে থাকে।
অন্যান্য - তিনভাই বোনের মধ্যে সবচেয়ে বড়, একমাত্র ছেলে, স্কুল কলেজও দিনাজপুর শহরে। বাবা ব্যবসা করেন, মা গৃহিণী।
সমস্যা – কোন তথ্য দেয়নি, তার মানে নিজেই পেশেন্ট অথবা সামনা সামনি এই বিষয়ে কথা বলে জানাতে চাইছে।

নাবিলা শফিকের দিকে এবার ভালো করে তাকালো। প্রথম ইম্প্রেশনটাই অনেক কিছু বলে দেয়। গায়ের কাপড়চোপড় কিছুটা অগুছালো আর ভাঁজপড়া। শার্টের পকেটে সিগারেটের প্যাকেট দেখা যাচ্ছে। ফেস ইম্প্রেশন চিন্তাযুক্ত, মনে হচ্ছে কোন একটা মানসিক ডিপ্রেশনের মধ্যে আছে! নাবিলা ছেলেটাকে বসতে বলল। শফিক চেয়ারে অপ্রস্তুত ভঙ্গীতে মাথা নীচু করে বসল, যেন কোন কারনে কিছুটা লজ্জিত!
-শফিক সাহেব, আপনি কি আমার কাছে স্বেচ্ছায় এসেছেন? না কেউ আপনাকে সাজেস্ট করেছে?
-আমার হলের রুমমেট আপনার মনোবিজ্ঞানের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। সবকিছু শুনে ওই আমাকে আপনার কাছে আসতে বলল।
-আপনার কি ধরনের সমস্যা হচ্ছে?
-জী, আমি আসলে প্রচন্ড মানসিক ভাবে দুর্বল হয়ে পড়ছি দিন দিন। নিজের উপর কন্ট্রোল প্রায় থাকছেই না। লেখাপড়া প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। সারাদিন কিছুই ভালোলাগে না। প্রচন্ড বিসন্নতায় ভুগি সারাদিন। কি করব আর কি করা উচিৎ কিছুই বুঝতে পারছি না।
-আপনার সমস্যার সমাধান দেবার জন্য আমি চেস্টা করব। কিন্তু সেজন্য আপনার পূর্ণ সহযোগিতা প্রয়োজন। আমি আপনার সবকিছু জানতে চাই। একেবারে ছোটবেলা থেকে যা যা আপনার মনে আছে, সবকিছু আমাকে খুলে বলুন। আমি আপনার এবং আপনার স্মৃতির সাথে প্রথমে পরিচিত হতে চাই! বিশেষ করে এই মানসিক সমস্যাটা যেদিন থেকে শুরু হয়েছে, সেদিন থেকে যতটা পারেন ডিটেইলস বলার চেস্টা করবেন। আমি যত ডিটেইলস জানব, আমি ততই ভালোভাবে ট্রিটমেন্ট করতে পারব। কিন্তু, তার আগে আপনি বাথরুম থেকে হাতমুখ ধুয়ে প্রথমে ফ্রেস হয়ে আসুন। আপনাকে যথেষ্টই টেন্সড মনে হচ্ছে। নার্ভগুলিকে রিলাক্স করে দিন। নিজের শৈশবের কোন মধুর চমৎকার স্মৃতির কথা ভাবুন। মন এমনিতেই শান্ত হয়ে আসবে। আপনি রিলাক্সড হয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় আসার পরেই আমি আপনার সাথে কথা বলব!

দুই
প্রায় দশমিনিট পরে ফ্রেস হয়ে শফিক যখন ফিরে আসল, তখন অনেকটাই রিলাক্সড মনে হলো ওকে। বারান্দায় যেয়ে একটা সিগারেটও খেয়ে এসেছে। এটা খাওয়া অল্প কিছুদিন হলো ও শুরু করেছে। নাবিলার সামনে চেয়ারে বসার পর নাবিলা ওকে এককাপ চা খেতে দিল। প্রতিটা মানুষের চা খাবার ভঙ্গি একেক রকম। নাবিলা দেখতে চাচ্ছে শফিক কিভাবে চা খায়? বেশ সময় নিয়ে ছোট ছোট চুমুকে চা শেষ করল শফিক। ওর চা খাবার ধরন দেখে নাবিলার মনে হলো ছেলেটা কোন জটিল সমস্যায় পড়েছে। এই বয়সি ছেলেমেয়েদের খুব কমন কিছু প্রবলেম থাকে, তবে শফিকের কাছ থেকে সবকিছু না শুনে কোন আস্যাম্পশন করা যাবে না। মানুষের মন খুবই বিচিত্র, কত অদ্ভুত কাহিনী যে ওকে আজ পর্যন্ত শুনতে হয়েছে তার কোন শেষ নেই! চা খাওয়া শেষ হবার পর নাবিলা শফিককে নিয়ে নরম একটা সোফায় এনে বসাল আর বড় লাইটটা নিভিয়ে দিয়ে হাল্কা পাওয়ারের একটা লাইট জ্বালিয়ে দিয়ে একটু দূরে যেয়ে বসল। লজ্জা, জড়তা এইসব সমস্যার কারনে অনেক সময় পেশেন্ট ওর সামনে ঠিক মতো কথা বলতে পারে না। তাই ও এই ব্যবস্থা করেছে এবং এতে বেশ ভালোই ফল পাচ্ছে। খুক খুক করে কয়েকটা কাশি দিয়ে শফিক ওর জীবনের কাহিনী বলা শুরু করল………

তিন
শৈশব থেকে কলেজ জীবন পর্যন্ত দিনাজপুরে কাটানো শফিকের মুখ থেকে যা যা শুনল নাবিলা, সেগুলি বড়ই সাদামাটা মনে হলো। যৌথ পরিবারে বড় হলে যেমনটা হয় অনেকটা সেরকমই। মফস্বলের ছেলেরা ব্রিলিয়ান্ট হলে যা হয়, শফিকের তাই হলো। ঢাকা ভার্সিটিতে ভালো একটা সাবজেক্টে প্রথমবারই চান্স পেয়ে গেল। হিসট্রি ফাইলটা হাতেই আছে নাবিলার কিন্তু ভার্সিটির থার্ডইয়ার পর্যন্তও সামান্য কিছু তথ্য ছাড়া তেমন কিছুই লেখার নেই। একটু অবাকই হলো নাবিলা, ঘটনা কি? এর মধ্যে আবার শফিক ব্রেক নিয়ে বাথরুমে গেল। পরের পর্ব বলার আগে কিছুটা সময় নিয়ে হয়ত মনের ভিতরে সবকিছু গুছিয়ে নিচ্ছে। শফিক ফিরে এসে প্রায় সাথে সাথেই কথা শুরু করল-

আমাদের পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থা যথেষ্ঠই ভালো। বাসা থেকে পড়াশুনা করার জন্য ফুল সাপোর্ট পাওয়া যায়। টাকাপয়সার অভাব কখনোই হতো না। সেকারনে প্রাইভেট টিউশনি করানোর দরকারই হতো না। চতুর্থবর্ষে উঠার পর বিদেশে যেয়ে বাকি পড়াশুনার করার ইচ্ছে বাসায় জানাতেই বাবা মা দুইজনই খুব করে রাগ করলেন, কোনভাবেই আমাকে দেশের বাইরে যেতে দিবেন না। একমাত্র ছেলেকে এত সহজে কোন বাবা মা এভাবে বাইরে চলে যেতে দেবে, বলুন? GMAT TOFEL দেবার জন্য বইপত্র, কোচিং, পরীক্ষা দিতে টাকাপয়সা লাগবে, বাসা থেকে তো এই বিষয়ে কিছুই সাহায্য পাব না। হলের একজন বড় ভাই একটা টিউশনি যোগার করে দিলেন। ইংলিশ মিডিয়ামের স্টুডেন্ট, বাসায় যেয়ে পড়াতে হবে, বেতন ভালো। হিসাব করে দেখলাম চার বা পাঁচমাস পড়ালেই আমার যা টাকা লাগে সেটা পেয়ে যাব। টিউশনিটা বনানীতে। বাচ্চামেয়ে, স্ট্যান্ডার্ড থ্রিতে পড়ে। সপ্তাহে চারদিন, একঘন্টা করে পড়াতে হবে। এদের অর্থনৈতিক অবস্থা যথেষ্টই ভালো, বিরাট এপার্টমেন্ট। প্রথমদিনই স্টুডেন্টের বাবার সাথে পরিচয় হলো। আবিদুর রহমান, বিশাল ব্যবসা করেন, প্রায় পঞ্চাশের কাছাকাছি বয়স, ব্যবহার খুবই ভালো। আমি পড়ানো শুরু করলাম সেদিন থেকেই। বিকাল তিনটা থেকে চারটা। দেখতে দেখতেই প্রায় একসপ্তাহ পড়িয়ে ফেললাম।

এই পর্যন্ত এসেই শফিক হঠাৎ চুপ হয়ে গেল। কিছুক্ষন মাথা নীচু করে বসে থাকল। প্রায় তিন মিনিট পরে যখন আবার কথা শুরু করল, তখন কথা বলার টোনটা একেবারেই বদলে গেল। মৃদুস্বরে এবার যা বলল, সেটা শুনার জন্য নাবিলা মোটেও প্রস্তুত ছিল না.....

চার
-আপনি নাস্তা না খেয়ে প্রায়ই চলে যান কেন?
শফিক মাথা ঘুরিয়ে তাকিয়ে দেখল ওর ঠিক পিছনেই পাঁচফুট তিনইঞ্চি উচ্চতার একজন নারীমূর্তি দাঁড়িয়ে ওর দিকে তাকিয়ে আছেন। বয়স ঠিকমতো আন্দাজ করা গেল না। বুঝাই যাচ্ছে নিজের বয়সকে খুব সুন্দর করে আড়াল করার অসাধারন একটা ক্ষমতা উনার আছে। লালরং এর একটি শাড়ি পড়ে আছেন। মনে হচ্ছে, সেখান থেকে একটা হালকা লাল আভা সারা ঘরে ছড়িয়ে পরে পুরো রুমটাই যেন আলোকিত করে রেখেছে। শরীরে খুব হালকা মিষ্টি একটা সুঘ্রান। যেন খুব কাছে, আবার মনে হয় অনেক দুর থেকে যেন ভেসে ভেসে আসছে। ভদ্রমহিলার চোখের দৃষ্টিতে কিছু একটা আছে! ভদ্রমহিলাকে অপরূপা সুন্দরী বলা যায় না হয়তো, কিন্তু কি যেন এক মায়াময় যাদুকরী শক্তি আছে উনার ভিতরে! একবার তাকালেই দৃষ্টি ফেরানো যায় না সহসা। শফিক যেন চন্দ্রাহতের মতো সামনে তাকিয়ে রইল। একমুহুর্তের জন্য শফিকের পুরো পৃথিবী স্তব্ধ হয়ে যায়! কি অসহ্য একটা অচেনা অনুভুতি এসে ওর সমস্ত যুক্তিতর্ককে ছাপিয়ে, ওকে পুরোপুরি আছন্ন করে ফেলল! শফিক যখন নিজের নিয়ন্ত্রন ফিরে পেল, ততক্ষনে মহিলা চলে গিয়েছেন। শফিক নিজের স্টুডেন্ট, বুশরার কাছে জানতে পারল, এটা ওর মা, নাম শায়লা আবিদ। মহিলা গৃহিণী, বাসায়ই থাকেন। চরম লজ্জা নিয়ে শফিক সেদিন সাথে সাথেই ঐ বাসা থেকে বের হয়ে আসল।

এই ভয়ংকর অবস্থা থেকে শফিককে বের হয়ে আসতেই হবে, যেভাবেই হোক। পরেরদিন ক্লাসে যেয়ে ও অপেক্ষা করছে বুশরার মা'র জন্য। গতকালকের ঘটনার জন্য প্রথমেই মাপ চেয়ে নিতে হবে ওর। কিন্তু শফিক বুঝতেই পারেনি হঠাৎ আবির্ভূত সেই অচেনা অনুভূতির মেঘকে চিনতে ও বিরাট ভুল করে ফেলেছে। নিজের অগোচরেই তাকে দেখার জন্য ওর মন ব্যাকুল হয়ে উঠছে আর সময়ের সাথে সাথে সেটা বাড়তেই থাকে। পড়া শেষ হবার পর যখন বুশরা রুম থেকে বের হয়ে গেল, ঠিক তখনই শায়লা রুমে এসে ঢুকলেন। শায়লাকে দেখে হঠাৎই শফিকের হৃদস্পন্দন এতই বেড়ে গেল যে, শফিক ভয় পেল এই মহিলা আবার সেটা না শুনে ফেলেন! শায়লা ওর সামনে কাছে এসে দাড়াল, চোখে শফিকের অজানা অচেনা এক দৃষ্টি! সেই দৃষ্টিতে শফিকের সবকিছু যেন বড়ই তালগোল পাকিয়ে গেল………….

পাঁচ
শুক্রবার সকালবেলা নাস্তা করার পর নাবিলা ওর ষ্টাডিরুমে এককাপ গরম কফি নিয়ে এসে বসল। সাধারনত জটিল কোন কেস না হলে, পেশেন্টের হিস্ট্রি ফাইল ও বাসায় নিয়ে আসে না। শফিকের এই কেস জটিল নয় কিন্তু ওকে কিছুটা সন্দেহের দোলাচলের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। সেইদিনের পর শফিকের সাথে নাবিলা আরও দুইটা সেশন করেছে। ইচ্ছে করেই শায়লার সাথে দেখা হবার ঘটনাটা আরো দুইদিন শুনতে চেয়েছে ও। প্রতিবারই কিছু নতুন নতুন তথ্য পাওয়া গেছে আবার কিছু তথ্য পুরানো তথ্যগুলির সাথে কনফ্লিক্ট করছে। শফিকের ফাইলে যেসব তথ্যগুলি ওকে সন্দেহের মধ্যে ফেলেছে সেগুলি ও আলাদা করে লিখে রেখেছে আর সেগুলিই প্রথম পড়া শুরু করল।

শায়লা এবং শফিকের দেখা-
১। প্রথম দেখার সাথে সাথেই শফিক কিভাবে শায়লার হাইট এত নিখুঁতভাবে বলতে পারল? যেখানে বয়স নিয়ে কোনই আন্দাজ করতে পারল নি?
২। শফিক প্রথমদিন শায়লার পরনে লালরং এর একটা শাড়ির কথা বললেও পরের দিনগুলিতে একবারও শাড়ি বা শাড়ির রং এর কথা বলেনি, কেন?
৩। শায়লাকে প্রথমবার দেখেই যদি শফিক এতই বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে, তাহলে কেন শফিক পরেরদিনই আবার সেখানেই ক্লাস নিতে গেল?
৪। হুট করে শায়লা নিজের মেয়ের টিচারের এত কাছে এসে কেন দাঁড়াবে?
৫। শায়লার চেহারা কি শফিকের পূর্ব পরিচিত কারোর সাথে মিলে গেছে? কিংবা শায়লাই শফিকের পূর্ব পরিচিত! হুট করে অনেকদিন পরে দেখা হয়েছে?
৬। শায়লার সাথে শফিকের সর্ম্পক কি একমুখী? নাকি উভয়মুখী? শায়লা সর্ম্পকে শফিক অনেক প্রশ্নেরই উত্তর দিতে পারে না কেন?

তাছাড়া, শফিক আসলে কি জন্য নাবিলার কাছে এসেছে সেটাও খুব রহস্যময়। শেষ দুই সেশনে এই বিষয়টা নিয়ে নাবিলা শফিকের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করার চেস্টা করেছে কিন্তু কোন সিংগুলার পয়েন্টে আসতে পারেনি।

অনেকগুলি কিন্তু এসে যাচ্ছে, সেইগুলির জট না খোলা পর্যন্ত আসলে নাবিলার এখন কিছুই করার নেই। শফিককে আরো কিছু তথ্যের জন্য একটা ইমেইল দেয়া হয়েছিল, সেটার উত্তর এখনও হাতে এসে পৌছায়নি। শফিকের কাউন্সেলিং শুরু করার আগেই মাঠ পর্যায়ের কিছু তথ্য যোগার করা এখন খুব জরুরি হয়ে পড়েছে। নাবিলা ছোট ছোট তিনটা কাগজে আলাদা ভাবে দ্রুত ওর মনের কিন্তুগুলিকে লিখতে শুরু করল........................

ছয়
একরাশ মুগ্ধতা নিয়ে নাবিলা ওর হাতের তিনটা রিপোর্ট পড়ছে। চমৎকার ভাষায় বিস্তারিত বর্ননা করে লেখা, এমনকি কিছু কিছু জায়গায় ওর জিজ্ঞাসার বাইরে যেয়েও বেশ কিছু তথ্য যোগার করা হয়েছে। এই ছেলেটা এতই কাজের যে মাঝে মাঝে নাবিলা নিজেই হতবাক হয়ে যায়, কিভাবে ও রুপমকে খুঁজে পেল। রুপম নিজে থেকে সেইদিন ওর কাছে না আসলে মনে হয় কোনদিনও এই ছেলের নাগাল ও পেত না। সেই গল্প না হয় আরেকদিন বলা যাবে।
-আপনার ইন্টিউশন পাওয়ার দিন দিন দুর্দান্ত হয়ে উঠছে, রুপম? কিভাবে আপনার মনে এই বিষয়টা আসল?
-আপনি আমাকে সাধারনত ছোটখাট ব্যাপারে কখনোই ইনভলব করেন না। তাছাড়া প্রথমে ছেলেটার ব্যাপারে খোঁজ নিতে যেয়ে কিছু অদ্ভুত তথ্য পেয়েছি, যেটা আপনার কাগজগুলির সাথে কন্ট্রাডিক্ট করে। আপনি নিশ্চয়ই জানতেন না, ছেলেটা নিয়মিত পাওয়ার-৩০ ঔষধ ক্রয় করে! আর এটা দিয়ে ও নিশ্চয়ই পায়ে তেল মালিশ করে না? বাধ্য হয়েই নিজের মতো ইনভেস্টিগেশন চালিয়েছি আমি।
-দারুন! আমি আপনাকে আরও দুইজনের ব্যাপারে খোঁজ নিতে অনুরোধ করব। যেই ছেলেটা শফিককে টিউশনিটা যোগার করে দিয়েছিল আর শায়লা আবিদের ব্যক্তিগত গাড়ির ড্রাইভার। আচ্ছা, শফিকের ব্যাংক স্টেটমেন্ট কি যোগার করা যাবে কোনভাবে? আমি ওর জমা আর খরচের প্যার্টানটা জানতে চাচ্ছি। এই ধরুন, আজকে থেকে গত নয় মাসের? শফিকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট এবং ন্যাশনাল আইডি কার্ডের নাম্বার ওর কাছে চেয়েছি, পেলেই আপনাকে এসএমএস করে দিয়ে দেব।
-এই দেশে সবই সম্ভব, তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে খরচপাতি তো লাগবেই। সবকাজ তো আর বিনা পয়সায় হবে না!
-রুপম, আপনি জানেন, এইসব ইনভেস্টিগেশন আমি আমার একান্তই শখের জন্য করি। টাকাপয়সা কোন ব্যাপারই না। আপনি কাজ শেষ হলে বিল সাবমিট করলেই দিয়ে দেব। এটা একদম নতুন সাবজেক্টের কেস, দারুন মজা পাচ্ছি। আমি এটার উপর ডিটেইল রিপোর্ট লিখতে চাই।

রুপম কথা আর না বাড়িয়ে চায়ের কাপ টেবিলে রেখে নাবিলার বাসা থেকে বেড়িয়ে আসল। নাবিলা মোবাইলটা হাতে নিল, শফিক ওর ইমেইলের রিপ্লাই এখনও দেয়নি। রিপ্লাইটা খুবই দরকার ওর, বিশেষ করে রুপমের জন্য। ছেলেটা এমনিতেই খুবই ব্যস্ত থাকে, নিজের পুলিশের চাকরীর ফাঁকে ফাঁকে কাজগুলি করে দেয় শুধুই নাবিলার প্রতি ওর অকৃত্রিম কৃতজ্ঞতা থেকে…….

সাত
নাবিলা শফিকের ইমেইল রিপ্লাইটা আবার ভালো করে পড়ল। আন্ডার লাইন করা অংশগুলি নিয়ে আলোচনা করতে হবে শফিকের সাথে!
-শফিক সাহেব, শায়লাকে আপনি কতটুকু পছন্দ করেন?
শফিক কিছুক্ষন চুপ করে থেকে মাথা নীচু করে বলা শুরু করল-
-শায়লাকে আমি অসম্ভব ভালোবাসি। শায়লা আমার জীবনের সবকিছু। এটা যে বিরাট অন্যায় কাজ হচ্ছে সেটা আমি জানি। কিন্তু শায়লা কাছে এলেই আমি একদম অবুঝের মতো আচরন করতে শুরু করি।
-আপনি সর্ম্পকের এত গভিরে কিভাবে গেলেন? শায়লাও বা কিভাবে এইসব এল্যাও করলো?
-শায়লাও আমাকে অনেক পছন্দ করে। একবার ওর সাথে ঝগড়া করে টিউশনি ছেড়ে দিব বলেছিলাম, তখন শায়লা আমাকে ঘুমের ঔষধ খেয়ে সুইসাইড করার ভয় পর্যন্ত দেখিয়েছিল। আরেকবার, কয়েকদিন বাসায় যাইনি দেখে আমাকে খুঁজতে ভার্সিটির হলে এসে হাজির! একবার আবিদ সাহেব দেশের বাইরে গেলে বাচ্চাটা কার কাছে যেন রেখে এসে, আমার সাথে দুইদিন তিনরাত কক্সবাজারেও ঘুরে এসেছিল। আমি যা চাইতাম বা যেভাবে চাইতাম ও সেভাবেই আমার কাছে আসত।
-আপনার সাথে শায়লা কি ছবি তুলে কিংবা এসএমএস করে?
-না, কোন ছবি তুলে না। তবে মাঝে মাঝে এসএমএস করে কিন্তু ওর বাসায় গেলে সেগুলি আমার মোবাইল থেকে নিজেই ডিলিট করে দেয়।
-রিছেন্ট কোন এসএমএস থাকলে বা করলে সাথে সাথেই আমাকে পাঠিয়ে দিবেন। যদিও এগুলি একান্তই ব্যক্তিগত কিন্তু শায়লাকে বুঝার জন্য এসএমএসগুলি আমার খুব দরকার!
-আমি আসলে খুব বড় বিপদে আছি। শায়লার হ্যাজবেন্ড স্ট্রেইট আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছেন।
-খুবই স্বাভাবিক। যেকোন হ্যাজবেন্ডই নিজের স্ত্রীর সাথে এইসব আচরনে খুবই ক্ষিপ্ত হয়ে যেতে পারে। আপনার কথা মতো উনি যথেষ্ঠই প্রভাবশালী মানুষ। আবিদ সাহেবের হুমকি আপনার জন্য ভয়াবহ হতে পারে। আপনার এখনই সাবধান হয়ে যাওয়া উচিৎ। ডেস্পারেট মানুষ যেকোন কিছুই করতে পারে।
-আমার শায়লার সাথে খুব করে দেখা করতে ইচ্ছে করে! আমি ওকে সত্যই ভালোবাসি, প্রচন্ডভাবে ভালোবাসি। আমি ওকে সারাজীবন আমার করেই পেতে চাই!
-আপনি শায়লার গভির প্রেমে পড়েছেন এটা অতিশয় সত্য কিন্তু আপনাদের সম্পর্ক আপনি যে দৃষ্টিতে দেখছেন, শায়লা কি আসলেই সেভাবে দেখছে? ভেবে দেখুন! উনি তো আপনাকে টার্গেট করেছেন ভোগ্যপন্য হিসেবে। উনি আপনাকে প্রেমে পড়তে বাধ্য করেছে, আর আপনি এখনও তার প্রেমে নিয়মিত হাবুডুবু খাচ্ছেন।
-মিথ্যা কথা। শায়লা আমাকে ভালবাসে। ও নিজেই আমাকে সেটা বলেছে।
-তাহলে শায়লার সাথে আপনার শারীরিক সম্পর্কের কথা আমার কাছে গোপন করেছেন কেন? আপনি প্রথমদিনই যদি সবকিছু অল্প হলেও বলে যেতেন, তাহলে আমার খুব সুবিধা হত। আপনি শায়লার শারীরিক আনন্দের জন্য যেসব ঔষুধ খেতেন সেগুলির সাইড এফেক্ট খুবই ভয়াবহ! আপনার শারীরিক সমস্যাগুলির কারন বের করতে যেয়ে আমি এর খোঁজ পেয়েছি। আমার কাছে লুকানো ঠিক হয়নি। কিছুদিন পরেই আপনি পুরুষত্বহীন হয়ে যেতেন আর শায়লা হয়ত আবার নতুন ছেলে খোঁজা শুরু করত। আচ্ছা, এই ঔষুধের দোকানের এ্যাড্রেসটা কে দিয়েছে আপনাকে? নিশ্চয়ই শায়লা, তাইনা?
- হ্যাঁ। কিন্তু আপনি এত কিছু জানলেন কিভাবে?
চরম অবিশ্বাস চোখে নিয়ে শফিক তাকিয়ে আছে নাবিলার দিকে।
-শফিক সাহেব, আমি কোন জাদু জানিনা। আপনার এই সমস্যাটা আমার কাছে নতুন, বিশেষ করে শায়লার ব্যাপারটা। এই দেশে আসার পর এইপ্রথম এইরকম পেশেন্ট পেলাম। তাই আমি ব্যক্তিগতভাবে এর জন্য আলাদা করে খোঁজখবর নিয়েছি। তবে যা করেছি শুধুই আপনার চিকিৎসার প্রয়োজনেই করেছি, অন্য কিছু নয়! যদিও শায়লার এই অনৈতিক সম্পর্কের জন্য ওকে খুব বেশি দায়ী করা ঠিক হবে না।
-কেন শায়লাকে দায়ী করা ঠিক হবে না?
-আবিদ সাহেবের চরিত্রও যথেষ্ট খারাপ। উনারও একজন রক্ষিতা আছে, ঠিক যেভাবে শায়লা আপনাকে রেখেছে। সাধে কি শায়লা এইসব কাজে জড়িয়েছে? আপনি হচ্ছেন মি. আবিদ আর মিসেস আবিদের কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্টের হাতিয়ার। শায়লা এই সম্পর্কটাই তৈরি করেছে আবিদের সাথে কিছু বিষয়ে অলটাইম বারগেইন করার জন্য।
-আপনি যতটা নিজেকে বুদ্ধিমান মনে করেন তার চেয়েও বুদ্ধিমতী মানুষ যে আছে, সেটা নিশ্চয়ই এখন বিশ্বাস করেন! শুরুতে আপনি যা ভেবেছিলেন তা হয়নি, হবেও না। কারন কি হবে বা কি হবেনা সেটা সম্ভবত আপনি নিয়ন্ত্রন করেন না।

শফিক কিছুক্ষন চুপ করে রইল। অনেক কিছুই ওর কাছে আগে অস্পষ্ট ছিল, আস্তে আস্তে জট খুলছে….
-আমার আসলে কি করা উচিৎ? আমার তো সবকিছুই তালগোল পাঁকিয়ে যাচ্ছে!
-শায়লা যে আপনাকে ভালোবাসে সেটার আপনি কি কোন প্রমান দেখাতে পারবেন?
-কি প্রমান চান আপনি?
-আপনি শায়লাকে আমার কাছে নিয়ে আসুন! আমাকে ওর সাথে একা কথা বলতে দিন! পারবেন ওকে রাজি করাতে?
-আমি শায়লার সাথে কথা বলে আপনাকে জানাবো।
-শফিক সাহেব, আরেকটা কথা বলতে ভুলে গিয়েছিলাম। আপনি শায়লার বিবাহিত জীবনে এরকম প্রথম প্রেমিক পুরুষ নন। আপনার আগেও ঠিক আপনার মতো আরও দুইজন ছিল বা আছে। এরমধ্যে একজন শুধুই শারীরিক আনন্দের জন্য যেতেন কিন্তু বাকি একজন ঠিক আপনার মতোই ওর গভির প্রেমে পড়ে গিয়েছিলেন। শায়লা তার সাথে প্রায় সাত মাস সর্ম্পক রেখে, আপনার সাথে পরিচয় হবার পর ব্রেকআপ করে। আর পছন্দ হচ্ছিল না মনে হয়! ছেলেটা এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে পারে নি। আমি আপনাকে এই ছেলেটার পর্যায়ে দেখতে চাই না। ওকে সাহায্য করার কেউ ছিল না। যে ছেলেটা আপনাকে টিউশনিটা দিয়েছিল, সে শায়লার খুবই পরিচিত। ওর কথা মতো ছেলে যোগার করে দিলে এর বিনিময়ে ভাল পেমেন্ট পেত। আর শায়লা নিজেও খুব খরচ করত এইসব ছেলেদের পটানোর জন্য বা হাতে রাখার জন্য। মেঘ না চাইতেই জল পাবার ব্যবস্থা করত! আমি কি ঠিক বলেছি শফিক সাহেব?

কথাগুলি শুনার পর শফিকের চেহারায় ব্যাপক পরিবর্তন দেখল নাবিলা। দ্রুতই চোখ মুখ শক্ত করে ওর দিকে তাকিয়ে আছে। খুবই ভাল লক্ষন! এবার যদি এর মাথায় সত্যই কিছুটা শুভ বুদ্ধির উদয় হয়.....................

আট
ঠিক পাঁচদিন পরে সন্ধ্যার সময় চেম্বারে ঢুকার আগেই নাবিলা দেখে ওর দরজার সামনে শায়লা অস্থির ভঙ্গিতে হাঁটাহাটি করছে। ওকে দেখেই ক্ষিপ্ত হয়ে এগিয়ে আসল। অল্প কিছুদিন ধরেই শফিক আর শায়লা’র বাসায় যেতে পারছেনা আবিদ সাহেব হুমকির ভয়ে, আবার সামনাসামনি দেখাও করছে না নাবিলা’র কথামতো! শায়লার এত উত্তেজিত হওয়া খুবই স্বাভাবিক! কোন কথা না বলে নাবিলা দরজা খুলে শায়লাকে নিয়েই সোজা নিজের চেম্বারে এসে ঢুকল। নাবিলা শায়লাকে চেয়ারে বসে কথা বলতে বললেও, শায়লা চেয়ারে বসার আগেই খুবই আক্রমনাত্মক ভঙ্গিতে নাবিলার সাথে কথা বলা শুরু করল। শায়লা এই কেসের ক্রিটিক্যাল একটা পজিশনে দখল করে আছে! পুরোপুরি শায়লাকে না বুঝে শফিককে ট্রিটমেন্ট করা সম্ভব না। নাবিলা ইচ্ছে করেই শায়লাকে আরও বেশি উত্তেজিত করে তুলল যেন শায়লা ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করার সুযোগ কম পায়। প্রতিটা মানুষের উত্তেজনার একটা ট্রীপিং পয়েন্ট থাকে। নাবিলা অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছে সেই কাংক্ষিত মুহূর্তের জন্য! শায়লার কাছে যে ওর অনেক অনেক কিছু জানা দরকার .....................

নয়
এক সপ্তাহ পরের কথা......
চেম্বারে এসেই নাবিলা আজকে শফিককেই প্রথমে রুমে ডেকে পাঠাল। এই কেস মোটামুটি ও গুছিয়ে ফেলেছে। নাবিলার হাতে দরকারিই প্রায় সবতথ্যই চলে এসেছে। শফিকের কাউন্সেলিং এখন শুরু করা যেতে পারে। শফিক ওর সামনে চেয়ারে বসতেই নাবিলা দ্রুতই কথা বলা শুরু করল-
-শফিক সাহেব, আপনি খুব ভেবেচিন্তে উত্তর দিন! এইসব কিছু থেকে সত্যই আপনি বের হয়ে আসতে চান? আপনার নিজের ইচ্ছাটাই সবচেয়ে বড়। আপনি না চাইলে কোন ট্রিটমেন্টেই কাজ হবে না।
-পরিস্থিতি এখন কোনদিকে যাচ্ছে আমি নিজেই বুঝতে পারছি না। মাঝে মাঝে বিবেকের দংশন সহ্যও করতে পারছি না। আমার নিজের জীবনটাও তছনছ হয়ে যাচ্ছে। হ্যাঁ, আমি এইসব জটিলতা থেকে মুক্তি পেতে চাই। আমি আমার আগের শান্তিপূর্ণ জীবনে ফিরে যেতে চাই!
-আমি ট্রিটমেন্ট শুরু করার পর সেটা মাঝখানে বন্ধ করতে পারবেন না। আর যা বলব, অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলার চেস্টা করবেন। কারন নিজের উপর নিয়ন্ত্রন আপনার সবসময় থাকে না, আর এটাই আমার চিন্তার বড় কারন। আপনি কি আমার সব নির্দেশ মেনে চলতে পারবেন?
-জী, আমি আমার সর্ব্বোচ্চ চেস্টা করব!
-শায়লার এসএমএসগুলি আমাকে দিয়ে আপনি খুব ভালো কাজ করেছেন। ওর সাথে কথা বলার আগেই ওকে বুঝার জন্য এইগুলি খুবই কাজে দিয়েছে। শায়লা যে আমার সাথে দেখা করেছে সেটা কি আপনি জানেন?
-আমি ওকে দেখা করতে বলেছিলাম কিন্তু শায়লা তো তখন রাজি হলো না!
-কয়েকদিন আগে এসএমএসগুলি পাবার পর শায়লাকে চেম্বারে ডেকেছিলাম। মোবাইলে কল দেবার পর প্রথম মনে হয়েছিল হয়ত আসবে না, কিন্তু আসার পর ওর কথা শুনে মনে হলো নিজেও বিরাট ফ্রাস্টেশনে ভুকছে।
-কি বলছে আপনি এসব? শায়লার আবার কি হয়েছে?
-শায়লা ওর হ্যাজবেন্ডের বিবাহ বর্হিভুত অনৈতিক কর্মকান্ড কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না। বড় ধরনের মানসিক ভারসাম্যহীনতার মধ্যে দিয়ে জীবন কাটাচ্ছে। সব কিছু মিলিয়ে ওর মনে অপ্রচলিত একটা মানসিক সমস্যা সৃস্টি হয়েছে। হ্যাজবেন্ডকে ভয়ংকর আর বিকৃতভাবে শাস্তি দিতে চাচ্ছে ও। ওর বর্তমান অবস্থা আসলেও ভয়াবহ। এটাকে আমরা বলি compulsive sexually motivated behavior. যেহেতু আপনিই পেশেন্ট, তাই শায়লার সমস্যাটা নিয়ে আমি এখন চিন্তিত নই। তবে ওর ট্রিটমেন্ট দরকার, খুব তাড়াতাড়িই দরকার। এটা ও নিজেই স্বীকার করে গেছে আমার কাছে। শায়লা নিজেও মুক্তি পেতে চাইছে এইসব কিছু থেকে। এই ব্যাপারে আমি পরে আসছি।
-আমাকে কি কি করতে হবে?
-সর্বপ্রথম সম্পূর্ণভাবে শায়লার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দিন। মোবাইল ফোন ব্যবহার বন্ধ করে ফেলুন। কাছে থাকলেই আপনার কথা বলতে ইচ্ছে করবে, নাম্বার চেঞ্জ করেও লাভ হবে না। যেভাবেই হোক শায়লার কাছ থেকে অবশ্যই দূরে থাকতে হবে। আপনার দিনাজপুরের অ্যাড্রেস কি শায়লা জানে?
-না, ওর হাতের কাছেই তো থাকতাম। সেজন্যই জানতে চায়নি কখনো।
-দারুন, তাহলে আপনি এক কাজ করুন। আপনি আজকেই ঢাকা ছেড়ে অন্ততঃ পনেরদিনের জন্য বাবা মা’র কাছে চলে যান। নিজের পারিবারিক পরিবেশে আপনি খুব দ্রুতই রিকোভার করবেন। ফিরে এসে ভার্সিটির হলে উঠবেন না কোনভাবেই। একদম অপরিচিত কোন জায়গায় বাসা ভাড়া নিন আর কাউকেই বাসার অ্যাড্রেস দিবেন না।

শফিক চুপচাপ মনোযোগ দিয়ে শুনে যাচ্ছে। শফিকের চোখে আগ্রহ দেখে, নাবিলা আবার শুরু করল-
-দেশের বাইরে হলে আপনাকে আমি গ্রুপ থেরাপীর মধ্যে ঢুকিয়ে দিতাম, খুব দ্রুতই সেখানে রিকোভার করতেন। কিন্তু এখানে এটা সম্ভব না। সেদিন এই বিষয়ে দারুন একটা আর্টিকেল পড়লাম। ধর্মীয় অনুশাসন এইসব ব্যাপারে খুবই ভালো কাজ করে, যদি আপনি সেটা পরিপূর্ণ ভাবে মানতে পারেন। আপনি বরং কালকে সকালবেলা থেকে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ একদম মসজিদে যেয়ে পড়া শুরু করুন, সৃস্টিকর্তার কাছে ক্ষমা চেয়ে তার সাহায্য কামনা করুন! যত কিছুই হোক, নামাজ পড়া বন্ধ করবেন না। আমি আজ পর্যন্ত কাউকে এই উপদেশ দেইনি। আমার কেন জানি মনে হচ্ছে, এটাই আপনাকে নিজের উপর কন্ট্রোল এনে দেবে। আপনার দরকার মনের ভিতর গভীর প্রায়শ্চিত্তবোধ! এটা মনের ভিতর জাগ্রত হলেই আর কিছুই দরকার পড়বে না। আপনার সাথে কোনভাবেই যোগাযোগ করতে না পারলে শায়লা ঠিকঠিকই বুঝে ফেলবে এটা কার কাজ? সোজা আমার কাছে চলে আসবে আর তারপরই ওকে নিয়ে আমি কাজ শুরু করতে চাই! ওরও পুরোপুরি সুস্থ হওয়া দরকার। যেভাবে ও বেঁচে আছে সেটা কোনভাবেই বেঁচে থাকা বলে না।
-আমি যে শায়লাকে অসম্ভব ভালবাসি সেটা যদি ও কখনোই না বুঝে থাকে?
-মেয়েদের মনে তৃতীয় একটা চোখ থাকে। সেই চোখে মেয়েরা প্রেমে পড়ার বিষয়গুলি চট করেই বুঝে ফেলে। আপনি যখন এতটাই কাছাকাছি ছিলেন শায়লা কেন সেটা টের পাবে না?
-টের পেয়ে লাভ কি? আপনি তো শায়লাকে আমার কাছ থেকে চিরতরে দূরে ঠেলে দেয়ার ব্যবস্থা করছেন?
-ভালোবাসা হৃদয়ের খুব সূক্ষ্ম একটা অনুভূতি। কাউকে ভালবাসলে শুধুমাত্র তাকে ঘিরেই আলাদা একটা জগৎ তৈরি হয়, একটা স্বপ্ন সৃষ্টি হয়, যে স্বপ্নটা ভবিষ্যতে একসাথে হাতে হাত রেখে জীবনে পথচলার। আপনার ভালবাসা যদি সত্যই নিখাদ হয়, তাহলে আপনার অনুপস্থিতিতে শায়লার মনে গভীর অনুশোচনা আসবেই, যদি এতদিনেও না এসে থাকে! আপনার জন্য মনের গহীনে তীব্র হাহাকার সৃষ্টি হবে। আর যদি শায়লার মনে এই অনুভূতি কোনভাবেই না আসে, তাহলে শায়লা আপনার জন্য উপযুক্ত নয়। অপাত্রে ভালোবাসার ঢেলে অপচয় করার কোনই মানে হয় না। ভবিষ্যত কি হবে সেটা সময়ই আপনাকে বলে দেবে! ধৈর্য্য ধরুন।
-কতদিন আমাকে এইভাবে চলতে হবে?
-আপনার ট্রিটমেন্টের গাইডলাইনসটা আমি ইতিমধ্যেই লিখে ফেলেছি। এই সাতটা স্টেপের প্রতিটা আপনি যদি আগামি নূন্যতম দুইমাস মেনে চলতে পারেন, তাহলে আর আমার কাছে আর ফিরে আসতে হবে না। আমার সাথে যেকোন সময় চিকিৎসার প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে দ্বিধা করবেন না। আমি আপনার নতুন জীবনের জন্য শুভ কামনা করছি.....................

দশ
সাতমাস পরে একদিন ভার্সিটিতে পরপর দুইটা ক্লাস নিয়ে টায়ার্ড হয়ে নাবিলা নিজের টিচার'স রুমে ফিরে এলো রেস্ট নেবার জন্য। দরজা খুলতেই নাবিলা দেখে খুব সুন্দর একটা বিয়ের ইনভাইটেশন কার্ড উপরে নাবিলার নাম লিখে, দরজার নীচে দিয়ে ঢুকিয়ে দিয়ে গেছে! চেয়ারে বসে বিয়ের কার্ডটা বের করে পড়া শুরু করতেই, নাবিলা হেসে উঠল! সত্যিকারের নিখাদ ভালবাসা অগ্রাহ্য করার ক্ষমতা সৃষ্টিকর্তা সব মানুষকে দেননি………


নাবিলা কাহিনীর আগের পর্ব যারা পড়তে চান: গল্পঃ নাবিলা কাহিনী ১ - পরিণয়!

উৎসর্গঃ এই গল্পটা শ্রদ্ধেয় ব্লগার মা.হাসান ভাইকে উৎসর্গ করলাম। উনি আমার খুব পছন্দের একজন পাঠক। উনাকে আমার কোন গল্পের মন্তব্যে না পেলে সত্যই আমার মন খারাপ হয়ে যায়। আমার অনেক দিনের ইচ্ছে ছিল নাবিলাকে নিয়ে সাইকোলজির উপর লিখার, আজকে এরই প্রথম পর্ব দিলাম। মূল্যায়নের দায়ভার যথারীতি আমার সম্মানিত পাঠকদের কাছেই রেখে গেলাম। পাঠকদের ভালো লাগলে এই সিরিজে আরও কিছু লেখার ইচ্ছে আছে..........

সবাইকে ধন্যবাদ ও শুভ কামনা রইল।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত @ নীল আকাশ, মার্চ,২০১৯

মন্তব্য ৫৭ টি রেটিং +১৮/-০

মন্তব্য (৫৭) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে মার্চ, ২০১৯ বিকাল ৪:৫৩

হাবিব বলেছেন: অবশেষে নাবিলা কাহিনী ২ পেলাম! আমার পোস্টে মন্তব্য করতে চেয়েছিলেন, গল্প হিসেবে কেমন হয়েছে তা জানানোর জন্য। করেননি কিন্তু। আপনার পোস্ট সম্পর্কে পরে বলছি। উৎসর্গে ভালো লাগা। হাসান ভাই আমার নিকটও একজন সম্মানীয় মানুষ।

৩১ শে মার্চ, ২০১৯ বিকাল ৫:৩৭

নীল আকাশ বলেছেন: শুভ সন্ধ্যা,
কারন আপনি আমাকে আপনার গল্পটার সমালোচনা করতে বলেছেন। ভালো ভাবে না পড়ে আন্দাজে আমি কখনোই মন্তব্য করি না। এটা খুব অন্যায় কাজ। এটা সময় লাগবে তবে আমি অবশ্যই দেব।
প্রথম মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
শুভ কামনা রইল!!

২| ৩১ শে মার্চ, ২০১৯ বিকাল ৫:০৯

রাজীব নুর বলেছেন: শায়লা, শফিক, নাবিলার গল্প। বেশ গল্প।

৩১ শে মার্চ, ২০১৯ বিকাল ৫:৫১

নীল আকাশ বলেছেন: পড়ার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।

৩| ৩১ শে মার্চ, ২০১৯ বিকাল ৫:৫৭

তারেক_মাহমুদ বলেছেন: প্রথম পর্বটি খুব মনোযোগ সহকারে পড়লাম, সত্যি অসাধারণ হয়েছে। প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত পাঠক ধরে রাখার দারুণ এক ক্ষমতা রয়েছে আপনার।

০১ লা এপ্রিল, ২০১৯ দুপুর ২:৪৯

নীল আকাশ বলেছেন: নাবিলার ১ম গল্পটা আমার মাস্টারপীস। অনেক অনেক কষ্ট করে ওটা লিখেছি। পরিণয় পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ তারেক ভাই। এবারের ২য় পর্ব কেমন লাগল জানালে খুব খুশি হতাম।
ধন্যবাদ এবং শুভ কামনা রইল!

৪| ৩১ শে মার্চ, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:০২

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: মুগ্ধতা ভায়া!

এমন করে ! কেমন করে
গল্প লেখো গুনি- বলো দেকি শুনি :)

ভাললাগা

+++++++++

৩১ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ৯:৪৩

নীল আকাশ বলেছেন: বড় ভাই,
এখন যা ইচ্ছে তাই লিখে ফেলি।
কত কিছু যে লিখতে ইচ্ছে করে।
আমার গল্প লিখতে খুব ভালো লাগে।
আপনার মন্তব্যে একরাশ মুগ্ধতা রেখে গেলাম।
ধন্যবাদ এবং শুভ কামনা রইল!!

৫| ৩১ শে মার্চ, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:০৭

হাবিব বলেছেন:




একটানেই পড়লাম প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত। খুবই ভালো লাগলো। শেষমেশ কি শফিক আর শায়লাকে মিলিয়ে দিলেন?

গল্পের কিছু জায়গায় বানান ভুল চোখে পড়লো। টাইপো হতে পারে: গভিরে/ গভীরে, রিছেন্ট/ রিসেন্ট, , হ্যাজবেন্ড/ হাজবেন্ড, সৃস্টিকর্তা/ সৃষ্টিকর্তা, ভুকছে/ ভুগছে.........ইত্যাদি।

স্বার্থক গল্প। মোটেই সময় নষ্ট হয়নি।

৩১ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ৯:২৫

নীল আকাশ বলেছেন: নিখাদ ভালোবাসা অগ্রাহ্য ক্ষমতা কি আসলেও মানুষের আছে?
সত্যিকারের ভালোবাসা থেকে দূরে থাকা যায় না। পালিয়েও যাওয়া যায় না...
সব ভুল বানান ঠিক করে দেব। এই গল্পটা খুব তাড়াহুড়া করে লিখেছি। এটা কোন সমস্যা না।
চমৎকার মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ রইল।

৬| ৩১ শে মার্চ, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৫৪

ভুয়া মফিজ বলেছেন: আপনার গল্পের চমৎকারীত্ব নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। বরাবরের মতোই অসাধারণ!

আপনি কোন এক জায়গায় বলেছিলেন, গতানুগতিক মন্তব্যের চেয়ে ক্রিটিকের মন্তব্য আপনার বেশী পছন্দ। তাই কিছু কথা বলি;

- বানান ভূল আছে অনেক তবে এটা অনেক সময় টাইপিং এর কারনেও হয়। তাছাড়া এটা কোন কনসেপ্চুয়াল ভূল না, তাই আমার দৃষ্টিতে এটা অতোটা গুরুত্বপূর্ণ না। তবে সংখ্যা যতোটা কম রাখা যায়, পাঠকের জন্য ততো ভালো।
- 'মানসিক ডিপ্রেশান' কথাটা ঠিক না। ডিপ্রেশান সবসময় মানসিকই হয়, তাই শুধু 'ডিপ্রেশান' বলা ভালো।
- ট্রীপিং না, ওটা টিপিং (Tipping Point), এটাকে টাইপো হিসাবে ধরা যায়, তবে আরেকটা গল্পে আপনি ঠিক এটাই বলেছিলেন। তাই টাইপো ধরা যাচ্ছে না। এখন 'উত্তেজনার টিপিং পয়েন্ট' বলতে সম্ভবতঃ আপনি 'উত্তেজনার শেষ সীমা' বুঝিয়েছেন। উত্তেজনার টিপিং পয়েন্ট, কথাটা আমার মনে হয় ঠিক না, এটা যেসব সিচ্যুয়েশানকে টিপিং পয়েন্ট ধরা হয় তার মধ্যে পরে না।

আলোচনা বেশী বড় হয়ে গেল। আমার জানার ভূলও থাকতে পারে, থাকলে ধরিয়ে দিবেন। :)

৩১ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ৯:২২

নীল আকাশ বলেছেন: ভাই, আজ পর্যন্ত আপনি যত মন্তব্য করেছেন তার মধ্যে এটাই আমার সবচেয়ে বেশি পছন্দ হয়েছে। ভুল ধরিয়ে না দিলে আমি ঠিক করব কিভাবে? অবশ্যই ক্রিটিকের মন্তব্য আমি বেশী পছন্দ করি কারন তারাই আসলে সবচেয়ে ভালো ভাবে পড়েছে। ভাল ভাবে না পড়লে সমালোচনা করা সম্ভব না।

এই গল্পটা খুব তাড়াহুড়া করে লিখেছি। ভুল বানান সব ঠিক করে দেব। এটা কোন সমস্যা না।

Tipping বা tripping নিয়ে আমি নিজেও অনেক চিন্তা করেছি। আসলে tipping মানে হলো সর্ব্বোচ্চ উচ্চতায় বা উঁচুতে। আর tripping মানে হলো ফেইল করা, যেমন আমরা বলি breaker tripped। আমার লেখার ২ জায়গায়ই আমি tripping ব্যবহার করেছি ইচ্ছে করেই এটা বুঝানোর জন্য যে, তখন যেয়ে একটা সময় যেয়ে কারো ধৈর্য্য ভেংগে যায়, নিজের উপর কন্ট্রোল ফেইল করে। আমি এটাই বুঝাতে চেয়েছি।

চমৎকার মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ রইল।

৭| ৩১ শে মার্চ, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:২৪

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: আপাতত লাইকের মাধ্যমে উপস্থিতি জানান দিলাম। পরে সময় নিয়ে আবার আসছি।

৩১ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ৯:৪১

নীল আকাশ বলেছেন: দাদা,
শুধুমাত্র আপনার জন্যই আলাদা করে একটা গল্প লেখা হচ্ছে। প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। পড়লে অবাক হয়ে যাবেন!! কতটা কষ্ট করেছি এটা লেখার জন্য।
সাইকোলজির উপর কেমন লিখলাম জানতে বড় ইচ্ছে হচ্ছে..
অপেক্ষায় থাকলাম।
শুভ রাত্রী।

৮| ৩১ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ১০:০৪

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: পড়ার জন্য আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ।

ভালো থাকুন।

০১ লা এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১২:০০

নীল আকাশ বলেছেন: আপনিও ভালো থাকুন প্রিয় ভাই।

৯| ৩১ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ১০:১০

মা.হাসান বলেছেন: নীল আকাশ ভাই, গল্পটি আমাকে উৎসর্গ করে নবীন এই পাঠককে বড় সংকোচের মধ্যে ফেলে দিলেন।

গোয়েন্দা ডক্টর হাউস দেখেছি, কিন্তু গোয়েন্দা সাইকিয়াট্রিস্টের ধারণায় নতুনত্ব আছে।

চিকিৎসার প্রয়োজনে কারো ব্যক্তিগত তথ্য অনুমতি ছাড়া প্রকাশ বা ব্যবহার করা যায় কি না সে বিতর্ক নতুন না। বাংলাদেশে টাকা একটু বেশিই কথা বলে, কাজেই সবই সম্ভব।

আপনাকে বিশেষ ভাবে ধন্যবাদ দেব এই কারণে যে ঐ সব ঔষধের ক্ষতিকর প্রভাবের কথা বলে একটি সামাজিক কর্তব্য পালন করেছেন। পরিচিতদের মধ্যে একাধিক জন এসব ওষুধ খেয়ে অলরেডি মারা গেছে বা জীবনের পার্মানেন্ট বড় ক্ষতি করে ফেলেছে।

শেষটা ভালো লেগেছে। এর আগে একটা গল্পে পরকিয়াকারী দুজনের কঠোর মৃত্যু দিয়েছিলেন, অন্য জায়গায় বলেছিলাম ওটা ভয়ংকর লেগেছিল, ভালো না। মানুষ ভুল করবে, সুযোগ থাকলে শুধরে নিতে পারলে ভালো হয়।
বর্ননা বরাবরের মতো সুপার। ফিনিশিং অনন্য। আরেকটি কথা না বললেই নয়, যদিও ছবি গুলো আমরা সাধারনত টুকলিফাই করেই থাকি, আমার কাছে ছবি এবং এর মাঝের লেখাটা বড় ভালো লেগেছে, খুব ভালো সিলেকশন হয়েছে। গপের নামটিও ছবির সঙ্গে মিলে যাওয়ায় আরো ভালো লেগেছে।
অনেক শুভকামনা।

০১ লা এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ১০:০৭

নীল আকাশ বলেছেন: হাসান ভাই শুভ সকাল,
মিসির আলি যখন যেখানে সেখানে যেয়ে খোজ খবর করে, কারো বাসায় হুট করে হাজির হয়ে তদন্ত করে, আশেপাশের সবার ইন্টারভিউ নেয়, তাহলে সেটা কি বলুন? হুমায়ুন আহমেদ করলে ঠিক আছে আর আমি করলে দোষ? আমার নাবিলা করলেই আপনার চোখে নতুন লাগল আপনার???

আমার সাইকোলজী সিরিজ কি কনটিনিউ করব? আমি আসলে পাঠকের মতামতের উপর এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব। আপনার মতামত আমার কাছে যথেষ্ঠ গুরুত্ববহন করে।

গল্পটা কি আপনার পছন্দ হয়নি? আমি বেশ অবাক হলাম, আপনি এটাতে লাইক দেন নি। লাইকের সংখ্যা নিয়ে আমি কেয়ার করি না কিন্তু আপনি না দেয়ার মানে হচ্ছে লেখা মান সম্মত হয় নি। সেক্ষেত্রে আপনাকে আমি খুব করে অনুরোধ করব, কোথায় কোথায় আমি ভুল করেছি সেটা বলে দেবার জন্য। তাহলে আমি ভুল গুলি ধরতে পারব এবং সবচেয়ে বড় কথা শিখতে পারব।

চমৎকার মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ রইল।

শুভ কামনা রইল।

০১ লা এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ১০:৪১

নীল আকাশ বলেছেন: হাসান ভাই,
ছবির ব্যাপারে আমি খুব খুঁতখুঁত করি। প্রায় একদিন ধরে আমি প্রতিটা লেখার জন্য ছবি খুঁজি ইন্টারনেটে। আমার সব লেখায় ছবি থাকবে বির্মূত, সামঞ্জস্যপূর্ণ, মডেলের চেহারা দেখা যাবে না এবং লেখার বিষয়ের সাথে মিল থাকতেই হবে।

অনেকেই আমার ছবি ভাল করে খেয়াল করে না। আপনি এবারেরটা দেখেছেন দেখে খুব ভালো লাগলো।
ধন্যবাদ।

১০| ০১ লা এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১২:০২

জোছনাস্নাত রাত্রি বলেছেন: চমৎকার গল্প। ছবিটা গল্পের সাথে খুব মানিয়ে গেছে।
ধন্যবাদ।

০১ লা এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ১০:৪১

নীল আকাশ বলেছেন: চমৎকার মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ রইল।
শুভ কামনা রইল।

১১| ০১ লা এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ১১:১০

মা.হাসান বলেছেন: নীল আকাশ ভাই, লাইকের জন্য দুঃখ প্রকাশ। কালকে মোবাইলে ছিলাম। অনেক বার ক্লিকের পর ফুল স্ক্রিন মোডে আসতে পেরেছিলাম। টরের কারনে হোক বা যে কোন কারনেই হোক টাচ রিসপন্স খুব খারাপ ছিল । 'সকল পোস্ট'-এ ক্লিক করলে 'নির্বাচিত' -তে চলে যাচ্ছিল ইত্যাদি। আপনার পোস্টে লাইকে কয়েকবার চাপ দেয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি। পরে পদাতিক ভাইয়ের পোস্টে কমেন্ট সেকশনে যেতেই পারিনি।

ডিটেকটিভগিরি নতুন লেগেছে বলেছি, খারাপ লেগেছে বলিনি।

ব্যক্তিগত ভাবে আমার কাছে ব্যক্তি স্বাধীনতার ও গোপনীয়তার বিষয়টি জীবন-মরনের চেয়ে বড়। তবে এই বিষয়টি অনেক বিতর্কিত। একজন চিকিৎসক মানুষের জীবন বাচাঁনোর শপথ নেন, তার দৃষ্টিভঙ্গি আলাদা হওয়া স্বাভাবিক। ঐ বিষয়ে আমার রিজার্ভেশন থাকতে পারে, কিন্ত তার কারনে কখনোই বলতে পারি না আমার যা পছন্দ না তা আর কাউকে করতে দেব না।

ওষুধের প্রতিক্রিয়ার ব্যাপারে একটা কথা বলতে কাল ভুলে গিয়েছি, যে সব ভুক্তভোগীর কথা আমি বলেছি, তাদের বয়স ৩০এর নীচে।
অনেক শুভ কামনা।

০১ লা এপ্রিল, ২০১৯ দুপুর ১২:৪৭

নীল আকাশ বলেছেন: প্রিয় হাসান ভাই,
বিনা কারনে আমি কোন চরিত্র আনি না। নাবিলা মেয়ে, ওকে দিয়ে আমি সব জায়গায় সব কিছু করতে পারব না। তাই রূপমকে নিয়ে এসেছি। সামনে বড় ধরনের প্ল্যান আছে আমার এদের ২জনকে নিয়ে।

কিন্তু হাসান ভাই, আমি জানতে চাইছি, সাইকোলজিস্ট হিসেবে নাবিলাকে কেমন লাগল? এই সিরিজ নিয়ে কি আমি আগাব? নাকি আমার বাকি সিরিজে ফিরে যাব?
সবাই খুব ভাল করে পড়ে না। আপনি একজন খুব উচু লেভেলের পাঠক। খুব মনোযোগ দিয়ে পড়েন আপনি। তাই সব সময় আমি আপনার মন্তব্য গুরুত্ব দেই। তাই আবার জানতে চাইছি, নাবিলার এই সাইকোলজি সিরিজ কেমন লিখছি? ৪ বা ৫টা প্লট রেডি আছে। ভয় লাগছে আরও লিখব নাকি? পাঠক পছন্দ করবে নাকি? এই সব।

ইন্টারনেট ঘাটলেই এইসব ঔষধের নাম খুব সহজেই পাওয়া যায়। আমার যা মনে হলো এইগুলি ব্যাপক ব্যবহার করা হয়। অল্পবয়সীরাই বেশি ব্যবহার করে। এইজন্যই গল্প এটা দিয়েছি। খুব মনোযোগ দিয়ে পড়েছেন আপনি।

শুধুই আপনার মন্তব্যের উপর বেজ করে শবনমের আগের ২টা পর্ব আবার লিখছি আমি। এবার বুঝুন, আপনার কতটুকু গুরুত্ব পান আপনি আমার কাছে। আমার কাছে ১০০ লাইক আর ১০০ মন্তব্যের চেয়ে ভাল ৫টা ক্রিটিক্স মন্তব্য অনেক
মূল্যবান আমার কাছে। কারন এখান থেকে আমি শিখতে পারব।

সব সময় যেন আপনাকে আমি আমার সব লেখায় পাই।
ধন্যবাদ এবং শুভ কামনা রইল!

১২| ০১ লা এপ্রিল, ২০১৯ দুপুর ১২:২৮

মনিরা সুলতানা বলেছেন: অসাধারণ ! একদম টান টান উত্তেজনার লেখা ;
অনেকদিন পর শুধুমাত্র মন্তব্য করার জন্য লগ ইন করতে বাধ্য হলাম। অনেকের কাছে মনে হতে পারে ডিটেইলস বলা হয় নাই কিছু যায়গায়, কিন্তু আমার কাছে মনে হয়েছে একদম যথার্থ।


শুভ কামনা।

০১ লা এপ্রিল, ২০১৯ বিকাল ৪:৪৮

নীল আকাশ বলেছেন: মনিরা আপু,
আপনি ফিরে এসেছেন তাহলে!!! আপনাকে ফিরিয়ে আনতে পেরে এই গল্প লেখা সার্থক হয়েছে!

আপনার প্রিয় শবনমের রাইভাল চরিত্র বানাচ্ছি। একদম উলটা। মেথডিক এবং লজিক্যাল। ঠান্ডা মাথার মেয়ে চরিত্র।
সাইকোলজিস্ট হিসেবে নাবিলাকে কেমন লাগল? আমার সাইকোলজী সিরিজ কি কনটিনিউ করব? নাকি আমার বাকি সিরিজগুলিতে ফিরে যাব?
আমি আসলে পাঠকের মতামতের উপর এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে চাচ্ছি। আপনার মতামত আমার কাছে যথেষ্ঠ গুরুত্ববহন করে।
দুর্দান্ত একটা মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
সব সময় যেন আপনাকে আমি আমার সব লেখায় পাই।
ধন্যবাদ এবং শুভ কামনা রইল!

১৩| ০১ লা এপ্রিল, ২০১৯ দুপুর ১২:৩৫

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: প্রিয় নীল আকাশভাই,

গল্পটা পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো। একেবারে এক নিঃশ্বাসে পড়ে ফেললাম। সাইকোলজিক্যাল অ্যাস্পেক্টে অত্যন্ত সুন্দর ভাবে গল্পটি ফুটিয়ে তুলেছেন। কলেজ/ বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে সদ্য নারীসঙ্গ পাওয়ার মধ্যে উন্মাদনা থাকে আর তা যদি পরকীয়া হয় তাহলে যে তীব্র সামাজিক সংকট তৈরি হয় সঙ্গে অতিরিক্ত ওষুধ সেবন করার ফলে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার মতো বিষয়গুলোকে সম্মিলিত ভাবে অত্যন্ত নিপুণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। একজন দক্ষ কথাশিল্পীর সার্থক প্রতিফলন পেলাম এই গল্পে।

অফুরান শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা জানবেন।

০১ লা এপ্রিল, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৩৯

নীল আকাশ বলেছেন: দাদা শুভ রাত্রী,
নাবিলাকে নিয়ে ওর আগের গল্পে "পরিণয়" আপনার মন্তব্য আমি এখন ভুলি নি। কি যে দারুন বলেছিলেন সেইবার। আপনার প্রশংসা পড়েই সাহস পেয়েছি নাবিলাকে নিয়ে এই ধরনের লেখার। আপনি যখন সাহস দিলেন আরও কয়েকটা পর্ব লিখব। সাইকোলজিস্ট হিসেবে নাবিলাকে নিয়ে অনেক পর্ব লেখার ইচ্ছে আমার।
ভালো থাকুন, সব সময়।
ধন্যবাদ এবং শুভ কামনা রইল!!

১৪| ০১ লা এপ্রিল, ২০১৯ বিকাল ৪:৪৫

বলেছেন: এমন করে বুঝি গল্প হয়!! অসম্ভব সুন্দর +++

০১ লা এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১০:৪৪

নীল আকাশ বলেছেন: লতিফ ভাই শুভ রাত্রী,
ইচ্ছে থাকলে এইরকম কাহিনী নিয়েও সুন্দর একটা গল্প লিখে ফেলা যায়।
প্রিয় ভাইয়ের মন্তব্যটা আমার মনকে এত্ত বড় করে দিল।
ধন্যবাদ এবং শুভ কামনা রইল!!

১৫| ০১ লা এপ্রিল, ২০১৯ বিকাল ৫:০১

পবিত্র হোসাইন বলেছেন: বিলম্ব আগমনের জন্য দুঃখিত। পরকীয়া কোন ক্ষেত্রেই শুভকর নয়।
তবে যাই হোক, সব কিছু জেনেও মানুষ প্রেমের মরা জলে ডুবতে দেয় না :P
মেয়েদের মনে তৃতীয় একটা চোখ থাকে !!!!! ঘটনা কি সত্য গুরুজী?

০১ লা এপ্রিল, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৫২

নীল আকাশ বলেছেন: আপনাকে দেখে খুব ভাল লাগছে। পরকীয়ার গতবারের কাহিনীতে খুন খারাপি লিখে গতবার সবার ঝাড়ি খেয়েছ তাই আর ঐ রাস্তায় আর যাই নি। ভালোবাসার মিলন দেখিয়ে দিলাম।
কি বলেন, মেয়েদের পিছনের দিকে তাকালেই টের পেয়ে যায় আর ভালবাসা টের পাবে না, তাই হয় নাকি? সবার গুরু হুমায়ুন আহমেদ বলে গেছেন এই কথা!!
ভালো থাকুন, সব সময়।
ধন্যবাদ এবং শুভ কামনা রইল!!

১৬| ০১ লা এপ্রিল, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৪০

আরোগ্য বলেছেন: বোনাই আজকের গল্পটা খুব ভালো হয়েছে। পড়ে বেশ তৃপ্তি পেলাম।

সিজোফ্রেনিয়া পেশেন্টের জন্য কোন সাইক্রায়াটিস্ট বা কাউনসিলারের ঠিকানা দিতে পারবেন?

০১ লা এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১০:৪১

নীল আকাশ বলেছেন: সাইকোলজিস্ট ও সাইকিয়াট্রিস্টের মধ্যে পার্থক্য কী?
সাইকোলজিস্ট ও সাইকিয়াট্রিস্ট দুজনই মানাসিক রোগ বিশেষজ্ঞ। এদের মধ্যে পার্থক্য হচ্ছে, সাইকিয়াট্রিস্ট হতে হলে তাকে অবশ্যই মেডিকেল ডিগ্রি নিতে হয় অর্থাৎ ডাক্তার হতে হয়। আর সাকোলজিস্ট হতে হলে মেডিকেল ডিগ্রি নিতে হয় না, কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাইকোলজি সাবজেক্টে অনার্স/মাস্টার্স ডিগ্রি নিলেই হয়।

আরেকটি পার্থক্য হচ্ছে, সাইকিয়াট্রিস্ট ঔষধ প্রেসক্রাইব করতে পারবে কিন্তু সাইকোলজিস্টের ঔষধ প্রেসক্রাইব করার অনুমতি নাই। তবে সে কাউন্সেলিং সেবা দিতে পারবে।

উপরের তথ্যগুলি আপনার জানার জন্য দিলাম। সিজোফ্রেনিয়া পেশেন্টের জন্য কোন সাইক্রায়াটিস্ট বা কাউনসিলারের ঠিকানা আমার জানা নেই। আমি এখন ঢাকায় থাকি না। এদের কারো সাথেই আজ পর্যন্ত দেখা সাক্ষাত হয় নি আমার।

গল্পটা ভাল লেগেছে শুনে আমি হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম। লাস্ট গল্পটা পড়ে আপনি বেশ হতাশ হয়েই মন্তব্য করেছিলেন। তাই এবার লেখার সময় বেশ সাবধান ছিলাম। আপনার মতো পাঠক না থাকলে ভালো লেখক কখনই হওয়া সম্ভব না। আবার ধন্যবাদ আপনাকে।

শুভ কামনা রইল!!

১৭| ০১ লা এপ্রিল, ২০১৯ রাত ৮:১৩

করুণাধারা বলেছেন: চমৎকার গল্প হয়েছে। কতটা ভালো, তা উপরের মন্তব্য দেখে বুঝতে পারছি। গল্পটা পড়ে আরোগ‍্যর ধারণা হয়েছে, ঢাকার সাইকিয়াট্রিস্টের সম্পর্কে আর ভালো পরিচিতি আছে!

অবশ্য উপরের মন্তব্য দেখে আমি আরেকবার দুঃখিত হলাম, যেমন দুঃখিত হয়ে ছিলাম শায়মার পোস্টে মন্তব্য দেখে, উনার মায়ের সম্পর্কে। আমি কয়েকজন সাইক্রিয়াটিস্ট দেখেছি, কেন জানো কালকের নির্ভরযোগ্য মনে হয় নি। উনার মায়ের সুস্থতা কামনা করি, শুভকামনা রইল।

০২ রা এপ্রিল, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:৩৫

নীল আকাশ বলেছেন: প্রিয় আপু,
ইন্টারনেট সমস্যার জন্য সব সময় সাথে সাথেই উত্তর দিতে পারি না। তাই দেরি হবার জন্য লজ্জিত।
মিলনাত্মক গল্প তো আপনার পছন্দ হবেই। পরকীয়ার গতবারের কাহিনীতে খুন খারাপি লিখে গতবার সবার ঝাড়ি খেয়েছি,
তাই আর ঐ রাস্তায় আর যাই নি। ভালোবাসার মিলন দেখিয়ে দিলাম।
আরোগ্য ভাইয়ের মায়ের ঘটনাটা আমি জানতাম না। খুব দুঃখজনক।
ব্যক্তিগত কিছু অভিজ্ঞতার জন্য আমি এদেশের ডাক্তারদের কেন যেন ঠিক বিশ্বাস করতে পারি না!
দুর্দান্ত একটা মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
সব সময় যেন আপনাকে আমি আমার সব লেখায় পাই।
ধন্যবাদ এবং শুভ কামনা রইল!

১৮| ০১ লা এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১০:৫৯

আরোগ্য বলেছেন: করুনাধারা আপুকে মন থেকে ধন্যবাদ জানাই। আম্মুকে আগে বহুবার ক্লিনিকে রাখা হয়েছে , ডাক্তার দেখানো হয়েছে কিন্তু আশানুরূপ ফল পাইনি বিধায় সব বন্ধ করে দেই । ইদানিং সমস্যা বেশি হয় তাই ভাবছি কোন ভাল ডাক্তার দেখাবো। আপনার শুভ কামনার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। দোয়া করবেন আপু।

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৯ দুপুর ১২:৩৩

নীল আকাশ বলেছেন: প্রিয় ভাই,
ইন্টারনেট সমস্যার জন্য সব সময় সাথে সাথেই উত্তর দিতে পারি না। তাই দেরি হবার জন্য লজ্জিত।
আপনার মায়ের ঘটনাটা আমি জানতাম না। খুব দুঃখজনক।
ব্যক্তিগত কিছু অভিজ্ঞতার জন্য আমি এদেশের ডাক্তারদের কেন যেন ঠিক বিশ্বাস করতে পারি না!
অসংখ্য ধন্যবাদ আবার ফিরে আসার জন্য।
করুনাধারা আপু খুবই সিমপ্যাথিটিক পারসন। এই জন্য আপুকে আমি খুবই পছন্দ করি।
আপনার আম্মা এবং আপনি সহ পরিবারের সবার জন্য রইল শুভ কামনা।

১৯| ০২ রা এপ্রিল, ২০১৯ বিকাল ৪:৪১

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
গতকার গল্পটা পড়া শেষ হয়নি। আজ হলো।

অনেক দিন পর সুন্দর একটা গল্প পড়লাম।

গল্পে অনেক ইংরেজী শব্দের ব্যবহার একটু কেমন যেন লেগেছে।
নাবিলার জন্য শুভ কামনা।
+++++++

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১১:২১

নীল আকাশ বলেছেন: প্রিয় ভাই,
ইন্টারনেট সমস্যার জন্য সব সময় সাথে সাথেই উত্তর দিতে পারি না। তাই দেরি হবার জন্য লজ্জিত।
আমি বাংলায় আসলেও কাঁচা। আপনি তো আমাকে ব্যক্তিগত ভাবে চেনেন। এতদূর বাংলা নিয়ে যে আসতে পেরেছি সেটা অনেক বড়। আমি আমার সর্বোচ্চ চেস্টা করেছি বাংলা শব্দ ব্যবহার করার। তারপরও যে ইংলিশ শব্দগুলি রয়ে গেছে সেগুলির উপযুক্ত বাংলা আমি জানিনা অথবা আমার পছন্দ হয়নি এই গল্পে।
নাবিলা চরিত্রটা শুরুই করেছি আপনার উৎসাহে পরিণয় গল্পে। ভাল লেগেছে শুনে খুশি হলাম।
ধন্যবাদ এবং শুভ কামনা রইল!

২০| ০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১:০২

মুক্তা নীল বলেছেন: ভাই,
আপনার প্রতিটি গল্পে একটা মেসেজ থাকে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নাই । অনেক বিষয় নিয়ে গল্পের প্লাটফর্ম খুবই গুরুত্বপূর্ণ । সাইকোলজি, পরকীয়া অন্যান্য সমসাময়িক মানুষের জীবনের সমস্যাগুলো আপনার চিন্তাচিত্র ফুটিয়ে তুলেন অতুলনীয়ভাবে ।
আরেকটি কথা, আপনার গল্পগুলো যত-ই বড় হোক না কেন, আমার কেন জানি না পড়তে ভীষণ ভালো লাগে। পাঠক ধরে রাখার ক্ষমতা আছে আপনার।

শুভ কামনা রইলো, ভালো থাকবেন ।

০৫ ই এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১১:২৯

নীল আকাশ বলেছেন: প্রিয় মুক্তা আপু,
ইন্টারনেট সমস্যার জন্য সব সময় সাথে সাথেই উত্তর দিতে পারি না। তাই দেরি হবার জন্য লজ্জিত।
যা বলেছেন আমাকে নিয়ে সেটার পর আপনাকে আর কি বা বলব।
আপনার মতো এতই খুটিয়ে খুটিয়ে কয়জন আমার গল্প পড়ে বলুন!!
মাঝে মাঝে এসে এই গল্পে ঘুরে যেতাম আপনার মন্তব্যের জন্য। একদম শেষে আপনাকে পেয়ে শান্তি পেলাম।
শবনম হলো, নাবিলা হলো, এবার আপনার প্রিয় মিথিলাকে নিয়ে একটা পর্ব হবে।
অপেক্ষায় থাকুন। দুর্দান্ত একটা সামাজিক বিষয় নিয়ে কিছুটা ইতিমধ্যেই লিখে ফেলেছি।
ধন্যবাদ এবং শুভ কামনা রইল!

২১| ০৭ ই এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ৮:৫৯

নীলপরি বলেছেন: খুব ভালো লিখেছেন । আমার পড়তে দেরী হয়ে গেলো ।
++
শুভকামনা

০৭ ই এপ্রিল, ২০১৯ বিকাল ৩:২৯

নীল আকাশ বলেছেন: পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
সব সময় যেন আপনাকে আমি আমার সব লেখায় পাই।
ধন্যবাদ এবং শুভ কামনা রইল!

২২| ০৭ ই এপ্রিল, ২০১৯ বিকাল ৫:৫৪

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
কয়েকবার না পড়লে আমি ঠিক মজা পাই না।
আবার পড়বো।
তারপর আবার।

০৮ ই এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ৯:৫৮

নীল আকাশ বলেছেন: শুভ সকাল,
সাজ্জাদ ভাই আপনার মতো পাঠক পেলে আর কিছু লাগে নাকি কোন লেখকের?
যদি এই গল্পটা ভালো লেগে থাকে তাহলে খুব করে অনুরোধ করব কয়েকদিন আগে প্রকাশিত আমার লেখা
শবনম কাহিনী ৩ - ছেড়া পালে লাগে হাওয়া!
পড়ার জন্য। কেন বলেছি সেটা পড়ার পরই বুঝবেন ভাই।
ধন্যবাদ। সব সময় যেন আপনাকে আমার পাশে পাই!!
শুভ কামনা রইল!

২৩| ১২ ই এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১০:৩৫

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: গল্পটি আজ পড়েতে গিয়ে ভেবেছিলাম আগে পড়িছিলাম কিনা, কিন্তু না! পড়ে যদি থাকতাম মন্তব্য ঘরে আমার মন্তব্য নেই কেন?
নাকি আমাকেও নাবিলা ম্যাডামের পেশেন্ট হতে হবে!
গল্পটি যে চমৎকার হয়েছে তা পড়তে গিয়ে বার কয়েক চমক খেয়েছি, একদম দক্ষ সাইক্রিস্ট চরিত্রটি গল্পের প্রাণ সঞ্চার করেছে। লিখনশৈলীও সুন্দর।

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১১:২১

নীল আকাশ বলেছেন: শুভ রাত্রী,
দেরী করে প্রতি উত্তর করার জন্য ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। অফিসের কাজে খুবই ব্যস্ত ছিলাম।
খুব চমৎকার একটা মন্তব্য করেছেন। বেশ ভয়ে ছিলাম সাইকোলজিস্ট হিসেবে নাবিলা কেমন লাগবে
সবার? আপনার মন্তব্যটা পড়ে মনে অনেক শান্তি পেলাম।
নববর্ষের শুভেচ্ছা, অসংখ্য ধন্যবাদ এবং শুভ কামনা রইল!!

২৪| ১৪ ই এপ্রিল, ২০১৯ সকাল ১১:২৯

মুক্তা নীল বলেছেন:
নীল আকাশ ভাই,
আপনাকে ও আপনার পরিবারের জন্য নতুন বছরের শুভেচ্ছা রইলো। ভালো থাকুন আর নতুন বছরের নতুন গল্প কই?

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১১:১৬

নীল আকাশ বলেছেন: শুভ নববর্ষ প্রিয় আপু।
গত একমাস অফিসের কাজে খুবই ব্যস্ত ছিলাম। একদম সময় বের করতে পারি নি ব্লগে আসার জন্য।
আমার বোন হয়ে আরোগ্য ভাইকে কথা দিয়ে এসেছেন আমি উনাকে দুর্দান্ত একটা প্রতিদান দেব। এখন তো আপনার কথার
মূল্যের জন্য হলেও একটা লিখতে হবে। আপনার দেয়া কথা আমি ফেলব না। একটা প্যারা সাইকোলজির উপর গল্প লিখছি।
আরোগ্য ভাই আবার এই সব গল্প পছন্দ করে।
ধন্যবাদ এবং শুভ কামনা রইল

২৫| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৯ বিকাল ৪:৪০

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: নতুন বছর ভাল কাটুক।

১৫ ই এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১১:১১

নীল আকাশ বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই। গত একটা মাস সাক্ষাৎ জাহান্নামের মধ্যে দিয়ে গেছে। সকাল ৮ থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত টানা অফিস ডিউটি দিতে হয়েছে। শরীর এখন খুবই ক্লান্ত।
আপনাকেও শুভ নববর্ষ।

২৬| ২২ শে এপ্রিল, ২০১৯ বিকাল ৫:১৬

আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: সুন্দর লেখা :)

সুখপাঠ্য :)

২২ শে এপ্রিল, ২০১৯ রাত ১১:৩৪

নীল আকাশ বলেছেন: ওয়াও, দারুন মন্তব্য।
নাবিলা কে নিয়ে লেখার সাহস পাচ্ছি এখন। এর পরের পর্ব প্যারা সাইকোলজির উপর।
অগ্রীম দাওয়াত দিলাম ভাই, কয়েকদিন পরেই পোস্ট দিব।
ধন্যবাদ, শুভ রাত্রী এবং শুভ কামনা রইল!!

২৭| ০৯ ই মে, ২০১৯ বিকাল ৪:২৪

তানজীর আহমেদ সিয়াম বলেছেন: রেগুলার লেখার আহবান জানাচ্ছি :)

১০ ই মে, ২০১৯ বিকাল ৫:১৬

নীল আকাশ বলেছেন: আমার ব্লগ বাড়িতে আপনাকে সুস্বাগতম। আমি মোটামুটি মাসে ২ বা ৩টা গল্প পোস্ট করি। ইদানিং কবিতা লেখা একদম বাদ দিয়ে দিয়েছি। সুতরাং আশা করা যায় আপনি নিয়মিতই আমার গল্প পাবেন পড়ার জন্য।
আপনি একটা কাজ করুন না? প্রথম থেকে আমার শবনম সিরিজ পড়া আসুন! নাবিলা সিরিজের চেয়ে ওটা বেশী ভালো লাগবে।
শবনম কাহিনী পর্ব ১ থেকে শুরু করবেন। ৩টা পর্ব আছে। এই সিরিজের সব গল্পই সামুতে সুপারহিট।
ধন্যবাদ।

২৮| ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৩:১২

খাঁজা বাবা বলেছেন: ভাল লেগেছে
:)

০৯ ই নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ১০:৫৯

নীল আকাশ বলেছেন: ভাই,
আমার বেশ পুরানো গল্প বের করে পড়ার জন্য আপনাকে খুব করে ধন্যবাদ নিবেন ভাই।
নাবিলা প্রতিটা পর্ব দারুণ করে লিখেছি। শেষ যেটা লিখছি, ৩ পর্বের সেটা পড়ুন। অনেক কিছু জানতে পারবেন।
শুভ কামনা রইল।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.